২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫
`
বরিশাল শিক্ষা বোর্ড

১ নম্বরের জন্য জিপিএ ৫ বঞ্চিত

১ নম্বরের জন্য জিপিএ ৫ বঞ্চিত - নয়া দিগন্ত

মাত্র ১ নম্বরের জন্য আটকে দেয়া হলো একজন শিক্ষার্থীর জিপিএ ৫। ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী রসায়নে ৭৯ পেয়েছে। অন্য সাত বিষয়ে তার এ প্লাস রয়েছে। তাকে রসায়নে ৭৯-এর স্থলে ৮০ দেয়া হলে সে জিপিএ ৫ পেত। ঘটনাটি ঘটেছে বরিশাল শিক্ষা বোর্ডে এবারের এসএসসি পরীক্ষার ফলে।

পরীক্ষকরা জানান সাধারণত খাতা দেখার সময় পরীক্ষকদের যেসব নির্দেশনা দেয়া হয় তার মধ্যে একটি হলো কেউ ৭৬ এমনকি ৭৫ পেলেও তাকে যেন ৮০ দেয়ার ব্যবস্থা করা হয়। তা ছাড়া মোট প্রাপ্ত নম্বরের ক্ষেত্রে কারো বেলায় যেন ‘উন’ রাখা না হয়। কিন্তু এ নির্দেশনা মানা হলো না এ শিক্ষার্থীর ক্ষেত্রে।

ভুক্তভোগী এ শিক্ষার্থীর নাম রাতুল ইসলাম। গত ৬ মে প্রকাশিত এসএসসি পরীক্ষায় বিজ্ঞান বিভাগ থেকে সে সাত বিষয়ে এ প্লাস পেয়েছে। দুই বিষয়ে এ গ্রেড এবং একটিতে এ মাইনাস পেয়েছে সে। যে দুই বিষয়ে এ গ্রেড পেয়েছে তার মধ্যে রসায়ন একটি। রসায়নে পেয়েছে ৭৯। এ বিষয়ে তাকে ৮০ দেয়া হলে তার এসএসসি পরীক্ষার ফল জিপিএ ৫ আসত। কিন্তু এ বিষয়ে এ প্লাস না হওয়ায় তার ফল জিপিএ ৪.৯৪।

রাতুল ইসলাম জেএসসিতে ট্যালেন্টপুলে বৃত্তি পেয়েছে। পরিচিত সবার কাছে সে মেধাবী ছাত্র হিসেবে পরিচিত। পরিবারের স্বপ্ন ছিল এসএসসিতেও সে ভালো ফল করবে। ভবিষ্যতে ডাক্তারি বা ইঞ্জিনিয়ারিং বিষয়ে উচ্চশিক্ষা গ্রহণের স্বপ্ন ছিল তার। সে জন্য এসএসসির পর ঢাকায় ভালো কোনো কলেজে এইচএসসিতে ভর্তি করানোর পরিকল্পনা ছিল। কিন্তু এসএসসিতে জিপিএ ৫ না পাওয়ায় তাদের সেসব স্বপ্ন ম্লান হয়ে গেছে। জিপিএ ৫ না পাওয়ায় এলাকার একটি কলেজে ভর্তি হতে হয়েছে তাকে। রাতুলের পরিবার জানায় নিয়ম অনুযায়ী ফল পুনঃনিরীক্ষার আবেদন করা হয়েছিল। তারা আশায় ছিল ফল পরিবর্তন হবে। কিন্তু কোনো লাভ হয়নি। ফলে হতশায় ভেঙে পড়েছে রাতুলের পরিবার।

একজন পরীক্ষক এ বিষয়ে জানান, ৭৯ পেলে অবশ্যই ৮০ দেয়ার নিয়ম। আমাদের পরীক্ষার সময় এ বিষয়ে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। কিন্তু শুধু আমাদের নির্দেশনা দিলে চলবে না। কারণ আমরা দেখি শুধু রচনামূলক খাতা। রচনামূলক ও এমসিকিউ যোগ করে মোট নম্বর কত হয় তা আমাদের পক্ষে দেখা সম্ভব হয় না। রচনামূলক ও এমসিকিউ টেবুলেশেনের দায়িত্বে যারা থাকেন তাদের এ নির্দেশ দিলে তারা এটি করতে পারেন পরীক্ষা নিয়ন্ত্রকের অধীনে। কিন্তু সেটা করা হয়নি বোঝা যায় এখানে। ৭৯ পাওয়ার পরও সেটি ৮০ না করা খুবই দুর্ভাগ্যজনক।

সাবেক একজন পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক জানান, রচনামূলক খাতা দেখার সময় এ ধরনের ১ বা ২ নম্বরের ঘাটতি থাকলে পরীক্ষকরা মানবিক কারণে তা বাড়িয়ে দেন এবং এটা অনেক দিনের চর্চা। কিন্তু বর্তমানে এমসিকিউ মেশিনে যোগ করার কারণে এ ধরনের কিছু সমস্যা হচ্ছে। তবে টেবুলেশনের দায়িত্বে যারা থাকেন ও পরীক্ষা নিয়ন্ত্রকের পক্ষে এ ধরনের সমস্যা চিহ্নিত করে প্রতিকার করা সম্ভব।

রাতুলের এসএসসি পরীক্ষার রোল নম্বর ১৪৭৭৮৪। রেজিস্ট্রেশন নম্বর ১৬১৫৪৭৯৪৩৯/২০১৭-১৮। সেন্টার কোড ৬৪৩। বাবার নাম শামসুল কবির। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের নাম হাবিবপুর সেকেন্ডারি স্কুল।


আরো সংবাদ



premium cement