২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫
`

আওয়ামী লীগের ইশতেহারে যা  আছে

আওয়ামী লীগের ইশতেহারে যা  আছে - সংগৃহীত

‘সমৃদ্ধির অগ্রযাত্রায় বাংলাদেশ’ শীর্ষক ইশতেহারে গ্রামভিত্তিক উন্নয়ন তথা গ্রামে আধুনিক সুবিধার উপস্থিতি, শিল্প উন্নয়ন, স্থানীয় সরকার, স্বাস্থ্য, যোগাযোগ, জলবায়ু পরিবর্তন ও সুরক্ষা, মুক্তিযোদ্ধাদের কল্যাণসহ বিভিন্ন খাতে সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা করেছে আওয়ামী লীগ। ইশতেহারে ২১টি অঙ্গীকার করেছে দলটি। সরকার পরিচালনায় দুই মেয়াদে সাফল্য ও অর্জন এবং আগামী ৫ বছরের লক্ষ্য ও পরিকল্পনা হবহু তুলে দেওয়া হলো।

  • গণতন্ত্র, নির্বাচন ও কার্যকর সংসদ

গণতন্ত্রের অগ্রযাত্রার সাথে রাষ্ট্র ও সমাজ-জীবনের সবক্ষেত্রে উন্নয়ন ওতপ্রোতভাবে জড়িত। জাতির রাজনৈতিক অর্থনৈতিক তথা সার্বিক মুক্তির লক্ষ্য সামনে রেখে প্রতিষ্ঠার লগ্ন থেকে আওয়ামী লীগ গত প্রায় সাত দশক যাবৎ বাঙালির গণতান্ত্রিক অধিকার প্রতিষ্ঠায় নিরবচ্ছিন্নভাবে সংগ্রাম করে চলেছে। আওয়ামী লীগের নেতৃত্বেই বারবার বাংলার জনগণ সামরিক ও স্বৈরশাসনের অবসান ঘটিয়েছে। আজ বঙ্গবন্ধু-কন্যার নেতৃত্বে দেশে গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠা পেয়েছে। এগিয়ে চলছে গণতন্ত্রের প্রাতিষ্ঠানিকীকরণ। গণতন্ত্রের অবিচ্ছেদ্য অংশ নির্বাচন। বঙ্গবন্ধু হত্যার পর অবৈধ ক্ষমতা দখলকারীরা তাদের ক্ষমতাকে কুক্ষিগত ও দীর্ঘস্থায়ী করতে নির্বাচনি-ব্যবস্থাকে সম্পূর্ণ ধ্বংস করে দিয়েছিল। বর্তমানে জাতীয় চার নীতির অন্যতম নীতি গণতন্ত্রের অগ্রযাত্রার পথকে ষড়যন্ত্র-চক্রান্তের মাধ্যমে রোধ করার সাধ্য কারও নেই।

  • সাফল্য ও অর্জন

বিগত ১০ বছরে জাতীয় সংসদই ছিল সকল রাষ্ট্রীয় কর্মকাণ্ডের কেন্দ্রবিন্দু।

প্রয়োজনীয় নির্বাচনি আইন ও বিধিমালা এবং যথাযথ বাজেট বরাদ্দ ও জনবল নিয়ে শক্তিশালী নির্বাচন কমিশন অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ নির্বাচন পরিচালনায় সকল ব্যবস্থা সম্পন্ন করেছে।

সংবিধান ও আইন অনুযায়ী এবং বিশ্বের অন্যান্য গণতান্ত্রিক ব্যবস্থার সাথে সঙ্গতিপূর্ণ নির্বাচন অনুষ্ঠানে মহামান্য রাষ্ট্রপতি কর্তৃক সকল দল ও সকল শ্রেণি-পেশার মানুষের মতামতের ভিত্তিতে সার্চ কমিটি দ্বারা স্বচ্ছ ও স্বাধীন প্রক্রিয়ায় নির্বাচন কমিশন গঠন করা হয়েছে।
আওয়ামী লীগ সরকার দেশে ধর্ম, গোষ্ঠী, বর্ণ, নারী-পুরুষ কিংবা জন্মস্থানভিত্তিক সকল বৈষম্য নিরসনে কাজ করছে। রাজনীতিতে ধর্মের অপব্যবহার বন্ধ করা, বিদ্বেষ দূরীকরণ, তৃতীয় লিঙ্গসহ সকল প্রান্তিক জনগোষ্ঠীকে উন্নয়নের প্রক্রিয়ায় অন্তর্ভুক্তিকরণ, নাগরিক অধিকার ও সুবিধা জনগণের কাছে সহজলভ্য করার লক্ষ্যে কর্মতৎপরতা চলছে।

তথ্য অধিকার আইন, স্বাধীন তথ্য কমিশন, ৪৪টি বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল, অসংখ্য কমিউনিটি রেডিও, অনলাইন নিউজ পোর্টালসহ প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক গণমাধ্যম, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম, দেশব্যাপী ইন্টারনেট সুবিধা আজ অবাধ তথ্যপ্রবাহ সৃষ্টি করে মানুষের তথ্য অধিকার নিশ্চিত করেছে, যা অভূতপূর্ব।

জনগণের মৌলিক চাহিদা পূরণ করে তাদের মৌলিক অধিকার সম্পর্কে সচেতনতা সৃষ্টি, চাহিদা প্রকাশ ও প্রাপ্তি এবং এর সুরক্ষার উপযুক্ত পরিবেশ তৈরি করা হয়েছে।

সংবিধান অনুযায়ী মানুষের মত প্রকাশের স্বাধীনতা, স্বাধীন মানবাধিকার কমিশন, স্বাধীন দুর্নীতি দমন কমিশন, স্বাধীন গণমাধ্যম, স্বাধীন ও শক্তিশালী বিচার বিভাগ, জাতীয় শুদ্ধাচার কৌশল জনগণের মৌলিক অধিকার সুরক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছে।

সরকারের স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি নিশ্চিতকরণে স্থায়ী কমিটিসমূহের সক্রিয় দায়িত্ব পালন এবং মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ও অন্যান্য মন্ত্রিবর্গের প্রশ্নোত্তর পর্বে নিয়মিত অংশগ্রহণ, জাতীয় গুরুত্বপূর্ণ ইস্যুতে সংসদে প্রাণবন্ত আলোচনা, সরকার ও বিরোধী দলের সংসদে গঠনমূলক দায়িত্ব পালন, অশ্লীল ও অগ্রহণযোগ্য এবং অসংসদীয় আচরণ থেকে সংসদকে মুক্ত রাখা হয়েছে।

দশম জাতীয় সংসদের স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী কমনওয়েলথ রাষ্ট্রসমূহের সকল জাতীয় ও স্থানীয় সংসদের স্পিকার ও সংসদ সদস্যদের সমন্বয়ে গঠিত কমনওয়েলথ পার্লামেন্টারি অ্যাসোসিয়েশন (সিপিএ)-এর চেয়ারপারসন নির্বাচিত হন এবং দশম জাতীয় সংসদের অন্যতম সদস্য সাবের হোসেন চৌধুরী বিশ্বের সকল সংসদের স্পিকার ও সংসদ সদস্যদের সমন্বয়ে গঠিত ইন্টার পার্লামেন্টারি ইউনিয়নের (আইপিইউ) প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন। বাংলাদেশের দশম সংসদ ও শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগ সরকারের প্রতি গণতান্ত্রিক বিশ্বের অবিচল আস্থার এ এক অভূতপূর্ব নিদর্শন।

সব ধরনের ষড়যন্ত্র-চক্রান্ত ও বাধা-বিপত্তি অতিক্রম করে জননেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ ঊর্ধ্বে তুলে ধরেন এবং সকল দলের অংশগ্রহণের ভিতর দিয়ে আগামী ৩০ ডিসেম্বর ২০১৮, একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে।

  • লক্ষ্য ও পরিকল্পনা

গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ ও চেতনাকে ঊর্ধ্বে তুলে ধরা হবে এবং সংবিধান হবে রাষ্ট্র পরিচালনার সর্বোচ্চ দলিল।

  • আইনের শাসন ও মানবাধিকার সুরক্ষা

আইনের শাসনের মূল বক্তব্যই হচ্ছে আইনের দৃষ্টিতে সকলেই সমান; কেউই আইনের ঊর্ধ্বে নয়। এই নীতির আরেকটি অর্থ হচ্ছে কেবলমাত্র সংবিধান ও নির্বাচিত সংসদ কর্তৃক প্রণীত আইনসমূহের ভিত্তিতেই রাষ্ট্র পরিচালিত হবে। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টের পর থেকে একটা দীর্ঘ সময় হত্যা, ক্যু ও ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে সংবিধান লঙ্ঘন করে দেশ পরিচালিত হওয়ায় আইনের শাসন ভূ-লুণ্ঠিত হয়েছিল। জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ দেশে আইনের শাসন পুনঃপ্রতিষ্ঠার দীর্ঘ সংগ্রামে নেতৃত্ব দিয়েছে। এযাবৎ তিন মেয়াদে সরকারে এসে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ রাষ্ট্রের সকল পর্যায়ে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা করেছে।

  • সাফল্য ও অর্জন

দেশের সর্বোচ্চ আদালতের রায়ের ভিত্তিতে ২০১১ সালে সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনীতে সাংবিধানিক সুরক্ষাকরণের বিশেষ বিধান অন্তর্ভুক্ত করা হয়। সংবিধানের অনুচ্ছেদ ৭(ক) ও ৭(খ), অনুচ্ছেদ ১৫০ ও চতুর্থ তফসিলের বিধান অনুযায়ী বর্তমানে সংবিধানের বাইরে বা সংবিধান পরিপন্থী কোনো অবৈধ পদক্ষেপ গ্রহণ করে পরবর্তীতে সেটিকে বৈধতা দেওয়ার কোনও আইনি সুযোগ নেই। বিচার বিভাগের অবকাঠামোগত উন্নয়ন, বিচারক নিয়োগের পদ্ধতির স্বচ্ছতা নিশ্চিতকরণ, বিচারকদের জন্য যৌক্তিক বেতন কাঠামো ও অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা নির্ধারণ, তৃণমূল মানুষের বিচার প্রাপ্তির নিশ্চয়তা বিধানে গ্রাম আদালত প্রতিষ্ঠা, বিরোধ নিরসনে বিকল্প পদ্ধতির (এডিআর) ব্যবহার, আইনি সহায়তার জন্য জেলায় জেলায় লিগ্যাল এইড প্রতিষ্ঠা, বিচারকদের উন্নততর প্রশিক্ষণ প্রদানের ব্যবস্থা করার মধ্য দিয়ে বিচার বিভাগের দক্ষতা ও সক্ষমতা বৃদ্ধি এবং সাধারণ মানুষের জন্য ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার কাজ এগিয়ে চলছে।

অবৈধ ক্ষমতা দখলদারেরা আইনের শাসনের পথ রুদ্ধ করে দিতে হত্যাকারীদের দায়মুক্তি দিয়েছে, এমনকি পুরস্কৃতও করেছে। বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ দায়মুক্তির এ অপসংস্কৃতি রোধ করেছে।

বঙ্গবন্ধুর হত্যাকারীদের বিচার, যুদ্ধাপরাধীদের বিচার, ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলার বিচার, বিডিআর হত্যাকাণ্ডের বিচার এবং দণ্ডিত যারা আটক ছিলেন তাদের বিচারের রায় কার্যকর করা হয়েছে। পলাতক আসামিদের স্বদেশে ফিরিয়ে আনার প্রচেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।

  • লক্ষ্য ও পরিকল্পনা

প্রত্যেক নাগরিকের আইনের আশ্রয় ও সাহায্য-সহায়তা লাভের সুযোগ-সুবিধা অবারিত করা হবে।
বিচার বিভাগের স্বাধীনতা সংরক্ষণ ও মর্যাদা সমুন্নত রাখা হবে।

সর্বজনীন মানবাধিকার সুনিশ্চিত করার পাশাপাশি মানবাধিকার লঙ্ঘনের যেকোনও প্রচেষ্টা প্রতিহত করার ব্যবস্থা সুনিশ্চিত করা হবে। মানবাধিকার কমিশনের স্বাধীনতা এবং কার্যকারিতা সুনিশ্চিত করার ব্যবস্থা অব্যাহত থাকবে।
আওয়ামী লীগের ইশতেহার ঘোষণা করেন দলের সভাপতি শেখ হাসিনা

  • দক্ষ, সেবামুখী ও জবাবদিহিমূলক প্রশাসন

মানসম্মত সেবা প্রদানের মাধ্যমে সুশাসন প্রতিষ্ঠায় আমরা প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। রূপকল্প-২০২১ এবং ২০৪১-এর উন্নত বাংলাদেশের লক্ষ্যসমূহ অর্জনে একটি দক্ষ ও জবাবদিহিমূলক সেবামুখী প্রশাসন গড়ে তোলার লক্ষ্যে পরিকল্পনা ও পদক্ষেপ গ্রহণের বিকল্প নেই। সরকারের প্রচেষ্টা, তথ্যপ্রযুক্তির উৎকর্ষতা এবং আধুনিক প্রশিক্ষণের ফলে সরকারি দফতরে কাজের দক্ষতা ও পরিধি বৃদ্ধি পেয়েছে।

সেবা প্রদানের ক্ষেত্রে বর্তমানে বিজ্ঞানভিত্তিক পদ্ধতি প্রয়োগের মাধ্যমে অহেতুক কালক্ষেপণ এবং কাজের জটিলতা হ্রাসে বিভিন্নমুখী উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। সুশাসন প্রতিষ্ঠার জন্য এই ধারাকে অগ্রসর করে নিতে হবে।

  • সাফল্য ও অর্জন

ইতোমধ্যে প্রশাসনের সর্বস্তরে ই-গভর্নেন্স চালুর উদ্যোগ বাস্তবায়িত করা হয়েছে।
সরকারি সেবা প্রদানকারী প্রতিষ্ঠানসমূহের সেবা সম্পর্কিত প্রয়োজনীয় তথ্য প্রদানের বাধ্যবাধকতা সৃষ্টির লক্ষ্যে ‘তথ্য অধিকার আইন-২০০৯’ কার্যকর করা হয়েছে।

প্রজাতন্ত্রের কর্মবৃত্তে নিয়োগ, পদায়ন ও পদোন্নতির মাপকাঠি শুধু জ্যেষ্ঠতা নয়; যোগ্যতা,
দক্ষতা, সততা, নিষ্ঠা, ন্যায়পরায়ণতা, শৃঙ্খলাবোধ এবং জনগণ ও সংবিধানের প্রতি শর্তহীন আনুগত্য বিবেচনায় রাখা হচ্ছে। এজন্য জনপ্রশাসন সংস্কারসহ প্রয়োজনীয় আইন ও বিধিমালা প্রণয়ন এবং কার্যকর করা হচ্ছে।

সরকারি কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের উন্নত কাজের পরিবেশ, জীবনযাত্রার মানোন্নয়ন ও সৎভাবে সম্মানজনক জীবন ধারণের জন্য মূল্যস্ফীতির নিরিখে বেতন-ভাতা উল্লেখযোগ্য হারে বৃদ্ধি করা হয়েছে। গত ১০ বছরের মধ্যে ২০০৯ ও ২০১৫ সালে দুবার প্রায় সাড়ে তিনগুণ (৩৪৪ শতাংশ পর্যন্ত) বেতন বৃদ্ধি করা হয়েছে।

সরকারি কর্মচারীরা ব্যাংক থেকে ৭৫ লাখ টাকা পর্যন্ত গৃহনির্মাণ ঋণ নিতে পারবেন; পাঁচ ধাপে এই পরিমাণ বৃদ্ধি করা হয়েছে (৩০ জুলাই ২০১৮ প্রজ্ঞাপন)। উপসচিব পদমর্যাদা পর্যন্ত সামরিক ও অসামরিক সকল কর্মচারী গাড়ি কেনার জন্য ৩০ লাখ টাকা সুদবিহীন ঋণ পাবেন এবং পরিচালনা বাবদ পাবেন মাসিক ৫০ হাজার টাকা।

শতভাগ পেনশন সমর্পণকারী প্রজাতন্ত্রের অবসরপ্রাপ্ত কর্মচারীদের মাসিক পেনশন পুনঃস্থাপন করা হয়েছে। যারা এককালীন পেনশনের অর্থ উত্তোলন করেছেন, তাদের ১৫ বছর অতিবাহিত হওয়ার পর পেনশন সুবিধা পুনঃস্থাপনের আদেশ জারি করা হয়েছে। অবসরপ্রাপ্ত কর্মচারী এবং তাদের পরিবার এই সুবিধার আওতায় আসবে।

  • লক্ষ্য ও পরিকল্পনা

একটি আধুনিক, প্রযুক্তিনির্ভর, দক্ষ দুর্নীতিমুক্ত দেশপ্রেমিক গণমুখী প্রশাসনিক ব্যবস্থা গড়ে তোলার কাজ অব্যাহত থাকবে। নিশ্চিত করা হবে প্রশাসনের স্বচ্ছতা, জবাবদিহি, ন্যায়পরায়ণতা এবং সেবাপরায়ণতা। প্রশাসনের দায়িত্ব হবে নির্ধারিত নীতিমালা ও নির্বাহী নির্দেশাবলি বাস্তবায়ন। সিদ্ধান্ত গ্রহণ ও বাস্তবায়নে দীর্ঘসূত্রতা, দুর্নীতি, আমলাতান্ত্রিক জটিলতা এবং সর্বপ্রকার হয়রানির অবসান ঘটানোর কাজ অব্যাহত থাকবে। বিশেষভাবে সিদ্ধান্ত গ্রহণের নানা স্তর কঠোরভাবে সংকুচিত করা হবে। নিয়মানুবর্তী এবং জনগণের সেবক হিসেবে প্রশাসনকে গড়ে তোলার কাজ অগ্রসর করে নেওয়া হবে।

  • জনবান্ধব আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী গড়ে তোলা

আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী নিয়ে পূর্বে জনমনে এক ধরনের ভীতি বিরাজ করত। সেটা দূর করে একটি জনবান্ধব আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী গড়ে তোলার লক্ষ্যে কাজ করছে আওয়ামী লীগ সরকার। একটি দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়ন ও জনগণের জীবন-জীবিকা সুরক্ষার পূর্বশর্ত হলো। স্থিতিশীল আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি। এরই ধারাবাহিকতায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীতে ব্যাপক উন্নয়নমূলক কার্যক্রম সম্পাদিত হয়েছে।

  • সাফল্য ও অর্জন

২০০৯ সালের জনসংখ্যার সাথে পুলিশের অনুপাত ১:১৩৫৫ হতে বর্তমানে ১:৮০১-এ দাঁড়িয়েছে। পুলিশের সক্ষমতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই), ট্যুরিস্ট পুলিশ, নৌ পুলিশ, স্পেশাল সিকিউরিটি অ্যান্ড প্রটেকশন ব্যাটালিয়ন, রংপুর রেঞ্জ, রংপুর আরআরএফ, ময়মনসিংহ রেঞ্জ, দুটি র‌্যাব ব্যাটালিয়ন, সাইবার পুলিশ এবং গাজীপুর ও রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ, অ্যান্টি টেররিজম ইউনিট (এটিইউ) এবং কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম (সিটিটিসি)-সহ বিভিন্ন বিশেষায়িত পুলিশ ইউনিট গঠন করা হয়েছে। শিল্পক্ষেত্রে সুষ্ঠু পরিবেশ রক্ষার্থে ইন্ডাস্ট্রিয়াল পুলিশ গঠন করা হয়। এতে শিল্পপ্রতিষ্ঠান বিশেষ করে গার্মেন্ট সেক্টরে শৃঙ্খলা ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হয়েছে।

পুলিশ ইন্সপেক্টরদের জন্য বিশেষ ভাতা প্রবর্তন করা হয়েছে। তারা বছরে একবার এক মাসের মূল বেতনের সমপরিমাণ ভাতা পাচ্ছেন। কারারক্ষী, কোস্টগার্ড এবং আনসার-এর দশম গ্রেড ও নিম্নপদের কর্মচারীদের ঝুঁকি ভাতা প্রদান করা হচ্ছে।

বিগত ২০০৯ সালে সরকার গঠনের পর হতে দেশে উগ্র এবং জঙ্গি তৎপরতার বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতি অনুসরণ করা হয়েছে। সরকারের দৃঢ় অবস্থানের ফলে জঙ্গি অপতৎপরতা নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হয়েছে। সুন্দরবনের দস্যুবাহিনীসমূহের আত্মসমর্পণ দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলীয় ও উপকূলীয় অঞ্চলের নিরাপত্তা ও শান্তিশৃঙ্খলার উন্নয়ন সরকারের এক যুগান্তকারী মাইলফলক। সুন্দরবনকে জলদস্যুমুক্ত করা হয়েছে। মাদকের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতি গ্রহণ করা হয়েছে। বিপুল পরিমাণ মাদক উদ্ধার করা হয়েছে এবং বহু সংখ্যক মাদক ব্যবসায়ীদের আইনের আওতায় আনা হয়েছে। এ অভিযান অব্যাহত থাকবে।

পুলিশকে জনবান্ধব করার লক্ষ্যে যেকোনও প্রয়োজনে পুলিশি সহায়তার জন্য ‘৯৯৯’ সেবা চালু করা হয়েছে। পুলিশ সদস্যদের কল্যাণের জন্য ‘পুলিশ কল্যাণ ট্রাস্ট’ ও ‘কমিউনিটি ব্যাংক’ গঠন করা হয়েছে। আনসার ও ভিডিপি সদস্যদের মাসিক ভাতা প্রবর্তন করা হয়েছে।

  • লক্ষ্য ও পরিকল্পনা

আগামী পাঁচ বছরে প্রয়োজনীয় সংখ্যক জনবল পুলিশসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীতে নিয়োগ করা হবে। সাংগঠনিক কাঠামো সংস্কারের কাজ আগামীতে অব্যাহত থাকবে।

পুলিশসহ অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে আধুনিক ও যুগোপযোগী করার কাজ চলমান থাকবে। সেবা প্রদানের জন্য দ্রুত সাড়াদানের লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় যানবাহন- সরঞ্জামাদি সরবরাহ, সন্ত্রাস ও সাইবার অপরাধ দমনে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন, প্রয়োজনীয় ভূমি ও অবকাঠামোর সংস্থান, প্রশিক্ষণ সক্ষমতা বৃদ্ধিসহ সদস্যদের কল্যাণমূলক কার্যের পরিধি বিস্তারে কৌশলগত পরিকল্পনার আলোকে বহুমুখী কর্মপরিকল্পনা গ্রহণ করা হবে।


আরো সংবাদ



premium cement
‘রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম’ সংবিধান বিরোধী নয় ঝিনাইদহ প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি মিজানুরের ইন্তেকাল থাইল্যান্ডের রাজা-রাণীর সাথেপ্রধানমন্ত্রীর সৌজন্য সাক্ষাৎ গ্যাস বিতরণে সিস্টেম লস ২২ শতাংশ থেকে সাড়ে ৭ শতাংশে নেমে এসেছে : নসরুল হামিদ গণকবরে প্রিয়জনদের খোঁজ কক্সবাজারে ভুল চিকিৎসায় প্রসূতির মৃত্যু, স্বজনদের হাসপাতাল ঘেরাও বঙ্গোপসাগরে ১২ নাবিকসহ কার্গো জাহাজডুবি ভারত-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে বাংলাদেশকে ‘নেট সিকিউরিটি প্রোভাইডার’ হিসেবে দেখতে চায় যুক্তরাষ্ট্র রাজশাহীতে তাপমাত্রা ৪১ দশমিক ৮ ডিগ্রি রাজশাহীতে টানা তাপদাহ থেকে বাঁচতে বৃষ্টির জন্য কাঁদলেন মুসল্লিরা শরীয়তপুরে তৃষ্ণার্ত মানুষের মাঝে পানি ও খাবার স্যালাইন বিতরণ জামায়াতের

সকল