২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫
`
বিএসএমএমইউতে নারাজ

খালেদা জিয়াকে সিএমএইচে নেয়ার প্রস্তাব স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর

-

কারাগারে অসুস্থ হয়ে পড়া সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে এবার পারিবারিক খরচে গুলশানের ইউনাইটেড হাসপাতালে চিকিৎসা করানোর জন্য কারা কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছে আবেদন করা হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার ঢাকা কেন্দ্রীয় কারা কর্তৃপক্ষের কাছে পরিবারের পক্ষ থেকে করা আবেদনটি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। এ দিকে আবেদন পাওয়ার পর স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী খালেদা জিয়াকে সিএমএইচে নেয়ার প্রস্তাব দিয়েছেন।
এর আগে সকালে খালেদা জিয়াকে নাজিমুদ্দিন রোডের জরাজীর্ণ পরিত্যক্ত কারাগার থেকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় (বিএসএমএমইউ) হাসপাতালে নিতে কারা কর্তৃপক্ষ ও পুলিশের পক্ষ থেকে সব ধরনের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হলেও খালেদা জিয়া কারা কর্মকর্তাদের স্পষ্ট জানিয়ে দেন, তিনি ইউনাইটেড হাসপাতাল ছাড়া অন্য কোথাও চিকিৎসা নেবেন না।
কারা অধিদফতরের একটি নির্ভরযোগ্য সূত্র জানায়, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছে লেখা আবেদনে বলা হয়েছে, খালেদা জিয়ার সাথে তার ব্যক্তিগত ডাক্তারেরা সাক্ষাৎ করে তার শরীরে বেশ কিছু সমস্যার কথা জানতে পেরেছেন। এ সমস্যাগুলো সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়ার জন্য তারা এমআরআইসহ ছয়টি মেডিক্যাল টেস্ট ইউনাইটেড হাসপাতাল থেকে করানোর পরামর্শ দিয়েছেন। সেই মোতাবেক তাকে আমরা নিজ খরচে ইউনাইটেড হাসপাতালে চিকিৎসার ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য অনুরোধ জানাচ্ছি। এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য চিঠিটি কারা কর্তৃপক্ষ আইজি প্রিজন্সের কাছে পাঠান। পরে চিঠিটি ওই সময় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়।
কারাগারের একটি সূত্র জানায়, খালেদা জিয়ার সাথে দেখা করে কারা কর্মকর্তারা যখন তাকে স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালে যাওয়ার জন্য অনুরোধ করেন তখন খালেদা জিয়া তাদের বলে দেন, ‘আমি পিজিতে যাবো না, আমাকে ইউনাইটেড হাসপাতালে নিয়ে গেলে যাবো।’
এ সময় একজন তাকে বুঝানোর চেষ্টা করেন, বিএসএমএমইউতে সব ধরনের সুযোগ সুবিধা আছে। এখানকার এমআরআই মেশিন ইউনাইটেড হাসপাতালের চেয়েও উন্নতমানের। এভাবে বলার পরও তিনি বলেন, ‘না আমি ইউনাইটেড ছাড়া অন্য কোথাও যাবো না’।
কারা মহাপরিদর্শক সৈয়দ ইফতেখার উদ্দীনও ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে সাংবাদিকদের বলেন, আমরা উনাকে (খালেদা জিয়া) বিএসএমএমইউতে নিয়ে যাওয়ার জন্য প্রস্তুত ছিলাম। কিন্তু উনি (খালেদা জিয়া) অনীহা প্রকাশ করছেন। তিনি বলেছেন, ইউনাইটেড হাসপাতাল ছাড়া অন্য কোথাও যাবেন না। সৈয়দ ইফতেখার উদ্দীন বলেন, আমি নিজে সোমবার তাকে রাজি করানোর চেষ্টা করেছি। আজকে অন্যরা গিয়েছিলেন, কিন্তু তিনি ইউনাইটেড হাসপাতালে যাবেন বলে মত দিয়েছেন। যদি তিনি মত পরিবর্তন করেন তাহলে বিএসএমএমইউতে নিয়ে যাওয়া হবে।
বিএসএমএমইউ হাসপাতালের প্রতি খালেদা জিয়ার কোনো অনাস্থা আছে কি না, কেন যেতে চাচ্ছেন না, সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে আইজি প্রিজন্স বলেন, এ বিষয়ে তাকে জিজ্ঞাসা করা হয়নি। কারাবিধি অনুযায়ী সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ মাল্টিডিসিপ্লিনারি হাসপাতাল হচ্ছে বিএসএমএমইউ। আমরা তাকে প্রথমে বিএসএমএমইউতে পাঠাতে পারি। তবে এখানে প্রয়োজনীয় কোনো চিকিৎসা বা পরীার সমস্যা হলে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপরে নির্দেশনা মতে আমরা সেখানে নিয়ে যেতে পারি।
এ দিকে খালেদা জিয়ার পরিবার থেকে আবেদন পাওয়ার পর ইউনাইটেডের বদলে ঢাকার সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) নেয়ার প্রস্তাব তোলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান কামাল। তিনি সচিবালয়ে সাংবাদিকদের বলেন, কারাবিধি অনুযায়ী খালেদা জিয়াকে ‘সর্বোচ্চ সেবা’ দেয়ার ল্েয তারা এখন সিএমএইচের প্রস্তাবটি দেবেন।
‘তিনি যদি সেখানে (সিএমএইচ) যেতে চান, আমরা সেখান থেকেও তার পরীা-নিরীা করিয়ে দিতে পারি। আমরা তার চিকিৎসার জন্য সরকারিভাবে সর্বোচ্চ প্রচেষ্টা নিয়েছি।’
বেসরকারি ইউনাইটেডকে বাদ দিয়ে কেন সিএমএইচÑ উত্তরে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘প্রাইভেট হাসপাতালটির চেয়ে বঙ্গবন্ধু মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় ও সিএমএইচ অনেক সমৃদ্ধ। সেখানে বিশেষজ্ঞ ডাক্তারও রয়েছেন। তা ছাড়া সিএমএইচ অনেক ক্রাইসিস মোমেন্টে ভূমিকা রেখেছে। সেই বিবেচনায় আমরা সিএমএইচের প্রস্তাব দেবো।’
কারা মহাপরিদর্শকের বক্তব্য অনুযায়ী, খালেদা জিয়া ইউনাইটেড হাসপাতাল ছাড়া অন্য কোথাও চিকিৎসা নিতে চান না।
সে েেত্র কী হবেÑ জানতে চাইলে আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেন, ‘আমরা মনে করি, তার সিএমএইচে যাওয়া উচিত। আমরা এখন তাকে প্রপোজালটা দেবো। তিনি কি রিঅ্যাকশন দেন, সেটা আমরা দেখব।’
ইউনাইটেড হাসপাতালে চিকিৎসার আবেদন বিবেচনার কোনো সুযোগ রয়েছে কি নাÑ এ প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘এটার কোনো যুক্তি আছে বলে আমার মনে হয় না। সিএমএইচে না যাওয়ার মতো যুক্তি আমার মনে হয় থাকতে পারে না।’
খালেদা জিয়া বা তার পরিবার সিএমএইচের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করলে ‘সিচুয়েশন বুঝে’ পরবর্তী পদপে নেবেন বলে জানান স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী।
গত ৫ জুন বেগম খালেদা জিয়া হঠাৎ করে কারাগারে ‘মাথা ঘুরে’ পড়ে গেলে তার স্বাস্থ্য নিয়ে উদ্বিগ্ন হয়ে ওঠে বিএনপি; তাকে দেখতে গত শনিবার কারাগারে যান তার ব্যক্তিগত চারজন চিকিৎসক।
খালেদার ‘মাইল্ড স্ট্রোক’ হয়েছে ধারণা করে তাকে পরীা-নিরীার জন্য ইউনাইটেড হাসপাতালে নেয়ার সুপারিশ করেন তারা। বিএনপিও তাদের নেত্রীকে ইউনাইটেড হাসপাতালে নেয়ার দাবি জানিয়ে আসছে।
প্রসঙ্গত, গত ৮ ফেব্রুয়ারি জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলায় খালেদা জিয়াকে পাঁচ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৫ এর বিচারক ড. আখতারুজ্জামান। ওই দিন থেকে তিনি নাজিমুদ্দিন রোডের পুরান ঢাকার কেন্দ্রীয় কারাগারে অবস্থান করছেন।


আরো সংবাদ



premium cement
কুলাউড়ায় জঙ্গল থেকে তরুণীর লাশ উদ্ধার ঈদগাঁওতে মাদককারবারি গ্রেফতার শিক্ষায় ব্যাঘাত : ফেসবুক-টিকটক-ইনস্টাগ্রাম-স্ন্যাপচ্যাটের বিরুদ্ধে ২৯০ কোটি ডলারের মামলা আমতলীতে কিশোরীকে অপহরণ শেষে গণধর্ষণ, গ্রেফতার ৩ মহানবীকে কটূক্তির প্রতিবাদে লালমোহনে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ ক্রিমিয়া সাগরে বিধ্বস্ত হলো রুশ সামরিক বিমান জর্ডান আন্তর্জাতিক কোরআন প্রতিযোগিতায় বাংলাদেশী বিচারক এবারের আইপিএলে কমলা ও বেগুনি টুপির লড়াইয়ে কারা সরকার জনবিচ্ছিন্ন হয়ে সন্ত্রাসনির্ভর হয়ে গেছে : রিজভী রাশিয়ার ৯৯টি ক্ষেপণাস্ত্রের ৮৪টি ভূপাতিত করেছে ইউক্রেন আওয়ামী লীগকে ‘ভারতীয় পণ্য’ বললেন গয়েশ্বর

সকল