১৮ এপ্রিল ২০২৪, ০৫ বৈশাখ ১৪৩১, ০৮ শাওয়াল ১৪৪৫
`

রের্কড বুকে কি ঠাঁই হবে দেশ্যামের?

বিশ্বকাপ
দিদিয়ের দেশ্যাম - সংগৃহীত

দিয়েগো আরমান্দো ম্যারাডোনা পারেননি। ড্যানিয়েল প্যাসারেলাও সুযোগ হাতছাড়া করেছেন। এবার কি এই আর্জেন্টাইনদের অনুসরণ করবেন দিদিয়ের দেশ্যাম। না কি চলে আসবেন মারিও জাগালো এবং ফ্রেঞ্জ বেকেনবাওয়ারের কাতারে। সেই উত্তর জানতে আজ রাত ১১টা বা আরো কিছু সময় পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে।

ব্রাজিলের মারিও জাগালো প্রথমে ফুটবলার এবং পরে হেড কোচের পদে থেকে বিশ্বকাপ জয় করেছেন। একই কীর্তি জার্মানির বেকেনবাওয়ারেরও। তবে তার রেকর্ড একটু উপরে। তিনি বিশ্বকাপ জিতেছেন প্রথমে অধিনায়ক এবং পরে কোচ হিসেবে। এখন সেই অর্জনের সামনে দাঁড়িয়ে ফ্রান্সের বর্তমান কোচ দেশ্যাম। ১৯৯৮ সালে তার নেতৃত্বেই প্রথমবারের মতো বিশ্বচ্যাম্পিয়ন ফ্রান্স। এখন তাকে জাগালো বা আরেকটু এগিয়ে বেকেনবাওয়ারের পাশে আসতে হলে আজ ফাইনালে ফ্রান্সকে জিততে হবে ক্রোয়েশিয়ার বিপক্ষে।

ব্রাজিলের মারিও জাগালো হলেন প্রথম ফুটবলার, যিনি খেলোয়াড় এবং কোচ হিসেবে বিশ্বকাপ জয় করেছেন। এ ক্ষেত্রে এই ৮৬ বছর বয়স্ক লোকটির ধারে কাছে নেই কেউ। তিনি খেলোয়াড়ী জীবনে দুইবার বিশ্বকাপ জিতেছেন। এবং কোচ হিসেবেও দুই বার। ১৯৫৮ সালের সুইডেন এবং ১৯৬২ এর চিলি বিশ্বকাপে ব্রাজিল দলের নিয়মিত একাদশের ফুটবলার ছিলেন জাগালো। ১৯৭০ সালে মেক্সিকো বিশ্বকাপ জিতে জুলেরিমে ট্রফি একেবারে নিজেদের করে নেয় ব্রাজিল। সেই চ্যাম্পিয়ন দলের কোচ ছিলেন এই জাগালো। এর ২৪ বছর পর ১৯৯৪ তে ফের বিশ্বকাপ জয় ব্রাজিলের। সেই দলেরও কোচ জাগালো। তবে হেড পদে নন। ছিলেন কার্লোস আলাবার্তো পেরেইেরার সহকারী হিসেবে। অর্থ্যাৎ, চারবার কোচ ও খেলোয়াড় হিসেবে চ্যাম্পিয়নশিপ পাওয়া একমাত্র সদস্য তিনি। ১৯৯৮ সালে রানার্সআপ ব্রাজিল দলের হেড কোচ ছিলেন জাগালো।

পশ্চিম জার্মানি ১৯৭৪ সালে বিশ্বকাপ জয় করে নিজ মাঠে। সেইবার দলের অধিনায়ক ছিলেন ফ্রেঞ্চ বেকেনবাওয়ার। ১৬ বছর পর পুনরায় চ্যাম্পিয়ন এই দেশ বিশ্বসেরা। এবার দলের কোচ সেই বেকেনবাওয়ার। তিনিই প্রথম ব্যক্তি যিনি প্রথমে অধিানয়ক এবং পরে হেড কোচ হিসেবে বিশ্বকাপ জয়ের স্বাদ পান।

বেকেনবাওয়ারের পাশে দাঁড়ানোর সুযোগ ছিল আর্জেন্টিনার ড্যানিয়েল প্যাসারেলা এবং দিয়েগো ম্যারাডোনার। ১৯৭৮ সালে আর্জেন্টিনার বিশ্বকাপ জয় এই প্যাসারেলার নেতৃত্বে। ২০ বছর পর ১৯৯৮ সালে তাকে আর্জেন্টিনার বিশ্বকাপ দলের কোচ করা হয়। তখন তিনিও ছিলেন বেকেনবাওয়ারের পাশে দাঁড়ানোর লড়াইয়ে। সেভাবেই এগুচ্ছিল আর্জেন্টিনা। দ্বিতীয় রাউন্ডে চির রাজনৈতিক শত্রু ইংল্যান্ডকে টাইব্রেকারে পরাজিত করে। কিন্তু ফ্রান্স বিশ্বকাপের কোর্য়াটারে তারা নেদারল্যান্ডসের কাছে ২-১ এ হেরে যাওয়ায় সে লক্ষ্য পূরণ হয়নি প্যাসারেলার।

১৯৮৬ সালে আর্জেন্টিনার বিশ্বকাপ জয় দিয়েগো ম্যারাডোনার অধিনায়কত্বে। ২০১০ সালে তার সামনেও সুযোগ ছিল ক্যাপ্টেনের পর কোচ হিসেবে দেশকে বিশ্বকাপ এনে দেয়ার। তার আশায় গুঁড়েবালি দক্ষিণ আফ্রিকার বিশ্বকাপের কোর্য়াটারে জার্মানির কাছে ৪-০তে বিধ্বস্ত হয়ে।

এবার কি বেকেনবাওয়ারের পাশে চলে আসতে পারবেন দেশ্যাম। না কি পথ ধরবেন প্যাসারেলা এবং ম্যারাডোনার?

 

আরো পড়ুন : বাড়তি ‘বিশ্রাম’ সেলিব্রেশনে ফরাসিরা!

নকআউটে তুলনামূলক কম পরিশ্রম বিশ্বকাপের ফাইনালে ফরাসিদের জন্য বাড়তি সুবিধা থাকছে বলেই দাবি করেছেন দ্য স্পেশ্যাল ওয়ান খ্যাত কোচ হোসে মরিনহো। তার মতে, এক দিন আগে সেমিফাইনাল খেলার অ্যাডভান্টেজ কাজে লাগানোর প্লানও চূড়ান্ত করেছে ফ্রান্স। শেষ চারের দুই ম্যাচের জন্য দুই দিন বরাদ্দের বিষয়টি অনৈতিক বলেও অভিমত দেন ইংলিশ জায়ান্ট ম্যানইউর কোচ মরিনহো। নকআউটের টানা তিন খেলায় অতিরিক্ত টাইম খেলার ফাঁদে আটকা ক্রোয়েশিয়ার জন্য বাড়তি দুশ্চিন্তায় পরিণত হয়েছে ফাইনালের প্রতিপক্ষের তুলনায় একদিন কম বিশ্রামের সমীকরণ। মরিনহো মনে করেন, ফরাসি ড্রেসিংরুমে সেলিব্রেশনও চলছে ফাইনালের আগে ক্রোয়েটদের বাড়তি পরিশ্রম ও কম বিশ্রামের ইস্যুতে।

ফিফার ২১তম বিশ্বকাপের ফাইনাল সামনে রেখে সাংবাদিকদের ব্রিফিংয়ে হোসে মরিনহো বলেন, ‘এই মুহূর্তে ফ্রান্সের ড্রেসিংরুমের সময় দারুণ কাটছে। দলটির ফুটবলাররা উচ্ছ্বসিত ক্রোয়েটদের বাড়তি পরিশ্রমের ইস্যুতে। ২৪ ঘণ্টা আগে ফাইনাল নিশ্চিত করার অ্যাডভান্টেজের পাশাপাশি প্রতিপক্ষের অতিরিক্ত টাইমের ফুটবল ফুরফুরে মেজাজে ফরাসি ড্রেসিংরুম। দুই দিনে সেমিফাইনাল আয়োজনের বিষয়টি চরম অন্যায়। আমি জানি ব্রডকাস্টারদের বিনিয়োগের বিপরীতে মুনাফা নিশ্চিত করতেই ফিফার ওই আয়োজন। কিন্তু বিশ্বকাপের মতো আসরের দুই সেমিফাইনাল একই দিনে অনুষ্ঠান অনেক বেশি যৌক্তিক। প্রাথমিক রাউন্ডে এক দিনে তিন ম্যাচও দেখেছি আমরা। তাহলে দুই সেমিফাইনাল একই দিনে নয় কেন?

ফিফার উচিত দুই দলের জন্যই ফাইনাল জেতার সমান সম্ভাবনার পথ উন্মোচন। ফ্রান্স এখনো বিশ্বকাপ জয়ের উৎসবে মাতেনি। বরং দলটির ফুটবলাররা দারুণ মুডে আছেন ২৪ ঘণ্টা বেশি বিশ্রামের কারণে। একটানা ছয় ম্যাচে অংশ নেয়ার পর এক দিনের বাড়তি বিশ্রাম অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ফ্যাক্টর ফাইনালের প্রস্তুতিতে। ফরাসিদের জন্য সোনায় সোহাগা হতে চলেছে নকআউটের তিন ম্যাচেই ক্রোয়েশিয়ার অতিরিক্ত টাইমের ফুটবল। ৩০ মিনিট করে তিন খেলায় ৯০ মিনিট অর্থাৎ ইতোমধ্যেই এক ম্যাচ বেশি খেলেছে ২০১৮ সালের বিশ্বকাপের দুই ফাইনালিস্টের একটি দল।’

রোববার রাশান বিশ্বকাপের ফাইনালে ফ্রান্সের মুখোমুখি হচ্ছে ক্রোয়েশিয়া। ইতিহাসে প্রথমবারের মতো ফিফার সর্বোচ্চ টুর্নামেন্টের শিরোপানির্ধারণী ম্যাচে অংশগ্রহণের কৃতিত্ব গড়েছে বর্তমান জেনারেশনের ক্রোয়েট ফুটবলাররা। গত বুধবার ২০১৮ সালের মেগা আসরের অতিরিক্ত সময়ের দ্বিতীয় সেমিফাইনালে দলটি ২-১ গোলে হারিয়ে দেয় ইংলিশদের। একদিন আগে শেষ চারের প্রথম খেলায় বেলজিয়ামের বিপক্ষে ১-০ গোলের জয়ে বিশ্বকাপের তৃতীয় ফাইনালে প্রতিনিধিত্ব করার গৌরব স্পর্শের উৎসবে মেতেছে ফ্রান্স।

দেখুন:

আরো সংবাদ



premium cement