২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫
`

বিশ্বকাপ জয়ের স্বপ্ন দেখছেন দুই বন্ধু

বিশ্বকাপ
দুই বন্ধু নেইমার-কুতিনহো - সংগৃহীত

প্রাণের বন্ধু। মানিকজোড়। একে অপরের সুখদুঃখের সঙ্গী। নেইমার এবং ফেলিপ কুতিনহো। বন্ধুত্বের পথ চলা শুরু হয়েছিল বার্সেলোনাতেই। ব্রাজিলের অনূর্ধ্ব-১৬ দলের হয়ে খেলতে গিয়ে। সেই সময় এক নৈশভোজে সময়মতো পৌঁছতে পারেননি নেইমার। বন্ধুর অনুপস্থিতিতে মুখে খাবার তোলেননি কুতিনহোও। হোটেলের রুমে ফিরে তাই একরাশ ক্ষোভ উগরে দিয়েছিলেন তিনি। কুতিনহোকে জড়িয়ে ধরে সেদিন কেঁদেছিলেন নেইমার। আজও দু’জনের মধ্যে সেই আবেগ একইরকম।

চার বছর আগে ব্রাজিল বিশ্বকাপে লুই ফেলিপে স্কোলারির স্কোয়াডে বন্ধুর নাম না দেখে ভেঙে পড়েছিলেন নেইমার। পরে কুটিনহোই এসে তাকে বোঝান। বলেন, ‘সামনে অনেক বিশ্বকাপ পড়ে আছে। একদিন না একদিন তো দু’জনে পাশাপাশি খেলব।’

গত বছর বার্সেলোনায় এক টিভি সাংবাদিক নেইমারের কাছে জানতে চেয়েছিলেন, কুতিনহো আপনার কতটা কাছের বন্ধু? এতটুকু সময় না নিয়ে তার সংক্ষিপ্ত উত্তর ছিল, ‘বন্ধু কাছেরই হয়। দূরের হলে তো পরিচিত বলব! আপনার সাথে বুমের যা সম্পর্ক, আমার সাথে কুতিনহোরও তাই।’

১৯৯২’তেই জন্ম দু’জনের। নেইমার ফেব্রুয়ারিতে। চার মাস পর কুতিনহো। বার্সেলোনায় আয়োজিত আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতায় নজর কাড়েন দু’জনেই। তবে ইউরোপিয়ান ফুটবলে কুতিনহো সিনিয়র। ২০০৮-এই তিনি ভাস্কো দা গামা অ্যাকাডেমি থেকে ইন্টার মিলানের জার্সি গায়ে চাপান। আর স্যান্টোসের ছাড়পত্র পেয়ে নেইমার বার্সেলোনায় যোগ দেন ২০১৩ সালে। তবে দেরিতে ইউরোপে এলেও খ্যাতি অর্জনে তিনি কুতিনহোকে পিছনে ফেলেছেন।

কাতালন ক্লাবটিতে থাকার সময় কর্মকর্তাদের কাছে বন্ধুর জন্য সুপারিশ করতেও পিছপা হননি নেইমার। কিন্তু ক্লাব পর্যায়ে একসাথে খেলা আর হয়ে ওঠেনি দুই বন্ধুর। ভাগ্যের এমন পরিহাস, নেইমার পিএসজিতে যাওয়ার পর তারই বিকল্প হিসেবে আর্নেস্তো ভালভার্দে-ব্রিগেডে যোগ দেন কুতিনহো।

নেইমারের জার্সি নম্বর ১০। আর এক ধাপ পরেই কুটিনহো। মাঠেও তারা একে অপরের কাছাকাছি থাকেন। নেইমার লেফট উইং দিয়ে অপারেট করেন। আর কুতিনহো থাকেন তার ডান পাশে। বোঝাপড়া এতটাই মসৃণ যে একে অপরের দিকে না তাকিয়েও নির্ভুল পাস দিতে পারেন। এবারের বিশ্বকাপে নেইমার-কুতিনহোর কম্বিনেশনই প্রফেসর তিতের মূলধন। মিলের মতো অমিলও কম নেই দুই বন্ধুর। নেইমার সবসময় প্রচারের আলোয় থাকতে পছন্দ করেন। কুতিনহোর আবার অভ্যাস পর্দার পিছনটা।

পরিস্থিতি এমনই, বিরাট কোনো পট পরিবর্তন না হলে আগামী মৌসুমেও দু’জনের এক জার্সিতে খেলা অসম্ভব। তাই ক্লাব পর্যায়ে একসাথে খেলার দুঃখ ঘোচানোর জন্য বিশ্বকাপকেই বেছে নিয়েছেন নেইমার এবং কুতিনহো। কোয়ার্টার-ফাইনাল পর্যন্ত ব্রাজিলকে টেনে নিয়ে যাওয়ার প্রধান কারিগর এই জুটি। দু’জনেই দুটি করে গোল এবং একটি অ্যাসিস্ট করেছেন। ব্রাজিলের জন্য এখন এই দুই বন্ধুই বিশ্বকাপ জয়ের স্বপ্ন দেখছে।

 

আরো পড়ুন : ব্রাজিলের খেলা রক্ষণাত্মক নয়

ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগে চেলসির হয়ে খেলেন উইলিয়ান। তাদের হয়ে বেশ ভালো সেবাই দিয়ে যাচ্ছেন সেলেকাও তারকা উইলিয়ান। রাশিয়া বিশ্বকাপে তার ফর্ম নিয়ে প্রথম ম্যাচ থেকেই সমালোচনা ছিল; কিন্তু তিতের দলের উইলিয়ান শেষ পর্যন্ত নিজেকে খুঁজে পেয়েছেন মেক্সিকোর বিপক্ষে রাউন্ড অব সিক্সটিনে। উইং দিয়ে যেমন আক্রমণভাগে গিয়েছেন তেমনি নিচে নেমে অনেকটা সেন্টারব্যাকের মতো ভূমিকা পালন করেছেন। গ্রুপ পর্বে তাদের খেলা নিয়ে এই সমালোচনায় মুখর ছিল ব্রাজিলের ভক্ত-সমর্থকেরা। কিন্তু ধীরে ধীরে নিজেদের ফিরে পেতে শুরু করেছে উইলিয়ানরা। এই সেলেকাও ফুটবলার নিজেদের খেলার পক্ষে সাফাই গেয়েছেন।

রাশিয়া বিশ্বকাপে নিজেদের খেলাকে কোনোভাবেই রক্ষণাত্মক বলতে চান না উইলিয়ান। যদিও রাশিয়া বিশ্বকাপে তাদের শক্তির উৎসটা এসেছে রক্ষণভাগ থেকে কিন্তু আক্রমণভাগ তার ওপর ভিত্তি করে খেলেছে। যদিও মেক্সিকোর বিপক্ষে দ্বিতীয় পর্বের লড়াইয়ে ধীরগতিতে শুরু করলেও চেলসির এই উইঙ্গার শেষ পর্যন্ত দারুণ খেলেছেন। নেইমারকে ক্রস করেছেন এবং তাতে পা লাগিয়ে প্রথম গোলটি করেন উইঙ্গার। মেক্সিকোর পরাজয় শেষ পর্যন্ত নিশ্চিত হয়ে খেলার শেষ মুহূর্তে লিভারপুল তারকা ফিরমিনোর গোলে এবং বেলজিয়ামের বিপক্ষে শেষ আটে ব্রাজিলের মুখোমুখি হওয়া নিশ্চিত হয়। ব্রাজিলের গোলরক্ষক এলিসন রাশিয়া বিশ্বকাপে মাত্র একটি গোল হজম করেছেন। কিন্তু উইলিয়ান সমালোচকদের জবাবে মনে করেন ব্রাজিল সবদিক দিয়ে মিলিয়ে ফুটবল খেলেছে কোনোভাবেই সেটা রক্ষণাত্মক খেলা নয়।

তিনি বলেন, ‘দেখুন আমরা খুবই ভালো খেলেছি। এমনকি রক্ষণাত্মক অবস্থায় থেকেও আমরা ভালো করেছি। পেছনে আমরা বেশ শক্ত ও জমাট ছিলাম। তার মানে এই নয় আমরা আক্রমণাত্মক ফুটবল খেলিনি। সার্বিয়া এবং মেক্সিকোর বিপক্ষে আমাদের খেলা দেখলেই সেটি পরিষ্কার হয়ে যাবে।’ তিনি আরো বলেন, ‘আমাদের রক্ষণভাগ বেশ ভালো খেলেছে। যখন আমাদের পায়ে বল ছিল তখন আমরা অনেক সুযোগ তৈরি করেছি।’


আরো সংবাদ



premium cement