২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫
`

প্রেক্ষাগৃহে ছবি নেই, তারকারা ব্যস্ত রাজনীতি নিয়ে

-

এমনিতেই দেশীয় চলচ্চিত্রের বাজার মন্দা। তার ওপর তারকারাও অভিনয়ের চেয়ে রাজনীতি নিয়ে বেশি ব্যস্ত থাকায় প্রেক্ষাগৃহগুলো পড়ে আছে ছবিশূন্য অবস্থায়। বছরজুড়ে এখন হাতেগোনা কিছু ছবি মুক্তি পায়। তার সাথে পশ্চিমবঙ্গের কিছু ছবি আমদানি করা হয়। এসব নিয়ে শুরুর দিকে সমালোচনা হলেও এখন ব্যাপারগুলো স্বাভাবিক হয়ে গেছে।
ছবি নির্মাণ কম হওয়ায় দর্শকদের সাথে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন তারকারাও। অথচ এ ব্যাপারে শিল্পীদের পক্ষ থেকে কোনো উদ্বেগ দেখা যায় না বরং আলোচিত অভিনেতা-অভিনেত্রীরা রাজনীতির ময়দানে সময় কাটাচ্ছেন বেশি। গত ৩০ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের বেশ আগে থেকেই তারকারা তাদের পছন্দের প্রার্থীদের প্রচারণায় অংশ নিয়েছেন। ইউটিউবে একাধিক ভিডিও প্রকাশ করে পছন্দের দলের পক্ষে ভোট চেয়েছেন। নির্বাচন শেষ হওয়ার পর সেই তারকাদের অনেকে সংরক্ষিত আসনের এমপি হতে দৌড়ঝাঁপ করছেন। ঠিক এ অবস্থায় চলচ্চিত্রের মন্দা বাজার আরো মন্দা হয়ে পড়েছে।
গত বছর টেনেটুনে ৪০টির মতো ছবি মুক্তি পেয়েছিল যা চাহিদার তুলনায় একেবারেই কম। এর মধ্যে চার-পাঁচটি ছবি থেকে লগ্নিকৃত টাকা ওঠে। অনেক আশার বাতি জ্বালিয়ে চলতি বছর শুরু হলেও জানুয়ারিতে মুক্তি পেয়েছে মাত্র একটি দেশের ছবি (আই অ্যাম দ্য রাজ) ও একটি আমদানি করা কলকাতার ছবি (বিসর্জন)। মানহীন ছবি ‘আই অ্যাম দ্য রাজ’ গ্রহণ করেনি দর্শক বরং বিরক্ত হয়েছে।
অন্যদিকে কলকাতার ছবি ‘বিসর্জন’ সিনেপ্লেক্সের দর্শক ছাড়া বাইরের হলগুলোতে মোটেও ভালো চলেনি।
চলচ্চিত্র প্রদর্শন সমিতির সভাপতি ইফতেখার উদ্দিন নওশাদ এ কথা বলেন। তিনি বলেন, সিনেমার জন্য এ মাসটি ‘খুবই খারাপ’ অবস্থা পার করছে। কেউ যদি হল বন্ধ করে দেয় তবে অবাক হওয়ার কিছু নেই। প্রদর্শক সমিতির চাহিদা অনুযায়ী, প্রতি মাসে কমপক্ষে দু’টি করে ছবি মুক্তি পাওয়া উচিত। ওই ছবি দু’টি অবশ্যই মানসম্মত হতে হবে, সময়োপযোগী হতে হবে। কিন্তু ‘আই অ্যাম দ্য রাজ’ নামে যে ছবিটি মুক্তি পেয়েছে, সেটি কোনো জাতের ছবিই নয়। আমি নিজেই এটা নিয়ে বিরক্ত। এগুলো কে দেখবে?
নওশাদ বলেন, বিপিএল খেলা চলছে, বাণিজ্যমেলা চলছে; সব কিছু মিলিয়ে সিনেমা হল একেবারেই ফাঁকা। আমাদের অবস্থা খুবই শোচনীয়। এ অবস্থায় আর কত দূর যেতে পারব, তার কোনো ঠিক নেই। কিছু মানুষ ছবি বানানো বাদ দিয়ে হলের পরিবেশ ভালো না বলে চিল্লাচিল্লি করে। কিন্তু তাদের বোঝা উচিত ছবি ভালো হলে দর্শক হলে আসে। ‘ভাইজান এলো রে’, ‘দেবী’, ‘পোড়ামন-২’, ‘আয়নাবাজি’, ‘ঢাকা অ্যাটাক’ ও ‘শিকারি’ দেখতে দর্শক হলে এসেছিল। সে সময় কি হলের পরিবেশ ভালো ছিল? তারপরও তো দর্শক এসেছিল ছবি দেখতে।
তারকাদের এ ব্যাপারে কোনো উদ্বেগ না থাকার বিষয়টি নিয়ে নওশাদ বলেন, আমাদের শিল্পীরা এখন আগের মতো প্রফেশনাল মনোভাব দেখাচ্ছেন না। কারণ একজন শিল্পীর অভিনয়ই সবচেয়ে প্রাধান্য হওয়ার কথা। অথচ আমাদের দেশের বেশির ভাগ তারকাই এখন অন্য বিষয়গুলোকে প্রাধান্য দিচ্ছেন।
তারকাদের রাজনীতিতে যুক্ত হওয়ার বিষয়টি নিয়ে সরাসরি মন্তব্য না করে নওশাদ বলেন, ‘প্রত্যেকের আলাদা মতাদর্শ থাকে, তার মাঝেও তারকাদের বুঝাতে হয় ‘আমি সবার’। কিন্তু আমাদের দেশের তারকারা এ ব্যাপারগুলো নিয়ে খুব একটা চিন্তা করছে বলে মনে হয় না।

আগামী ২৫ জানুয়ারি ‘প্রেম আমার-২’ মুক্তির কথা শোনা গেলেও এখনো সেটি অনিশ্চিত। অন্যদিকে ফেব্রুয়ারি মাস উপলক্ষে ইতোমধ্যে মুক্তির মিছিলে রয়েছে একাধিক ছবি। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ফেব্রুয়ারির ১ তারিখে ‘কারণ তোমায় ভালোবাসি’, পরের সপ্তাহে (৮ ফেব্রুয়ারি) ‘ফাগুন হাওয়ায়’ ও ‘দাগ হৃদয়ে’ নামে দুই ছবি মুক্তি পাবে। ভালোবাসা দিবস উপলক্ষে ১৫ তারিখ মুক্তি পাবে আলোচিত ছবি ‘শাহেনশাহ’। ওই তারিখে মুক্তি না হলে ২২ ফেব্রুয়ারি নিশ্চিত মুক্তি পাবে। এ ছাড়া আগামী মাসে আরো মুক্তির অপেক্ষায় আছে ‘রাত্রির যাত্রী’, ‘অন্ধকার জগৎ’, ‘যদি একদিন’। এসব ছবির মুক্তি অনেকাংশে নির্ভর করছে শাকিব খানের ‘শাহেনশাহ’ মুক্তির ওপর।


আরো সংবাদ



premium cement