২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০, ১৭ রমজান ১৪৪৫
`

জার্মানির বাজারে বাংলাদেশের পাটের চা

- ছবি : সংগৃহীত

পাটের চা পান করেছেন কখনো? আমি এখন অবধি যাদের কাছে জিজ্ঞাসা করেছি, তাদের কেউই এমন চা আগে কখনো পান করার কথা মনে করতে পারেননি। তবে তাদের আগ্রহ আছে। আর সেই আগ্রহকে পুঁজি করে জার্মানিতে আসছে পাটের চা।

সম্প্রতি বাংলাদেশ থেকে জার্মানিতে দুই টন পাট পাতা আমদানি করা হয়েছে। ইউরোপে আনার জন্য সেটা আলাদাভাবে চাষ করা হয়েছে। খাদ্যপণ্য আমদানির ক্ষেত্রে ইউরোপীয় ইউনিয়ন এবং জার্মানি বেশ কিছু কড়া নিয়মকানুন মেনে চলে। যারা বাংলাদেশ থেকে পাটের পাতা আনছেন, তারা সেসব নিয়মকানুন মানার ক্ষেত্রে বেশ সচেতন মনে হলো।

স্টুটগার্টে বুধবার এক অনুষ্ঠানে বাংলাদেশের পাটমন্ত্রীর নেতৃত্বে জার্মানি সফর করা পাট রপ্তানি সম্পর্কিত এক প্রতিনিধি দল, জার্মানিতে বাংলাদেশের পাটের পাতা দিয়ে চা তৈরি করে বাজারজাত করা এক স্টার্টআপ আর জার্মান বিনিয়োগকারীদের দেখা মিলল। পাটমন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজী সেই অনুষ্ঠানে আশার কথা শোনালেন। মুক্তিযোদ্ধা এই রাজনীতিবিদ পাটের সোনালী অতীতের কথা স্মরণ করে জানিয়েছেন, স্বাধীনতা যুদ্ধের আগে তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের পাট থেকে ব্যাপক মুনাফা করেছিল পশ্চিম পাকিস্তান। যদিও সেই মুনাফার তেমন কোনো সুফল সেসময় বাঙালিরা পায়নি, তবে পাট পরিচিতি পেয়েছিল সোনালী আঁশ হিসেবে।

পরবর্তী সময়ে পলিথিনের প্রসার বাড়লে পাটের চাহিদা কমে যায়। তবে এখন আবার গোটা বিশ্বে পলিথিনবিরোধী আন্দোলন গড়ে ওঠায় পাটের সোনালী দিন ফিরে আসার সম্ভাবনা দেখছেন পাটমন্ত্রী। আর সেই সম্ভাবনার আলোকেই জার্মানি সফর তার। তিনি পাটজাত বিভিন্ন পণ্য আন্তর্জাতিক বাজারে ছড়িয়ে দিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে চান।

পাটের নানাবিধ ব্যবহারের একটি হতে পারে পাট পাতা থেকে তৈরি চা। যদিও এটি প্রচলিত অর্থে চা নয়, তবে ‘পাট চা' নামেই সেটি পরিচিতি পেতে শুরু করেছে। এটি মূলত পাটের পাতা দিয়ে তৈরি বিশেষ এক পানীয় যার নানাবিধ ভেজষ গুণাবলী রয়েছে। জার্মানিতে পাটের চা বাজারজাতের উদ্যোগ নিয়েছে ‘ইন্টারট্রোপ' নামের একটি স্টার্টআপ। এক বাংলাদেশি আর দুই জার্মান গড়েছেন এই প্রতিষ্ঠান, যারা পাট নিয়ে বড় স্বপ্ন দেখছেন।

প্রতিষ্ঠানটির প্রজেক্ট ম্যানেজমেন্ট কনসালটেন্ট মিজানুর রহমান জানালেন, তাদের প্রাথমিক লক্ষ্য হচ্ছে জার্মানির ঔষধের দোকানগুলোতে পাটের চা বিক্রি করা। ইতোমধ্যে কিছু দোকানে সেটি বিক্রি শুরুও হয়েছে। পাশাপাশি বিশেষায়িত চা বিক্রির দোকানগুলোতেও তারা পাটের চা বিক্রির ব্যবস্থা করতে চাচ্ছেন। সেলক্ষ্যে পাঁচটি ফ্লেভারে পাটের চা প্রস্তুত করেছে ইন্টারট্রোপ।

বলাবাহুল্য, জার্মানিতে ভেজষ চায়ের বেশ বড় বাজার রয়েছে। একজন জার্মান বছরে গড়ে সাড়ে সাতাশ লিটার কালো এবং সবুজ চা পান করেন। ৬৩টি দেশ থেকে চা আমদানি করে ইউরোপের এই দেশটি, যার মধ্যে ভারত শীর্ষস্থানে রয়েছে। ইন্টারট্রোপ আপাতত জার্মানির এই বিশাল বাজারে শুন্য দশমিক পাঁচ শতাংশ হিস্যা নেয়ার লক্ষ্য স্থির করেছে।

সামগ্রিকভাবে সেই লক্ষ্য অর্জন অসম্ভব মনে না হলেও অনুষ্ঠান থেকে কিছু প্রতিবন্ধকতার কথাও জানা গেল। বাংলাদেশ থেকে পাট পাতা আমদানির ক্ষেত্রে আমলাতান্ত্রিক জটিলতাকে এক সমস্যা হিসেবে দেখছেন আমদানিকারকরা। পাশাপাশি পাট চাষীদের সময়মত তাদের উৎপাদিত পণ্যের মূল্য শোধ করা না হলে তা আমদানি প্রক্রিয়ায় নেতিবাচক প্রভাব সৃষ্টি করতে পারে বলে মনে করেন তারা।

তবে এখন পর্যন্ত যে অগ্রগতি তাতে আশাবাদী হওয়াই যায়। বিশেষ করে সরকার এক্ষেত্রে সহায়তার হাত আরো প্রসারিত করলে পাটের চায়ের এক বড় বাজার হবে ইউরোপ। সেই ইঙ্গিত বেশ স্পষ্ট।


আরো সংবাদ



premium cement
রোহিঙ্গা ইস্যুতে মিয়ানমার সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে জাতিসঙ্ঘের প্রতিবেদন চৌগাছায় বাসচাপায় হেলপার নিহত ঢাবির কলা, আইন ও সামাজিক বিজ্ঞান ইউনিটে প্রথম হয়েছেন যারা স্বাস্থ্যমন্ত্রীর আশ্বাসে আন্দোলন স্থগিত ইন্টার্ন চিকিৎসকদের নিজ দেশে ৫ বছর পর ফিরল দিপক চট্টগ্রামে ৬ কিশোর গ্যাংয়ের ৩৩ সদস্য আটক শ্রমিকদের অধিকার আদায়ের জন্য সংগঠন মজবুত করতে হবে : শামসুল ইসলাম ইউরো ২০২৪’কে সামনে রেখে দল নির্বাচনে বিপাকে সাউথগেট ভারতীয় পণ্য বর্জনকে যে কারণে ন্যায়সঙ্গত বললেন রিজভী মাকে ভরণ-পোষণ না দেয়ায় শিক্ষক ছেলে গ্রেফতার প্রথম বাংলাদেশী আম্পায়ার হিসেবে আইসিসির এলিট প্যানেলে সৈকত

সকল