২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৭ বৈশাখ ১৪৩১, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫
`

বিশ্বকাপ দর্শকদের জন্য আজ ডাবল ধামাকা

বিশ্বকাপ দর্শকদের জন্য আজ ডাবল ধামাকা - ছবি : সংগ্রহ

সারা বিশ্বের কোটি দর্শকের জন্য বিশ্বকাপে আজ রয়েছে ডাবল ধামাকা। যার কারণে দর্শকরা রয়েছে মুখিয়ে। একই দিনে দুটি ফুটবল পরাশক্তি ব্রাজিল ও জার্মানি মাঠে নামছে আজ। একই দিনে আলাদা ম্যাচে দুটি শক্তিশালী দলের মাঠে নামার কারণে দর্শকরা রয়েছে মুখিয়ে।

রাত নয়টায় বর্তমান চ্যাম্পিয়ন জার্মানি খেলবে উত্তর আমেরিকার দেশ মেক্সিকোর বিরুদ্ধে। আর রাত ১২ টায় পাঁচবারের চ্যাম্পিয়ন ব্রাজিল খেলবে ইউরোপীয় অঞ্চলের দেশ সুইডেনের বিপক্ষে। দুই ম্যাচের চারটি দলই আজ প্রথমবারের মতো মাঠে নামছে। ব্রাজিল ও জার্মানি এবারের বিশ্বকাপের টপ ফেভারিট দুটি দল। তাই দর্শকরা অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছে দলটির পারফরম্যান্স দেখতে।
জেনে নিন দুটি দলের সম্পর্কে
ব্রাজিল :
যখনই ব্রাজিলের দায়িত্ব নিলেন তিতে। মাত্র ২০ ম্যাচের ব্যবধানেই যেন একটি দল গা-ঝেড়ে নিজেকে পরিষ্কার করে উঠল। এক অসম্ভব রূপকথার গল্প রচিত হলো তিতের হাতে। ছয় ম্যাচ শেষে ৯ পয়েন্ট নিয়ে পয়েন্ট টেবিলের ছয়ে ধুঁকতে থাকা ব্রাজিল যেন তিতের অধীনে পেল এক সঞ্জীবনী শক্তি, যা দলটিকে এমন প্রাণ এনে দিলো যে, বাছাই পর্ব শেষে সবার ওপরে তারা এবং বিশ্বকাপও নিশ্চিত করে তিতের দল ৩১ দলের মধ্যে সবার আগে প্রায় তিন-চার ম্যাচ হাতে রেখেই এবং বিশ্বকাপ বাছাই পর্বে দক্ষিণ আমেরিকার ইতিহাসে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ পয়েন্ট নিয়ে। যেন তিতে আলাদিনের জাদুর চেরাগ পেয়েছেন এবং তাতেই সব কিছু বদলে গেছে।

এই পরিবর্তনের রহস্য হলো ব্রাজিল তার খেলায় নিজেদের পুরনো ধারাটি নিয়ে এসেছে। নিজেদের শেকড়ের কাছেই ফিরে গেছে তিতে ও নেইমারের ব্রাজিল। আক্রমণাত্মক ফুটবল এবং সাম্বা নৃত্য যাদের রক্তে মিশে আছে, তারা যেন স্থবির হয়ে গিয়েছিল দুঙ্গার অধীনে, স্কোলারি এসেও খেলার ধরনে নিজস্বতা আনেননি। তিতে এসে সেই স্থবিরতা কাটিয়ে নিজেদের পুরনো ধারায় ফেরত গেছেন। তিতে দলকে ৪-১-৪-১ পদ্ধতিতে খেলিয়ে থাকেন এবং সতর্কতার সাথে লক্ষ করেন তার দলের হয়ে কোন খেলোয়াড়টি ক্লাবের হয়ে কতটুকু শক্তি মাঠে ব্যয় করেছেন এবং তার পারফরম্যান্সের অবস্থা কী।

নেইমারকে আক্রমণভাগের বাম পাশে বেশ ভালোভাবেই ফিট করে দিয়েছেন তিতে এবং ক্যাসিমেরোকে আক্রমণভাগের একটু পেছনে জায়গা করে দিয়েছেন। গাব্রিয়েল জেজুসকে আক্রমণভাগের মাঝখানে নিয়ে এসেছেন। ফুলব্যাক দানি আলভেজ ও মার্সেলো আছেন সেরা ফর্মে। তাদের থেকে সেরাটা বের করে নিচ্ছেন তিতে। রেনাটো অগাস্টো আরো একজন ব্রাজিলীয় ফুটবলার আছেন দারুণ ফর্মে। তিতের আরো একজন প্রিয় খেলোয়াড় পাওলিনহো নিজেকে চাইনিজ লিগ থেকে লা-লিগায় বার্সেলোনার হয়ে বেশ ভালোভাবেই মানিয়ে নিয়েছে। যদিও প্রথম দিকে যে গোলের ধারা ছিল তার সেটি কমে এসেছে, কিন্তু খেলার ধার বজায় আছে।

সব কিছু ভালোমতো চলছে তিতে ও ব্রাজিলের জন্য, কিন্তু নিয়মিত একাদশ এবং পরিচিত কিছু মুখ ছাড়া ব্রাজিলের বেঞ্চের শক্তি তেমন একটা আছে বলে মনে হয় না। এটাই সবচেয়ে বড় চিন্তার বিষয়। দলের সবচেয়ে বড় তারকা নেইমার পায়ের ইনজুরি কাটিয়ে উঠেছেন মাত্রই। চেলসির উইলিয়ান ও লিভারপুলের ফারমিনহোও নিয়মিত সুযোগ পাচ্ছেন তিতের দলে। কিন্তু আবার সেই পুরনো চিন্তা কিছু বড় ক্লাবের বড় তারকা ছাড়া তিতের যেন অন্য বা ঘরোয়া খেলোয়াড়দের প্রতি তেমন একটা আস্থা নেই।
জার্মানি
জার্মানি যখন ইউরো ২০১৬-তে স্বাগতিক ফ্রান্সের বিপক্ষে সেমিফাইনালে পরাজিত হয়, তখন সমালোচকেরা আশঙ্কা করেছিল যে, জার্মানির সাথে কোচ জোয়াকিম লো-এর সম্পর্ক বুঝি শিগগিরই শেষ হয়ে যাবে। জোয়াকিম লো যুগের অবসান হবে, এটাই ছিল সবার ধারণা। কিন্তু সেই ধারণা ভুল প্রমাণিত হয়েছে। কিন্তু লো-এর অধীনে জার্মানি ঘুরে দাঁড়াল এবং বিশ্বকাপ বাছাই পর্বে প্রায় রেকর্ড করে নিজেদের গ্রুপ থেকে শীর্ষস্থান অর্জন করে চূড়ান্ত পর্ব নিশ্চিত করল।

বাছাই পর্বে ১০ ম্যাচের ১০ টিতেই জয়লাভ করে জার্মানি এবং বিশ্বকাপ বাছাই পর্বে ৪৩ গোলের ইউরোপিয়ান রেকর্ডটিতে ভাগ বসায়। ডাই ম্যানশেফটরা ইউরোতে ফ্রান্সের কাছে পরাজয়ের পর আর কোনো ম্যাচেই পরাজিত হয়নি। তাদের প্রতিপক্ষের জন্য ভয়ের আরো একটি কারণ হলো কনফেডারেশন কাপে জোয়াকিম লো বাহিনী তাদের নিয়মিত প্রায় সব খেলোয়াড়কে বিশ্রামে রেখে অনূর্ধ্ব-২৩ দলকে নিয়েই রাশিয়া গিয়েছিলেন এবং সেখান থেকে ট্রফি জয় করে ফিরলেন।

জেরেমি বোয়েটেং, ম্যাট হ্যামলস, ম্যানুয়েল নয়ার, মেসুত ওজিল, থমাস মুলার এবং মারিও গোটজের মতো খেলোয়াড়কে বিশ্রামে রেখে কনফেডারেশন কাপে খেলতে যাওয়া চাট্টিখানি কথা নয়। নতুন অনেক খেলোয়াড় জার্মানি খুঁজে পেয়েছে কনফেডারেশন কাপে। টিম ওয়ার্নার, লার্স স্টিনডল এবং লিওন গোটজেকা। কনফেডারেশন কাপে নিজেদের প্রতিভা দেখিয়ে এসব তরুণ জার্মান খেলোয়াড় বিশ্বকাপে নিজেদের স্থান পাওয়ার দাবি আরো জোরালো করেছেন। বিশেষ করে গোটজেকার দারুণ ফর্ম শালকার হয়ে বুন্দেস লিগায় জোয়াকিম লোকে ভাবতে বাধ্য করাবেন যে, সেন্ট্রাল মিডফিল্ড পজিশনে সেমি খেদিরার জায়গায় গোটজেকাকে একটু সুযোগ দেয়া যায় কি না।


আরো সংবাদ



premium cement