২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫
`

আজ মাঠে আলো ছড়াবেন তারা

বিশ্বকাপ
রাশিয়ার গোলরক্ষক ইগোর আকিনফিভ (বামে) ও সৌদি আরবের ফরোয়ার্ড ফাহাদ আল মুয়াল্লাদ (ডানে) - সংগৃহীত

বিশ্বকাপের উদ্বোধনী ম্যাচে আজ মাঠে নামবে স্বাগতিক রাশিয়া আর সৌদি আরব। বাংলাদেশ সময় রাত ৯টায় ম্যাচটি শুরু হবে। দুই দলের কয়েকজন খেলোয়াড় আলোচনায় আছে। ম্যাচে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবেন তারা। এরা হলেন রাশিয়ার গোলরক্ষক ইগোর আকিনফিভ। আর সৌদি আরবের ফাহাদ আল মুয়াল্লাদ।

আকিনফিভ : রাশিয়ার হয়ে এ পর্যন্ত ১০৪টি ম্যাট খেলেছেন গোলরক্ষক আকিনফিভ। দলের নেতৃত্ব দিবেন তিনি। ৩২ বছর বয়সী এই ফুটবলারকে রাশিয়ার একমাত্র বিশ্বমানের প্রতিভা বলে ধরা হয়। ২০০৪ সালে রাশিয়ার হয়ে অভিষেক হয় তার। এরপর একের পর এক দুর্দান্ত পারফরমেন্স দিয়ে যাচ্ছেন তিনি।

রাশিয়া স্কোয়াড :

গোলরক্ষক : ইগোর আকিনফিভ, ভ্লাদিমির গাবুলোভ, আন্দ্রে লুনেভ।

ডিফেন্ডার : ভ্লাদিমির গ্রানাত, ফেদোর কুদ্রাইয়াসহোভ, ইলা কুতেপোভ, আন্দ্রে সেমেনোভ, সের্গেই ইগনাশিভিচ, মারিও ফের্নান্দেস, ইগোর স্মোলনিকভ।

মিডফিল্ডার : ইউরি গাজিন্সস্কি, আলেকজান্দার গোলভিন, অ্যালান জিগোয়াভ, আলেকজান্দার রখিন, ইউরি জিরকভ, ডেলার কুজিয়াভ, রোমান জোবনিন, আনেকজান্দার সামিডোভ, আন্তন মিরানচুক, ডেনিস চেরিশিভ।

ফরোয়ার্ড : আর্টেম জুবা, আলেক্সি মিরানচুক, ফেদরে সমোলোভ।

ফাহাদ আল মুয়াল্লাদ : সৌদি আরবের মেসি বলা হয় ফাহাদ আল মুয়াল্লাদকে। দুরন্ত গতি আর দারুণ ফুটবল সামর্থ্যের কারণে এই নামে ডাকা হয় তাকে। খুব কম বয়সেই সবার নজরে পড়ে এই ফুটবল প্রতিভা। ছয় বছর বয়সে বার্সোলোনার ফুটবল অ্যাকাডেমি লা মাসিয়াতে যাওয়ার প্রস্তাব পান তিনি। কিন্তু তাতে যোগ না দিয়ে নিজ দেশের ক্লাব আল ইতিহাদের যুব উন্নয়ন কর্মসূচিতে অংশ নেন। এরপর দুর্দান্ত পারফরমেন্সের কারণে সৌদি আরবের ইতিহাসে প্রথম খেলোয়াড় হিসেবে লা লিগায় নাম লেখান মুয়াল্লাদ।

সৌদি আরব স্কোয়াড :

গোলরক্ষক : মোহাম্মদ আল হারাবি, ইয়াসির আল মুসাইলেম, আব্দুল্লাহ আল-মায়ুফ।

ডিফেন্ডার : মানসুর আল-হারবি, ইয়াসির আল-শাহরানি, মোহাম্মদ আল-ব্রেইক, মোতাজ হাওসায়ি, ওসামা হাওসায়ি, ওমর হাওশাসায়ি, আলি আল বুলাইহি।

মিডফিল্ডার : আব্দুল্লাহ আল খাইবারি, আব্দুল মালেক আল খাইবারি, আব্দুল্লাহ ওতায়েফ, তাইসির আল জসিম, হোসাইন আল মুগাহুই, সালমান আল ফরজ, মোহাম্মদ কানো, হাত্তান বাহেব্রি, সালেম আল দাওসারি, ইয়াহইয়া আল সেহরি।

ফরোয়ার্ড : মোহাম্মদ আল শাহলাওয়ী, মুহান্নাদ আসসিরি, ফাহাদ আল মুয়াল্লাদ।

 

আরো পড়ুন : রাশিয়া-সৌদি আরব, এগিয়ে কারা?

অবশেষে আজ পর্দা উঠতে যাচ্ছে বিশ্বকাপের ২১তম আসরের। উদ্বোধনী ম্যাচে আয়োজক রাশিয়ার প্রতিপক্ষ সৌদি আরব। বাংলাদেশ সময় রাত ৯টায় ম্যাচটি শুরু হবে। রেফারির বাঁশি বাজার সাথে সাথেই শুরু হবে বিউটিফুল গেম।

রাশিয়া ও সৌদি আরব বিশ্ব ফুটবলে তলানির দুটি দেশ। স্বাগতিক রাশিয়াকে বাছাই পর্বের কোনো ঝামেলা পোহাতে হয়নি। সরাসরি তারা অংশ নিচ্ছে বিশ্বকাপে। ফিফা র‌্যাঙ্কিংয়ে ৭০-এ থাকা স্বাগতিক রাশিয়াকে নিয়ে অনেক ফুটবল বিশেষজ্ঞই খুব একটা আকর্ষণ বোধ করতে চাচ্ছেন না। তাদেরকে বিশ্বকাপের সম্ভাবনায় নিচের দিকেই রাখা হচ্ছে কিন্তু স্বাগতিক দেশরা যে সবসময় বিশ্বকাপে চমক উপহার দেয় এটি কারো অজানা নয়। এই চমকের অপেক্ষা করছে এবারকার স্বাগতিক দেশ রাশিয়াও। উদ্বোধনী ম্যাচে তাদের প্রতিপক্ষও খুব একটা শক্তিশালী নয় বিশ্ব ফুটবলের বিবেচনায়। সৌদি আরব সর্বশেষ ফিফা র‌্যাঙ্কিংয়ে ৬৭ স্থানে অবস্থান করছে। সব হিসাব-নিকাশ মেলালে এই গ্রুপ থেকে দ্বিতীয় রাউন্ডে যাওয়ার ক্ষেত্রে এই দুটি দেশ পিছিয়ে আছে গ্রুপ এ’র আরো দুই প্রতিপক্ষ মিসর ও উরুগুয়ের তুলনায়।

কিন্তু বিশ্বকাপ ফুটবলে শেষ কথা বলে কোনো কিছু নেই। তাই রাশিয়া ও সৌদি আরব নিজেদের প্রথম ম্যাচে জয় লাভ করে শুভসূচনা করতে চায় বিশ্বকাপ ফুটবল ২০১৮তে। অবশ্য রাশিয়া ও সৌদি আরবের সর্বশেষ ম্যাচ কয়েকটি তাদের পক্ষে কথা বলছে না। তাদের মাঠের পারফরম্যান্স ছিল হতাশাজনক। রাশিয়া সর্বশেষ ছয়টি ম্যাচে মাঠে খুবই বাজে পারফরম্যান্স করেছে। চারটি পরাজয় এবং দুটি ড্রকে বিবেচনায় নিলে তাদেরকে নিয়ে কোনো উচ্চাশা পোষণ করার কথাও নয়। রাশিয়া নিজেদের সর্বশেষ জয়ের মুখটি দেখতে পায় অক্টোবর ২০১৭ সালে। দক্ষিণ কোরিয়ার বিপক্ষে দেশের মাটিতে তারা ৪-২ গোলে জয়লাভ করেছিল। অবশ্য প্রীতি ম্যাচ কখনোই একটি দেশের পুরো ফুটবল শক্তি প্রকাশ করে না। বিশ্বকাপের মতো বড় আসরে স্বাগতিক দেশ চমক দেখায় এই ধারণাই মূলত পূর্ব ইউরোপের দেশটির প্রধান ভরসা এবং এটিকে ঘিরেই তারা সামনের দিকে এগিয়ে যেতে চায়।

২০১৭ কনফেডারেশন কাপ এবং ইউরো ২০১৬তে রাশিয়া তেমন আহামরি কোনো কিছুই দেখাতে পারেনি। দুটি প্রতিযোগিতায়ই তারা গ্রুপ পর্ব থেকে বিদায় নিয়েছে। তাদের কোচ স্টানিসলাভ চেরচিসভের এই বিশ্বকাপে সবচেয়ে কম জয়, শতাংশের বিচারে মাত্র ২৬.৩। গোলরক্ষক এবং দলের অধিনায়ক ইগর আকিনফেভকে নিয়েই তাদের আশা ভরসা এবং দলের হয়ে তিনি সৌভাগ্য বয়ে আনবেন এমনটিই আশা করছে রাশিয়ানরা। সিএসকে মস্কোর এই গোলরক্ষক এই মওসুমে নিজেদের ঘরোয়া লিগে ২৮ ম্যাচের মধ্যে ১৮টিতেই কোনো গোল খাননি। স্বাগতিক দেশ এবং ২০১৮তে জয়বিহীন বছর এবং কনফেডারেশন কাপে তাদের হতাশাজনক খেলা তাদেরকে নিয়ে খুব একটা উচ্চাশা পোষণ করতে দিচ্ছে না। অবশ্য একটি দিক দিয়ে তারা কিছুটা সুবিধা পাবে। কারণ তাদের প্রতিপক্ষ সৌদি আরবও খুব একটা ভালো ফর্মে নেই। চেরচেসভ ৪-২-৩-১ ফরমেশনেই দলকে খেলাবেন এবং সর্বশেষ কয়েকটি ম্যাচে যে খেলোয়াড়রা ভালো ফর্মে ছিলেন তাদেরকেই একাদশে দেখার সম্ভাবনা বেশি।

সৌদি আরবও তাদের প্রতিপক্ষের তুলনায় মাঠের খেলায় খুব একটা এগিয়ে নেই। সবুজ বাজপাখিদের জন্য স্বাগতিক রাশিয়ার সাথে প্রথম ম্যাচটি হয়ে সুবিধাই হয়েছে। যাদের ফর্মও খুব একটা ভালো নয়। অবশ্য সাম্প্রতিক ফর্মের বিবেচনায় তারা স্বাগতিক রাশিয়ার তুলনায় কিছুটা এগিয়ে আছে। দুটি জয় এবং চারটি পরাজয় নিয়ে তারা এই বিশ্বকাপে এসেছে। তাদের জয় দুটি এসেছে গ্রিস এবং আলজেরিয়ার বিপক্ষে। জার্মানির বিপক্ষে তারা বেশ ভালো খেলেছে এবং একটুর জন্য বর্তমান বিশ্বচ্যাম্পিয়নরা ২-১ গোলে জয়লাভ করেছে।

সৌদি আরবের কোচ জুয়ান অ্যান্টনিও পিজ্জি তার দল নিয়ে একটু আদলবদল করতেই ভালোবাসেন। সর্বশেষ জার্মানির বিপক্ষে দলের সেরা স্ট্রাইকারকেই তিনি প্রথম একাদশে রাখেননি। আল শাহলেওয়াই নিজেই মনে হয় কিছুটা বিস্মিত হয়েছিলেন। অবশ্য বিশ্বকাপের উদ্বোধনী ম্যাচে তার খেলা নিশ্চিত। পিজ্জি দলকে ৪-১-৪-১ ফরমেশনে খেলাবেন। উদ্বোধনী ম্যাচে স্বাগতিক রাশিয়াকেই এগিয়ে রাখবে সবাই। কারণ সর্বশেষ দুই দলের মোকাবেলা হয়েছিল ১৯৯৩ সালে এবং সেই প্রীতিম্যাচে রাশিয়া ৪-২ গোলে জয়লাভ করেছিল। তাই বিশ্বকাপ ২০১৮-এর উদ্বোধনী ম্যাচে লুঝনিকি স্টেডিয়ামে স্বাগতিক দর্শকদের উচ্চাশা এবং সমর্থন নিয়ে রাশিয়াকেই সামনে এগিয়ে রাখা যায় এবং তাদের পক্ষেই ফলটি যাবে ২-১ এটিও অনুমান করা যায় অবশ্য সব কিছুই মাঠের পারফরম্যান্সের ওপর নির্ভর করছে।


আরো সংবাদ



premium cement