২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৭ বৈশাখ ১৪৩১, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫
`

মত প্রকাশে স্বাধীনতা নিশ্চিত করতে হবে বাংলাদেশকে : জাতিসঙ্ঘ

-

জাতিসঙ্ঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনার মিশেল ব্যাচেলেট বলেছেন, সুষ্ঠু ও অবাধ নির্বাচনের জন্য বাংলাদেশ সরকারকে জনগণের মত প্রকাশের স্বাধীনতা নিশ্চিত করতে হবে। শিক্ষার্থী ও সংবাদকর্মীরা সাম্প্রতিক মাসগুলোতে হামলা-মামলা, আটক ও নির্যাতনের শিকার হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তিরোধে সহিংসতার জন্য দায়ীদের জবাবদিহিতার আওতায় আনতে হবে।
গতকাল জেনেভায় জাতিসঙ্ঘ মানবাধিকার কাউন্সিলের ৩৯তম সভার উদ্বোধন অনুষ্ঠানে দেয়া বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। মিশেল ব্যাচেলেট গত ১ সেপ্টেম্বর জাতিসঙ্ঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনারের দায়িত্ব নেন। জাতিসঙ্ঘের মানবাধিকার প্রধান হিসেবে কাউন্সিলে দেয়া প্রথম বক্তব্যে তিনি বিশ্ব পরিস্থিতি তুলে ধরেন।
মিশেল ব্যাচেলেট বলেন, বাংলাদেশে মাদকবিরোধী অভিযানে ২২০ জনের বেশি নিহত ও হাজারো মানুষ গ্রেফতার হয়েছে। এ অভিযানে বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের অভিযোগ উঠেছে। তিনি বলেন, বিশ্বের সর্বত্র স্বাস্থ্য, শিক্ষা ও সুযোগের ওপর আলোকপাত করে মাদক সমস্যা মোকাবেলা করতে হবে, মৃত্যুদণ্ড বা ডেড স্কোয়াড দিয়ে নয়। মানবাধিকার সমুন্নত রেখে আরো কার্যকরভাবে মাদক নিয়ন্ত্রণের জন্য চলতি অধিবেশনে কাউন্সিল একটি প্রতিবেদন দিয়েছে।
মিয়ানমার পরিস্থিতির ওপর আলোকপাত করে ব্যাচেলেট বলেন, মিয়ানমারে মানবাধিকার পরিস্থিতির ওপর জাতিসঙ্ঘের তথ্যানুসন্ধান মিশনের বিস্তারিত প্রতিবেদন কাউন্সিলের চলতি অধিবেশনে তুলে ধরা হবে। রাখাইন, কাচিন ও শান রাজ্যে ভয়াবহ সব মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা ঘটেছে, যা আন্তর্জাতিক আইনের সরাসরি লঙ্ঘন। এ সব রাজ্যে মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধ ও যুদ্ধাপরাধ সংঘটিত হয়েছে। রাখাইন রাজ্যে গণহত্যা, নিধনযজ্ঞ ও জোর করে বাস্তুচ্যুত করার শক্তিশালী প্রমাণ পাওয়া গেছে। সে রাজ্যে দৃশ্যত এখনো হামলা ও নির্যাতন অব্যাহত আছে। এতে মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর দায়মুক্তির বিষয়টি জোরালোভাবে ফুটে উঠেছে।
মিয়ানমারকে বিচারের আওতায় আনতে এখতিয়ার নির্ধারণে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের (আইসিসি) রুলিংকেও স্বাগত জানিয়েছেন মিশেল ব্যাচেলেট। আইসিসি বলেছে, রোহিঙ্গাদের মিয়ানমার থেকে জোর করে বাংলাদেশে পাঠিয়ে দেয়া একটি মানবতাবিরোধী অপরাধ। এ বিষয়ে আইসিসির বিচার করার অধিকার আছে।
জাতিসঙ্ঘের মানবাধিকার প্রধান বলেন, বিচারহীনতার সংস্কৃতি থেকে বের হয়ে আসতে এবং রোহিঙ্গাদের অবর্ণনীয় দুর্ভোগ লাঘবে আইসিসির রুলিং খুবই গুরুত্বপূর্ণ। মিয়ানমারে সংঘটিত গুরুতর অপরাধের বিচারের লক্ষে তথ্য-প্রমাণ সংগ্রহ, সংরক্ষণ ও বিশ্লেষণের জন্য কাউন্সিলের সদস্য রাষ্ট্রগুলো সে স্বাধীন আন্তর্জাতিক প্রক্রিয়া প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ নিচ্ছে, তাকে স্বাগত জানান তিনি। এটি জাতীয় ও আন্তর্জাতিক আদালতে বিচার প্রক্রিয়াকে ত্বরান্বিত করবে। এ ছাড়া তা আইসিসি প্রসিকিউটরের প্রাথমিক তদন্তকেও সমর্থন দেবে। মিশেল ব্যাচেলেট মানবাধিকার কাউন্সিলকে এ সংক্রান্ত প্রস্তাব পাস এবং তা অনুমোদনের জন্য জাতিসঙ্ঘ সাধারণ পরিষদে পাঠানোর আহ্বান জানান।

 


আরো সংবাদ



premium cement