১৮ এপ্রিল ২০২৪, ০৫ বৈশাখ ১৪৩১, ০৮ শাওয়াল ১৪৪৫
`
সাত কলেজের আন্দোলন

সমস্যা সমাধানের আশ্বাস ভিসির : ২৯ তারিখ পর্যন্ত দেখ‌বে শিক্ষার্থীরা

ঢাকা কলেজ ক্যাফেটেরিয়াতে শিক্ষার্থীদের সংবাদ সম্মেলন - ছবি : সংগৃহীত

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় অধিভুক্ত সরকারি সাত কলেজের তীব্র সেশন জট, ত্রুটিপূর্ণ ফলাফল এবং ফলাফল প্রকাশের দীর্ঘসূত্রিতাসহ নানা সমস্যা ২৮ তারিখের মধ্যে সমাধান না হলে ২৯ তারিখ সংবাদ সম্মেলন করে পরবর্তী কর্মসূচির ঘোষণা দিবে সাত কলেজের শিক্ষার্থীরা।

বৃহস্পতিবার দুপুরে ঢাকা কলেজ ক্যাফেটেরিয়াতে এক সংবাদ সম্মেলনে সাত কলেজের প্রতিনিধিদল দলের পক্ষ থেকে ঢাকা কলেজ শিক্ষার্থী কাজী নাসির এসব বিষয় জানান । তিনি বলেন, আমাদের সমস্যা সাধারণের ভিসি স্যারের সাথে আমরা আলোচনা করেছি। আমরা তেমন আশ্বস্ত হতে পারিনি। তবে ভিসি স্যারের প্রতি সম্মান রেখে আন্দোলন স্থগিত করছি তবে শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি অব্যহত থাকবে।

শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি হিসাবে ২৭ তারিখ শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে সাত কলেজ অধ্যক্ষদের কাছে সমস্যাগুলো নিয়ে স্মারকলিপি প্রদান করা হবে।

তিনি আরো বলেন, ভিসি স্যার বলেছেন, ২৮ তারিখ সাত কলেজের অধ্যক্ষদের সাথে আলোচনায় বসবেন, সেখানে আমাদের দাবিগুলো নিয়ে কথা বলবেন। যদি আমাদের দাবি যথাযথ বাস্তবায়ন না হয় তাহলে ২৯ তারিখ ঢাকা কলেজে ক্যাফেটেরিয়াতে সংবাদ সম্মেলন করে পরবর্তী কর্মসূচি ঘোষণা করবো।

কেমন কর্মসূচি হবে এমন প্রশ্নের জবাবে নাসির বলেন, প্রয়োজনে যৌক্তিক দাবি আদায়ে সাত কলেজের শিক্ষার্থীরা আমরণ অনশনে যাব। তবে আশা করি ঢাবি প্রশাসন আমাদের দাবি মেনে নিবে।

এর আগে বুধবার সকালে সাত কলেজের শিক্ষার্থীদের পাঁচ দাবিতে দ্বিতীয় দিনের মতো বিক্ষোভ ও অবরোধ কর্মসূচি শুরু হলে বিকেলে নীলক্ষেত মোড়ে শিক্ষার্থীদের সাথে কথা বলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর গোলাম রাব্বানী। একই সময় তিনি শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন দাবি পূরণেও আশ্বাস দেন।

তিনি বলেন, তোমরা যে দাবিগুলো আমাদের কাছে উপস্থাপন করেছো আমরা বিষয়গুলো নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের সাথে বসেছি। তোমাদের দাবি নিয়ে কাজ করা হচ্ছে। তোমরা শীঘ্রই দাবিগুলোর বাস্তবায়ন দেখতে পাবে। তার এ বক্তব্যের প্রেক্ষিতে সাথে সাথে প্রতিবাদ জানায় আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা। তারা বলেন, এর আগেও বহুবার আপনারা কথা দিয়েছিলেন। সেগুলো এখনো বাস্তবায়ন হয়নি। তাই আপনার কথায় বিশ্বাস রাখতে পারছি না। আমরা আন্দোলন চালিয়ে যাব।

এদিকে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের পরিপ্রেক্ষিতে ইতোমধ্যে কিছু দাবি মেনে নিয়ে সাত কলেজের বিষয়ে একটি বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, সাত কলেজের শিক্ষার্থীদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে জানানো যাচ্ছে যে, পরীক্ষা শেষ হওয়ার ৯০ কার্যদিবসের মধ্যে সব বিষয়ের ফল প্রকাশ করার ব্যাপারে ইতোমধ্যে সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।

যেসব বিষয়ে অধিক হারে অকৃতকার্য হয়েছে, সেসব বিষয়ে আবেদনক্রমে পুনঃমূল্যায়নের ব্যবস্থা নেয়া হবে।

সাত কলেজের অ্যাকাডেমিক কার্যক্রম পরিচালনার জন্য ইতোমধ্যে প্রশাসনিক ভবনে স্বতন্ত্র সেল গঠন করা হয়েছে। ভবিষ্যতে সাত কলেজের জন্য স্বতন্ত্র নতুন ভবন নির্মাণের পরিকল্পনা রয়েছে।

অধিভুক্ত সাত কলেজের সেশনজট নিরসনকল্পে ক্রাশ প্রোগ্রাম বিষয়ে কলেজ অধ্যক্ষদের সঙ্গে আলোচনাক্রমে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

অ্যাকাডেমিক ক্যালেন্ডার তৈরি প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। ২০১৬ সালের ৪র্থ বর্ষ অনার্স পরীক্ষার ফল ইতিমধ্যে প্রকাশ করা হয়েছে।

ডিগ্রি ১ম বর্ষ ২০১৭ পরীক্ষার রুটিন ইতিমধ্যে প্রকাশিত হয়েছে। এ ছাড়া মাস্টার্স ২০১৬ অনলাইনে ফরম পূরণ ও অনার্স ২য় বর্ষ পরীক্ষা শুরুর তারিখ ঘোষণা করা হয়েছে।

এ ছাড়া আগামী ২৮ এপ্রিল ঢাবি উপাচার্যের সভাপতিত্বে সাত কলেজের অধ্যক্ষদের সঙ্গে বিভিন্ন সমস্যা সমাধানকল্পে করণীয় বিষয়ে সিদ্ধান্ত গৃহীত হবে।

সেশনজট, ত্রুটিপূর্ণ ফলাফল ও ফল প্রকাশে দীর্ঘসূত্রিতাসহ নানা সমস্যা সমাধানের দাবিতে গত মঙ্গলবার সকালে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় ন্যায় নীলক্ষেত মোড়ে অবস্থান নেন সাত কলেজের শিক্ষার্থীরা। বৃহস্পতিবার সকাল থেকে দ্বিতীয়বারের মতো আবার আন্দোলনে নামে শিক্ষার্থীরা।

মাঝখানে ঢাকা কলেজের শহীদ মিনারে পাচঁ দফা দাবি আদায়ে আমরণ অনশনে নামে তিন শিক্ষার্থী। পরে বুধবার মধ্যরাতে কলেজের উপাধ্যক্ষে এসে শরবত পানের মধ্যদিনে এবং সমস্যা সমাধানের বিষয়ে আশ্বাস দিয়ে অনশন ভাঙান।

শিক্ষার্থীদের দাবিকৃত পাঁচ দফা দাবি হচ্ছে- পরীক্ষা শেষ হওয়ার ৯০ দিনের মধ্যে ত্রুটিমুক্ত ফল প্রকাশসহ একটি বর্ষের সব বিভাগের ফল একসঙ্গে প্রকাশ; ডিগ্রি, অনার্স ও মাস্টার্সের ফলে গণহারে অকৃতকার্য হওয়ার কারণ প্রকাশসহ খাতার পুনঃমূল্যায়ন; সাত কলেজ পরিচালনার জন্য স্বতন্ত্র প্রশাসনিক ভবন; প্রতি মাসে প্রতিটি কলেজে প্রত্যেক বিভাগে দুদিন করে ১৪ দিন ঢাবির শিক্ষকদের ক্লাস নেয়া এবং সেশনজট নিরসনে একাডেমিক ক্যালেন্ডার প্রকাশসহ ক্রাশ প্রোগ্রাম চালু করা।

এর আগে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে ২০১৭ সালের ১৬ ফেব্রুয়ারি রাজধানীর ঢাকা কলেজ, ইডেন মহিলা কলেজ, বেগম বদরুন্নেসা সরকারি মহিলা কলেজ, সরকারি তিতুমীর কলেজ, কবি নজরুল সরকারি কলেজ, সরকারি শহীদ সোহরাওয়ার্দী কলেজ, সরকারি বাঙলা কলেজকে ঢাবির অধিভুক্ত করা হয়।

একই বছর পরীক্ষার রুটিনের দাবিতে আন্দোলনে গিয়ে দুই চোখ হারান তিতুমীর কলেজের শিক্ষার্থী সিদ্দিকুর রহমান।


আরো সংবাদ



premium cement
ইরানের ওপর চাপ বাড়াচ্ছে পাশ্চাত্যের দেশগুলো সিদ্ধিরগঞ্জে দুর্ধর্ষ ডাকাতি, নগদ টাকাসহ ৮০ লাখ টাকার মালামাল লুট প্রাণিসম্পদ সেবা সপ্তাহ ও প্রদর্শনীর উদ্বোধন করলেন প্রধানমন্ত্রী পরীমণির বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানার আবেদন স্থায়ী যুদ্ধবিরতি না হওয়ায় গাজায় মানবিক প্রচেষ্টা সম্পূর্ণ ব্যর্থ : রাশিয়া পিকআপচালককে হত্যা করে রেললাইনে লাশ ফেল গেল দুর্বৃত্তরা এক মাস না যেতেই ভেঙে গেলো রাজকীয় বিয়ে! ইউক্রেনে রাশিয়ার ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় নিহত ১৭ নোয়াখালীতে মেলায় সংর্ঘষ নিহত ১ কবরস্থান থেকে বৃদ্ধার বস্তাবন্দি লাশের রহস্য উন্মোচন : পুত্রবধূ ও নাতনি গ্রেফতার মিরসরাইয়ে বজ্রপাতে কৃষকের তিন গরুর মৃত্যু

সকল