২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫
`

কেন কান্নায় ভেঙে পড়লেন নেইমার

কেন কান্নায় ভেঙে পড়লেন নেইমার - সংগৃহীত

নাটক করলেন, গোল করলেন, কান্নায় ভেঙেও পড়লেন৷ ব্রাজিল বনাম কোস্টা রিকা ম্যাচে পিটার্সবার্গের সবচেয়ে বড় শো-ম্যান হিসেবে নিজেকে মেলে ধরলেন নেইমার৷ ম্যাচের জন্য নির্ধারিত ৯০ মিনিটের মধ্যে যখন গোলমুখ খুলতে পারছিল না ব্রাজিল৷ পেনাল্টি আদায় করে নেয়ার জন্য এইসময় ফাউলের নাটক করলেন এন-টেন৷ অতিরিক্ত সময়ের ৭ মিনিটে ডগলাস কোস্তার পাশ থেকে গোল করলেন নেইমার৷ গোল করার পর ম্যাচ শেষে মাঠে বসে নেইমারের কেঁদে ফেলার ছবি ধরা পড়ল টিভি ক্যামেরায়৷

কোস্টা রিকাকে হারিয়ে বিশ্বকাপে নিজেদের জায়গা শক্ত করার পর ম্যাচ শেষে কান্নায় ভেঙে পড়ার ব্যাখ্যা দিলেন নেইমার৷ ইন্সটাগ্রামে একটি পোস্টে নেইমার লেখেন, ‘এতটা আসতে আমি যে কিসের মধ্য দিয়ে গিয়েছি, তা অনেকেই জানে না৷ এই কান্না ,আনন্দ, সমস্যা কাটিয়ে ওঠা এবং জয় পাওয়া৷ আমার জীবনে কখনও কিছুই সহজ ছিল না৷ এখনো কিছুই সহজ নয়৷

বিশ্বকাপের শুরুতেই কোচ তিতে জানিয়েছিলেন ১০০ শতাংশ ফিট নন দলের সেরা ফরোয়ার্ড৷ তার প্রমাণও দিয়েছেন নেইমার৷ সুইজারল্যান্ড ম্যাচ থেকে একাধিকবার মাঠে পড়ে গড়াগড়ি খেতে দেখা যায় নেইমারকে৷ কোস্টা রিকার ম্যাচে ৭৮ মিনিটে এক হাস্যস্পদ ঘটনা ঘটালেন বিশ্বের অন্যতম সেরা ফরোয়ার্ড৷ ডি-বক্সে কোস্টা রিকার ডিফেন্ডার তাকে ভালোভাবে স্পর্শও করেননি৷ অথচ ব্রাজিল তারকা এমনভাবে পড়ে গেলেন, যেন তাকে টেনেহিঁচড়ে ফেলে দেয়া হয়েছে৷ এইভাবে পেনাল্টি আদায় করলেও ভিডিও রিভিউয়ে নেইমারের প্লে-অ্যাক্টিং ধরা পড়ে যাওয়ায় রেফারি সিদ্ধান্ত ফিরিয়ে নেন৷ তবে ম্যাচের শেষ মুহূর্তে পাওয়া গোল এনটেন-কে সমস্ত সমালোচনার হাত থেকে বাঁচিয়ে দিয়েছে৷

আরো পড়ুন :
ব্রাজিলের হাসি শেষ মুহূর্তে
ক্রীড়া প্রতিবেদক
কোস্টারিকার বিপক্ষে খেলার শেষ মুহূর্তে গোল করার পর আবেগে কান্নায় ভেঙে পড়েন ব্রাজিলের নেইমার : এএফপি -
পুরো ৯০ মিনিট কোস্টারিকার বিপে একচেটিয়া প্রাধান্য বিস্তার করে খেলেও গোল করতে ব্যর্থ ব্রাজিল। কোনোভাবেই গোলের দেখা পাচ্ছিল না। নির্ধারিত সময়ে সবাই যখন ধরেই নিয়েছেন ম্যাচটি ড্র হবে ঠিক তখনই বদলে গেল দৃশ্যপট। ফিলিপে কুতিনহো ৯১ মিনিটে গোল করলেন। শেষ বাঁশি বাজার আগে এবারের বিশ্বকাপে নিজের প্রথম গোলটিও পেয়ে গেলেন নেইমার। তাতে সব শঙ্কা ও প্রতিরোধ ভেঙে তিতের দল ২-০ গোলে কোস্টারিকাকে হারিয়ে এক পা দিয়ে রাখল চূড়ান্ত পর্বে।

ফিফা র‌্যাঙ্কিংয়ে ২ নম্বরে থাকা ব্রাজিলের চেয়ে ২১ ধাপ পিছিয়ে ২৩ নম্বরে থাকা কোস্টারিকার ড্রই ছিল জয়ের সমান; যে কারণে গতকাল সেন্ট পিটার্সবার্গে ‘ই’ গ্রুপের ম্যাচে কোস্টারিকা পণ করেই মাঠে নেমেছিল। অবশ্য সেলেকাওদের তারা নির্ধারিত সময় পর্যন্ত সেই চ্যালেঞ্জেটাই ধরে রেখেছিল। ব্রাজিলের প্রায় হোঁচট খাওয়ার দশা। নেইমার, কুতিনহো, জেসুস, পোলিনহো, উইলিয়ান এবং বদলি হিসেবে নামা কস্তা, ফিরমিনোরা মরিয়া হয়েও গোলের দেখা পাচ্ছিলেন না। শেষ পর্যন্ত সব বন্ধন খুলে যায় অতিরিক্ত সময়ে। ভাঙল কোস্টারিকা বাধা। দ্বিতীয়ার্ধের ইনজুরি টাইমে ৯০+১ মিনিটে ফিলিপে কুতিনহো ও ৯০+৭ মিনিটে নেইমারের ল্যভেদে জয় নিয়ে মাঠ ছেড়েছে ব্রাজিল।

ব্রাজিলের একের পর এক আক্রমণ, বিপরীতে কোস্টারিকার প্রতিরোধের দেয়াল, সঙ্গে ভিডিও অ্যাসিস্ট্যান্ট রেফারির (ভিএআর) সিদ্ধান্তে ব্রাজিলের পেনাল্টি বাতিল- সেন্ট পিটার্সবার্গের উত্তেজনা ছড়ানো ম্যাচে সব কিছুরই দেখা মিলল। রণাত্মক কোস্টারিকার হৃদয় ভেঙে ইনজুরি টাইমে উৎসবে মাতল ব্রাজিল। নির্ধারিত সময় শেষে (৯০+১) ইনজুরি টাইমে মার্সেলোর ক্রস ফিরমিনোর হেড হয়ে আসে গাব্রিয়েল জেসুসের কাছে। ম্যানচেস্টার সিটি স্ট্রাইকার বলটা ঠিকমতো নিয়ন্ত্রণে নিতে পারেননি। সেটা দ্রুতগতিতে এগিয়ে এসে পায়ের ওপরের দিকের অংশের শটে জালে জড়িয়ে দেন কুতিনহো (১-০)। কেইলর নাভাসের দেয়াল ভেঙে উল্লাসে মাতে ব্রাজিল। এরপর (৯০+৭) দগলাস কোস্তার ক্রস ছোট বক্সের সামনে থেকে বাঁ পায়ের টোকায় ব্যবধান দ্বিগুণ করেন পিএসজি ফরোয়ার্ড নেইমার (২-০)।

এর আগে ১৩ মিনিটে কনকাকাফ অঞ্চলের দলটি পেয়েছিল সবচেয়ে ভালো সুযোগ। ক্রিশ্চিয়ান গাম্বোয়ার চমৎকার ক্রস বক্সের ভেতর ফাঁকায় পান বোরগেস। শটও করেন দেপোর্তিভো লা করনা মিডফিল্ডার, তবে পোস্টে রাখতে পারেননি। ২৫ মিনিটের পর থেকে দেখা যায় ব্রাজিলের আসল রূপ। ২৬-৩০ এই চার মিনিটে কাঁপিয়ে দেয় তারা প্রতিপরে রণ। ২৬ মিনিটে অফসাইডের কারণে একটি গোল বাতিল হয়। ২৭ মিনিটে কুতিনহোর বাড়ানো বল নিয়ন্ত্রণে নিয়ে রিয়াল মাদ্রিদ গোলরককের বাধা পেরোতে পারেননি পিএসজি তারকা নেইমার।

বিরতি থেকে ঘুরে এসে আরও আক্রমণাত্মক ব্রাজিল। এগিয়ে যাওয়ার সুযোগও হয় ৪৯ মিনিটে। কিন্তু বাধা হয়ে দাঁড়ায় ক্রসবার। ফাগনেরের ক্রস হেড করেছিলেন জেসুস, ম্যানচেস্টার সিটি স্ট্রাইকারের হেড কাঁপিয়ে দেয় ক্রসবার। ৫৭ মিনিটে আবার হতাশা। নেইমারের শট রুখে দেন নাভাস। ৫৯ মিনিটে একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি। এবার শটটি ছিল কুতিনহোর। ৭২ মিনিটে কোস্টারিকার ভুলে বল পেয়ে যান নেইমার।

ফাঁকা রণ ও নাভাস গোললাইন থেকে এগিয়ে থাকায় বক্সের বাইরে থেকে জোরালো শট বারের বাইরে দিয়ে উড়ে যায়। ৭৮ মিনিটে বক্সেও ভেতর নেইমারকে ফেলে দেয়ায় রেফারি বিয়ন কুইপার্স পেনাল্টির বাঁশি বাজান। সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ করেন কোস্টারিকার খেলোয়াড়েরা। শেষ পর্যন্ত ভিডিও অ্যাসিস্ট্যান্ট রেফারিতে (ভিএআর) বাতিল হয় পেনাল্টি। তাতে আটকে থাকেনি তিতের শিষ্যরা। ইনজুরি টাইমে সফল হয় পাঁচবারের বিশ্ব চ্যাম্পিয়নরা।

 

 


আরো সংবাদ



premium cement