২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫
`

সংসদ নির্বাচনের আগে ভোটার স্থানান্তর বন্ধ রেখেছে ইসি

-

একাদশ জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে ভোটার স্থানান্তরের কার্যক্রম বন্ধ করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। সম্প্রতি উপজেলা বা থানা নির্বাচন অফিসে আবাসস্থল পরিবর্তন বা অন্যবিধ কারণে ভোটার স্থানান্তরের জন্য প্রাপ্ত আবেদনগুলো গত ৩১ আগস্টের মধ্যে নিষ্পত্তির নির্দেশ দিয়েছিল ইসি।
আগামী ২৫ সেপ্টেম্বরের মধ্যে ৩০০টি নির্বাচনী এলাকার জন্য চূড়ান্ত হালনাগাদকৃত ভোটার তালিকার সিডি উপজেলা বা থানা নির্বাচন অফিসগুলোয় সরবরাহ করা হবে। আর ১০ অক্টোবর ভোটার তালিকার সিডি অনুযায়ী ছবিসহ এবং ছবি ছাড়া ভোটার তালিকা মুদ্রণ শুরু করবে কমিশন। তবে তফসিল ঘোষণার আগ পর্যন্ত ভোটার হওয়ার সুযোগ অব্যাহত রাখা হয়েছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে ইসি সচিব হেলালুদ্দীন আহমদ বলেন, যৌক্তিক কারণ ছাড়া আপাতত কোনো ভোটার স্থানান্তর করা হবে না। কেননা জাতীয় নির্বাচনের জন্য ভোটার তালিকার সিডি প্রস্তুতের কাজ চলছে। তবে যে কেউ চাইলে তফসিল ঘোষণার আগ পর্যন্ত ভোটার হতে পারবেন।
আগামী ৩০ অক্টোবর থেকে ২৮ জানুয়ারির মধ্যে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। সংবিধান অনুযায়ী দশম সংসদের মেয়াদ শেষ হওয়ার পূর্ববর্তী ৯০ দিনের মধ্যে একাদশ সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠানের বাধ্যবাধকতা রয়েছে। ২০১৪ সালের ২৯ জানুয়ারি দশম সংসদের প্রথম বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। সেই হিসাবে আগামী বছরের ২৮ জানুয়ারির পূর্ববর্তী ৯০ দিনের মধ্যে নির্বাচন হবে। ৩০ অক্টোবর থেকে জাতীয় নির্বাচনের কাউন্ট-ডাউন শুরু হবে। ইসি সচিবের মতে, এরপর যেকোনো সময় তফসিল ঘোষণা করতে পারে নির্বাচন কমিশন।
সংশ্লিষ্টরা জানান, সংসদ নির্বাচনে ভোটার তালিকার সিডি প্রস্তুত করা বেশ সময়সাপেক্ষ। সিডি প্রস্তুতির কাজ শুরু হলে ভোটার স্থানান্তর বন্ধ রাখা হয়। একবার সিডি প্রস্তুত করার পর কেউ ভোটার হিসাবে স্থানান্তর হয়ে গেলে আবার দু’টি নির্বাচনী এলাকার সিডি প্রস্তুত করতে হয়। ভোটার তালিকা করার সুবিধার্থে তফসিল ঘোষণার কমপক্ষে দুই মাস আগে ভোটার স্থানান্তরের কার্যক্রম বন্ধ করা হয়। তবে বিশেষ ব্যবস্থায় ভোটার স্থানান্তর করার সুযোগ রাখা হয়েছে।
ভোটার স্থানান্তরের কার্যক্রম একেবারে বন্ধ রাখা আইনের পরিপন্থী। ভোটার তালিকা আইন-২০০৯ এর ১০ ধারায় বলা আছে, ‘বিভিন্ন নির্বাচিত সংস্থার নির্বাচনের সময়সূচি ঘোষণার তারিখ হইতে নির্বাচন অনুষ্ঠানের সময়কাল ব্যতিরেখে, অন্য যেকোনো সময়, নির্ধারিত পদ্ধতিতে, প্রয়োজন অনুসারে নিম্নোক্তভাবে সংযোজন ও বিয়োজনপূর্বক ভোটার তালিকা সংশোধন করা যাইবে।’ উপরের ধারা অনুযায়ী চারটি কারণে জাতীয় নির্বাচনে তফসিল ঘোষণার আগ পর্যন্ত ভোটার তালিকায় সংশোধনের সুযোগ রয়েছে। কারণগুলো হচ্ছেÑ নতুন ভোটার অন্তর্ভুক্তি, মৃত ভোটারের নাম কর্তন, ভোটার স্থানান্তর ও ভোটার তালিকা ত্রুটি-বিচ্যুতি দূর করা।
নতুন ভোটার করার ব্যাপারে ১০ ধারার উপধারা (ক) তে বলা আছে, ‘তালিকায় এমন কোনো ব্যক্তির নাম অন্তর্ভুক্ত করা, যার নাম অন্তর্ভুক্ত করা হয় নাই বা যিনি ইহা প্রণয়নের পর বা ইহার সর্বশেষ পুনঃপরীক্ষার পর অনুরূপ উক্ত তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হইবার যোগ্য হইয়াছেন।’
ভোটার স্থানান্তরের বিষয়ে উপধারা (গ) তে বলা আছে, ‘যিনি বাসস্থান পরিবর্তনের কারণে নতুন ভোটার এলাকা বা ক্ষেত্রমতে, নির্বাচনী এলাকার অধিবাসী হইয়াছেন, পূর্বের ভোটার এলাকা বা ক্ষেত্রমতে নির্বাচনী এলাকা তালিকা হইতে তাহার নাম কর্তনপূর্বক নতুন এলাকায় বা ক্ষেত্রমতে ভোটার এলাকার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা।’ নির্বাচন কমিশন শুধু উপরের ধারা অনুযায়ী ভোটার তালিকায় নতুন ভোটারের নাম অন্তর্ভুক্তির সুযোগ রেখেছে।
সংশ্লিষ্টদের মতে, আগামী নভেম্বরের প্রথম সপ্তাহের পর একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করা হতে পারে। এ সময়ের মধ্যে ইচ্ছা করলে ভোটার হওয়ার যোগ্য যে কেউ সংশ্লিষ্ট নির্বাচন অফিসে গিয়ে ভোটার তালিকায় নাম অন্তর্ভুক্ত করতে পারবেন।
আগামী একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ১০ কোটি ৪২ লাখ ভোটার তাদের ভোটারাধিকার প্রয়োগ করবেন। এ জন্য প্রয়োজন হবে প্রায় সাড়ে ৪০ হাজার ভোটকেন্দ্র; ভোটকক্ষ থাকবে প্রায় ২ লাখ।  


আরো সংবাদ



premium cement