১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৬ বৈশাখ ১৪৩১, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫
`

জাবি শিক্ষকদের কর্মবিরতি, বিক্ষোভ-সমাবেশ, ছাত্রলীগের পাল্টা বিক্ষোভ

- ছবি : নয়া দিগন্ত

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে দুর্নীতির প্রতিবাদে বিক্ষোভ সমাবেশ ও কর্মবিরতি পালন করেছে শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। অপরদিকে ‘দুর্নীতি বিরুদ্ধে জাহাঙ্গীরনগর’এর এক সংগঠককে ছাত্রলীগের মারধরের অভিযোগকে অপপ্রচার দাবি করে বিক্ষোভ মিছিল করেছে জাবি শাখা ছাত্রলীগ।

আন্দোলনকারী শিক্ষকরা রোববার সকাল এগারোটা থেকে দুপুর দুইটা পর্যন্ত কর্মবিরতি পালন করে। বেলা সাড়ে এগারোটার দিকে কর্মবিরতি পালনকারী শিক্ষকরা কলা অনুষদ থেকে প্রতিবাদী পদযাত্রা শুরু করে পুরাতন রেজিস্ট্রার পর্যন্ত পদক্ষিণ করে। পদযাত্রা শেষে রেজিস্ট্রার ভবনের সামনে পুর্বনির্ধারিত দুর্নীতি বিরোধী শিক্ষক সমাবেশ করা হয়।

সমাবেশে অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ বলেন, ‘মহাপরিকল্পনার দুর্নীতির সঙ্গে এখন যোগ হয়েছে সন্ত্রাস। সন্ত্রাসী এবং আধিপত্য যদি অব্যাহত থাকে তাহলে উদ্ভূত সমস্যার সমাধান হবে না। গতকাল চলমান আন্দোলনের এক সংগঠকের উপর হামলা করা হয়েছে এ হামলা করে বিশ্ববিদ্যালয়ে শান্তি আনা যাবে না। এছাড়াও তিনি দুর্নীতি, সমালোচিত মাস্টারপ্লান এবং আন্দোলন ধমাতে সকল অপতৎপরতার প্রতিবাদ করেন।

দর্শন বিভাগের অধ্যাপক কামরুল আহসান বলেন, ‘বর্তমান ভিসি ফারজানা ইসলামের জানার কথা তিনি কিন্তু সাবেক ভিসি আনোয়ার বিরোধী আন্দোলনের সফলতা হিসেবে ক্ষমতায় এসেছেন। সেই আন্দোলনের সুযোগভোগী বর্তমান প্রশাসন ও ভিসি। অথচ তারা বর্তমানে অতীত আন্দোলনের ন্যায্যতা ও স্পৃহাকে ভুলে গিয়ে যৌক্তিক আন্দোলনকে ভুলণ্ঠিত করতে চাচ্ছেন। সাংবাদিকদের লাঞ্ছনা করছেন। ক্ষমতাসীন ছাত্র নেতারা আন্দোলনকারীদের মারধর করছে। সকল কর্মকতা কর্মচারীকে জোর করে প্রশাসনের পক্ষে দুর্নীতির পক্ষে আন্দোলন করতে রাস্তায় আনা হচ্ছে। আমাদের সকলকে মনে রাখতে হবে জাহাঙ্গীরনগরে প্রতিবাদী আন্দোলন শুরু করে অল্প কয়েকজন কিন্তু পরিসমাপ্তি ঘটে বৃহৎ পরিসরে। জাবির অতীত ইতিহাস বলে প্রশাসন যত দ্রুত দাবি মেনে নিবে তাতেই কল্যাণ হবে।’

বাংলা বিভাগের অধ্যাপক রেজাউল করিম তালুকদারের সঞ্চালনায় সমাবেশে আরোও বক্তব্য রাখেন অধ্যাপক আব্দুল জব্বার হাওলাদার, অধ্যাপক কামরুল আহসান, অধ্যাপক আনোয়ারুল্লাহ ভূঁইয়া, অধ্যাপক নূরুল ইসলাম, অধ্যাপক জামাল উদ্দিন, অধ্যাপক সাদিয়া আহমদ, অধ্যাপক সাঈদ ফেরদৌস, অধ্যাপক রাইয়ান রাইন, অধ্যাপক শামীমা সুলতানা প্রমুখ।

এদিকে অপরিকল্পিত উন্নয়ন, দুর্নীতি ও আন্দোলনকারী সাইমুমকে মারধরের প্রতিবাদে দুপুর একটায় বিক্ষোভ মিছিল করেছে ‘দুর্নীতির বিরুদ্ধে জাহাঙ্গীরনগর’। এসময় আন্দোলননের অন্যতম সংগঠক ও সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি আশিকুর রহমান বলেন, ‘আন্দোলনের দুইজন সংগঠককে একের পর এক সরকারদলীয় ছাত্র সংগঠন কর্তৃক নির্যাতন করা হয়েছে। আমরা বিশ্ববিদ্যালয়ের কাছে তাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেয়ার দাবি জানিয়েছি। যদি তাদের বিরুদ্ধে সঠিক ব্যবস্থা না নেয়া হয় তাহলে আমরা আরো কঠিন আন্দোলনের দিকে যাব। এছাড়াও আলোচনার মাধ্যমে তিনদফা দাবির সমাধান না হওয়া পর্যন্ত তাদের সকল আন্দোলন অব্যাহত থাকবে বলে জানান।

অপরদিকে জাবি থিয়েটারের সাধারণ সম্পাদক সাইমুকে ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক অভিষেক মণ্ডলের মারধরের অভিযোগকে অপ্রপ্রচার দাবি করে প্রশাসনের দায়েরকৃত মামলার প্রতিবাদে বিক্ষোভ করেছে শাখা ছাত্রলীগ।

বিক্ষোভ মিছিল শেষে ছাত্রলীগের সভাপতি জুয়েল রানা বলেন, ‘আন্দোলনকারীদের চাপে পড়ে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন এক শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে মামলা করেছে। একপাক্ষিক সিদ্ধান্তকে বাস্তবায়ন করার জন্য ছাত্রলীগের উপর চাপ সৃষ্টি করছে। যে অভিযোগ তোলা হয়েছে আসলেই যদি তেমন ঘটনা ঘটে থাকে, তবে দুইজনকে ডেকে তদন্ত করুন। তদন্ত সাপেক্ষে আমার কর্মী অপরাধী হলে তার দায়িত্ব নিয়ে সংগঠন থেকে বিচার করব এবং বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে ব্যবস্থা নিতে সহযোগিতা করব।’


আরো সংবাদ



premium cement