২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫
`

বাংলাদেশসহ বিশ্বের সব বিমানবন্দরের সার্ভার ৩ ঘণ্টা অচল

-

‘সিটা সিস্টেম’ ডাউন থাকায় ঢাকার হজরত শাহজালাল, চট্টগ্রামের শাহ আমানত, সৌদি আরবের জেদ্দা, সংযুক্ত আরব আমিরাতের আবুধাবি, দুবাইসহ বিশ্বের সব বিমানবন্দরে যাতায়াতকারী এয়ারলাইন্স যাত্রীরা চরম ভোগান্তির শিকার হয়েছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে কম্পিউটারাইজড পদ্ধতির বদলে এয়ারলাইন্স বুকিং সংশ্লিষ্টদের বাধ্য হয়ে বোর্ডিং কার্ড ও যাত্রীদের লাগেজ হাতে লিখেই বুকিং নিতে হয়েছে।
ভুক্তভোগী যাত্রী ও বিমানবন্দর সংশ্লিষ্টরা বলছেন, আমেরিকান সিস্টেম ‘সিটা’ হঠাৎ অচল হওয়ায় বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশের বিমানবন্দরগুলোর সার্ভারও ডাউন হয়ে যায়। এতে অভ্যন্তরীণ ও আন্তর্জাতিক বিভিন্ন রুটের যাত্রীদের বিমানন্দরে গিয়ে ভোগান্তিতে পড়তে হয়। এ সময় অনেক ফ্লাইটের ট্রানজিট যাত্রীদের বিমানের ভেতরেই ঘণ্টার পর ঘণ্টা বসে থাকতে হয়। তবে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের এয়ারপোর্ট ম্যানেজার দাবি করছেন, সার্ভার জটিলতায় তাদের মাত্র একটি ফ্লাইট আধঘণ্টা বিলম্বে আবুধাবির উদ্দেশে ঢাকা ত্যাগ করে। বাকি সব ফ্লাইট সময়মতো ছেড়ে গেছে। তবে অন্যান্য এয়ারলাইন্সের ফ্লাইট শিডিউলের ব্যাপারে জানেন না বলে জানান তিনি।
গতকাল জেদ্দা-চট্টগ্রাম-ঢাকা রুটের বিমানের (বোয়িং-৭৭৭) বিজি-১৩৬ ফ্লাইটটি জেদ্দা থেকে চট্টগ্রামে অবতরণ করে পুনরায় বেলা ১টা ২৫ মিনিটে ঢাকার উদ্দেশ ছেড়ে আসার কথা। কিন্তু সেটি নির্ধারিত সময়ের দেড় ঘণ্টা বিলম্বে ট্রানজিট যাত্রী নিয়ে ঢাকায় আসে। এতে ওই বিমানের ভেতরেই যাত্রীদের পুরো সময় ঠায় বসে থাকতে হয়। ওই ফ্লাইটের একজন যাত্রী গতকাল নয়া দিগন্তকে বলেন, আমি অনলাইনে ৪টি টিকিট কাটি। নির্ধারিত সময়ের ফ্লাইট ধরতে চট্টগ্রামের শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে যাই। বিশেষ কারণে আমার পরিবারের দুই সদস্য ওই ফ্লাইটে আসেননি। পরে আমি ওই দু’টি টিকিট ফের অনলাইনে বাতিল করি। বোর্ডিং পাস নেয়ার সময় দেখা দেয় বিড়ম্বনা। দায়িত্বরতরা জানিয়ে দেন, তাদের সার্ভারে জটিলতা হয়েছে। তাই বুকিং কম্পিউটারাইজড সিস্টেমে তাদের নেয়া সম্ভব নয়। পরে প্রত্যেক যাত্রীর বুকিং তারা হাতে লিখে নেন। লাগেজ ট্যাগও হাতে লিখে লাগিয়ে দেন। এতে তাদের দীর্ঘ সময় লম্বা লাইনে দাঁড়িয়ে থাকতে হয়। তিনি বলেন, ট্রানজিট যাত্রীদের বিমান থেকে নামতে দেয়ার নিয়ম নেই। তাই ওই সময় পর্যন্ত যাত্রীদের বিমানের ভেতরেই বসে থাকতে হয়। এতে অনেকেই অস্থির হয়ে ওঠেন। একই অবস্থা ছিল ঢাকা থেকে আবুধাবীগামী বিমানের অপর একটি ফ্লাইটেও। ঢাকা-চট্টগ্রাম-আবুধাবী রুটের ওই ফ্লাইটের যাত্রীদেরও বিমানবন্দর বোডিং কাউন্টারে ভোগান্তি পোহাতে হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। ওই ফ্লাইটটি বিকেল ৪টা ৫ মিনিটের পরিবর্তে বিকেল ৫টা ৫ মিনিটে গন্তব্যর উদ্দেশে ছেড়ে যায় বলে বিমানবন্দর সূত্রে জানা গেছে।
গতকাল শনিবার রাতে হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে কর্তব্যরত বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের (এয়ারপোর্ট সার্ভিস) জেনারেল ম্যানেজার নুরুল ইসলাম হাওলাদার নয়া দিগন্তকে বলেন, ‘সিটা সিস্টেম’ (সোসাইটি ইন্টারন্যাশনাল টেলিকমিউনিকেশন অ্যারোনটিকস) তিন ঘণ্টার মতো বন্ধ থাকায় বিমানবন্দরে যাত্রিদের বোর্ডিং কার্ড এবং লাগেজ বুকিং দিতে কিছুটা সমস্যা হয়েছে। পরে বিমানের অপারেটিংয়ের সাথে স¤পৃক্তরা ম্যানুয়েল সিস্টেমে (হাতে লেখা) সব যাত্রীকে বোডিং পাস ইস্যু করেন। লাগেজ বুকিংও হাতে লিখে দেন। এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, আমেরিকান কোম্পানি সিটা সিস্টেম ডাউন শুধু বাংলাদেশের বিমানবন্দরগুলোতেই হয়নি, এটা বিশ্বের সব বিমানবন্দরেই হয়েছে। বেলা সাড়ে ১২টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত এটি অকার্যকর ছিল। তবে কী কারণে সিস্টেম ডাউন হয়েছে তা তিনি জানাতে পারেননি। যাত্রী ভোগান্তি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, এ সিস্টেম অচল হওয়ায় বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের মাত্র একটি ফ্লাইটের যাত্রীদের সমস্যা হয়েছে দাবি করে তিনি বলেন, অন্যান্য এয়ারলাইন্সেরও খুব একটা সমস্যা হয়নি বলে জানান তিনি।


আরো সংবাদ



premium cement