১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৬ বৈশাখ ১৪৩১, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫
`

ওয়াশিংটন ও লন্ডনের নিষেধাজ্ঞা আরোপের তীব্র নিন্দায় মস্কো

ওয়াশিংটন ও লন্ডনের নিষেধাজ্ঞা আরোপের তীব্র নিন্দায় মস্কো - সংগৃহীত

ব্রিটেনে দু’টি নার্ভ গ্যাস হামলার জন্য রাশিয়াকে দায়ী করে দেশটির ওপর ওয়াশিংটন ও লন্ডন যে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে তার তীব্র নিন্দা জানিয়েছে মস্কো। রাশিয়া বলেছে, ইরাকে আগ্রাসন চালানোর অজুহাত হিসেবে আমেরিকা ও ব্রিটেন গণবিধ্বংসী অস্ত্রের যে মিথ্যা অভিযোগ তুলেছিল তা থেকে ওই দু’টি পশ্চিমা দেশ শিক্ষা নেয়নি।

রাশিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মারিয়া জাখারোভা বুধবার মস্কোয় এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ২০০৩ সালে ইরাক আগ্রাসনের জন্য আমেরিকা ও ব্রিটেন ইরাকের বিরুদ্ধে যে মিথ্যা অভিযোগ এনেছিল এখন নিষেধাজ্ঞা আরোপের জন্য রাশিয়ার বিরুদ্ধে একই রকম অভিযোগ আনা হচ্ছে।

গত মার্চ মাসে ব্রিটেনের স্যালিবারি শহরে সাবেক রুশ দ্বৈত-গুপ্তচর সের্গেই স্ক্রিপাল ও তার ৩৩ বছর বয়সি মেয়ে ইউলিয়াকে অচেতন অবস্থায় পাওয়া যায়। কয়েকদিন পর লন্ডন অভিযোগ করে সাবেক সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়ন আমলে উৎপাদিত নার্ভ গ্যাস দিয়ে রাশিয়াই ওই দুই ব্যক্তিকে হত্যা প্রচেষ্টা চালিয়েছে।

গত মাসে স্যালিসবারি শহরের কাছে অ্যামেসবারি শহরে একজন ব্রিটিশ নারী ও একজন ব্রিটিশ পুরুষ একই রকম গ্যাস হামলার শিকার হন।  এবারের কথিত হামলার জন্যও মস্কোকে দায়ী করে লন্ডন।

রাশিয়া এসব ঘটনায় নিজের জড়িত থাকার অভিযোগ অস্বীকার করে ওই গ্যাসের নমুনা মস্কোর কাছে হস্তান্তরের জন্য ব্রিটিশ সরকারের প্রতি আহ্বান জানালেও লন্ডন তা দিতে অস্বীকার করে আসছে।

এসব কথিত হামলার জন্য আমেরিকা ও ব্রিটেন রাশিয়ার বহু কূটনীতিককে বহিষ্কারের পাশাপাশি মস্কোর বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে। রুশ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র দেশটির বিরুদ্ধে ওয়াশিংটন ও লন্ডনের এ অভিযোগকে ‘রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত’ বলে প্রত্যাখ্যান করেন।

২০০৩ সালে ইঙ্গো-মার্কিন সরকার ইরাকের কাছে গণবিধ্বংসী অস্ত্র থাকার অজুহাতে দেশটিতে আগ্রাসন চালায়। ওই আগ্রাসনে ইরাকের তৎকালীন সাদ্দাম সরকারের পতন ছাড়াও দেশটিতে চরম নিরাপত্তাহীনতা সৃষ্টি হয়। কিন্তু পরবর্তীতে ইঙ্গো-মার্কিন বাহিনী ইরাকে কোনো গণ-বিধ্বংসী অস্ত্র খুঁজে পায়নি।

মার্কিন নিষেধাজ্ঞা বরদাশত করবে না রাশিয়া
 ১১ আগস্ট ২০১৮

রাশিয়ার প্রধানমন্ত্রী দিমিত্রি মেদভেদেভ হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেছেন, তার দেশের বিরুদ্ধে মার্কিন সরকারের পক্ষ থেকে আরোপিত যেকোনো নিষেধাজ্ঞা মস্কোর বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণার শামিল এবং রাশিয়া এ ব্যাপারে পাল্টা ব্যবস্থা নেবে।

আমেরিকার পক্ষ থেকে বুধবার রাশিয়ার বিরুদ্ধে নতুন করে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করার পর রুশ প্রধানমন্ত্রী এ ঘোষণা দিলেন। আমেরিকায় তৎপর রাশিয়ার রাষ্ট্র নিয়ন্ত্রিত বেশ কয়েকটি ব্যাংকের কার্যক্রমের ওপর ওই নিষেধাজ্ঞা দেয়া হয়। এর ফলে এসব ব্যাংক কর্তৃক ডলার ব্যবহারের ওপর সীমাবদ্ধতা আরোপ করা হয়েছে।

রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী দেশটির পূর্বাঞ্চলীয় কামচাটকা উপত্যকা সফরে গিয়ে এ ব্যাপারে প্রতিক্রিয়া জানান। মেদভেদেভ বলেন, রাশিয়ার আর্থিক প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা বরদাশত করা হবে না।

তিনি আরো বলেন, রাশিয়ার ব্যাংকসহ আর্থিক প্রতিষ্ঠান এবং বৈদেশিক মুদ্রা ব্যবহারের ওপর নিষেধাজ্ঞাকে মস্কোর বিরুদ্ধে ‘অর্থনৈতিক যুদ্ধ ঘোষণার শামিল’ বলে ধরে নেয়া হবে।  রুশ প্রধানমন্ত্রী হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেন, এ ধরনের পদক্ষেপের বিরুদ্ধে অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিকভাবে এমনিক প্রয়োজনে অন্য কোনো উপায়ে জবাব দেবে মস্কো। মার্কিন কর্মকর্তাদের এ বিষয়টি উপলব্ধি করা উচিত বলেও তিনি মন্তব্য করেন।

ব্রিটেনে সাবেক রুশ দ্বৈত গুপ্তচর সের্গেই স্ক্রিপাল ও তার মেয়ের ওপর রাসায়নিক গ্যাস হামলার জের ধরে বুধবার রুশ ব্যাংকের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে আমেরিকা। ব্রিটিশ সরকার ওই রাসায়নিক হামলার জন্য রাশিয়াকে দায়ী করলেও মস্কো এ অভিযোগ সরাসরি প্রত্যাখ্যান করেছে।দ


আরো সংবাদ



premium cement