২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫
`

জার্মানিতে মার্কেল সরকারের ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত?

জার্মানি
জার্মানির অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা সংস্থার প্রধান হান্স গেয়র্গ মাসেন-এর ভবিষ্যৎকে কেন্দ্র করে সরকারি জোটের মধ্যে আবার চিড় ধরছে। - ছবি : ডয়চে ভেলে

জার্মানির সরকারি জোটের ভবিষ্যৎ আবার প্রশ্নের মুখে পড়েছে। অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা সংস্থার প্রধানকে ঘিরে শরিকদের মধ্যে সংঘাত দানা বাঁধছে। আগামী মঙ্গলবার ফয়সালা হবার কথা।

জার্মানির অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা সংস্থার প্রধান হান্স গেয়র্গ মাসেন-এর ভবিষ্যৎকে কেন্দ্র করে সরকারি জোটের মধ্যে আবার চিড় ধরছে। কেমনিৎস শহরের সাম্প্রতিক ঘটনাবলিকে কেন্দ্র করে তার মন্তব্য ও আচরণের কারণে তিনি চরম বিতর্কে জড়িয়ে পড়েছেন। সরকারি জোট ও বিরোধী পক্ষের মধ্যে তার প্রতি আস্থা কমে চলেছে৷ বৃহস্পতিবার তিন শরিক দলের প্রধান জরুরি বৈঠকে এ বিষয়ে ঐকমত্যে আসতে পারেননি।

বাভেরিয়ার সিএসইউ দলের নেতা ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী হর্স্ট সেহোফার মাসেনকে তার পদে বহাল রাখতে বদ্ধপরিকর। তার দাবি, মাসেন চরম দক্ষিণপন্থীদের বিরুদ্ধে কড়া মনোভাব দেখিয়ে এসেছেন।

অন্যদিকে এসপিডি দল তাকে অবিলম্বে পদচ্যুত করতে চায়। ভাইস চ্যান্সেলর ওলাফ শলৎস বলেন, মাসেন বিশ্বাসযোগ্যতা হারিয়েছেন। এবার তার পরিণতির সময় এসে গেছে। যে কোনো নিরাপত্তা সংস্থার প্রধানকে সম্পূর্ণ আস্থার পাত্র হতে হবে, বলেন শলৎস। চ্যান্সেলর আঞ্জেলা মার্কেলও সম্ভবত মাসেনের প্রতি আস্থা হারিয়েছেন। আগামী মঙ্গলবার সরকারি জোটের নেতারা আবার জরুরি বৈঠকে বসবেন। সরকার গঠনের ৬ মাসের মধ্যেই মন্ত্রিসভার মধ্যে পারস্পরিক আস্থা কমে যাওয়ার ফলে জোটের অস্তিত্ব নিয়ে প্রশ্ন উঠছে।

বৃহস্পতিবার মাসেন নতুন করে আরো বিতর্কে জড়িয়ে পড়েছেন। তার তৈরি বার্ষিক প্রতিবেদন সরকারের হাতে পৌঁছানোর আগেই চরম দক্ষিণপন্থী এএফডি দলের এক সংসদ সদস্যের কাছে চলে এসেছিল বলে অভিযোগ উঠেছে। মাসেন অবশ্য এই অভিযোগ সম্পূর্ণ অস্বীকার করেছেন। তবে একের পর এক বিতর্ক ও তার পরিপ্রেক্ষিতে তার আচরণের কারণে তিনি সমর্থন হারাচ্ছেন।

পরিস্থিতি সামলাতে ও সরকারি জোটের অস্তিত্ব রক্ষার স্বার্থে চাপের মুখে মাসেন নিজে পদত্যাগ করতে পারেন, এমন সম্ভাবনার কথাও শোনা যাচ্ছে। তবে এখনো পর্যন্ত তিনি আত্মসমালোচনা বা পিছু হঠার কোনো লক্ষণ দেখাননি। মাসেন বিদায় নিলে সরকারের মধ্যে অনেকে স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলবেন, এ বিষয়ে কোনো সন্দেহ নেই।

মাসেন স্বেচ্ছায় বিদায় না নিলে একমাত্র স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীই তাকে বরখাস্ত করার ক্ষমতা রাখেন। এমনকি চ্যান্সেলরও সেই পদক্ষেপ নিতে পারেন না। সরকারি জোটে আগেই কোণঠাসা সেহোফারের পক্ষে সেই সিদ্ধান্ত নেয়া কঠিন হবে। বিশেষ করে বাভেরিয়ায় রাজ্য নির্বাচনের ঠিক আগে এমন পদক্ষেপকে তার দুর্বলতা হিসেবে তুলে ধরতে পারে বিরোধীরা। অন্যদিকে ম্যার্কেলের সঙ্গে আবার সংঘাত শুরু করলে এবার তিনি নিজেই পদ খোয়াতে পারেন। সে ক্ষেত্রে সিএসইউ দল জোট ত্যাগ করবে। আগাম নির্বাচনের সম্ভাবনা বেড়ে যাবে। অথচ জোটের তিন দলের মধ্যে কেউই এখন নির্বাচন চায় না। তিন শরিক দলের এমন উভয় সংকট পরিস্থিতিকে জটিল করে তুলেছে। সবার মুখরক্ষা করে এক সমাধানসূত্রের খোঁজ চলছে।

আরো পড়ুন :
জার্মানি ও ফ্রান্স সম্পূর্ণ ধ্বংস করতে সক্ষম সারমাট
নয়া দিগন্ত অনলাইন, ৩০ জুন ২০১৮
রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন বলেছেন, তার দেশ নতুন অস্ত্র তৈরির শিল্পে প্রতিদ্বন্দ্বী দেশগুলোর চেয়ে কয়েক দশক এগিয়ে রয়েছে। সম্প্রতি রাশিয়ার সামরিক অ্যাকাডেমিগুলো থেকে পাস করা একদল গ্র্যাজুয়েটের সমাবেশে এ মন্তব্য করেছেন তিনি।

পুতিন বলেছেন, আধুনিক অস্ত্রগুলো রাশিয়ার সামরিক সক্ষমতাকে কয়েকগুণ বাড়িয়ে দিয়েছে। আমাদের কিছু কিছু সমরাস্ত্র সিস্টেম প্রতিদ্বন্দ্বী দেশগুলোর চেয়ে কয়েক দশক এগিয়ে রয়েছে।

রুশ প্রেসিডেন্ট দৃষ্টান্ত হিসেবে তার দেশের ‘অ্যাভানগার্ড’ হাইপারসনিক ক্ষেপণাস্ত্রের কথা তুলে ধরেন যা শব্দের চেয়ে বিশ গুণ দ্রুত গতিতে চলে। এই ক্ষেপণাস্ত্র লক্ষ্যবস্তুর দিকে ছুটে যাওয়ার সময় আবহমণ্ডলে দিক ও উচ্চতা পরিবর্তন করতে পারে বলে তা যেকোনো ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা বা বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার জন্য চরম অভেদ্য বা ধরা-ছোঁয়ার বাইরে থাকে বলে পুতিন জানান।

রুশ প্রেসিডেন্ট তার দেশের একটি নতুন আন্তঃমহাদেশীয় ক্ষেপণাস্ত্রের কথাও উল্লেখ করেন। এটি দশটিরও বেশি পরমাণু অস্ত্র বহন করতে সক্ষম এবং ২২০ টন ওজনের এই ক্ষেপণাস্ত্র পৃথিবীর যেকোনো স্থানে আঘাত হানতে পারে।

‘সারমাট’ নামের এই ক্ষেপণাস্ত্র সোভিয়েত যুগের আন্তঃমহাদেশীয় ক্ষেপণাস্ত্র ‘ভয়েভোডা’র চেয়েও বেশি শক্তিশালী। ‘ভয়েভোডা’-কে বিশ্বের সবচেয়ে শক্তিশালী আন্তঃমহাদেশীয় ক্ষেপণাস্ত্র বলে মনে করা হতো এবং পাশ্চাত্যে একে বলা হয় ‘স্যাটান’ বা শয়তান। জার্মানি ও ফ্রান্স সম্পূর্ণ ধ্বংস করতে সক্ষম সারমাট।

পুতিন এমন সময় এসব বক্তব্য রাখলেন যখন রাশিয়ার প্রতিদ্বন্দ্বী মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সম্প্রতি এই বলে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে যে, রাশিয়ার সঙ্গে সম্ভাব্য সংঘাত দেখা দিলে ন্যাটো জোট হয়তো রাশিয়ার মতো দ্রুতগতিতে অগ্রসর হতে পারবে না বরং ট্র্যাফিক জ্যামে আটকা পড়তে পারে।


আরো সংবাদ



premium cement