১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৬ বৈশাখ ১৪৩১, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫
`

বাজারে শীতকালীন সবজি, দাম চড়া

-

শীতকাল আসতে এখনো অনেক বাকি। কিন্তু এরই মধ্যে বাজারে উঠতে শুরু করেছে শীতকালীন সবজি। কৃষকের ক্ষেতে বিশেষ ব্যবস্থায় উৎপাদিত এসব সবজির দামও অত্যধিক। ভরা মওসুমে যে শিম ২০ টাকা কেজি দরে পাওয়া যায়, এখন সে শিম বিক্রি হচ্ছে ১৪০ থেকে ১৫০ টাকায়। বাজারে এখন খুব ছোট আকারের যেসব ফুলকপি ৪০ থেকে ৫০ টাকা পিস দরে বিক্রি হচ্ছে তারচেয়ে ১০ গুণ বড় ফুলকপি শীতকালে পাওয়া যাবে ২০ থেকে ২৫ টাকায়। একই অবস্থা বাঁধাকপির ক্ষেত্রেও। আগাম জাতের একেকটি বাঁধাকপি বর্তমানে বিক্রি হচ্ছে ৪০ থেকে ৫০ টাকায়। ভরা মওসুমে এসব কপি মিলবে ১৫ থেকে ২০ টাকায়।
রাজধানীর খিলগাঁও রেলগেট-সংলগ্ন সান্ধ্যকালীন বাজারে গতকাল প্রতি কেজি শিম ১৬০ টাকা দরে বিক্রি করতে দেখা যায়। বিক্রেতা শহীদুল আলম জানান, আগাম জাতের এ শিম অতি যতেœ চাষ করা হয়। আগাম সবজির জন্য বীজতলা প্রস্তুত করা হয় বিশেষ ব্যবস্থায়। বৃষ্টির আক্রমণ থেকে রক্ষা করতে নেয়া হয় বিশেষ ব্যবস্থা। ফলে উৎপাদন খরচ বেড়ে যায় কয়েক গুণ। সরবরাহ করা যায় সীমিত পরিমাণে। এ জন্য দামও বেশি। তবে শৌখিন ভোজন রসিকদের কাছে বাড়তি টাকা কোনো সমস্যাই নয় বলে জানান শহীদুল।
বাজারে পাওয়া যাচ্ছে বিশেষ ব্যবস্থায় উৎপাদিত বারোমাসি টমেটোও। দাম ১২০ থেকে ১৪০ টাকা। আবার কোল্ড স্টোরেজে রাখা পাকা টমেটোও বিক্রি হচ্ছে ঢাকার বাজারে। এগুলোর দাম প্রতি কেজি ৮০ থেকে ১০০ টাকা। আর ভারত থেকে আমদানিকৃত টমেটোর কেজি ৬০ থেকে ৮০ টাকা। কোল্ড স্টোরেজে রাখা দেশী গাজর ৬০ থেকে ৭০ টাকায় পাওয়া গেলেও চীন থেকে আমদানিকৃত দৃষ্টিনন্দন গাজর বিক্রি হচ্ছে ১০০ থেকে ১২০ টাকা দরে। শীতকালে যে ক্যাপসিকাম ৫০ থেকে ৮০ টাকা কেজি দরে পাওয়া যায়, বিদেশী জাতের এ সবজির বর্তমান দর ৩০০ টাকা। বাড়তি দামের এসব সবজিতে সাধারণ মানুষের নজর তেমন না পাড়লেও ক্রেতার কোনো অভাব নেই বলে জানান বিক্রেতারা।
শান্তিনগর বাজারের ব্যবসায়ী বাবুল বলেন, শিম ও ফুলকপি শীতকালীন সবজি। আগাম বাজারে আসায় এ দু’টি সবজির দাম একটু চড়া। তিনি বলেন, বাজারে যেকোনো সবজি নতুন এলে দাম একটু বেশিই থাকে, এটা স্বাভাবিক। এখন এক কেজি শিম ১৫০ টাকায় বিক্রি করছি। একসময় এই শিমই ২০ টাকা কেজিতে বিক্রি হবে। কিন্তু ১৬০ টাকার শিমের যে স্বাদ তা ২০ টাকা কেজির শিমে পাওয়া যাবে না।
গতকাল রাজধানী ঢাকার কয়েকটি বাজার ঘুরে দেখা যায়, বেশির ভাগ সবজির সরবরাহ স্বাভাবিক রয়েছে। পটোল, ঝিঙা, ধুন্দুল, চিচিঙ্গা, বেগুন, কাঁকরোল, ঢেঁড়স, মিষ্টিকুমড়া, পেঁপে, করলাসহ প্রায় সব সবজিই বাজারে যথেষ্ট পরিমাণে আছে। দাম রাখা হচ্ছে ৪০ থেকে ৬০ টাকার মধ্যে। খুচরা দোকানে গতকাল জালিকুমড়া ৩০ থেকে ৩৫ টাকা, কচুরমুখী ৪০ থেকে ৬০ টাকা, কচুর লতি ৪০ থেকে ৬০ টাকা, বরবটি ৫০ থেকে ৭০ টাকা, পেঁপে ২০ থেকে ৩০ টাকা, আলু ২৫ টাকা, পটোল ৪০ থেকে ৪৫ টাকা এবং ঢেঁড়শ ৪০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।
মাছের বাজার ঘুরে দেখা যায়, খুচরাপর্যায়ে প্রতি কেজি রুই মাছ ২৫০ থেকে ৩৫০ টাকা, সরপুঁটি ২৫০ থেকে ৩৫০ টাকা, কাতলা ৩০০ থেকে ৩৫০ টাকা, তেলাপিয়া ১৩০ থেকে ১৮০ টাকা, সিলভার কার্প ১৬০ থেকে ২৫০ টাকা, চাষের কৈ ২৫০ থেকে ৩৫০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। প্রতি কেজি পাঙ্গাস বিক্রি হচ্ছে ১৪০ থেকে ২৫০ টাকা, ট্যাংরা ৪০০ থেকে ৬০০ টাকা, মাগুর ৬০০ থেকে ৮০০ টাকা, প্রকারভেদে চিংড়ি ৪০০ থেকে ৮০০ টাকা। গরুর গোশতের কেজি ৪৮০ থেকে ৫০০ এবং খাসির গোশত বিক্রি হচ্ছে ৭৫০ থেকে ৮০০ টাকায়।
এ দিকে কোরবানির ঈদ ঘনিয়ে আসার সাথে সাথে পেঁয়াজ, রসুন, আদাসহ সব ধরনের মসলার দাম বেড়েই চলেছে। সপ্তাহের ব্যবধানে সব ধরনের পেঁয়াজের দাম বেড়েছে কেজিতে চার থেকে পাঁচ টাকা। খুচরা বাজারে প্রতি কেজি দেশী পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৫৫ থেকে ৬০ টাকায়। এক সপ্তাহ আগে প্রতি কেজি দেশী পেঁয়াজের দাম ছিল ৫০ থেকে ৫৫ টাকা। আমদানি করা ভারতীয় পেঁয়াজ গতকাল বিক্রি হয় ৪০ থেকে ৪৫ টাকা। গত সপ্তাহে ছিল ৩৫ থেকে ৪০ টাকা। ব্যবসায়ীরা জানান, এক সপ্তাহের ব্যবধানে আমদানি করা চীনা রসুন কেজিতে গড়ে ১০ টাকা বেড়ে ১০০ থেকে ১২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। তবে দেশী রসুনের দামে তেমন পরিবর্তন হয়নি। প্রতি কেজি দেশী রসুন বিক্রি হচ্ছে ৭০ থেকে ৮০ টাকায়।


আরো সংবাদ



premium cement