২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫
`

হামলার শিকার হলে পরমাণু অস্ত্র ব্যবহার করবে রাশিয়া : পুতিন

রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। - ছবি: সংগৃহীত

রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন বলেছেন, হামলার শিকার হলেই কেবল পরমাণু অস্ত্র ব্যবহার করবে তার দেশ। তিনি আরও বলেন, আমরা তখনি কেবল পাল্টা হামলা চালানোর সময় পরমাণু অস্ত্র ব্যবহার করব যখন আমাদের আগাম সতর্কবার্তা দেওয়ার ব্যবস্থা নিশ্চিত করবে যে রাশিয়ার দিকে ক্ষেপণাস্ত্র ছুটে আসছে। রাশিয়ার সোচিতে ইন্টারন্যাশনাল পলিসি ফোরামে তিনি এসব কথা বলেন।

পুতিন আরও বলেছেন, সম্ভাব্য আগ্রাসী শক্তির জানা উচিৎ রুশ ভূখণ্ডে হামলা চালালে নিশ্চিতভাবে এর জবাব দেওয়া হবে এবং আগ্রাসী শক্তি ধ্বংস হয়ে যাবে। রাশিয়াকে লক্ষ্য করে ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করা হলে আমরা কয়েক সেকেন্ডের মধ্যে এ বিষয়ে নিশ্চিত হতে পারব এবং নিশ্চিত হওয়ার পরই পাল্টা হামলা চালাব।

সুপারসনিক ক্ষেপণাস্ত্রের ক্ষেত্রে তার দেশের সাফল্যের প্রশংসা করেন রুশ প্রেসিডেন্ট। তিনি এ সম্পর্কে বলেছেন, অন্য দেশগুলো যেখানে আগামী দেড় থেকে দুই বছরের মধ্যে সুপারসনিক অস্ত্রের পরীক্ষা চালানোর প্রস্তুতি নিচ্ছে সেখানে আমরা এরইমধ্যে তা সম্পন্ন করে ফেলেছি।

আরো দেখুন : সিরিয়ার উত্তরাঞ্চলে কী চায় রাশিয়া?

লিওনিদ ইসায়েভ, ৩০ সেপ্টেম্বর ২০১৮, ১৫:৩১

সিরিয়ার বিদ্রোহীদের সর্বশেষ শক্তিশালী ঘাঁটি ইদলিব প্রদেশে গেল কয়েক মাসের অব্যাহত উত্তেজনার পর অবশেষে রাশিয়া ও তুরস্ক একটি সাময়িক সমাধানে পৌঁছতে পেরেছে।
গত সেপ্টেম্বরে সোচিতে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভøাদিমির পুতিন ও তুরস্কের প্রেসিডেন্ট এরদোগানের বৈঠকের পর বিদ্রোহী নিয়ন্ত্রিত অঞ্চলের প্রায় ১৫-২০ কিলোমিটার ভেতর পর্যন্ত বেসামরিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠার ব্যাপারে দুই দেশ একমত হয়েছে। কট্টরপন্থী যোদ্ধাদের ওই অঞ্চল থেকে সরিয়ে নেয়া হবে এবং একইসাথে সব ভারী যুদ্ধাস্ত্র, ট্যাংক, রকেট লঞ্চার, বন্দুক ও মর্টার সরিয়ে নেয়া হবে। সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলো চুক্তির শর্ত মেনে চলছে কি না, তা নিশ্চিত করার জন্য রাশিয়ার সামরিক পুলিশ ও তুরস্কের সেনারা ওই অঞ্চলে পালাক্রমে পাহারা দেবে। এ বছরের শেষ নাগাদ সিরিয়া সরকার নিয়ন্ত্রিত লাতাকিয়া ও দামেস্ক থেকে আলেপ্পো পর্যন্ত সংযোগ স্থাপনের জন্য এম-ফোর ও এম-ফাইভ মহাসড়ক চালুর ব্যাপারেও এরদোগান ও পুতিন একমত হয়েছেন।

এটি সত্য যে, এই সাময়িক যুদ্ধবিরতিতে প্রত্যাশা পূরণ হবে না এবং প্রদেশটির পরিবেশ স্বাভাবিক করার জন্য নেয়া পরিকল্পনা বাস্তবায়নে যথেষ্ট নয়। তবে অন্যান্য রক্তক্ষয়ী উপায়গুলোর চেয়ে এই পদক্ষেপ উত্তম।

এই চুক্তির প্রধান সুবিধাভোগী অবশ্যই তুরস্ক। তবে উত্তেজনা প্রশমন করা গেলে তা মস্কোর জন্যও লাভজনক। অতিমাত্রায় সামরিক সাজসজ্জার পরও বড় ধরনের রক্তপাত থেকে বিরত থাকতে চায় রাশিয়া। সেইসাথে, সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো- তুরস্কের সাথে সামরিক বোঝাপড়া আরো বাড়াতে চায় মস্কো।

অবশ্য চলতি মাসের শুরুর দিকে প্রদেশটিতে আঙ্কারা ভারী সামরিক সরঞ্জাম ও সেনা মোতায়েন শুরু করলে আশঙ্কা বাড়তে থাকে। বড় ধরনের সামরিক অভিযান আরো একটি রাসায়নিক হামলার আশঙ্কাও বাড়িয়ে দিতে পারে। আর এই হামলার ব্যাপারে জাতিসঙ্ঘ, যুক্তরাষ্ট্র, এমনকি রাশিয়ার নিজেরও সতর্ক অবস্থান রয়েছে। কেননা, এতে করে আন্তর্জাতিক অঙ্গন ও প্রতিষ্ঠানগুলোতে রাশিয়াকে নিয়ে আরো একবার সমালোচনা হবে। এরই মধ্যে যুক্তরাজ্যে স্ক্রিপাল ইস্যুতে রাশিয়ার দুই সাবেক গোয়েন্দা কর্মকর্তার বিরুদ্ধে রাসায়নিক হামলার তদন্ত চলছে। তাই রাশিয়াও সচেতনভাবেই চায় আরো একটি আন্তর্জাতিক কেলেঙ্কারি এড়াতে।

ইদলিবে বিরোধী পক্ষের সামরিক সক্ষমতা ধ্বংস করে দেয়া রাশিয়া ও সিরীয় সরকার, উভয়ের জন্যই লাভজনক। তবে এমন কাজ করলে তা হবে ‘আস্তানা প্রক্রিয়া’ শেষ করে দেয়ারই নামান্তর। এর ফলে সিরিয়ার মাটিতে ক্রেমলিনের উপস্থিতিকে বৈধ তুরস্কের সাথে কাজ করার যে প্লাটফর্ম আছে, তা ক্ষতিগ্রস্ত হবে। শুধু জ্বালানি প্রকল্প নিরাপদ করার জন্যই তুরস্কের সাথে ঘনিষ্ঠ সম্পর্কে জড়ায়নি মস্কো; বরং ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে আঙ্কারাকে হাতিয়ার হিসেবেও ব্যবহার করছে তারা।

সিরীয় সঙ্কট মোকাবেলার একটি সামরিক সমাধান হতে পারে, ইদলিব দখল করা। এটা সিরিয়ায় রাশিয়ার যে প্রভাব, তা এক নিমিষেই ধুলোয় মিশিয়ে দেবে। এর পর আর কোনো রাজনৈতিক সমঝোতায়ও সিরিয়ার মাটিতে রাশিয়ার সামরিক উপস্থিতিকে তেমন প্রভাব বিস্তারকারী শক্তি হিসেবে বিবেচনা করা হবে না। যে দু’টি অঞ্চলে অর্থায়ন ও পুনঃসংস্কার বিষয়ক আলোচনা চলছে, সেখানে রাশিয়া নিরাপত্তার ভয়াবহ শঙ্কায় আছে এবং আরো অধিক বিনিয়োগের কথা ভাবতেও পারছে না।

যদিও এখন ইদলিবে একটি বেসামরিক অঞ্চল গঠন রাশিয়া ও তুরস্ক উভয়েরই স্বার্থসংশিষ্ট, তবে এই উদ্যোগ কতটুকু কার্যকর করা সম্ভব হবে, আগে থেকে তা বলা মুশকিল। এখন উভয় পক্ষকেই মাঠপর্যায়ে থাকা তাদের অংশীদারদের বোঝাতে হবে। একটি বিষয় পরিষ্কার নয় যে, সিরিয়ায় সরকার ও বিরোধী কোনো পক্ষই আপস করতে রাজি হবে কি না। এর অর্থ হলো, ইদলিবে সামরিক অভিযান চালানোর সম্ভাবনা থেকেই গেল।

সিরীয় প্রেসিডেন্ট বাশার আল আসাদ এখনো ইদলিবের দখল নিতে বদ্ধপরিকর। বিগত সপ্তাহ পর্যন্ত তার অনুগত বাহিনী ইদলিবে বিদ্রোহীদের ওপর বোমা হামলা চালিয়েছে। দামেস্কের উপশহর পূর্ব ঘৌতা এবং দক্ষিণাঞ্চলীয় প্রদেশ দেরা ও কুনিয়েত্রায় বিজয় অর্জনের পর এটা নিশ্চিত যে, আসাদ সামরিক অভিযানের এ ধারা অব্যাহত রাখতে এবং ইদলিবে আক্রমণ চালাতে চান। দামেস্কের সামনে এটা কোনো বিবেচনার বিষয় নয় যে, তারা উত্তরাঞ্চলের কোন কোন ঘাঁটিতে হামলা চালাবেন; বরং তাদের সামনে এখন বিবেচনার বিষয় হলো- তারা কখন এ হামলা চালাবেন।

অন্য দিকে, এটাও স্পষ্ট নয় যে, বিরোধীরা বিশেষ করে সাবেক আল-কায়েদাসংশিষ্ট হাইয়েত তাহরির আল শাম বা এইচটিএস যুদ্ধ বিরতিতে কিংবা অস্ত্র বিরতি করতে রাজি হবে কি না।

তুরস্ক যদি এইচটিএস এবং অন্যান্য উগ্রপন্থীদের একটি বেসামরিক অঞ্চল গঠন করার ব্যাপারে বোঝাতে সক্ষমও হয়, তাতে এম ফোর ও এম ফাইভ-এর মতো মহাসড়কের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা নিয়ে সমস্যা থেকেই যাবে। প্রায় ২০০ কিলোমিটার দীর্ঘ এ মহাসড়ক সিরিয়ার বিদ্রোহী নিয়ন্ত্রিত অঞ্চলের ভেতর দিয়েই গেছে, যা এখনো বেসামরিক অঞ্চলের অন্তর্ভুক্ত নয়। সরকার নিয়ন্ত্রিত অঞ্চল থেকে শুরু হওয়া এ মহাসড়ক চালু হলে মাঝপথে কোনো সশস্ত্র গ্রুপ আক্রমণ করবে না বা ডাকাতি হবে না- এমন নিশ্চয়তা বিধান করা তুরস্কের জন্য অনেক বড় চ্যালেঞ্জ।

যদি তুরস্ক এই নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য এইচটিএস-এর বিরুদ্ধে সামরিক অভিযান চালানোর সিদ্ধান্ত নেয়, তাহলে তাদের অন্য একটি চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করতে হবে। আর তা হলো, বিমান হামলা চালাতে সিরিয়ার আকাশ সীমা ব্যবহারের জন্য রাশিয়ার অনুমতি নেয়া। আফরিন অভিযানের সময় মস্কো প্রাথমিকভাবে তুরস্কের সিরিয়ার আকাশসীমা ব্যবহারের ব্যাপারে রাজি হয়েছিল এবং পরে আবার তা নাকচ করে দেয়। ক্রেমলিনের জন্য এটা নীতিগত বিষয় যে, একবার যদি তারা ইদলিবের আকাশ পথের নিয়ন্ত্রণ হারায়, তবে তাদের জন্য আশঙ্কার বিষয় হলো- এ নিয়ন্ত্রণ আর ফেরত পাবে কি না। আর আকাশ পথ ব্যবহারের সুযোগ না পেলে তুর্কি সামরিক বাহিনী বিরাট সমস্যার সম্মুখীন হবে এবং বিরোধীদের যুদ্ধ থেকে বিরতি রাখার প্রক্রিয়াও হুমকির মুখে পড়বে। পরিশেষে বলা যায়, বেসামরিক অঞ্চল গঠনের প্রক্রিয়া সফলভাবে বাস্তবায়ন করা সম্ভব হলেও এটা হবে ইদলিবের ভবিষ্যতের জন্য খুবই সাময়িক সমাধান। আঙ্কারার কাছে মস্কোর যে সুনাম এরই মধ্যে তৈরি হয়েছে তাতে রাশিয়ার দায়িত্ব আরো বেড়ে গেছে। কেননা, এই প্রদেশের বিভিন্ন বিষয় নিয়ে তুরস্কের সাথে তাদের সম্পর্ক কেমন হবে, তা নির্ভর করবে রাশিয়ার ওপরই। আর এই চুক্তি বাস্তবায়ন ও কার্যকর করার বেশির ভাগ বিষয় নির্ভর করবে তুরস্কের ওপর।
এই চুক্তি কবে নাগাদ আলোর মুখ দেখবে এবং রাশিয়া কবে থেকে ইদলিবের ব্যাপারে তার পরিকল্পনা বাস্তবায়ন শুরু করবে তা হয়তো আগামী কয়েক সপ্তাহের মধ্যেই বোঝা যাবে।

লেখক : মস্কোর হায়ার স্কুল অব ইকোনমিক্সের প্রভাষক। 
আলজাজিরা থেকে ভাষান্তর করেছেন :
মোহাম্মদ সাজেদুল ইসলাম

সুপারসনিক ক্ষেপণাস্ত্রের ক্ষেত্রে তার দেশের সাফল্যের প্রশংসা করেন রুশ প্রেসিডেন্ট। তিনি এ সম্পর্কে বলেছেন, অন্য দেশগুলো যেখানে আগামী দেড় থেকে দুই বছরের মধ্যে সুপারসনিক অস্ত্রের পরীক্ষা চালানোর প্রস্তুতি নিচ্ছে সেখানে আমরা এরইমধ্যে তা সম্পন্ন করে ফেলেছি।


আরো সংবাদ



premium cement
বাংলাদেশসহ এশিয়ার ৩ দেশে কাতার আমিরের সফরে কী লাভ ও উদ্দেশ্য? মধুখালীর ঘটনায় সঠিক তদন্ত দাবি হেফাজতের ফর্মে ফিরলেন শান্ত জামায়াতের ৫ নেতাকর্মীকে পুলিশে সোপর্দ যুবলীগ কর্মীদের, নিন্দা গোলাম পরওয়ারের চায়ের সাথে চেতনানাশক খাইয়ে স্বর্ণালঙ্কার চুরি ঈশ্বরগঞ্জে সংরক্ষিত নারী আসনের এমপি ব্যারিস্টার ফারজানাকে সংবর্ধনা যুক্তরাষ্ট্রের মানবাধিকার প্রতিবেদনে‘ভিত্তিহীন' তথ্য ব্যবহারের অভিযোগ বাংলাদেশ সরকারের মোদির মুসলিমবিরোধী মন্তব্যের প্রতিবাদ করায় সংখ্যালঘু নেতাকে বহিষ্কার ফ্লোরিডায় বাংলাদেশ কনস্যুলেটের নতুন কনসাল জেনারেল সেহেলী সাবরীন চান্দিনায় পানিতে ডুবে একই পরিবারের দুই শিশু মৃত্যু কেএনএফ সম্পৃক্ততা : গ্রেফতার ছাত্রলীগ নেতা সম্পর্কে যা জানা গেছে

সকল