২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১, ১৪ শাওয়াল ১৪৪৫
`

বুলবুলের আঘাতে মাদারীপুরে শঙ্কায় জেএসসি ও এসএসসি পরীক্ষার্থীরা

ঘূর্ণিঝড় বুলবুলের আঘাতে ভেঙ্গে পড়েছে চৌহদ্দি মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়ের একটি টিনের ঘর - ছবি : নয়া দিগন্ত

ঘূর্ণিঝড় বুলবুলের আঘাতে মাদারীপুর সদর উপজেলার কেন্দুয়া ইউনিয়নের চৌহদ্দি মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়ের একটি টিনের তৈরি ঘর পুরোটাই ভেঙে পড়েছে। এতে তিন শতাধিক শিক্ষার্থীর পড়াশোনা বন্ধ হয়ে গেছে।

স্কুল কর্তৃপক্ষ বলছে, সরকারি সহযোগিতা না পেলে ঘরটি নতুন করে তুলে শিক্ষার্থীদের পাঠদান করানো অসম্ভব। তবে জেলা প্রশাসন পরিদর্শন করে মেরামত করার আশ্বাস দিয়েছে।

সরেজমিনে দেখা গেছে, কয়েক বছর আগে প্রতিষ্ঠিত চৌহদ্দি মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়টি এখন পর্যন্ত এমপিওভুক্ত হয়নি। ফলে সব সময়ই আর্থিক টানাপড়েন লেগেই আছে। এর মধ্যে হঠাৎ বুলবুলের আঘাতে বিদ্যালয়ের টিনের মূল শ্রেণিকক্ষটি ভেঙে পড়ে। এতে তিন শতাধিক শিক্ষার্থীর পাঠদান বন্ধ হয়ে গেছে। এখন এই শিক্ষার্থীদের কীভাবে পড়াশোনা করাবেন, সেই চিন্তায় পড়েছেন শিক্ষক ও অভিভাবকরা। স্কুলটিতে এ বছর জেএসসি পরীক্ষার্থী ৫৭ জন ও এসএসসি পরীক্ষার্থী ৩৫ জন।

স্থানীয় বাসিন্দা ও অভিভাবকরা বলেন, এক সময় এই এলাকার মেয়েরা তেমন পড়াশোনা করত না। অল্প বয়সেই তাদের বিয়ে দিয়ে দিত পরিবার। স্কুলটি প্রতিষ্ঠিত হওয়ায় এলাকায় পড়াশোনার প্রতি আগ্রহ বেড়েছিল। এই স্কুলের কারণে কয়েক বছরের মধ্যে এ এলাকায় শিক্ষার হার শতভাগ হবে বলে আশা করা হচ্ছিল। কিন্তু স্কুলটি যেভাবে ভেঙেছে, মনে হচ্ছে মাটির নিচে চলে গেছে সব আশা-ভরসা।

চৌহদ্দি বিদ্যালয়ের এসএসসি পরীক্ষার্থী অনামিকা বালা বলে, ‘এবার আমি এসএসসি পরীক্ষা দেব। কিন্তু যখন জানলাম আমাদের স্কুলটি ঝড়ে পড়ে গেছে, তখন আমার খুব খারাপ লাগছে। তাই দেখতে এসেছি। সরকারের কাছে দাবি জানাই আমাদের স্কুলটির দ্রুত সংস্কারের।’

নবম শ্রেণির শতাব্দী সরকার বলে, আমাদের আগে অনেক দূর গিয়ে পড়াশোনা করতে হতো। কিন্তু এই বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পর আমারসহ এলাকার বেশিরভাগ মেয়ের পড়াশোনা করতে সুবিধা হয়েছে। এখন বিদ্যালয়টি দ্রুত সংস্কার ও সরকারি সহযোগিতা প্রয়োজন।

চৌহদ্দি মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মৃণাল কান্তি পাণ্ডে জানান, রোববার দুপুরে মাদারীপুর দিয়ে বয়ে যাওয়া ঘূর্ণিঝড় বুলবুলের আঘাতে স্কুলটির টিনের তৈরি ঘরটি ভেঙে যায়। এমন অবস্থায় ক্লাস করতে না পারলে ফলাফল খুব খারাপ হয়ে যেতে পারে।

চৌহদ্দি বালিকা উচ্চবিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি বিশ্বজিৎ বৈদ্য নাদিম বলেন, ‘মেয়েদের পড়াশোনা যাতে বন্ধ না হয় সে ব্যবস্থা গ্রহণ করার জন্য আমাদের আশপাশের মানুষজনসহ সরকারকেও আহ্বান জানাচ্ছি।’

মাদারীপুর অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মোঃ আজাহারুল ইসলাম বলেন, ‘বিদ্যালয়টি পরিদর্শন করে জরুরি ভিত্তিতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’


আরো সংবাদ



premium cement