১৮ এপ্রিল ২০২৪, ০৫ বৈশাখ ১৪৩১, ০৮ শাওয়াল ১৪৪৫
`

রাশিয়ার পরমাণু চুক্তি বাতিল: ট্রাম্পের কঠোর সমালোচনায় মিখাইল গর্বাচভ

-

রাশিয়ার সাথে তিন দশক আগের পরমাণু অস্ত্র চুক্তি থেকে যুক্তরাষ্ট্র সরে যাওয়ার যে পরিকল্পনার কথা জানিয়েছেন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প- সেই সিদ্ধান্তের কঠোর সমালোচনা করেছেন সাবেক সোভিয়েত নেতা মিখাইল গর্বাচভ।

তিনি বলেছেন, পারমাণবিক নিরস্ত্রীকরণ চেষ্টার উল্টোপথে হাঁটছেন ট্রাম্প।

১৯৮৭ সালে যুক্তরাষ্ট্র আর তৎকালীন সোভিয়েত ইউনিয়নের মধ্যে মধ্যপাল্লার পারমাণবিক অস্ত্র রোধ চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছিল - ইন্টারমিডিয়েট-রেঞ্জ নিউক্লিয়ার ফোর্সেস (আইএনএফ) নামের এ চুক্তিটির অধীনে শত শত কৌশলগত পরমাণু অস্ত্র ধ্বংস করা হয়।

কিন্তু এখন ট্রাম্প অভিযোগ করছেন, আমেরিকা এ চুক্তি মেনে চললেও মস্কো বারবার এটি লঙ্ঘন করে চলেছে।

যুক্তরাষ্ট্রের অভিযোগ হলো, রাশিয়া এমন কিছু নিষিদ্ধ ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্র তৈরি ও মোতায়েন করেছে -যা দিয়ে তারা খুব স্বল্প সময়ের নোটিশে নেটো জোটভুক্ত দেশের ওপর পারমাণবিক আক্রমণ চালানো যাবে - যার মধ্যে ইউরোপও পড়ে।

কিন্তু রাশিয়া এই অভিযোগ অস্বীকার করছে ও যুক্তরাষ্ট্রের সিদ্ধান্তের নিন্দাও জানিয়েছে।

যুক্তরাষ্ট্রের চুক্তি থেকে বেরিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনাকে 'বিপজ্জনক' আখ্যা দিয়ে এর পাল্টা জবাব দেয়ার হুমকি দিয়েছে।

স্নায়ু-যুদ্ধের শেষ পর্যায়ে এই চুক্তিটি স্বাক্ষরিত হয়। পারমাণবিক অস্ত্র কর্মসূচি কমানোর লক্ষ্যে গত পাঁচ দশকে যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়া বেশ কয়েকটি চুক্তি স্বাক্ষর করেছে।

মিখাইল গর্বাচভ কে?
সোভিয়েত ইউনিয়নের সবশেষ জেনারেল সেক্রেটারি মিখাইল গর্বাচভ। ১৯৮৫ সালে সোভিয়েত রাশিয়ার ক্ষমতা পেয়েছিলেন তিনি এবং তার পরমাণু নিরস্ত্রীকরণ চুক্তি স্নায়ু যুদ্ধ শেষ করতে বড় ভূমিকা রাখে। স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে সোভিয়েত রিপাবলিকের ঘোষণার পর ১৯৯১ সালে সোভিয়েত প্রেসিডেন্ট হিসেবে অবসর নেন তিনি।

পরমাণু চুক্তি নিয়ে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প কী বলেছেন?
প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প বলেছেন, "রাশিয়া পরমাণু চুক্তি লঙ্ঘন করবে আর আমরা তাতে সম্মতি দিবো-সেটা হবে না।"

"আমি জানি না কেন প্রেসিডেন্ট ওবামা এটি নিয়ে মধ্যস্থতা করেননি, কিংবা বেরিয়ে আসেননি। তারা অনেক বছর ধরে এটি (চুক্তি) লঙ্ঘন করে আসছে," নেভাদায় এক প্রচার সমাবেশে বলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।

চুক্তির আওতায় ভূমি থেকে নিক্ষেপযোগ্য পাঁচ শ' থেকে সাড়ে পাঁচ হাজার কিলোমিটার পাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র নিষিদ্ধ করা হয়েছিল।

মস্কো ভূমি থেকে নিক্ষেপযোগ্য ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্রের পরীক্ষা চালিয়েছে এমন খবর পাওয়ার পর ২০১৪ সালে তৎকালীন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ওবামা রাশিয়ার বিরুদ্ধে আইএনএফ চুক্তিটি লঙ্ঘনের অভিযোগ করেছিলেন।

চুক্তিটি থেকে সরে আসতে ইউরোপের নেতারা সে সময় তাকে চাপ দিলেও 'অস্ত্র প্রতিযোগিতা পুনরায় শুরু হতে পারে এ আশঙ্কা থেকে' ওবামা তাতে সায় দেননি।

রাশিয়ার প্রতিক্রিয়া

প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের ওই চুক্তি থেকে সরে আসার ঘোষণার পর তাৎক্ষণিক এক প্রতিক্রিয়ায় রাশিয়ার পররাষ্ট্র বিষয়ক উপমন্ত্রী সের্গেই র‍্যাবকভ বলেন, 'এটা হবে একটা বিপজ্জনক পদক্ষেপ। এটা শুধু বিশ্ব সম্প্রদায়ের বোঝা হবে না, বরং গুরুতর নিন্দা ও উত্তেজনা তৈরি করবে। এই চুক্তিটি আন্তর্জাতিক নিরাপত্তা ও পারমাণবিক অস্ত্রের নিরাপত্তা ও কৌশলগত স্থায়িত্ব রক্ষণাবেক্ষণের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ।'

রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় সংবাদ মাধ্যমকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি আরো বলেন, "যুক্তরাষ্ট্রের এই ব্ল্যাকমেইল করে ছাড় নেয়ার সিদ্ধান্তকে নিন্দা জানায় রাশিয়া। তবে আমেরিকার উদ্বেগ প্রশমনের জন্য আলোচনার সুযোগ এখনো আছে "।

" যুক্তরাষ্ট্র যদি এই ধরনের জবরদস্তি ও অবিবেচকের মত আচরণ করে আন্তর্জাতিক চুক্তি থেকে বেরিয়ে যায় তাহলে আমাদের প্রতিশোধমূলক ব্যবস্থা নেয়া ছাড়া আর কোন পথ থাকবে না। যার মধ্যে সামরিক প্রযুক্তিও থাকবে, তবে আমরা এখনই ওই পর্যায়ের সিদ্ধান্তে যেতে চাই না" বলেন র‍্যাবকভ।

অন্যদিকে রুশ সিনেটর কনস্তান্তিন কোসাচেভ এর নিন্দা করে বলেছেন এটা ব্ল্যাকমেইল করার শামিল এবং এই বিপজ্জনক পদক্ষেপ আরেকটি অস্ত্র নিয়ন্ত্রণ চুক্তি 'স্টার্ট' নবায়নের সম্ভাবনা বিপন্ন করবে।

'একটি উল্লেখযোগ্য সিদ্ধান্ত'

বিবিসির বিশ্লেষক জোনাথন মার্কাস বলছেন, রাশিয়ার এসব ক্ষেপণাস্ত্র নিয়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ট্রাম্প প্রেসিডেন্ট হওয়ার আগে থেকেই উদ্বেগ ছিল। কিন্তু এখন চুক্তি থেকে বেরিয়ে যাওয়ায় মার্কিন সিদ্ধান্ত পরমাণু অস্ত্র বিস্তার রোধের ক্ষেত্রে একটা বড় আঘাত হয়ে উঠতে পারে।

জোনাথন মার্কাস বলছেন কিছু বিশেষজ্ঞের মতে, রাশিয়াকে এ চুক্তি মেনে চলতে উদ্বুদ্ধ করার জন্য যুক্তরাষ্ট্রের বরং উচিত ছিল এ থেকে বেরিয়ে না যাওয়া।

চুক্তিটি মূলত রাশিয়া এবং যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে হয়েছিল এবং চীন তাতে জড়িত ছিল না। তাই ট্রাম্প প্রশাসনের কেউ কেউ মনে করছে যে, চীনের সাথে কৌশলগত প্রতিদ্বন্দ্বিতার ক্ষেত্রে এ চুক্তিটি যুক্তরাষ্ট্রের জন্য অসুবিধার কারণ হচ্ছে।


আরো সংবাদ



premium cement
মাতৃভূমি রক্ষা করা আমাদের প্রধান কর্তব্য : সেনাপ্রধান ব্রিটিশ হাই কমিশনারের সাথে বিএনপি নেতাদের বৈঠক ১ হাজার টাকার জন্য পেশাদার ছিনতাইকারীরা খুন করে ভ্যানচালক হারুনকে দেশের মানুষ পরিবর্তন চায় : মতিউর রহমান আকন্দ টানা ১১ জয়ে ডিপিএলের প্রথম পর্ব শেষ করলো আবাহনী দেশে করোনায় আরো একজনের মৃত্যু উপজেলা নির্বাচনে মন্ত্রী-এমপিদের স্বজনের অংশ নিতে মানা সবল-দুর্বল ব্যাংক একীভূত করার কাজ শেষ হতে কত দিন লাগবে? জনগণের শক্তির কাছে আ'লীগকে পরাজয় বরণ করতেই হবে : মির্জা ফখরুল টাইম ম্যাগাজিনের ১০০ প্রভাবশালী ব্যক্তির তালিকায় মেরিনা তাবাসসুম বিএনপি নেতারা সন্ত্রাসীদের সুরক্ষা দেয়ার অপচেষ্টা করছে : ওবায়দুল কাদের

সকল