২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫
`

২ যুগ পর ইবিতে দেখা মিলল নাইট কুইনের

প্রায় দুই যুগ পর ইবির সাদ্দাম হোসেন হলে দেখা মেলে নাইট কুইনের - নয়া দিগন্ত

একজন শিক্ষার্থী বিশ্ববিদ্যালয়ের হলে থাকার সুযোগ পায় ৫ বছর। সেশনজটের কল্যাণে তা কখনো কখনো ৬/৭ বছরে বর্ধিত হয়। তবে নাইট কুইনের দেখা পেতে অপেক্ষা করতে হয়েছে হল জীবনের দুই প্রজন্মকে। নাইট কুইনের দেখা পেতে অনেকে আবার কেবল পরিচর্যাই করে গেছে। দেখা মেলেনি এই নিশীত রাণীর।

গাছটিতে সর্বশেষ ফুল ফুটেছিল ২০০৮ সালে। এরপর থেকে দীর্ঘ সময় পেরিয়ে গেলেও দেখা মেলেনি নাইট কুইনের। এভাবে গাছটির সাথে জড়িয়ে রয়েছে কয়েক প্রজন্মের শিক্ষার্থীদের শত স্মৃতি। তাই তো বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে আসলে স্মৃতি কাতর হয়ে নাইট কুইনের গল্পে আড্ডা জমিয়ে তোলেন সাবেক শিক্ষার্থীরা।

ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের সাদ্দাম হোসেন হলের চতুর্থ তলার ৪০৪ নং রুমের সামনে একটি টবে গাছটি রোপন করেছিলের ইবি সাংবাদিক সমিতির সাবেক সভাপতি (২০০৬) শেখ রিয়াজ উদ্দিন। ২০০২ সালে লাগানো গাছটি ২০০৪ ও ২০০৫ সালে দুইবার ফুল দেয়। বর্তমানে শেখ রিয়াজ উদ্দিন ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ লিমিটেডের প্রিন্সিপাল অফিসার পদে কর্মরত।

এরপর ৪০৪ নং রুমে অবস্থান সূত্রে গাছটির পরিচর্যা করেন সমিতির সাবেক সভাপতি ইমদাদুল হক। তিনিও ২০০৬ থেকে ২০০৮ সাল পর্যন্ত গাছটিতে ফুল দেখতে পান। ইমদাদুল হক এখন দৈনিক যুগান্তরের সিনিয়র সাব-ইডিটর পদে কর্মরত রয়েছেন।

তবে দীর্ঘ ক্যাম্পাস জীবনে নিয়মিত জৈবসার ও পানি দিয়ে গাছে ফুল ফোটাতে ব্যর্থ হয়েছেন সমিতির সাবেক সভাপতি মফিজুল ইসলাম ও ইমামুল হাসান আদনান এবং তার অনুজ শাহজাহান নবীন ও ইলিয়াস মেহেদীরা। নাইট কুইন ফোটাতে ব্যর্থ হলেও এদের অনেকেই দেশের নামিদামী দৈনিকে সংবাদের ফুল ফোটাচ্ছেন।

দৈনিক বণিক বার্তায় দাপটের সাথে নিজের যোগ্যতার সাক্ষ্য রাখছেন সমিতির সাবেক সভাপতি ইমামুল হাসান আদনান। এরপর ২০১৩ সালের পর থেকে গাছটি পরিচর্যা শুরু করে সমিতির বর্তমান সদস্যরা। প্রায় ৭ বছর পরিচর্যার পর দেখা মেলে সেই দীর্ঘ প্রতিক্ষীত নাইট কুইনের। নাইট কুইনের গাছটি বর্তমান ৪০৩ নং রুমের সামনে রাখা হয়েছে।

গত মঙ্গলবার রাত ২টার দিকে ফুলটি তার সৌন্দর্য মেলে ধরে হলের ৪০৩ নং রুমের সামনে। সেহেরীর সময় ঘুম থেকে উঠে শিক্ষার্থীদের দৃষ্টিগোচর হয় ফুলটি। মুহুর্তেই আলোড়ন পড়ে যায় আশপাশের রুমে। সব শিক্ষার্থী দেখতে আসে নাইট কুইনকে। দীর্ঘদিন পর ফুল ফোটায় শিক্ষার্থীরা বেশ আগ্রহের সাথে নাইট কুইনকে ক্যামেরার ফ্রেমে বন্দি করে। আর করবেই না বা কেন? সকালের আলো নাইট কুইনের সংস্পর্শে আসতেই হারিয়ে যায় তার সৌন্দর্য!

২০০২ সাল থেকে আজ পর্যন্ত যত সাংবাদিক ইবির সাদ্দাম হলে অবস্থান করেছেন তাদের সবার শত শত স্মৃতির সাক্ষী এই নাইট কুইন গাছটি। এভাবে বছরের পর বছর হাজার স্মৃতির ভার বহন করে চলবে এই রাতের রাণী। কোনো একদিন হয়তো স্মৃতির ভার সহ্য করতে না পেরে সেও পাড়ি জমাবে পরপারে। ক্যাম্পাসে ঘুরতে আসলে সাবেক ভাইয়েরা নিজের স্মৃতির সাক্ষী এই গাছটিকে আর দেখতে পাবে না। তখন হয়ত স্মৃতিকাতর মনটা গাছটির দুঃখের কথা স্মরণ করে চক্ষু দেশে ঝরাবে দু’ফোটা অশ্রু।


আরো সংবাদ



premium cement