২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫
`
অভিযান সমাপ্ত ঘোষণা

গুপ্তধন মেলেনি মিরপুরের সেই বাড়ি থেকে

-

কিছুই মেলেনি মিরপুরের রহস্যঘেরা বাড়ি থেকে। গুপ্তধনের সন্ধানে ব্যাপক প্রস্তুতি নিয়ে খোঁড়াখুঁড়ি ও সর্বশেষ প্রযুক্তির ব্যবহার করেও কোনো কিছুরই সন্ধান পাওয়া যায়নি। অবশেষে গুপ্তধনের সন্ধানে চালানো অভিযানের সমাপ্তি ঘোষণা করা হয়েছে। ঢাকা জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো: তাজওয়ার আকরাম সাংবাদিকদের বলেন, গুপ্তধনের সন্ধানে প্রথমে ওই ঘরের মেঝে খোঁড়া হয়েছিল। প্রায় সাড়ে চার ফুট গভীরে খোঁড়ার পরও কোনো কিছুর সন্ধান পাওয়া যায়নি। পরবর্তী ভূতাত্ত্বিক জরিপ অধিদফতর ও বুয়েটের এক্সপার্ট এনে ওই বাড়ির ভেতরে জিপিআর স্ক্যানার দিয়ে পরীা করে দেখা হয়েছে। কিন্তু তাতেও সেখানে কোনো ধাতব বা গুপ্তধনের অস্তিত্ব পাওয়া যায়নি। তাই অভিযানটি সমাপ্ত ঘোষণা করা হলো। পাশাপাশি ওই বাড়ি থেকে পুলিশের পাহারাও তুলে নেয়া হয়েছে বলে জানান তিনি।
গত ২১ জুলাই শনিবার সকাল ১০টা থেকে গুপ্তধনের সন্ধানে ঢাকা জেলার নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো: আনোয়ারুজ্জামানের উপস্থিতিতে ২০ জন শ্রমিক মিরপুর ১০ নম্বরের সি ব্লকের ১৬ নম্বর রোডের ১৬ নম্বর টিনসেড বাড়িতে খনন কাজ শুরু করে। ৬ ঘণ্টা খনন কাজ করেও গুপ্তধনের কোনো আলামত পাওয়া যায়নি। তাই বিকেল ৪টার দিকে খনন কাজ স্থগিত করা হয়। পরে বিশেষজ্ঞদের মতামত নিয়ে পদপে নেয়া হবে। গতকাল ম্যাজিস্ট্রেট মো: তাজওয়ার আকরাম বিশেষজ্ঞদের প্রযুক্তি ব্যবহার করে আবার সন্ধান কাজ শুরু করা হয়।
এর আগে গুপ্তধনের সন্ধানদাতা তৈয়ব বলেন, তার ঘনিষ্ঠ বন্ধু আলমের দূরসম্পর্কের আত্মীয় দিলশাদ খান। তিনি ১৯৭১ সালে পাকিস্তান চলে যান। আলমও পাকিস্তানে থাকেন। তবে আলম মাঝে মধ্যে দেশে আসেন। বর্তমানে বাংলাদেশে অবস্থান করছেন। তিনি জানান, আলম তাকে তথ্য দিয়েছেন, মিরপুরের ওই বাড়িটির নিচে দুই মণের বেশি স্বর্ণালঙ্কার ও দামি জিনিসপত্র রয়েছে। পাকিস্তানে থাকাকালে আলমকে ওই তথ্য দিয়েছেন দিলশাদ। এরপর আলমকে নিয়ে তৈয়ব মাটির নিচে লুকিয়ে রাখা এ সম্পদের দখলে নিতে টেকনাফ থেকে ঢাকায় আসেন। ঢাকায় আসার পর তৈয়বকে আড়ালে রেখে গোপনে বাড়িটির বর্তমান মালিকের সাথে আঁতাত করেন আলম। তারা মাটির নিচের সম্পদ হাতিয়ে নেয়ার পাঁয়তারা করেন। বিষয়টি টের পেয়ে তিনি তার পূর্বপরিচিত রাবেয়া চৌধুরী নামে এক নারীকে নিয়ে থানায় যান। তারা বিষয়টি জানিয়ে থানায় একটি জিডি করার সিদ্ধান্ত নেন।
অন্য দিকে, এই বাড়ির বর্তমান মালিক ব্যবসায়ী মনিরুল ইসলাম বলেন, ২০১০ সালে জাতীয় গৃহায়ন কর্তৃপরে মাধ্যমে সেলিম রেজা নামে এক ব্যক্তির কাছ থেকে বাড়িটি তিনি কিনেছিলেন। বাড়ি ভেঙে নতুন করে নির্মাণ করা হবে বলে ভাড়াটিয়াদের বের করে দেয়া হয়। বর্তমানে বাড়িতে কেউ থাকে না। তিনি বলেন, ওই বাড়ির নিচে গুপ্তধন রয়েছে এমন তথ্য দিয়ে কেউ থানায় জিডি করেছেন। এরপর তিনি নিজেও পুলিশের সহায়তা নেন। পাশাপাশি বাড়ির নিচে যদি কোনো ধরনের গুপ্তধন থাকে তা উদ্ধারের আহ্বান জানান। এ সংক্রান্ত সব ব্যয়ভার বহন করারও কথা বলেন তিনি। মিরপুর মডেল থানার পরিদর্শক (অপারেশন) আরিফুর রহমান সরদার বলেন, মিরপুরের ওই বাড়িতে কোনো গুপ্তধন পাওয়া যায়নি। রেজাল্ট জিরো। তাই প্রশাসনের নির্দেশে সেখান থেকে পুলিশি পাহারা তুলে নেয়া হয়েছে।

 


আরো সংবাদ



premium cement