আগামী সপ্তাহে বুয়েটে আরো একটি ‘বড়’ সিদ্ধান্ত
- অনলাইন প্রতিবেদক
- ২২ নভেম্বর ২০১৯, ১৪:৩৪
বিভিন্ন সময়ে হলগুলোতে র্যাগিংয়ে অভিযুক্তদের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে যাচ্ছে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট) প্রশাসন ।
প্রশাসন সূত্র জানায়, অভিযুক্তদের বিষয়ে গঠিত তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন তাদের হাতে এসেছে শনিবার থেকে অভিযুক্তদের কাছে চিঠি পাঠানো হবে। পরে বোর্ড অব রেসিডেন্স এন্ড ডিসিপ্লিন তাদের সাজা দিবেন।
বুয়েটের একাধিক শিক্ষার্থীর সাথে কথা হলে তারা জানায়, একাডেমিক কার্যক্রমে ফিরতে সর্বশেষ তারা বুয়েট প্রশাসনের কাছে তিন দফা দাবি জানিয়েছিলেন। বৃহস্পতিবার রাতে তিন দফা দাবির একটি দফা পূরণ হয়েছে। তাতে তারা সফলতা দেখছেন। বুয়েট প্রশাসন আন্তরিক হলে আরো দুই দফা দ্রুত সময়ে বাস্তবায়ন হবে বলে মনে করছেন শিক্ষার্থীরা।
তারা জানায়, আবরার হত্যায় অভিযুক্ত ২৬জনকে বুয়েট থেকে বহিষ্কার আমাদের আন্দোলনের সফলতার প্রথম ধাপ অতিক্রম করেছে। বিভিন্ন সময়ে র্যাগিংয়ের ঘটনায় যারা অভিযুক্ত তাদের শাস্তি নিশ্চিত এবং ছাত্র রাজনীতি ও র্যাগিংয়ে যারা অভিযুক্ত হবেন অপরাধের মাত্রা অনুযায়ী একটি নীতিমালা প্রণয়ন আমাদের আন্দোলন চূড়ান্ত পর্যায়ে নিয়ে যাবে।
বুয়েটের ছাত্রকল্যাণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. মিজানুর রহমান বলেন, আমরা সব সময় বলেছি আমাদের ওপর আস্থা রাখার জন্য। সবকিছু দৃশ্যমান হতে সময় দরকার। আবরার হত্যায় গঠিত তদন্ত কমিটি এর আগে কিন্তু ২৯ বার বসেছে। অনেক কাজ হয়েছে যা অদৃশ্য। এতোদিনের ফসল কালকের ঘটনা। আমি বলব আমাদের ওপর আস্থা রাখার জন্য। যে কথা আমরা শিক্ষার্থূীদের দিয়েছি সে অনুযায়ী কাজ করবো।
অপর এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, হলের র্যাগের ঘটনায় অভিযুক্তদের বিষয়ে তদন্ত প্রতিবেদন আমরা পেয়েছি। আগামী শনিবার থেকে আমরা অভিযুক্তদের চিঠি পাঠানো শুরু করব। তিনটি হলে র্যাগিংয়ের যে অভিযোগ আগামী সপ্তাহের মধ্যে বা পরের সপ্তাহের প্রথম দিকে অভিযুক্তদের সাজা দিয়ে দিবো।
তিনি বলেন, শিক্ষার্থীদের দাবির প্রেক্ষিতে আগামীতে ছাত্র রাজনীতি বা র্যাগিংয়ের মতো ঘটনায় যদি কেউ জড়িত হয় তার শাস্তি কি হবে তার একটি নীতিমালা করার জন্য কমিটি গঠিত হয়েছে। তারা কাজ করছে। তাদের কাজও শেষ পর্যায়ে। আশা করছি আগামী সপ্তাহে শেষ হবে।পরে সেটি একাডেমিক কাউন্সিলের মাধ্যমে চূড়ান্ত করা হবে।
অপর এক প্রশ্নের জবাবে মিজানুর রহমান বলেন, শিক্ষার্থীদের আজীবন বহিষ্কারের এতো বড় ঘটনা আর ঘটেনি।
তিনি বলেন, আমরা সব সময় শিক্ষার্থীদের একাডেমিক কার্যক্রমে ফিরতে আহ্বান জানাই। তারা যদি বলে আগামীকাল আমরা সিদ্ধান্ত নিয়ে পরীক্ষার তারিখ ঘোষণা করতে পারি।
আদালতের মাধ্যমে অভিযুক্তরা নির্দোষ প্রমাণিত হলে ছাত্রত্ব ফিরে পাবে কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমাদের কাছ থেকে ছাত্রত্ব ফিরে পাওয়ার কোনো সুযোগ আর নেই। কিন্তু আদালত যদি নির্দেশনা দেয় তাহলে আমরা আদালতের নির্দেশনা পালন করব।
শিক্ষার্থীদের শাস্তির বিষয়ে তিনি বলেন, আমাদের গঠিত তদন্ত কমিটিতে তাদের যে ধরনের সংশ্লিষ্টতা এসেছে তার ভিত্তিতে এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়ম অনুযায়ী আমরা শাস্তির ব্যবস্থা করেছি।
এর আগে বৃহস্পতিবার মধ্যরাতে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদ হত্যার ঘটনায় ছাত্রলীগের নেতা সহ অভিযুক্ত ২৬জনকে আজীবন বহিষ্কার করেছে বুয়েট প্রশাসন।
এছাড়া ৬ শিক্ষার্থীকে বিভিন্ন মেয়াদে শাস্তি দেয়া হয়েছে।
আবরার হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় গঠিত তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনের ভিত্তিতে বোর্ড অফ প্রেসিডেন্ট অ্যান্ড ডিসিপ্লেনারি বোর্ড এ সিদ্ধান্ত নেয়।
বৃহস্পতিবার রাতে ছাত্র কল্যাণ পরিদপ্তরের পরিচালক অধ্যাপক ড. মিজানুর রহমান খান স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, আজীবন বহিষ্কার করা ২৬ জনের মধ্যে ২৫ জন পুলিশের অভিযোগপত্র অনুযায়ী অভিযুক্ত। এছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শৃঙ্খলা ভঙ্গের কারণে আরও ছয় জনকে বিভিন্ন মেয়াদে শাস্তি প্রদান করা হয়েছে। জানাজায়, বহিষ্কৃতদের মধ্যে ১২জন বুয়েট শাখা ছাত্রলীগের বিভিন্ন পদে ছিলেন। অপর আসামিরা ও ছাত্রলীগের কর্মী বা সমর্থক ছিলেন। এর আগে গত ১৩নভেম্বর আবরার হত্যার ঘটনায় ২৫জনকে আসামি করে আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেয় গোয়েন্দা পুলিশ। গ্রেপ্তাররা আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। তাঁদের জবানবন্দিতে হত্যাকাণ্ডে অপর আসামিদের সম্পৃক্ততা উঠে আসে।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা