২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫
`

বাকৃবিতে ভোগান্তির অপর নাম ফরমপূরণ

- ছবি : নয়া দিগন্ত

প্রতি সেমিস্টার ফাইনাল পরীক্ষার ফরমপূরণ ও সেমিস্টার ফি প্রদান যেন একটি যুদ্ধের নাম। এই কাজটি করতে শিক্ষার্থীদের অনুষদ ভবন, কো-অর্ডিনেটর ভবন, দুইবার কোষাধ্যক্ষ কার্যালয়, ব্যাংক, হল অফিস ও প্রভোস্টে স্বাক্ষর পুনরায় অনুষদ ভবনে ফরম জমাদানের মাধ্যমে শেষ হয় এ মহাযজ্ঞ।

ফলে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাকৃবি) শিক্ষার্থীদের কাছে ভোগান্তির আরেক নাম সেমিস্টার ফাইনালের ফরমপূরণ। দেশ ডিজিটাল হলেও এখনও মান্ধ্যাতার আমলের প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে বাকৃবিতে। এ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন শিক্ষার্থীরা। ভোগান্তি কমাতে অনলাইন ভিত্তিক ফরমপূরণ প্রক্রিয়া চালু করার দাবি শিক্ষার্থীদের।

শিক্ষার্থীরা জানান, বর্তমানে বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল অনুষদের সব লেভেল ও মাস্টার্সসহ প্রায় ৭ হাজার ছাত্রছাত্রী পড়াশুনা করছেন। প্রতি সেমিস্টারের ফাইনাল পরীক্ষা শুরুর আগে সেমিস্টার ফি, পরীক্ষার ফি ও অন্যান্য খরচ বাবদ ফরমপূরণের টাকা জমা দিতে হয়। ফর্মফিলাপের সময় থাকে তিন-চার দিন৷ ফরমপূরণ ও টাকা জমাদানের প্রক্রিয়াও বেশ জটিল কষ্ট সাধ্য।

ফরম পূরণের জন্য প্রতিটা শিক্ষার্থীকে প্রথমে ডিন অফিস বা কো-অর্ডিনেটর অফিস থেকে ফরম নিতে হয়। তারপর সেই ফরম পূরণ করে কোষাধ্যক্ষ অফিস থেকে টাকা জমা দেয়ার রশিদ নিয়ে হিসাবরক্ষণ অফিসারের স্বাক্ষর নিতে হয়। তারপর সেই রশিদ ও নির্ধারিত টাকা জমা দিতে হয় বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি বেসরকারি ব্যাংকে।

মাত্র ৩-৪ দিনে একই সাথে প্রায় ৭ হাজার শিক্ষার্থীরা ব্যাংকে টাকা জমা দিতে যাওয়ায় সেখানে লম্বা লাইনে ভোগান্তিতে পড়তে হয় শিক্ষার্থীদের। তারপর আবার কোষাধ্যক্ষ ভবন থেকে কোষাধ্যক্ষের স্বাক্ষর নিতে হয়। এতেই শেষ নয়। এরপর ফরম ও টাকা জমার রশিদ নিয়ে জমা দিতে হয় নিজ হলের অফিসে। হল অফিস থেকে পরদিন প্রভোস্টের স্বাক্ষরকৃত ফরম দেয়া হলে তা ডিন অফিস বা নিজ বিভাগে জমা দিতে হয়।

এমন একটি মহাযজ্ঞের মাধ্যমে শেষ হয় শেষ হয় সেমিস্টার ফাইনালের ফরম পূরণের সমস্ত প্রক্রিয়া। কিন্তু ফরম পূরণ চলাকালীন শিক্ষার্থীদের ক্লাস বন্ধ না থাকায় সব ছাত্রছাত্রীদের এই কাজ করতে হয় দুপুর ১২ টা থেকে ২টার মধ্যে। এক সাথে সকলে আসার ফলে কোষাধ্যক্ষ ভবন ও ব্যাংকে প্রচন্ড ভীড় হয়। এতে শিক্ষার্থীদের দাঁড়িয়ে থাকতে হয় ঘন্টার পর ঘন্টা।

বিশ্ববিদ্যালয়ের অনার্সের শিক্ষার্থীরা বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের এই বিষয়ে নজর দেওয়া উচিত। এ পদ্ধতির আধুনিকায়ন দরকার। সবচেয়ে ভালো হয় অনলাইনের মাধ্যমে ফরম পূরণ এবং টাকা জমা নেওয়া ব্যবস্থা করা।

বিশ্ববিদ্যালয়ের মাস্টার্সের শিক্ষার্থীরা বলেন, মাত্র ৬-৭ হাজার শিক্ষার্থীকে বাকৃবি প্রশাসন কি অটোমেশনের আওতাভুক্ত করতে পারে না? সারাদেশ যেখানে ডিজিটালাইজেশন হচ্ছে সেখানে শুধু প্রশাসনের সদিচ্ছার অভাবে আমাদের ভোগান্তি হচ্ছে। আগামী সেমিস্টারের মধ্যেই সব কিছুতে অটোমেশন করতে হবে নয়তো ছাত্রছাত্রীরা এর উপযুক্ত জবাব দিবে।

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র বিষয়ক উপদেষ্টা প্রফেসর ড. মো. ছোলায়মান আলী ফকির বলেন, ছাত্রদের ভোগান্তি কমানোর বিষয়টা আমাদের মাথায় আছে। ভবিষ্যতে যাতে ভোগান্তি না হয় সে বিষয়ে আমরা পদক্ষেপ নেবো। আর অনলাইন ভিত্তিক ফরম পূরণ প্রক্রিয়া চালু করা যায় কিনা সে বিষয়ে আমি কর্তৃপক্ষের সাথে কথা বলব।

 


আরো সংবাদ



premium cement