২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫
`

কেন দলকে জেতাতে পারলেন না সালাহ

এই কিকেই বিশ্বকাপে নিজের প্রথম গোলটি করেন সালাহ - ছবি : সংগ্রহ

ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগে গোলের ফোয়ারা ছোটানো মিসরীয় সুপারস্টার মোহাম্মাদ সালাহ নিজের বিশ্বকাপ অভিষেকটা স্মরণীয় করে রাখতে তো পারলেনই না, উল্টো এক ম্যাচ খেলেই শুনতে পেলেন তার দেশের বিদায় ঘণ্টা। পুরো নব্বই মিনিট মাঠে থেকেও এই ম্যাচে দলকে জেতাতে পারলেন না সালাহ। প্রথম ম্যাচ হারা মিসর তাই টানা দ্বিতীয় পরাজয় নিয়ে(৩-১) বিদায় নিশ্চিত করলো বিশ্বকাপ থেকে। অলৌকিক কিছু না ঘটলে সৌদি আরবের বিরুদ্ধে তাদের শেষ ম্যাচটা হবে নিছক আনুষ্ঠানিকতার।

উরুগুয়ের বিরুদ্ধে প্রথম ম্যাচে ইনজুরির কারণে মাঠে নামতে পারেননি সালাহ। সেই ম্যাচে ভালো খেলেও গোল করতে না পারার কারণে হেরে গিয়েছিলো মিসর। দ্বিতীয় ম্যাচে রাশিয়ার বিরুদ্ধে গোল মেশিনকে মাঠে পেয়ে আশায় বুক বেধেছিলো ভক্ত-সমর্থকরা। কিন্তু কেন পারলেন না সালাহ?

এই প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে গেলে পাওয়া যাবে অন্তত দুটি গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্ট। গতকাল খেলা যারা দেখেছেন তারা জানেন যে, সালাহর সাথে খেলায় তাল মেলাতে পারেনি তার সতীর্থরা। ইউরোপের গতিময় ফুটবলে অভ্যস্ত এই লিভারপুল তারকা অল্প জায়গার মধ্যে যেভাবে দ্রুতগতিতে পাসিং করেছেন সেগুলো রিসিভ করতে পারেননি তার টিমমেটরা। কখনো দেখা গেছে সালাহর দেয়া পাস রিসিভ করলেও আবার ফিরতি পাস দেয়ার আগেই তাদের ঘিরে ঘরেছে রাশিয়ার ডিফেন্ডাররা। বল চলে গেছে রুশদের পায়ে।

প্রতিপক্ষের ডি-বক্সের সামনে থাকলে সেখানে যে কোন স্ট্রাইকারকে ঘিরে থাকেন কয়েকজন ডিফেন্ডার। সেখানে অল্প জায়গার মধ্যে পাসিং কিংবা ডজ দিয়ে বল নিয়ে এগিয়ে যেতে হয়। এই জায়গাটিতেই ধরা খেয়েছে মিসর। মোহাম্মাদ সালাহর খেলার ধরণ হচ্ছে তিনি কখনোই পায়ে বল জমিয়ে রাখেন না, পাওয়া মাত্র পাস দিয়ে আবার ফাঁকা জায়গায় চলে যান ফিরতি পাস পাওয়ার জন্য। কিন্তু সালাহর দলের অন্য ফরোয়ার্ডরা দ্রুত গতির এই ধারা সামলে উঠতে পারেনি। শুধুমাত্র বদলি খেলোয়াড় হিসেবে মাঠে নামা আমর ওয়ারদা কিছুটা সঙ্গ দিতে পেরেছেন সালাহকে।

ইউরোপের ক্লাব ফুটবলে খেলার কারণে গতিময় ফুটবল খেলার সাথে সালাহ যতটা অভ্যস্ত হয়েছেন, মিসরের অন্য ফুটবলাররা তার ধারে কাছেও কেউ নন। তাই রাশিয়ার ডি-বস্কে হানা দিয়েও তারা গোল আদায় করতে পারেনি। বিপরীতে রাশিয়ার খেলা ছিলো গতিময়। মাঝমাঠে তাদের দখল ছিলো বলের ওপর। আাবার মূহুর্তের মধ্যে বল পেয়ে আক্রমণে চলে গিয়েছে তারা। শেষ দুটি গোল হয়েছে চোখের পলকে, মিসরীয়রা কিছু বুঝে ওঠার আগেই। এই গতির কাছেই হেরে গেছে মিসর। তারা সাধারণত সাজিয়ে গুছিয়ে আক্রমণে যেতে অভ্যস্ত। কিন্তু ততক্ষণে রাশিয়ার ডিফেন্স দখল করে থাকে ৫-৬ জন খেলোয়াড়।

দীর্ঘ ইনজুরির পর মাঠে নেমে সালাহ এই ম্যাচে কতটা ফিট ছিলেন সেই প্রশ্নও থেকে যায়। অনেকেই বলছেন, ডু অর ডাই ম্যাচ না হলে হয়তো এই ম্যাচেও মাঠে নামা হতো না সালাহর। তার পা থেকেও জাদুকরী কোন ক্রীড়া নৈপুণ্য দেখা যায়নি। মাত্র দুটি শট নিয়েছে রাশিয়ার পোস্ট লক্ষ্য করে। তার একটি গেছে সাইডবার ঘেঁষে, আরেকটি অনেক দূর দিয়ে। দুবার বল নিয়ে ঢুকেছেন ডি-বক্সে, তার একটিতে তাকে ফাউল করেছে রাশিয়া। পেনাল্টি পেয়েছে মিসর। সেই পেনাল্টি থেকেই সালাহ করেছেন বিশ্বকাপে নিজের প্রথম গোল। তাই সালাহ মাচ খেলার জন্য পুরোপুরি ফিট ছিলেন কিনা এমন প্রশ্নেরও অবকাশ থেকে যায়।


আরো সংবাদ



premium cement