১৬ এপ্রিল ২০২৪, ০৩ বৈশাখ ১৪৩১, ০৬ শাওয়াল ১৪৪৫
`

‘যে কারণে তিস্তা চুক্তি হলো না’

‘যে কারণে নিস্তা চুক্তি হলো না’ - সংগৃহীত

পিকেএসএফ’রএর চেয়ারম্যান অর্থনীতিবিদ ড. কাজী খলিকুজ্জামান বলেছেন, একজনের কারণে তিস্তা চুক্তি হয়েও হল না। এ প্রসঙ্গে তিনি কারো না উল্লেখ করে আরো বলেন, তিস্তা চুক্তি লেখাও হয়ে গিয়েছিল। কিন্তু শেষ মেষ তা হল না। এটা আমাদের জন্য ভালো হল না। আমাদের কষ্ট বাড়ল আরও।

দেশের সব নদী আন্দোলনের অংশগ্রহণে রাজধানীর আগারগাঁওয়ের পিকেএসএফ মিলনায়তনে রোববার এক আলোচনা সভায় সভাপতির বক্তব্যে তিনি একথা বলেন। রিভার ফোরাম-২০১৮ আয়োজন করে নদীবিষয়ক নাগরিক সংগঠন রিভারাইন পিপল। সহ-আয়োজক হিসেবে ছিল জাতীয় নদী রক্ষা কমিশন, পিকেএসএফ এবং সুইডিশ সরকারের অর্থায়নে দক্ষিণ এশীয় আন্তঃসীমান্ত নদীবিষয়ক প্রকল্প ট্রোসার সহযোগী সংস্থা অক্সফাম ইন বাংলাদেশ, সেন্টার ফর ন্যাচারাল রিসোর্সেস স্টাডিজ (সিএনআরএস) ও গণউন্নয়ন কেন্দ্র (জিইউকে)। ‘লিসেনিং টু দ্য গ্রাসরুট’ এই প্রতিপাদ্য নিয়ে নদী সুরক্ষায় সক্রিয় ৬৩টি নদী অঞ্চলের ৮০টির বেশি নাগরিক ও তরুণ সংগঠন অংশ নেয় এই ফোরামে।

আলোচনা সভায় ড. কাজী খলিকুজ্জামান আরো বলেন,উজানের দেশ থেকে বর্ষায় আমাদের পানি আসে। তখন কেউ প্রতিবাদ জানিয়ে বলেন, বর্ষায় ভারত গে খুলে দেয় তাই বাংলাদেশ পানিতে সয়লাব হয়ে যায়। কিন্তু এতথ্য ঠিক নয়। বন্যায় যে কোন ব্যারাজের গেট খুলে রাখতেই হবে।

তিনি বলেন, তাছাড়া বাংলাদেশ ভাটির দেশ। পানি বাংলাদেশ দিয়েই নামবে। অন্য কোন পথ নেই উজানের পানি নামার। আসলে আমাদের সমস্যা হচ্ছে শুষ্ক মৌসুম নিয়ে। বর্ষায় সয়লাব হয়ে যায় দেশ , আর শুষ্ক মৌসুমে বাংলাদেশ পানি পাচ্ছে না। একটি মাত্র নদী নিয়ে দু’দেশের মধ্যে চুক্তি হয়েছে। অথচ আমাদের জীবিজীবিকা সংস্কৃতি নদীর ওপর নির্ভরশীল। এদিকে অনুষ্ঠানের শুরুতেই তিনি আয়োজকদের উদ্যোগকে স্বাগত জানান তিনি। তিনি বলেন, ‘নদী দখল হচ্ছে, জলাশয় দখল হচ্ছে ও ব্যাংক দখল হচ্ছে। আমাদের এসমস্থ দখলদারীত্বের বিরুদ্ধে সোচ্ছার হতে হবে। দূষণ সাধারণ মানুষ করে না। তাই নদী রক্ষার্থে জন আন্দোলন জোরদার করা জরুরি।’

অনুষ্ঠানে প্রধান অতীথির বক্তব্যে জাতীয় নদী রক্ষা কমিশন-এর চেয়ারম্যান ড. মুজিবুর রহমান হাওলাদার বলেন, ‘আমাদের নদী আজ সমস্যা সংকুল, তাই আমাদের জীবনও আজ সমস্যা সংকূল। নদীর সাথে আমাদের সার্বভৌমত্ব ও স্বাধীনতা জড়িত। নদী দেখলে আজ কান্না পায়। বুড়িগঙ্গা দখল হয়ে গেছে। ধলেশ্বরী দখল হচ্ছে। তুরাগ উপর তৈরী হয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়, মেডিকেল সেন্টার। এটা কিভাবে হয়?। আপনারা স্থানীয় প্রশাসনকে চাপ দিন’।

রিভারাইন পিপলের মহা সচিব শেখ রোকন স্থানীয় পর্যায়ে নদী আন্দোলনের গুরুত্ব সম্পর্কেকে বলেন, ‘নদী সুরক্ষার ক্ষেত্রে ধারণা ও সমাধান সব সময় ওপর থেকে চাপিয়ে দেওয়া হয়। মাঠ পর্যায়ের নদী কর্মীদের কথা শোনা হয় না। কিন্তু স্থানীয় পর্যায়ে যারা নদির রক্ষায় প্রতিনিয়ত সংগ্রাম করছে। যারা সমস্থ চাপ-তাপ সহ্য করছে তাদের আন্দোলন সম্পর্কে জানতে চাই। আমরা এই পারথক্য দূর করতে চাই। আমাদের এই মিছিল বড় করতে চাই।’

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে অক্সফামের কর্মসূচি পরিচালক এমবি আখতার বলেন, ‘আমাদের নদীর জীববৈচিত্র বাঁচাতে হবে। সেক্ষেত্রে বিজ্ঞান ভিত্তিক গবেষণার দিকে জোর দিতে হবে। অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন বিশেষ অতিথি নারী অধিকার নেত্রী খুশি কবীর, ধরলা নদী সুরক্ষা কমিটির আহ্বায়ক এস এম আব্রাহাম লিঙ্কন ও পিকেএসএফের উপব্যবস্থাপনা পরিচালক ড. মো. জসিমউদ্দিন। দিনব্যাপী এই আয়োজনে তিনটি কারিগরি অধিবেশনে আলোচনা হয়।

সমাপনী অধিবেশনে প্রধান অতিথি ছিলেন পিকেএসএফের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. আবদুল করিম। রিভারাইন পিপলের সভাপতি ড. মাসুদ পারভেজ রানার সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলনের (বাপা) সাধারণ সম্পাদক ডা. আবদুল মতিন, বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতির প্রধান নির্বাহী সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান, সিএনআরএসের নির্বাহী পরিচালক মোখলেসুর রহমান প্রমুখ


আরো সংবাদ



premium cement