২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৭ বৈশাখ ১৪৩১, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫
`

এমন হারের কারণ খুঁজে পাচ্ছেন না মাশরাফিও

এমন হারের কারণ খুঁজে পাচ্ছেন না মাশরাফিও - এএফপি

আফসোসে পুড়ল বাংলাদেশ! এমন ম্যাচও কেউ হারে? সারাক্ষন প্রতিপক্ষকে চাপে রেখে নিশ্চিত জয়ে যখন বাংলাদেশ,ঠিক তখনই লো’য়ার মিডল অর্ডার ব্যাটসম্যানদের ব্যার্থতায় হার। গায়ানায় এ ম্যাচ জিতলেই সিরিজ জিতে যেত বাংলাদেশ। এখনও সে সুযোগ আছে। কিন্তু এমন সুযোগ কী দ্বিতীয়বার আসবে? প্রথম ব্যাটিং করে ওয়েস্টইন্ডিজকে ২৭১ রানে আটকে দিয়ে ভালই খেলে বাংলাদেশ।

বিশেষ করে সিনিয়র খেলোয়াড়দের দায়িত্বপুর্ন ব্যাটিংয়ে যখন জয়ের দ্বারপ্রান্তে। ঠিক তখন সে ম্যাচটা নিজের করে নিতে পারেনি। ভুল থাকবেই। দীর্ঘক্ষন ব্যাটিং করে ভুল করলে তাতে আপত্তি থাকার কথা না। কিন্তু সবাইকেই তো নিজ দায়িত্বগুলো ভালমত পালন করতে হবে। সেটা আর হয়নি। সাব্বির রুম্মন আর মোসাদ্দেক হোসেন মোটেও পারেনি সেটা পুরনে। জয়ের দ্বারপ্রান্তে থেকে ওই দুই ব্যাটসম্যান স্বভাবসুলভ ব্যাটিংটা পারেননি করতে। ছিলেন নার্ভাস। অথচ যে পজিশনে তারা ব্যাটিং করেন। তাদের নার্ভাস হওয়া উচিৎ না। ২৭২ রানের টার্গেটে, ২৬৮ রানে শেষ ইনিংস। হেরেছে তারা এতেই তিন রানে।

আসলে ভুলের সুচনা মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ ও মুশফিকুর রহীমের ভুলবুঝাভুঝিতে রান আউট হওয়া। ৪৬ তম ওভারের কথা। জয়ের জন্য প্রয়োজন ছিল ৩০ বলে ৪০ রান। অধিনায়ক হোল্ডারও ফিরেছিলেন ওই ওভারে। প্রথম বলটা দেন তিনি মুশফিককে। বল ব্যাটে বলে না করতে পারলে মুশফিক কিছুটা খেই হারিয়ে ফেলেন। বলটা কই সেটাই তিনি খুজে পান ক্ষানিকটা পর। ততক্ষনে মাহমুদুল্লাহ মুশফিকের প্রান্তে চলে গিয়েছিলেন। মুশফিক যখন দেখেছেন অন্য প্রান্তে যাওয়া আর সম্ভব না। তখন মাহমুদুল্লাহকে ব্যাক করতে বলেন। ততক্ষনে বল বল চলে যায়। মাহমুদুল্লাহ আর ফিরতে পারেননি। রান আউট।

এ ভুলটাই শেষ করে দিয়েছে টিম বাংলাদেশকে। কারন দুই ব্যাটসম্যানই খেলছিলেন চমৎকার। জয়ের জন্য যেমনটা প্রয়োজন ঠিক তেমন। বিশেষ করে তামিম ও সাকিবের আবারও দ্বায়িত্বপুর্ন এক ইনিংস খেলার পর। এরপর সাব্বির আসেন। কিন্তু নিস্প্রভ ছিলেণ এ ব্যাটসম্যান। ১১ বল খেলে ১২ রান করে আউট। কিন্তু অমন ব্যাটিং করার সময় ছিলনা তখন। অ্যাটাক করে খেলে রান নেবেন নতুবা আউট। কারন এরপরও মোসাদ্দেক,মাশরাফি,মেহেদি মিরাজ ছিলেন। কিন্তু উপরন্তু মুশফিককে স্ট্রাইক দিয়েই খেলছিলেন তিনি। এমতাবস্থায় মুশফিক সাবলীল থাকলেও সাব্বির এক রান দুই রান করে নিচ্ছিলেন। একটি বাউন্ডারী হাকান তিনি। কিন্তু সেটা যথেস্ট ছিলনা। ৪৮ তম ওভারের শেষ বলে বাউন্ডারীতে ক্যাচ দিয়ে আউট হলে চাপে পরে যায় বাংলাদেশ।

শেষ ওভারে জয়ের জন্য প্রয়োজন ছিল ৮ রান। মুশফিক প্রথম বলেই বাউন্ডারীতে ক্যাচ। ম্যাচটা যেন শেষ হয়ে যায় তখনই! মোসাদ্দেক ততক্ষনে নেমেছিলেন। সাথে যোগ দেন মাশরাফি। কিন্তু মোসাদ্দেক যে বিগ শট নিতে পারেন। বা কখনও টি-২০ খেলেছেন। তার ব্যাটিং দেখে মনেই হয়নি! ওই মুহুর্তে (শেষ ওভারে) ৪ বল নস্ট করে সংগ্রহ করেছেন তিন রান। মাশরাফি অপর প্রান্তে থেকে ছটফট করে শেষ বলটি পান। ততক্ষনে শেষ বলে জয়ের জন্য প্রয়োজন ছিল ৫ রান। আর হয়নি। শেষ পাচ ওভারের নাটকীয়তায় জেতা ম্যাচ হারলো বাংলাদেশ ওয়েস্টইন্ডিজের বিপক্ষে। অথচ খেলায় সাকিব ও তামিম যে ব্যাটিং করেছেন সেটা ছিল দুর্দান্ত। ৩২ রানে বিজয় আউট হওয়ার পর ওই দুই ব্যাটসম্যান চমৎকার বোঝাপড়ার মাধ্যমে খেলেন ৯৭ রানের পার্টনারশীপ। দুইজনই করেছিলেন হাফ সেঞ্চুরী। তামিম ৮৫ বলে ৫৪। সাকিব করেন ৭২ বলে ৫৬।

এরপর মাহমুদুল্লাহ ও মুশফিক খেলেন দ্রুত ৮৭ রানের পার্টনারশীপ। এ দু’জন জয় নিয়েই শেষ করবেন,এমনটা ছিল প্রত্যাশা। ওয়েস্টইন্ডিজও অনেকটা হাল ছেড়ে দিয়েছিল। অথচ সে ম্যাচটা কিভাবে হাতছাড়া হয়ে গেল। মুশফিকুর রহীম করেন ৬৭ বলে ৬৮ রান। আর মাহমুদুল্লাহ ৫১ বলে ৩৯ নয়নাভিরাম দুই ছক্কার সাহায্যে।

এর আগে ওয়েস্টইন্ডিজের মিডল অর্ডার ব্যাটসম্যান হেটমায়ার অসাধারন এক ইনিংস খেলে সেঞ্চুরী করেন। তার করা ১২৫ রানের ইনিংস ওয়েস্টইন্ডিজের পিছিয়ে পরা ইনিংসটা চ্যালেঞ্জিং পর্যায়ে চলে যায়। রুবেল নিয়েছিলেন তিন উইকেট। এছাড়া মুস্তাফিজ ও সাকিব নেন দুটি করে উইকেট। ক্রিস গেইল এ ম্যাচেও ব্যার্থ। সুচনায় মাশরাফি লুইসকে ফেরত পাঠানোর পর মিরাজ আউট করে দিয়েছিলেন গেইলকে। গেইল ২৯ করেছিলেন এ ম্যাচে। পরের ম্যাচ সেন্ট কিটসে। ওই ম্যাচে নির্ধারিত হবে সিরিজ।


আরো সংবাদ



premium cement