২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫
`

এজেন্ট নেই ধানের শীষের

নির্বাচন
ভোট কেন্দ্র ধানের শীষের এজেন্ট নেই - নয়া দিগন্ত

সিলেট সিটি নির্বাচনে মেয়র পদে আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী বদরউদ্দিন আহমদ কামরান যে কেন্দ্রে ভোট দিয়েছেন সেখানে তার প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপির মেয়র প্রার্থী আরিফুল হক চৌধুরীর ধা‌নের শী‌ষের কো‌নো এজেন্ট নেই।

সকাল সা‌ড়ে ৮টা থে‌কে পৌ‌নে ১০টা পর্যন্ত কেন্দ্রটি ঘু‌রে এ চিত্র দেখা গে‌ছে।

নগরের ১৪ নম্বর ওয়ার্ডের কালীঘাট এলাকার সিলেট সরকারি পাইলট উচ্চবিদ্যালয় কেন্দ্রটিতে সকাল পৌ‌নে নয়টার দি‌কে এক নম্বর বু‌থে ভোট দেন বদরউদ্দিন আহমদ কামরান।

এ‌ কে‌ন্দ্রে মোট পুরুষ ভোটা‌র তিন হাজার ৫৬ জন। ৯টি বু‌থে ভোট গ্রহণ করা হ‌চ্ছে। নারীদের মোট ভোট দুই হাজার ৪১৮, ৭টি বুথে ভোট গ্রহণ করা হ‌চ্ছে।

পুরুষ কে‌ন্দ্রের প্রিজাইডিং অফিসার ইশ‌তিয়াক আহ‌মেদ চৌধুরী ব‌লেন, এ কে‌ন্দ্রে মোট ভোটা‌র তিন হাজার ৫৬ জন। ৯টি বু‌থে ভোট গ্রহণ করা হ‌চ্ছে।

ধা‌নের শী‌ষের এজেন্ট না থাকার বিষ‌য়ে জান‌তে চাই‌লে তি‌নি ব‌লেন, ‘ধা‌নের শী‌ষের নয়জন‌কে আমি কার্ড দি‌য়ে‌ছি। কে‌ন্দ্রে কেন তাদের এজেন্ট নেই সেটা আমার জানা নেই।’

নারী কে‌ন্দ্রের প্রিজাইডিং অফিসার ফজলুর রহমান ব‌লেন, ‘ধা‌নের শী‌ষের ৭টি বু‌থের কার্ড দি‌য়ে‌ছি। আমার জানা ম‌তে চার‌টি কে‌ন্দ্রে ধা‌নের শীষের এজেন্ট আছে।’

আরো পড়ুন :
শান্ত সিলেটে ভয়াবহ শঙ্কা
মঈন উদ্দিন খান ও এনামুল হক জুবের, সিলেট থেকে
পক্ষকালব্যাপী প্রচার-প্রচারণা, অভিযোগ-পাল্টা অভিযোগের উত্তাপ শেষে সিলেট সিটিতে ভোটগ্রহণ আজ। দৃশ্যত শান্ত সিলেটে এখন কেবল ভোট নিয়ে শঙ্কা। ভোট উৎসব, না নীরব ‘নয় ছয়’, তা নিয়েই সাধারণ ভোটারদের যত উদ্বেগ। ভোটগ্রহণের সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে নির্বাচন কমিশন।

২৬ দশমিক ৫ বর্গ কিলোমিটার আয়তনের ছোট্ট সিটি করপোরেশন ছেয়ে ফেলা হয়েছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের দিয়ে। ভোট সুষ্ঠু হবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন রিটার্নিং কর্মকর্তা আলীমুজ্জামান ও ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের মেয়রপ্রার্থী বদর উদ্দিন আহমদ কামরান। অন্য দিকে বিএনপি ও জামায়াতের প্রার্থী সুষ্ঠু ভোট হওয়া নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেছেন।

তফসিল ঘোষণার পর থেকে গতকাল ভোটের আগের দিন পর্যন্ত সিলেট সিটিতে ছয়টি মামলায় বিএনপির ৪৭৮ নেতাকর্মীকে আসামি করা হয়েছে। গত ছয় দিনে মামলা হয়েছে চারটি। এসব মামলার আসামিরা কেউ কেউ জামিন নিয়ে এসে নির্বাচনী মাঠে আছেন। অনেকে গ্রেফতার এড়িয়ে চলছেন। পুলিশের নজরদারিও অব্যাহত আছে। গ্রেফতার হয়রানির কারণে বিএনপির এজেন্টরা কেন্দ্রে থাকতে পারবেন কি না তা নিয়ে শঙ্কা দেখা দিয়েছে। এসব মামলা আজ অস্ত্র হিসেবে কাজে লাগানো হতে পারে বলে অভিযোগ রয়েছে।

সিলেট সিটি নির্বাচনে সাতজন মেয়রপ্রার্থী হলেও বিএনপির বিদ্রোহী প্রার্থী মো: বদরুজ্জামান সেলিম নির্বাচন থেকে সরে গেছেন। বাকি ছয়জন মেয়রপ্রার্থী মাঠে রয়েছেন। মূল প্রতিদ্বন্দ্বিতায় রয়েছেন আওয়ামী লীগের বদরউদ্দিন আহমদ কামরান ও বিএনপির আরিফুল হক চৌধুরী। এ ছাড়া জামায়াতের প্রার্থী এহসানুল মাহবুব জুবায়ের প্রথমবার প্রার্থী হয়ে আলোচনায় আছেন।

স্থানীয়রা জানিয়েছেন, সুষ্ঠু ভোট হলে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হবে। দলীয় প্রতীকে ভোট হলেও সাধারণ ভোটারদের কাছে এবার ব্যক্তি ইমেজই মূল বিবেচনায় আছে। বিশেষ করে নতুন ও নারী ভোটাররা ব্যক্তি দেখে ভোট দেবেন। এ ক্ষেত্রে প্রার্থীদের ব্যক্তিগত স্বভাব-চরিত্র, পারিবারিক বিষয়াদি, জনপ্রতিনিধি হিসেবে অতীতের কর্মকাণ্ড ইত্যাদি বিষয় ভোটাররা মূল্যায়ন করছেন।

শহরের বিভিন্ন এলাকায় ভোটারদের সাথে আলাপ করে জানা গেছে, সিলেটে এবারের নির্বাচনে যেসব ঘটনা ঘটেছে তার সাথে তারা পরিচিত নন। প্রত্যেক প্রার্থী নিজ নিজ প্রচার কাজ চালাবেন। ভোটারদের কাছে নিজের প্রতিশ্রুতি ও বক্তব্য তুলে ধরবেন। সেসব দেখে জনগণ ভোট দেবেন। কিন্তু এবার ধরপাকড়, তল্লাশি, বাসাবাড়িতে হানা দেয়া, হুমকি-ধমকি, হামলাসহ যেকোনো ঘটনায় বিরোধী পক্ষের শীর্ষ নেতা ও এজেন্ট দেখে মামলার আসামি করার ঘটনা সিলেটের মানুষ আগে কখনো দেখেননি। আওয়ামী লীগের একটি অংশ মনে করছে, যেহেতু সিলেটের জনগণ রাজনৈতিক সম্প্রীতি প্রত্যাশা করেন। তাই নেতিবাচক ঘটনা যদি জনগণ সিরিয়াসলি নেন, তাহলে জয়ের ক্ষেত্রে নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে।

আর বিএনপির পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, তাদের সামনে বড় চ্যালেঞ্জ দু’টি। একটি হচ্ছে কেন্দ্রে এজেন্ট বসিয়ে রাখা, আরেকটি ভোটারদের কেন্দ্রে হাজির করা।

ভোটের লড়াইয়ে ১৯৫ প্রার্থী :
সিলেট সিটি করপোরেশনে আজকের নির্বাচনে মেয়র, সংরক্ষিত কাউন্সিলর ও সাধারণ কাউন্সিলর পদে মোট ১৯৫ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।

এর মধ্যে মেয়র পদে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী বদর উদ্দিন আহমদ কামরান নৌকা প্রতীক, বিএনপি মনোনীত প্রার্থী আরিফুল হক চৌধুরী ধানের শীষ প্রতীক, স্বতন্ত্র প্রার্থী ও নগর জামায়াতের আমির অ্যাডভোকেট এহসানুল মাহবুব জুবায়ের টেবিল ঘড়ি প্রতীক, বাসদ মনোনীত প্রার্থী আবু জাফর মই প্রতীক, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ মনোনীত প্রফেসর ডা: মোয়াজ্জেম হোসেন খান হাতপাখা প্রতীক ও স্বতন্ত্র প্রার্থী এহছানুল হক তাহের হরিণ প্রতীকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। সংরক্ষিত আসনের ৯টি ওয়ার্ডে ৬২ জন ও ২৭টি সাধারণ ওয়ার্ডে কাউন্সিলর পদে লড়ছেন ১২৭ প্রার্থী।

সিলেট সিটি নির্বাচনে সাতজন মেয়রপ্রার্থী হলেও বিএনপির বিদ্রোহী প্রার্থী মো: বদরুজ্জামান সেলিম নির্বাচন থেকে সরে গেছেন। বাকি ছয়জন মেয়র প্রার্থী মাঠে রয়েছেন।

এ সিটিতে মোট ভোটার তিন লাখ ২১ হাজার ৭৩২ জন। এর মধ্যে পুরুষ এক লাখ ৭১ হাজার ৪৪৪ এবং নারী ভোটার এক লাখ ৫০ হাজার ২৮৮ জন।


আরো সংবাদ



premium cement