২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫
`

খালেদা জিয়া অসুস্থ নন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী

-

কারাবন্দী বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া অসুস্থ নন বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল। তিনি বলেন, বিএনপি নেত্রী খালেদা জিয়ার নতুন কোনো রোগ ধরা পড়েনি। চিকিৎসকদের পরামর্শে সরকার আগের রোগগুলোর সেবায় পর্যাপ্ত ব্যবস্থা নিয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে মিট দ্য রিপোর্টার্স অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।
জেলখানায় খালেদা জিয়ার চিকিৎসার বিষয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, খালেদা জিয়া অসুস্থ নন। তার স্বাস্থ্যহানিও হয়নি। তারপরও তাকে আমরা চিকিৎসার জন্য দুইটি হাসপাতালে সুযোগ দিয়েছিলাম। কিন্তু তিনি তা নেননি। তিনি বলেন, কারাবিধি মেনে এর বাইরে কিছু করা সম্ভব নয়।
এক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, দেশে কোনো গুম বা বিচারবহির্ভূত হত্যা হচ্ছে না। আমরা কোনো বিচারবহির্ভূত হত্যা করি না। আর গুমের যে ঘটনাগুলো বলা হচ্ছে, সেগুলো আসলে গুম না। আমরা তাদের ধরে সামনে আনছি, দেখা গেছে তারা হয় প্রেমে ব্যর্থ হয়ে, নয়তো ব্যবসায় ব্যর্থ হয়ে নিজেরাই গুম হয়ে গিয়েছিলেন।
কথিত বন্দুকযুদ্ধে টেকনাফের কাউন্সিলর একরামের মৃতু্যুর পর ফাঁস হওয়া অডিও ক্লিপের বিষয়ে তিনি বলেন, আমরা ওই ঘটনার তদন্ত করছি। তদন্তে যার জড়িত থাকার প্রমাণ মিলবে, তার বিরুদ্ধেই আমরা ব্যবস্থা নেবো।
ডিআইজি মিজানের বিরুদ্ধে কী ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে জানতে চাইলে আসাদুজ্জামান খাঁন বলেন, অভিযোগ পাওয়ার পরপরই তাকে (ডিআইজি মিজান) সাসপেন্ড করা হয়েছে। তদন্ত যাতে নির্ভুল হয়, সে জন্য আমরা কাজ করে যাচ্ছি। তিনি বলেন, আমি এটুকু বলতে পারি তদন্ত রিপোর্ট অনুযায়ী ডিআইজি মিজানের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা এবং যদি প্রয়োজন পড়ে বিচারিক ব্যবস্থাও গ্রহণ করা হবে। আমরা কাউকে ছাড় দিচ্ছি না।
চলমান মাদকবিরোধী অভিযান প্রসঙ্গে মন্ত্রী বলেন, আমরা মাদকের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেছি। মাদক সম্পূর্ণ নির্মূল না হওয়া পর্যন্ত এ যুদ্ধ চলবে। তিনি বলেন, সংসদ সদস্য বা পুলিশের কোনো সদস্য যদি মাদক কারবারের সাথে জড়িত থাকে আমরা তাদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নিচ্ছি। নিরীহ কাউকে হয়রানি করা হচ্ছে না। তিনি আরো বলেন, অভিযান শুরুর আগে পাঁচটি গোয়েন্দা সংস্থাকে তাগাদা দিয়ে মাদক কারবারিদের একটি তালিকা করা হয়। সেই তালিকায় যাদের নাম কমন, তাদের বিরুদ্ধেই ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে।
সাংবাদিক দম্পতি সাগর-রুনি হত্যার প্রসঙ্গে মন্ত্রী বলেন, আদালত র্যাবকে তদন্তের দায়িত্ব দিয়েছেন। র্যাব বিষয়টি নিয়ে কাজ করছে। তিনি বলেন পৃথিবীজুড়ে অনেক তদন্ত আছে যেগুলো বছরের পর বছর ধরে চলে। এ সময় বঙ্গবন্ধুর খুনিদের ফিরিয়ে আনার বিষয়ে তিনি বলেন, কাজ চলছে, দ্রুতই ফিরিয়ে আনা হবে।
সিটি করপোরেশন নির্বাচনে গ্রেফতারের বিষয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, অভিযোগ ছাড়া কাউকে ধরা হয় না। কোটা সংস্কার আন্দোলনে পুলিশের ভূমিকার বিষয়ে জানতে চাইলে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ে কখনো পুলিশ যায় না। যখনই বিশ্ববিদ্যালয় পুলিশ চায়, তখনই যায়। ভিসির বাড়িতে যে ঘটনা হয়েছে, তা খুবই লজ্জাজনক। আমরা ভিডিও ফুটেজ দেখে দায়ী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিচ্ছি।
মিট দ্য রিপোর্টার্স অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন, ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সভাপতি সাইফুল ইসলাম। সঞ্চালনায় ছিলেন সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ শুকুর আলী শুভ। এ সময় অন্যান্য নেতা উপস্থিত ছিলেন।
অনুষ্ঠানে মন্ত্রী তার মন্ত্রণালয়ের সফলতার বিভিন্ন কার্যক্রম তুলে ধরেন। তিনি বলেন, রোহিঙ্গা সমস্যা মোকাবেলা আমাদের জন্য নতুন চ্যালেঞ্জ। রোহিঙ্গাদের ফেরত পাঠানোর বিষয়ে তিনি বলেন, আমরা আন্তর্জাতিক চাপ অব্যাহত রেখেছি। তিনি বলেছেন, মিয়ানমার কর্তৃপক্ষ রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নেয়ার বিষয়ে ইতিবাচক ভঙ্গিতে কথা বলে এসেছে। কিন্তু বাস্তবে এর কোনো লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না।
মন্ত্রী সাংবাদিকদের বলেন, রোহিঙ্গাদের ফেরত নেয়ার কাজটি দ্রুত শেষ করার লক্ষ্য নিয়ে গত বছরের শেষে তিনি যখন মিয়ানমারে গিয়েছিলেন, তখন সেখানে সবকিছু নিয়েই আলোচনা হয়। সেখানে যেসব বিষয়ে দুই দেশ একমত হয়, সে অনুযায়ীই বাংলাদেশ সব কাজ করেছে।


আরো সংবাদ



premium cement