২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫
`

এত আপত্তি সত্ত্বেও ৩০ ডিসেম্বরই ভোট!

-

বিরোধী রাজনৈতিক জোট জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট, ২০ দলীয় জোট, বাম দল, চরমোনাই পীর সাহেবের ইসলামী আন্দোলনসহ অধিকাংশ জোট ও দলই নির্বাচন পেছানোর পক্ষে। তারপরও নির্বাচন কমিশন তাদের নিজস্ব যুক্তি দেখাচ্ছেন যে ৩০ ডিসেম্বর নির্বাচন না হলে সাংবিধানিক জটিলতা তৈরি হবে। ড. কামাল হোসেন, শাহদিন মালিক, আসিফ নজরুলসহ বিশেষজ্ঞরা পর্যন্ত বলেছেন যে নির্বাচন ৩০ থেকে পেছানো হলে কোন সমস্যা হবে না।

বৃহস্পতিবার ইসি সচিব হেলালুদ্দীন আহমদ জানিয়েছেন যে, আগামী ৩০ ডিসেম্বরের পর একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন পেছানোর আর কোনো সুযোগ নেই।

তিনি বলেন, নির্বাচন পেছালে সেটা আইনি জটিলতায় পড়বে। তাই ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী ৩০ ডিসেম্বরই ভোটগ্রহণ হবে বলে কমিশন সভায় বিচার-বিশ্লেষণ করে সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। 

গতকাল নির্বাচন কমিশন ভবনে মিডিয়া ব্রিফিংয়ে তিনি কথা বলেন। গতকাল সকালে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কে এম নুরুল হুদার সভাপতিত্বে বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। বেলা ১১টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। 

এর আগে বুধবার সন্ধ্যায় নির্বাচন ভবনে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট ও আওয়ামী লীগ প্রতিনিধিদলের সাথে নির্বাচন কমিশনের বৈঠক শেষে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, ‘জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট নির্বাচনের তারিখ পেছানোর কথা বলেছে। নির্বাচন কমিশন বলেছে, জানুয়ারিতে অনেক বিষয় আছে। রিইলেকশন করতে গেজেটের ব্যাপার আছে, বিশ্ব ইজতেমার ব্যাপার আছে, সব কিছু মিলিয়ে জানুয়ারিতে করা হলে নির্বাচন আমাদের জন্য অনেক কষ্টদায়ক হয়ে যাবে। বিষয়টি নিয়ে কমিশন বসে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে জানাবে।

নির্বাচন কমিশন সচিব হেলালুদ্দীন আহমদ বলেন, ঐক্যফ্রন্টের ৩ সপ্তাহ নির্বাচন পেছানোর দাবি চুলচেরা বিশ্লেষণ করে ৩০ ডিসেম্বরের পর নির্বাচন পেছানো ইসির কাছে যথেষ্ট যুক্তিযুক্ত এবং বাস্তবসম্মত মনে হয়নি। তাই নির্বাচন পেছানের আর কোনো সুযোগ নেই বলে ইসি সিদ্ধান্ত দিয়েছেন।

সচিব বলেন, গতকাল ঐক্যফ্রন্টের নেতৃবৃন্দ কমিশনের কাছে এসে বেশ কিছু দাবি উপস্থাপন করেছে। সে জন্য আজকে নির্বাচন কমিশন তাদের দাবিগুলো পর্যালোচনা করেছে এবং নিজেদের ভেতরে বৈঠক করেছেন। বৈঠক করে তারা এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন যে, জানুয়ারি মাসে বেশ কয়েকটি আইনি ও সাংবিধানিক বিষয় আছে। যা হাতে যথেষ্ট সময় নিয়ে কাজগুলো করতে হবে। যেমন যদি পুননির্বাচন করতে হয়, উপনির্বাচন করতে হয়, নির্বাচনে অনিয়ম হলে তদন্ত করা, গেজেট প্রকাশ করা, নবনির্বাচিত সংসদ সদস্যদের শপথ গ্রহণ ইত্যাদি।

তিনি বলেন, এ ছাড়াও বিশ্ব ইজতেমা জানুয়ারির দ্বিতীয় এবং তৃতীয় সপ্তাহে অনুষ্ঠিত হবে। সে সময় লাখ লাখ লোকের নিরাপত্তার জন্য আইন শৃঙ্খলাবাহিনীর বিপুলসংখ্যক সদস্যকে মোতায়েন করা হয়। সব দিক বিবেচনা করে এবং চুলচেরা বিশ্লেষণ করে ৩০ ডিসেম্বরের পরে নির্বাচন পেছানোর আর কোনো সুযোগ নেই বলে ইসি সিদ্ধান্ত দিয়েছে। 

এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, বিদেশী পর্যবেক নয়, আমরা এ দেশের নাগরিক যে ১০ কোটি ৪১ লাখ ভোটার রয়েছেন তাদের বিষয়গুলো আগে বিবেচনা করব। তবে বিদেশী পর্যবেকদের সবসময় আমরা স্বাগত জানাই। 

সেনাবাহিনী মোতায়েন সম্পর্কে তিনি বলেন, সকালে আমি বলেছিলাম ২ থেকে ১০ দিনের মধ্যে সেনাবাহিনী নামবে। আসলে আমি যে বিষয়টি বুঝাতে চেয়েছিলাম তা হচ্ছে সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তারা সেনাবাহিনীর জন্য ১০ দিন আগে থেকে তাদের জন্য বাসস্থানের ব্যবস্থা করবেন। তবে নির্বাচনে কবে কখন কিভাবে সেনা মোতায়েন করা হবে সে বিষয়ে এখনো সিদ্ধান্ত নেয়া হয়নি।


আরো সংবাদ



premium cement