২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫
`

তৃতীয় বেঞ্চে শুনানিতে অনাস্থা খালেদা জিয়ার আইনজীবীদের

বেগম খালেদা জিযা। - ছবি: সংগৃহীত

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তিনটি আসনে কারাবন্দী বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার প্রার্থিতা নিয়ে রিটের শুনানির জন্য তৃতীয় বেঞ্চ গঠন করে দিয়েছেন প্রধান বিচারপতি। প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন এ বিষয়টি নিষ্পত্তির জন্য বিচারপতি জে বি এম হাসানের বেঞ্চে পাঠিয়েছেন। কিন্তু খালেদা জিয়ার আইনজীবী সাবেক অ্যাটর্নি জেনারেল এ জে মোহাম্মদ আলী জুনিয়র বিচারপতি জে বি এম হাসানের বেঞ্চে শুনানি করতে অনাস্থা জানিয়েছেন।

এছাড়া শুনানি আগামী ১৭ ডিসেম্বর (সোমবার) পর্যন্ত স্থগিত করেছেন আদালত।

আদালত থেকে বের হয়ে খালেদা জিয়ার আইনজীবী ব্যারিস্টার বদরুদ্দোজা বাদল বলেন, ডিভিশন বেঞ্চের জ্যেষ্ঠ বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদ ইসির সিদ্ধান্ত স্থগিত করে বেগম খালেদা জিয়ার মনোনয়নপত্র গ্রহণের নির্দেশ দেন। একই সাথে বেগম জিয়ার মনোনয়নপত্র বাতিলে ইসির সিদ্ধান্ত কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না এ মর্মে রুল জারি করেন।

অন্য দিকে একই বেঞ্চের কনিষ্ঠ বিচারপতি মো: ইকবাল কবির জ্যেষ্ঠ বিচারপতির সাথে দ্বিমত পোষণ করে খালেদা জিয়ার রিট খারিজ করে দেন।

যেহুতু জ্যেষ্ঠ বিচারপতি বেগম খালেদা জিয়ার মনোনয়নপত্র গ্রহণের নির্দেশ দিয়েছিলেন,ইসির সিদ্ধান্ত কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না এ মর্মে রুল জারি করেছেন তাই, অন্যদিকে কনিষ্ঠ বিচারপতি দ্বিমত পোষণ করেছিলেন তাই শুনানির বিষয়টি কোন কনিষ্ঠ বিচারপতি শুনানি করতে পারেন না। তাই আমরা অনাস্থা পোষণ করেছি।

আজ বৃহস্পতিবার দুপুর দুইটায় বিচারপতি জে বি এম হাসানের বেঞ্চে খালেদা জিয়ার রিট শুনানি হওয়ার কথা ছিল।

খালেদা জিয়ার আবেদনের শুনানি করেন সিনিয়র অ্যাডভোকেট এ জে মোহাম্মদ আলী। সাথে ছিলেন ব্যারিস্টা ররাগিব রউফ চৌধুরী, ব্যারিস্টার মীর মোহাম্মদ হেলালউদ্দিন, ব্যারিস্টার মামুন প্রমুখ।

অপর দিকে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম।

গত মঙ্গলবার তিনটি আসনে মনোনয়নপত্র বাতিল করে নির্বাচন কমিশনের সিদ্ধান্ত চ্যালেঞ্জ করে খালেদা জিয়ার রিটের বিভক্ত আদেশ দেন হাইকোর্ট। বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদ এবং বিচারপতি মো. ইকবাল কবিরের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট ডিভিশন বেঞ্চ এই বিভক্ত আদেশ দেন। ডিভিশন বেঞ্চের জ্যেষ্ঠ বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদ ইসির সিদ্ধান্ত স্থগিত করে বেগম খালেদা জিয়ার মনোনয়নপত্র গ্রহণের নির্দেশ দেন। একই সাথে বেগম জিয়ার মনোনয়নপত্র বাতিলে ইসির সিদ্ধান্ত কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না এ মর্মে রুল জারি করেন।

অন্য দিকে একই বেঞ্চের কনিষ্ঠ বিচারপতি মো: ইকবাল কবির জ্যেষ্ঠ বিচারপতির সাথে দ্বিমত পোষণ করে খালেদা জিয়ার রিট খারিজ করে দেন।

গত মঙ্গলবার হাইকোর্টের সংক্ষিপ্ত আদেশের অনুলিপি প্রধান বিচারপতির কাছে পাঠান হাইকোর্ট। নিয়মানুযায়ী বিষয়টি প্রধান বিচারপতির কাছে যাবে, তিনি বিষয়টি সমাধানের জন্য তৃতীয় একটি বেঞ্চ গঠন করে দেবেন। কিন্তু আদেশের পর্ণাঙ্গ অনুলিপি না লেখায় বেঞ্চ গঠন না করেই তিনি এটি ফেরত পাঠিয়েছেন।

গত সোমবার খালেদা জিয়ার মনোনয়ন বাতিলের বিরুদ্ধে দায়ের করা রিটের শুনানি শেষে মঙ্গলবার রায়ের জন্য দিন ঠিক করেছিলেন হাইকোর্ট।

আদেশের পর বেগম খালেদা জিয়ার অন্যতম আইনজীবী ব্যারিস্টার কায়সার কামাল সাংবাদিকদের বলেছিলেন, নির্বাচন কমিশন শুরু থেকেই পক্ষপাতিত্ব করছে। আমরা ন্যায়বিচারের জন্য উচ্চ আদালতে এসেছিলাম। প্রিজাইডিং জাজ নির্বাচন কমিশনের সিদ্ধান্ত স্থগিত করে তিনটি মনোনয়নপত্র গ্রহণ করার নির্দেশ দিলেও বেঞ্চের অপর বিচারপতি দ্বিমত পোষণ করেন। এখন নিয়মানুযায়ী প্রধান বিচারপতি তৃতীয় একটি বেঞ্চ গঠন করে দেবেন আবেদনটি নিষ্পত্তি করার জন্য। আমরা প্রত্যাশা করছি, তৃতীয় বেঞ্চে আমরা ন্যায় বিচার পাবো।

বেগম খালেদা জিয়া ফেনী-১, বগুড়া-৬ ও বগুড়া-৭ আসনে প্রার্থী হতে মনোনয়নপত্র দাখিল করেছিলেন। কিন্তু গত ৮ ডিসেম্বর নির্বাচন কমিশনে আপিলের শুনানির পর সংখ্যাগরিষ্ঠের সিদ্ধান্তের ভিত্তিতে বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার তিনটি আসনের মনোনয়নপত্র বাতিল করা হয়। প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কে এম নুরুল হুদার নেতৃত্বে পাঁচ সদস্যের নির্বাচন কমিশন এই সিদ্ধান্ত দেন। প্রার্থিতা বাতিল করা নির্বাচন কমিশনের এই সিদ্ধান্ত চ্যালেঞ্জ করে খালেদা জিয়ার পক্ষে রোববার রিট আবেদনটি করা হয়েছিল।

 


আরো সংবাদ



premium cement