২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৭ বৈশাখ ১৪৩১, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫
`

কতটা শক্তিশালী দল তিউনিসিয়া

তিউনিসিয়ার ফুটবল দল - ফাইল ছবি

বিশ্বকাপে আজ ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে মাঠে নামবে উত্তর আফ্রিকার দল তিউনিসিয়া। ১২ বছর পর আবার বিশ্বকাপ ফুটবলে ফেরত এসেছে তিউনিসিয়া; কিন্তু তাদের এই বিশ্বকাপে ফেরার পথটি খুব একটা সহজ ছিল না। কোচ হেনরিক কেসপারচজকে বরখাস্ত করে তিউনিসিয়া ২০১৭ আফ্রিকান কাপ অব নেশন্সের শেষ আট বা কোয়ার্টার ফাইনালের ম্যাচে পরাজিত হওয়ার পর।

নাবিল মাওলুফকে একই বছরের এপ্রিল মাসে নিয়োগ দেয়া হয় এবং এই কোচ তিউনিসিয়াকে অনেক চড়াই-উতড়াই পার করে রাশিয়া বিশ্বকাপের চূড়ান্ত পর্বে নিয়ে যান। সাধারণত তিনি দলকে ৪-২-৩-১ পদ্ধতিতে খেলিয়ে থাকেন, যেখানে ফুলব্যাকরাও আক্রমণ করার সাহস পান।

আল আহলি ক্লাবের আলি মাওলুফ, যিনি তিউনিসিয়া জাতীয় দলে ফুলব্যাক পজিশনে খেলেন, তার অবস্থান খুবই গুরুত্বপূর্ণ; কারণ আক্রমণ করতে তিনি কত দূর ওপরে উঠতে পারেন সেটাই দেখার বিষয়। মাঝমাঠে প্রভাব বিস্তার করে থাকেন বল কেড়ে নেয়া বা দখলে রাখার যোগ্যতাসম্পন্ন দুই মিডফিল্ডার ফেরজানি শাসি এবং মোহাম্মদ আমনি বেন আমর। এ ছাড়া, তিউনিসিয়া দলের এম কে এন ইউসেফ মাসকানি, ওয়াহবি খাজরি এবং নাইম স্লিটি স্বাভাবিক নৈপুণ্য বা দক্ষতা প্রদর্শন করেন। মাসকানি কাতার লিগে খেলে থাকেন।

তিউনিসিয়ার মতো দলের বিচারে এ ফুটবলার অসাধারণ প্রতিভাধর এবং প্রায়ই দলকে একাই বহন করে নিয়ে যান। কোচ মাঝে মাঝে আক্রমণাত্মক দলগুলোর বিপক্ষে ৪-৩-২-১ পদ্ধতিতে খেলিয়ে থাকেন। সে সময় ডিফেন্সিফ মিডফিল্ডার গাইলেনে গালিলিকে আরো বেশি গুরুত্ব বা দলের কৌশলে বেশি যুক্ত করা হয় খাজরি এবং স্লিটির তুলনায়।

তারকা খেলোয়াড় : ইউসেফ মাসকানি। এই ২৭ বছর বয়সী অ্যাটাকিং মিডফিল্ডার তিউনিসিয়া ফুটবল দলের আক্রমণভাগ ও মাঝমাঠের মাঝে সমন্বয় করে থাকেন। এই ফুটবলারকে পেতে ফ্রান্সের বিভিন্ন ক্লাব অফার দিলেও শেষ পর্যন্ত কাতারের অলস্টার লিগে আল ডুহালির সাথে ১১ মিলিয়ন ইউরোর বিনিময়ে চুক্তিবদ্ধ হন।
তরুণতুর্কি : নাইম স্লিটি তিউনিসিয়ার প্রতিভাময় ফুটবলার। তিনি ফ্রেঞ্চ লিগ ওয়ানে দিজনের হয়ে খেলতে গিয়েছিলেন, কিন্তু সেখান থেকে ধারে লিলের কাছে খেলতে পাঠানো হয়।
কোচ : নাবিল মালাওল। এই সাবেক তিউনিসিয়ান ফুটবলার বেশ কয়েক দিন দলের সাথে সহকারী কোচ হিসেবে কাজ করেছেন যখন তিউনিসিয়া ২০০৪ সালে ফরাসি কোচ রজার লেমেরের অধীনে আফ্রিকান কাপ অব নেশন্সের শিরোপা জয় করেন।

স্মরণীয় মুহূর্ত : ফ্রান্স থেকে স্বাধীন হয়ে তিউনিসিয়া ১৯৭৮ সালে স্বাধীন দেশ হিসেবে আর্জেন্টিনায় বিশ্বকাপ ফুটবলে অংশগ্রহণ করে। নিজেদের প্রথম বিশ্বকাপে তিউনিসিয়া মেক্সিকোর বিপক্ষে ৩-১ গোলে জয়লাভ করে।

আরো পড়ুন : প্রথম ম্যাচেই কিছু করে দেখাতে চায় জাপান
দলের তারকা মিডফিল্ডার হামেস রদ্রিগুয়েজের ইনজুরি নিয়ে দু:শ্চিন্তায় রয়েছে কলম্বিয়া। আর সেই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে এশিয়ান পরাশক্তি জাপান প্রথম ম্যাচেই নিজেদের প্রমাণ করতে চায়। কাল গ্রুপ-এইচ’র প্রথম ম্যাচে সারানাস্কে এই দুই দল তাদের বিশ্বকাপ মিশন শুরু করতে যাচ্ছে।
বিশ্বকাপ শুরুর মাত্র ৭১ দিন আগে কোচ ভাহিদ হালিহোজিকের বরখাস্ত করা সত্বেও সমলোচকদের সন্দেহকে উড়িয়ে দিয়ে জাপান এই ম্যাচে কলম্বিয়ার থেকে পূর্ণ তিন পয়েন্ট আদায় করতে বদ্ধ পরিকর।

গত ফেব্রুয়ারিতে বাম পায়ের কাফ ইনজুরিতে আক্রান্ত হয়েছিলেন ২০১৪ ব্রাজিল বিশ্বকাপের সর্বোচ্চ গোলদাতা হামেস। আর সেই সমস্যা থেকে এখনো পুরোপুরি সুস্থ হয়ে না ওঠায় কালকের ম্যাচে তার খেলা নিয়ে সন্দেহ রয়েছে। চার বছর আগে ব্রাজিল বিশ্বকাপে বায়ার্ন মিউনিখের এই এ্যাটাকিং মিডফিল্ডারের হাত ধরেই কলম্বিয়া কোয়ার্টার ফাইনাল নিশ্চিত করেছিল। ২৬ বছর বয়সী হামেস রাশিয়া বিশ্বকাপের বাছাইপর্বে ৬টি গোল করেছেন ও চারটিতে এ্যাসিস্ট করেছেন। এদিকে দলের আরেক মিডফিল্ডার উইলমার বারিয়সও ইনজুরির সাথে লড়ছেন।

২০০২ সালের বিশ্বকাপে কাজ করা জাপানের সাবেক কোচ ফিলিপ ট্রোসিয়ার মনে করেন বিশ্বসেরা কোচ হোসে মরিনহোর অধীনে খেললেও জাপান গ্রুপ পর্ব থেকে বিদায় এড়াতে পারবে না। বার্তা সংস্থা এএফপি’র সাথে সাক্ষাতকারে ট্রোসিয়ার বলেছেন, এপ্রিলে ভাহিদ হালিহোজিকের বরখাস্তের পরে জাপানের নক আউট পর্বে যাবার কোন সম্ভাবনাই নেই। এমনকি তারা যদি মরিনহো কিংবা আর্সেন ওয়েঙ্গারের অধীনেও খেলতে নামে তাহলেও তাদের সামনে এগিয়ে যাওয়া কঠিন হবে।

ভাহিদ হালিহোজিকের বরখাস্তের পরে তার স্থানে জাপানিজ এফএ টেকনিক্যাল পরিচালক আকিরা নিশিনোকে বিশ্বকাপ দলের দায়িত্ব দেয়। ৬৩ বছর বয়সী নিশিনোর জে-লিগের সমৃদ্ধ অভিজ্ঞতা রয়েছে। কিন্তু জাতীয় পর্যায়ে তিনি অনুর্ধ্ব-২০ ও অনুর্ধ্ব-২৩ দলের সাথে কাজ করেছেন। গ্রুপের অপর দুটি দল হলো রবার্ট লিওয়ানোদোস্কির পোল্যান্ড ও সেনেগাল। যে কারনে নক আউট পর্বে যেতে হলে জাপানের শুরুটা অবশ্যই ভাল হতে হবে। ট্রোসিয়ার বলেছেন, ‘আমাদের সাথে প্রথম ম্যাচের প্রতিপক্ষ পোল্যান্ড হলে তা বেশ কঠিন হতো। কিন্তু প্রথম ম্যাচে কলম্বিয়ার পরে দ্বিতীয় ম্যাচে প্রতিপক্ষ সেনেগাল। আমার কাছে মনে হয় অন্তত সেনেগালের সাথে আমাদের ভাল খেলা উচিত।’

চার বছর আগে গ্রুপ পর্বে কলম্বিয়ার কাছে ৪-১ গোলে বিধ্বস্ত হয়েছিল জাপান। ম্যাচটিতে কলম্বিয়ান ফরোয়ার্ড জ্যাকসন মার্টিনেজ দুই গোল করেছিলেন। সেই তিক্ত অভিজ্ঞতাকে পিছনে ফেলে অন্তত ভাল কিছু করার প্রত্যয়ে মাঠে নামবে এশিয়ান জায়ান্টরা। ঐ ম্যাচে জয়ী হয়ে কলম্বিয়া শেষ ১৬ নিশ্চিত করেছিল। অন্যদিকে একটি ম্যাচেও জয় না পাওয়া জাপানের বিদায় নিশ্চিত হয়েছিল।

জাপানীজ অধিনায়ক মাকোতো হাসেবে বলেছেন, ঐ ম্যাচের স্মৃতি আমরা মনে করতে চাই না। এরপর দীর্ঘ সময় অতিবাহিত হয়েছে। আমাদের গ্রুপে তিনটি প্রতিপক্ষই কঠিন। কিন্তু তারা কেউই বর্তমান চ্যাম্পিয়ন নয়। সে কারনেই আমাদেরও সুযোগ রয়েছে।

বিশ্বকাপের আগে প্রীতি ম্যাচে সুইজারল্যান্ড, ঘানা ও ইউক্রেনের কাছে পরাজিত হবার পরে জাপান প্যারাগুয়েকে ৪-২ গোলে পরাজিত করেছিল। ম্যাচটিতে মিডফিল্ডার তাকাশি ইনুয়ি দুই গোল করেন। অন্যদিকে মার্চে ফ্রান্সকে ৩-২ গোলে পরাজিত করার আগে মিসর ও অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে গোলশুন্য ড্র করেছে কলম্বিয়া।


আরো সংবাদ



premium cement