কেন্দ্রীয় ভর্তি পরীক্ষা : কী ভাবছে শিক্ষার্থীরা?
- মোরশেদ মুকুল
- ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০২০, ১৪:০৯, আপডেট: ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০২০, ১৪:১৯
পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে কেন্দ্রীয়ভাবে পরীক্ষা নেয়ার কথা জানিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি)। তাতে দুর্ভোগ লাঘবের সাথে মিশ্র প্রতিক্রিয়াও জানিয়েছে শিক্ষার্থীরা।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী রাশেদুল ইসলাম জানান, একটি মধ্যবিত্ত পরিবারের ছেলের দেশের সবকয়টি বিশ্ববিদ্যালয়ের ফরম পূরণ করে পরীক্ষা দেয়া সম্ভব নয়। যাতায়াত, থাকা, ফরম পুরণের ব্যয়ভার বহন করতে না পারায় হাজারো স্বপ্ন অঙ্কুরে ঝরে পড়ে। আবার এমনও হয় একজন শিক্ষার্থী একাধিক বিশ্ববিদ্যালয়ে চান্স পেয়েছে। সে পছন্দের একটিতে ভতি হয়েছে ঠিকই। কিন্তু তার কারণে অনেককে বঞ্চিত হতে হচ্ছে। যার বিশ্ববিদ্যালয়ে সুযোগ পাওয়ার কথা, পরে সে কোনো একটি প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয় কিংবা কলেজে স্থান পায়।
ঢাকা কলেজের এইচএসসি প্রথম বর্ষের কয়েকজন শিক্ষার্থী জানায়, এখন যে উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে তাতে উপকার হবে অনেক। বারবার ফরম পুরনের ঝামেলা থাকবে না। আগের তুলনায় বিশ্ববিদ্যালয়ে চান্স পাওয়াও সহজ হবে।
এ ব্যাপারে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) ভিপি নুরুল হক নুর দৈনিক নয়া দিগন্তকে বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি) পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর ভর্তি পরীক্ষা কেন্দ্রীয়ভাবে নেয়ার যে উদ্যোগ নিচ্ছে নিঃসন্দেহে তা প্রশংসনীয়। যদি সেটা সুষ্ঠু ও সফলভাবে বাস্তবায়ন করা যায়। তাতে শিক্ষাথীদের দুর্ভোগ কমে যাবে। কিন্তু সেখানে একই সময়ে বিশাল সংখ্যক শিক্ষার্থীর পরীক্ষা নেয়ায় প্রশ্ন ফাঁসের মতো বিষয়টি সহজ হয় দাঁড়াবে। যেখানে ঢাকার কেন্দ্রগুলোতে প্রশ্ন ফাঁসের মতো ঘটনা ঘটে, সেখানে ঢাকার বাইরে কেন্দ্রগুলোতে রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে প্রশ্ন ফাঁসের মতো ঘটনা আরো সহজতর হবে।
তিনি বলেন, ইউজিসি যদি কেন্দ্রীয়ভাবে পরীক্ষার নেয়ার ক্ষেত্রে জেনারেল বিশ্ববিদ্যালয়, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়সহ ভিন্ন ক্যাটাগরির বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে যদি ভিন্ন ভিন্নভাবে পরীক্ষার আওতায় আনা হতো, তাহলে সেটি শিক্ষার্থীদের জন্য আরো ভালো হতো। এখন যেটা হবে বিশাল সংখ্যক শিক্ষার্থীর মেধা মূল্যায়নের ক্ষেত্রে তারতম্য দেখা দিবে। যেহেতু সব পরীক্ষার্থীর খাতা একই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক দ্বারা মূল্যায়ন সম্ভব নয়, তাতে কিছু সমস্যা থেকেই যায়।
এর আগে বুধবার বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে কেন্দ্রে ভর্তি পরীক্ষা নিয়ে রাজধানীর আগারগাঁওয়ে ইউজিসি মোট ১২টি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসিদের নিয়ে সভা করে।
সভা শেষে ইউজিসির চেয়ারম্যান অধ্যাপক কাজী শহীদুল্লাহ সাংবাদিকদের বলেন, চলতি বছরে কেন্দ্রীয় ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। সভায় কেন্দ্রীয় ভর্তি পরীক্ষা নিয়ে কারো দ্বিমত ছিল না।
ইউজিসির একাধিক সূত্রে জানা যায়, শেষ পর্যন্ত সব বিশ্ববিদ্যালয় নিয়ে কেন্দ্রীয় ভর্তি পরীক্ষার চেষ্টা চালিয়ে যাবে ইউজিসি। শেষ পর্যন্ত যদি কোনো কোনো বিশ্ববিদ্যালয় অপারগও হয়, তাহলে তাদের বাদ রেখে বাকিদের নিয়েই এ বছর নতুন পদ্ধতিতে ভর্তি পরীক্ষা নেয়া হবে। প্রথমে ওই পরীক্ষাকে সমন্বিত ভর্তি পরীক্ষা বলা হলেও পরে এর নাম দেয়া হয়েছে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় সমূহে কেন্দ্রীয় ভর্তি পরীক্ষা।
বর্তমানে দেশে ৪৬টি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের কার্যক্রম চলছে। যদিও জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়, উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয় ও ইসলামি আরবি বিশ্ববিদ্যালয় সহ সাতটি বিশ্ববিদ্যালয় সরাসরি শিক্ষার্থী ভর্তি করে না।
যেসব বিশ্ববিদ্যালয়ে স্নাতক প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী ভর্তি করা হয় সেসব বিশ্ববিদ্যালয়ে স্নাতক প্রথম বর্ষে প্রায় ৬০ হাজার আসন রয়েছে। তাতে পরীক্ষা দেন কয়েক লাখ শিক্ষার্থী। ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থী ও তাদের অভিভাবকদের দুর্ভোগ কমাতে কয়েক বছর ধরে সমন্বিত পদ্ধতিতে ভর্তি পরীক্ষা নেয়ার চেষ্টা চলছে। চেষ্টার অংশ হিসেবে গত বছর সাতটি কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে সমন্বিত ভর্তি পরীক্ষা নেয়া হয়। এ বছর সব বিশ্ববিদ্যালয়ে চলতি শিক্ষাবর্ষ থেকে কেন্দ্রীয় ভর্তি পরীক্ষা নেয়ার কথা হচ্ছে। ভর্তি কার্যক্রমের পুরো কাজটি হবে অনলাইনে।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা