২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১, ১৪ শাওয়াল ১৪৪৫
`

বাড়ছে উত্তেজনা, ক্ষেপণাস্ত্র হামলার হুমকি রাশিয়ার

রুশ ক্ষেপণাস্ত্র - ছবি : সংগৃহীত

ইতিহাস থেকে শিক্ষা নিলেও ইতিহাসের পুনরাবৃত্তি ঠেকানো যায় না। এই প্রবাদ যে কতটা সত্যি তা ফের প্রমাণ করল রাশিয়া ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। দুই দেশের হঠকারি সিদ্ধান্তে ফিরেছে ‘কিউবান মিসাইল ক্রাইসিস’-য়ের ভয়াবহ দিনগুলো। ইউরোপ নতুন করে ক্ষেপণাস্ত্র মোতায়েন করলে পালটা হামলা চালানো হবে বলে আমেরিকাকে কড়া হুঁশিয়ারি দিয়েছেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন।

বুধবার, বাতিল আইএনএফ চুক্তি নিয়ে আমেরিকাকে তুলোধনা করেন পুতিন। তার অভিযোগ, জেনে বুঝেই ঠাণ্ডা লড়াইয়ের সময় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও সোভিয়েত ইউনিয়নের মধ্যে স্বাক্ষরিত চুক্তিটি থেকে বেরিয়ে এসেছে ওয়াশিংটন। আর মস্কোর কাঁধেই পালটা দায় চাপাচ্ছে ট্রাম্প প্রশাসন।

এদিন পুতিন বলেন, “আমি পরিষ্কার ভাষায় প্রকাশ্যে বলছি, যেকোনো মিসাইল মোতায়েনে আমাদের নিরাপত্তা বিঘ্নিত হলে পালটা হাতিয়ার মোতায়েন করা হবে। এবং প্রয়োজনে নির্দিষ্ট লক্ষ্যের বিরুদ্ধে তা ব্যবহারও করা হবে।”

তবে পুতিনের এই হুমকির তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছে আমেরিকা-সহ ন্যাটো দেশগুলো। রাশিয়ার সমস্ত অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছে ওয়াশিংটন। মার্কিন স্বরাষ্ট্রদপ্তর সাফ জানিয়েছে, কোনো নতুন ক্ষেপণাস্ত্র বানানো হচ্ছে না। আইএনএফ চুক্তি নস্যাৎ করে মিথ্যে তথ্য পরিবেশন করছে মস্কো।

উল্লেখ্য, সোভিয়েত আমলের শেষ নেতা মিখাইল গর্বাচেভ এবং মার্কিন প্রেসিডেন্ট রোনাল্ড রিগানের মধ্যে স্বাক্ষরিত হয়েছিল আইএনএফ চুক্তি। এই চুক্তির আওতায় পরমাণু অস্ত্র বহনে সক্ষম ভূমি থেকে নিক্ষেপযোগ্য ৫০০ কিলোমিটার থেকে ৫,০০০ কিলোমিটার পাল্লার সব ধরনের ক্রুজ মিসাইল নিষিদ্ধ করা হয়। এর রেশ ধরে অস্ত্রভাণ্ডার গড়ার প্রতিযোগিতায় রাশ টানা গিয়েছিল। আতঙ্ক কাটিয়ে স্বস্তির নিশ্বাস ফেলেছিল দু’টি মহাযুদ্ধের দুঃস্বপ্ন ভুলতে না পারা ইউরোপের মানুষ। ওই সময় বিভিন্ন পশ্চিমি দেশের রাজধানী লক্ষ্য করে মোতায়েন ছিল রুশ আণবিক অস্ত্রবাহী ক্ষেপণাস্ত্র। চুক্তির ফলে সেই সংকট থেকে মুক্তি মেলে।

কিন্তু ওই চুক্তিতে চীন-সহ অন্য কোনো দেশের ক্ষেত্রে এমন কোনো নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়নি। সম্প্রতি রাশিয়ার বিরুদ্ধে নয়া মিসাইল নির্মাণের অভিযোগ এনে এই চুক্তি থেকে সরে দাঁড়িয়েছে ট্রাম্প প্রশাসন। পালটা দিয়েছে মস্কোও। পাশাপাশি, ২০২১-এ এসটিএআরটি চুক্তির মেয়াদ শেষ হচ্ছে। এই টানাপোড়েনের জেরে ওই চুক্তির মেয়াদ বাড়া নিয়েও আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। রাশিয়া-আমেরিকার কাছে সর্বোচ্চ কতগুলো পারমাণবিক ক্ষেপণাস্ত্র থাকবে, তা নিয়েই ওই চুক্তি হয়েছিল।সব মিলিয়ে দুই আণবিক শক্তিধর দেশের মধ্যে ফের যুদ্ধের আশঙ্কা তৈরি হয়েছে।

এস-৪০০ ক্ষেপণাস্ত্র নিয়ে তুরস্ক ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে উত্তেজনা
জর্ডান নিউজ এজেন্সি

মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট মাইক পেন্স তুরস্ককে হুঁশিয়ার করে বলেছেন, আঙ্কারা সরকার যদি রাশিয়া থেকে এস-৪০০ ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবস্থা কেনে তাহলে ওয়াশিংটন অলসভাবে বসে থাকবে না। তিনি বলেন, তুরস্ক এ কাজ করলে ন্যাটো সামরিক জোটের অন্য সদস্যরা বিপদের মুখে পড়বে।

মাইক পেন্স এ ইস্যুটি জার্মানির মিউনিখ শহরে অনুষ্ঠিত নিরাপত্তা সম্মেলনে তুলেছেন। তিনি বলেন, এ চুক্তি বাতিল করার জন্য আমেরিকা তুরস্কের ওপর চাপ অব্যাহত রাখবে। আমাদের মিত্ররা যদি প্রাচ্য থেকে অস্ত্র কেনার বিষয়ে ঝুঁকে পড়ে তাহলে পশ্চিমা মিত্রদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা যাবে না।

এর আগে আমেরিকা রাশিয়া থেকে এস-৪০০ কেনার বিষয়ে তুরস্ককে দুইবার সময়সীমা বেঁধে দিয়েছে কিন্তু আঙ্কারা তা মানেনি। সর্বশেষ সময়সীমা শেষ হয়েছে ১৫ ফেব্রুয়ারি। এরপর মাইক পেন্স তুরস্ককে সতর্ক করলেন। তুরস্ক আমেরিকার কাছ থেকেও পেট্রিয়ট ক্ষেপণাস্ত্র কিনতে আগ্রহী। তবে রাশিয়া থেকে এস-৪০০ কেনার চুক্তি বাতিল করবে না বলে পরিষ্কারভাবে জানিয়েছে।

 


আরো সংবাদ



premium cement