২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১, ১৩ শাওয়াল ১৪৪৫
`

ইসলামবিদ্বেষ দূর করতে জার্মান মুসলমানদের বিশেষ উদ্যোগ

ইসলাম
প্রতিবছর একটি দিন জার্মানির মসজিদগুলোর দুয়ার খুলে দেয়া হয় সব ধর্ম-বিশ্বাসের মানুষের জন্য। - ছবি : আনাদোলু এজেন্সি

ইসলাম ও মুসলমানদের সম্পর্কে বিশ্বজুড়ে একটা বিরূপ মনোভাব সৃষ্টি করা হয়েছে। এর বেশ প্রভাব পড়েছে ইউরোপেও। আর সে মনোভাব সম্পর্কে জনগণকে সচেতন করতে এবং ইসলামের সুন্দর দিকগুলো তুলে ধরতে বিশেষ উদ্যোগ নিয়েছে জার্মানীর মুসলিম সম্প্রদায়।

প্রতিবছর একটি দিন জার্মানির মসজিদগুলোর দুয়ার খুলে দেয়া হয় সব ধর্ম-বিশ্বাসের মানুষের জন্য। বুধবার ছিল সে দিনটি।

তুরস্কের বার্তা সংস্থা আনাদোলু এজেন্সির খবরে প্রকাশ, বুধবার জার্মানির মসজিদগুলো পরিদর্শন করেছেন বিভিন্ন ধর্মবিশ্বাসের লোকজন। প্রতিবছর এ দিনটিতে তাদের সাথে সংলাপের আয়োজন করা হয় যাতে ইসলাম সম্পর্কে তাদের ভুল ধারণাগুলো দূর করা যায়।

‘এ দিনটি এক লাখেরও বেশি দর্শণার্থীদের ইসলাম সম্পর্কে জানতে এবং মুসলমানদের সাথে আলোচনার সুযোগ করে দেয়’, এক বিবৃতিতে এমনটাই বলেছেন জার্মানির মুসলিম কোঅর্ডিনেশন কাউন্সিলের (কেআরএম) মুখপাত্র বুরহান কেসিসি।

জার্মানির প্রায় ৯০০ মসজিদ ‘উন্মুক্ত মসজিদ দিবসে’ অংশ নেয়।

দেশটির বিখ্যাত স্থান কলংয়ে অবস্থিত কলং কেন্দ্রীয় মসজিদ পরিদর্শনে আসেন হাজারো দর্শণার্থী। এ মসজিদটি পরিচালিত হয় টার্কিস-ইসলামিক ইউনিয়ন ফর রেলিজিয়াস অ্যাফেয়ার্স (ডিআইটিআইবি) দ্বারা।

ইউনিয়নটির সভাপতি নেভজাত ইয়াসার আসিকগ্লু বলছিলেন, ১৯৮৪ সালে প্রতিষ্ঠার পর থেকেই ডিআইটিআইবি দর্শণার্থীদের কাছে শান্তি ও সৌহার্দের বার্তা পৌঁছে দিচ্ছে। এবং সংলাপের এ উদ্যোগ চলমান থাকবে।

নর্থ রিন-ওয়েস্টফেলিয়ার একীভূতবিষয়ক মন্ত্রী জোচিম স্টাম্পও বুধবার মসজিদটি পরিদর্শন করেছেন।

কর্মসূচিটি চলাকালে ইমামগণ ইসলামী বিশ্বাস ও সংস্কৃতি সম্পর্কে বিভিন্ন বিষয় তুলে ধরেন এবং দর্শণার্থীদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন।

আট কোটি ১০ লাখ জনসংখ্যার জার্মানির দ্বিতীয় বৃহত্তম জনগোষ্ঠী মুসলমানরা। পশ্চিম ইউরোপ ও ফ্রান্সের পরই এ অবস্থান।

আবার দেশটির ৪.৭ মিলিয়ন মুসলিম জনসংখ্যার তিন মিলিয়নই তুর্কি বংশোদ্ভুত।

সাম্প্রতিক বছরগুলোতে জার্মানিতে উগ্র ডানপন্থী ও পপুলিস্ট দলগুলো দ্বারা ইসলামবিদ্বেষ ছড়িয়ে পড়েছে এবং অভিবাসীরা বিভিন্ন প্রোপাগান্ডার শিকার হচ্ছেন।

আরো পড়ুন :
জার্মানি-তুরস্ক সম্পর্কের উন্নয়ন চান এরদোগান
রয়টার্স, ২৬ সেপ্টেম্বর ২০১৮
তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রজব তাইয়েব এরদোগান বলেছেন, তিনি ২৭ থেকে ২৯ সেপ্টেম্বর জার্মানি সফরে দেশটির সাথে অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক সম্পর্ক উন্নয়নের জন্য কাজ করবেন। যুক্তরাষ্ট্রের সাথে তুরস্কের সম্পর্কের অবনতি ও তুর্কি মুদ্রা লিরার দাম কমে যাওয়ার পর থেকে দেশটি ইউরোপের সঙ্গে বিবাদমান সম্পর্কের উন্নয়ন করতে চাচ্ছে।

এক সংবাদ সম্মেলনে এরদোগান বলেন, ‘আমার জার্মানি সফরে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে আমাদের রাজনৈতিক সম্পর্কের অভিজ্ঞতা সম্পূর্ণ ফেলে দেওয়াই হবে আমাদের প্রধান এজেন্ডা। পারস্পারিক লাভের ভিত্তিতে আমাদের অর্থনৈতিক সম্পর্ক আবারো চালু করার জন্য এটা একটা পদক্ষেপ হবে।’

২০১৬ সালে তুরস্কে ব্যর্থ অভ্যুত্থানের পর কয়েকজন জার্মান নাগরিকসহ হাজার হাজার মানুষকে বন্দি করার পর থেকে জার্মানি ও তুরস্কের মধ্যকার সম্পর্কের অবনতি হতে থাকে। তবে একজন জার্মান-তুর্কি সাংবাদিককে মুক্তি দেওয়া ও আরেকজন জার্মান নাগরিককে দেশত্যাগ করার অনুমতি দেওয়ার পর অবস্থার উন্নতি হয়।

জার্মানিতে প্রায় ৩০ লাখ তুর্কি ইহুদি বাস করেন যা বিশ্বে সবচেয়ে বেশি। তাদের অনেকেরই দ্বৈত নাগরিকত্ব রয়েছে।

জার্মান কর্মকর্তারা মনে করেন, তুরস্কে মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ থাকার পরও তাদের সম্পর্কের উন্নতি করা ছাড়া কোনো পথ নেই।

শুক্রবার তুর্কি অর্থমন্ত্রীর সাথে বৈঠক শেষে জার্মান অর্থমন্ত্রী ওলাফ শলৎস বলেন, জার্মান চ্যান্সেলন অ্যাঙ্গেলা মের্কেলের সাথে বৈঠককালে এরদোগানের কাছ থেকে অর্থনৈতিক সহায়তা চাওয়া হবে না।

এই বছর তুর্কি মুদ্রা লিরার দাম ৪০ শতাংশ কমে যাওয়ায় মুদ্রানীতির ওপর এরদোগানের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে শঙ্কা দেখা দিয়েছে। এরপর তুরস্ক যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে অর্থনৈতিক যুদ্ধ শুরুর অভিযোগ করেছে। এরই মধ্যে যুক্তরাষ্ট্র সফরে মার্কিন বিনিয়োগকারীদের সাথে বৈঠক করবেন এরদোগান।


আরো সংবাদ



premium cement