২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৭ বৈশাখ ১৪৩১, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫
`

আর্জেন্টিনাকে হারানোর শাস্তি?

আর্জেন্টিনাকে হারানোর শাস্তি? - ছবি : সংগৃহীত

জার্মানির বিপক্ষে মেক্সিকোর জয়ের সাথে সাথে কেঁদেই ফেললেন এক আর্জেন্টিনার নারী সাংবাদিক। তার এই কান্না আনন্দ মিশ্রিত। সাথে নিজে না পারলেও অন্যকে দিয়ে প্রতিশোধ নেয়ার সামিল। অনেকটা নিজের নাক কেটে অন্যের যাত্রা ভঙ্গ করার মতো। নিজেদের সামর্থ্য নেই কিন্তু অন্যজনতো পেরেছে। মনে হয় এই বলে সান্ত্বনা। অ্যাঞ্জেলিনা নামের এই সাংবাদিকের। তার মতে, ‘এটা আমাদের গত বিশ্বকাপের ফাইনালে হারের বদলা।’এই জার্মানির বিরুদ্ধে আর্জেন্টিাইনদের ক্ষোভের শেষ নেই। ১৯৮৬ সালে পশ্চিম জার্মানিকে হারিয়ে আর্জেন্টিনা বিশ্বকাপ জিতলেও পরে চারবার এই ইউরোপিয়ান দেশের কারণে তাদের শিরোপা জেতা হয়নি । এর মধ্যে দু'বার ফাইনালে হেরে স্বপ্ন ভঙ্গ। তা ১৯৯০ সালে ও ২০১৪ পর্যন্ত। বিশ্বকাপ ফুটবলে চমৎকার একটা কাকতালীয় বিয়ষ আছে এই ল্যাতিন দেশটির ক্ষেত্রে। তা ১৯৮২ সাল থেকে। যে দেশই আর্জেন্টিনাকে বিদায় করেছে, পরের ম্যাচেই তার বিদায়। এবার কী তাহলে জার্মানির পালা!

গত বিশ্বকাপের ফাইনালে জার্মানির কাছে ০-১-এ হেরেছিল মেসি-সাবেলার দল। সেই জার্মানি এবার প্রথম ম্যাচেই কিভাবে নাস্তানাবুদ হলো মেক্সিকোর কাছে। চার বছরের ব্যবধানে ঠিক বিশ্বকাপের পরের ম্যাচেই হার জার্মানির। হেরে এখন গত আসরের শিরোপা জয়ীদের বাদ পড়ার শঙ্কা।

১৯৮২ সালের স্পেন বিশ্বকাপে এভাবেই ম্যারাডোনার দলকে বিদায় করে পরের ম্যাচে করুণ পরিণতি বরন করতে হয়েছিল ব্রাজিলকে। দ্বিতীয় রাউন্ডের ম্যাচে আর্জেন্টিনার বিপক্ষে ৩-১ এ জয় ব্রাজিলের। কিন্তু পরের ম্যাচেই সেমিতে ইতালির কাছে ৩-২ গোলে হেরে বিশ্বকাপ পর্ব শেষ অপর ল্যাতিন দেশটির।

টানা তিন বিশ্বকাপের ফাইনাল খেলা জার্মানি ১৯৯০ সালে শিরোপার দেখা পায় অর্জেন্টিনাকে হারিয়ে। এই ‘অপরাধে’ তাদের আর পরের দুই আসরে ফাইনাল খেলা হয়নি। ১৯৯৪ সালে বিদায় কোর্য়াটার ফাইনালে বুলগেরিয়ার কাছে ২-১ গোলে হেরে। ১৯৯৮ তে তাদের বিদায় শেষ আটে । সেবার তাদের ৩-০-এ বিধ্বস্ত করে ক্রোয়েশিয়া। ২০০২ সালে ফাইনাল খেললেও ব্রাজিলের কাছে জার্মানদের হার ২-০-এ। গত বিশ্বকাপের শেষ ম্যাচে আর্জেন্টিনার বিপক্ষে জয় পাওয়া জার্মানরা এবার ঠিক পরের ম্যাচেই হারের কবলে। এটা কি চার বছর আগে পাওয়া জয়েরই ‘শাস্তি’?

১৯৯৪ সালে রুমানিয়া কোয়ার্টার ফাইনালে ৩-২তে হারিয়েছিল বাতিস্তুতা- ক্যানিজিয়ার দলকে। লক্ষ্যনীয় বিষয় পরের খেলাতেই রুমানিয়ানদের বিদায় সুইডেনের কাছে ৫-৪-এ টাইব্রেকারে। নির্ধারিত সময়ের খেলা ২-২-এ শেষ হয়েছিল। ১৯৯৮-এ একই পরিণতি নেদারল্যান্ডেস এর। কোর্য়াটারে তাদের জয় ২-১ এ। এরপর তাদের সেমিতে ব্রাজিলের কাছে ধরাশায়ী হওয়া টাইব্রেকারে ৪-২-এ। ১-১-এ শেষ হয় ১২০ মিনিটের খেলা। ২০০২ সালে বাতিস্তুতা, ওর্তেগা ও হারনান ক্রেসপোদের প্রথম রাউন্ড থেকে বিদায় করে সুইডেন। জয়ের বদলে ওই ম্যাচে ১-১-এ ড্র করেছিল কোচ মার্সেলো বিয়েলসার আর্জেন্টিনা। মজার ব্যাপার হলো, পরের খেলাতেই অর্থাৎ দ্বিতীয় রাউন্ডেই সুইডেনকে বাড়ি পাঠিয়ে দেয় সেনেগাল। ২-১-এ ম্যাচ জয় আফ্রিকানদের।

২০০৬ ও ২০১০-এ আর্জেন্টিনার কোয়ার্টার ফাইনালে হার জার্মানির কাছে হেরে। প্রথমবার ১-১-এ ১২০ মিনিট শেষ হওয়ার পর টাই্রবকারে ৪-২ এ। পরেরবার কোচ ম্যারাডোনার দল ৪-০-এ উড়ে যায়। দুই বারেই জার্মানির বিদায় হয়েছিল পরের খেলায় মানে সেমিতে হেরে। ২০০৬ সালে ইতালির কাছে ২-০-এ কাবু হয়ে এবং ২০১০-এ স্পেনের কাছে ১-০-তে মাথা নত করে মাঠ ছেড়ে।এবার কি জার্মানরা সেই বৃত্তেই আছে? না কি এই অদ্ভ’ত বিষয়টি দূর করতে পারবে?

১৯৯০ সালে আগেরবারের বিশ্বচ্যাম্পিয়ন আর্জেন্টিনাকে ১-০তে হারিয়ে কি চমকই না দেখিয়েছিল ক্যামেরুন। ম্যারাডোনার দলের অবশ্য শেষ পর্যন্ত ফাইনাল পর্যন্ত যাওয়া হয়েছিল। আর ক্যামেরুন পৌঁছেছিল কোর্য়াটার পর্যন্ত। সেই ক্যামেরুন এরপর আর নক আউট পর্বে যেতে পারেনি বিশ্বকাপে। গ্রুপ পর্বেই ইতি। এবারতো রাশিয়ার টিকিটই পায়নি এই আফ্রিকানরা।

তবুও টেনশনে সুইডেন

গ্রুপ পর্বের প্রথম ম্যাচে জয় মানে নক আউট পর্বের দিকে এক পা দিয়ে ফেলা। সে কাজই করে ফেলেছে ‘এফ’ গ্রুপের দল মেক্সিকো ও সুইডেন। অন্য দিকে বিপদে জার্মানি ও দক্ষিণ কোরিয়া। প্রত্যেকেরই এখন দু’টি করে ম্যাচ বাকি। তবে এক ম্যাচে জিতে মেক্সিকো কিছুটা নিশ্চিত হলেও বেশ টেনশনে সুইডেন। তিন পয়েন্টে তাদের ছাড়পত্র মিলবে না দ্বিতীয় রাউন্ডে যাওয়ার। অরো তিন পয়েন্ট লাগবে। কপাল ভাালো থাকলে ৪ পয়েন্টে পরের ধাপে যাওয়া হতে পারে। কিন্তু সুইডেনের তো নিশ্চয়তা নেই পরের দুই খেলা থেকে অন্তত এক পয়েন্ট পাওয়ার। কারণ তাদের দুই প্রতিপক্ষ শক্তিশালী জার্মাানি এবং মেক্সিকো। তাই দক্ষিণ কোরিয়ার বিপক্ষে জয়ের পর পরের দুই ম্যাচ নিয়ে টেনশন করতে দেখা গেছে সুইডেনের ফুটবলার আলবিন একডাল, পনথুস জানসন, লর্ড উইগ অগাস্টিনসনদের।

তাদের একটাই বক্তব্য, কোরিয়াকে আমরা হারাতে পেরেছি ঠিকই কিন্তু জার্মানি ও মেক্সিকোর বিপক্ষে জয় পাওয়াটা বেশ কঠিন। দুই দলই বেশ ভালো দল। ডিফেন্ডার জানসনের মতে, ‘আমাদের শুরুটা ভালো হয়েছে। এমন শুরু সবাই চায় গ্রুপের প্রথম ম্যাচে। কিন্তু পরের রাউন্ডে যেতে আমাদের অন্তত একটি জয় পেতে হবে জার্মানি বা মেক্সিকোর বিপক্ষে। দুই দলই টাফ। তাই বলতে পারছিনা জয়ের কথা।’ মিক্সড জোনে মিডিয়ার সাথে কথা বলা অন্য ফুটবলার হলেন কার্ল গুস্তাভ সেভেনসন। তার বক্তব্য, গ্রুপটা কঠিন করে দিয়েছে মেক্সিকো। জার্মানদের বিপক্ষে তাদের জয় পাল্টে দিয়েছে চিত্র। আমি বিস্মিত হয়েছি মেক্সিকানদের পারফরম্যন্সে। আসলে জার্মানি মনে করেছিল তারা সহজে পার পেয়ে যাবে। কিন্তু মেক্সিকোর জয় এখন তাদেরই বিপদ বাড়িয়ে দিয়েছে।

মিডফিল্ডার আলবিন একডালের মতে, ‘মেক্সিকোর কাছে হারলেও জার্মানি এখন বিশ্বের এক নাম্বার দল। সুতরাং তাদের বিপক্ষে তিন পয়েন্ট পেতে হলে সব সুইডিশ ফুটবলারকে শতভাগ দিয়ে খেলতে হবে। ভুলে গেলে চলবেনা বর্তমান চ্যাম্পিয়নদের এখন বাঁচা মরার লড়াই। তারাও জয়ের মরিয়া চেষ্টা চালাবে আমাদের বিপক্ষে।’ এরপরই তিনি শোনান আশার বাণী। ‘আমাদের ডিফেন্স লাইন ভালো। কোরিয়ানরা তো সুযোগই পায়নি আমাদের সাথে। তবে জার্মানির আক্রমণভাগও ভালো। অন্য দিকে প্রথম ম্যাচ জিতে মেক্সিকানরা প্রমাণ করেছে তারা কতটা শক্তিশালী।’ একই বক্তব্য অগাস্টিনসনেরও।

দক্ষিণ কোরিয়ার বিপক্ষে ম্যাচ প্রসঙ্গে ডিফেন্ডার এমিল ক্রাফত জানান, আমাদের আরো ২/৩ গোল বেশি দেয়া উচিত ছিল। তবে পেনাল্টি নিয়ে কোনো সন্দেহ নেই। তার ও চিন্তায় জার্মানির বিপক্ষে ২৩ জুনের ম্যাচ নিয়ে। বলেন, ‘যদিও জার্মানি এখন চাপে আছে। আমরা এই সুযোগই কাজে লাগাতে চাই।’

 


আরো সংবাদ



premium cement
শেখ হাসিনা সব প্রতিবন্ধকতা উপড়ে ফেলে দেশকে এগিয়ে নিয়ে চলেছেন: পররাষ্ট্রমন্ত্রী গাজায় ইসরাইলি গণহত্যা বন্ধে বিশ্ববাসীকে সোচ্চার সৌদি আরবে সড়ক দুর্ঘটনায় আহত ব্যক্তির মৃত্যু নীলফামারীতে তিন হাজার ১৭০ চাষির মাঝে বিনামূল্যে কৃষি উপকরণ বিতরণ কারাগারে কয়েদির মৃত্যু উজ্জ্বল হত্যার বিচার দাবিতে সরিষাবাড়ীতে মানববন্ধন পাবনায় দুই গ্রুপের সংঘর্ষে নিহত ১ আহত ২১ খাবারের সন্ধানে বসতবাড়িতে হরিণ, মহামায়ায় অবমুক্ত সিঙ্গাপুর প্রবাসী ফিরোজ মাহমুদের লাশ দেশে ফিরেছে ফরিদপুরে ট্রেনে কাটা পড়ে মানসিক ভারসাম্যহীন যুবকের মৃত্যু গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারে সব ধর্মের মানুষকে এগিয়ে আসতে হবে: ড. সুকোমল বড়ুয়া

সকল