২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫
`

আন্দোলনের মুখে ববি ভিসির ছুটির আবেদন, শিক্ষার্থীদের প্রত্যাখ্যান

ভিসির পদত্যাগ দাবিতে বৃহস্পতিবারও সড়কে আগুন জ্বালিয়ে ও কাঠ ফেলে সড়ক অবরোধসহ বিভিন্ন কর্মসূচী পালন করে আন্দোলন অব্যাহত রাখেন বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা - নয়া দিগন্ত

শিক্ষার্থীদের চলমান আন্দোলনের মুখে ব্যক্তিগত কারণ দেখিয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে ছুটির দরখাস্ত পাঠিয়েছেন বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি এসএম ইমামুল হক।
বৃহস্পতিবার দুপুরে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসির একান্ত সহকারী এ বিষয়টি নিশ্চিত করেন। তিনি জানান, স্যার মিটিংয়ে রয়েছেন। বুধবার (১০ এপ্রিল) তার পক্ষ থেকে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে ছুটির দরখাস্ত পাঠানো হয়েছে।

এদিকে, ছুটির দরখাস্তে ভিসি বৃহস্পতিবার থেকে আগামী ২৫ এপ্রিল পর্যন্ত ১৫ দিনের ছুটিতে থাকার অনুরোধ জানিয়েছেন। আর এসময় বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রেজারার ড. এ কে এম মাহবুব হাসান তার নিজ দায়িত্বের পাশাপাশি অতিরিক্ত দায়িত্ব হিসেবে ভিসির রুটিনকাজগুলো পরিচালনা করবেন।

তবে, বর্তমানে বিশ্ববিদ্যালয়ে কোনো সিন্ডিকেট সভা না থাকায় পরবর্তী সিন্ডিকেট সভায় এ বিষয়টি অনুমোদনের জন্য উপস্থাপন করা হবে বলেও জানানো হয়।

এদিকে ভিসির এই সাময়িক ছুটির আবেদনকে প্রত্যাখান করে বৃহস্পতিবারও দিনভর আন্দোলন চালিয়ে গেছেন শিক্ষার্থীরা। তারা বলছেন- ভিসিকে তার চাকরির মেয়াদ যতদিন রয়েছে সেই পর্যন্ত ছুটিতে যেতে হবে। ভিসির ১৫ দিনের ছুটির আবেদনকে ‘প্রহসন’ হিসেবে উল্লেখ করে শিক্ষার্থীরা বরিশাল-পটুয়াখালী মহাসড়ক অবরোধ করে ভিসিবিরোধী শ্লোগান দেন।

উল্লেখ্য, গত ২৬ মার্চ শিক্ষার্থীদের বাদ দিয়ে মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবসের অনুষ্ঠানের আয়োজন করায় আন্দোলন করে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। এ জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি এসএম ইমামুল হক শিক্ষার্থীদের ‘রাজাকারের বাচ্চা’ বলে উল্লেখ করেন বলে অভিযোগ করে শিক্ষার্থীরা। এরপরই জোরদার আন্দোলন কর্মসূচি পালন করে আসছিলেন শিক্ষার্থীরা।

গত ২৬ মার্চ থেকে তাদের লাগাতার আন্দোলন কর্মসূচির অংশ হিসেবে রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর কাছে স্মারকলিপি দেয়া, ডিসি অফিস ঘেরাও, বরিশাল-পটুয়াখালী মহাসড়ক অবরোধ, নিজেদের শরীরের রক্ত দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের দেয়ালে লিখে ভিসির পদত্যাগ দাবি, উপাচার্যের কুশপুত্তলিকা দাহ ও মশাল মিছিলসহ নানা কর্মসূচি পালন করেন শিক্ষার্থীরা।

একপর্যায়ে আন্দোলনের দু’দিনের মাথায় বিশ্ববিদ্যালয় অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা ও শিক্ষার্থীদের হল ত্যাগের নির্দেশ দেয় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। কিন্তু শিক্ষার্থীরা হল না ছাড়ার ঘোষণা দিয়ে তাদের আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেন।

পরে গত শনিবার (৬ এপ্রিল) বরিশাল সার্কিট হাউজে পানি সম্পদ প্রতিমন্ত্রী জাহিদ ফারুক শামীম, বরিশাল সিটি মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আব্দুল্লাহসহ প্রশাসনিক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা শিক্ষার্থীদের সঙ্গে বৈঠকে বসেন।

বৈঠকের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার ড. হাসিনুর রহমান স্বাক্ষরিত লিখিত এক নোটিশে রোববার সকাল থেকে ক্লাস ও পরীক্ষাসহ যাবতীয় একাডেমিক কার্যক্রম চালুর ঘোষণা দেয়া হয়।

তবে শিক্ষার্থীরা সে নোটিশ প্রত্যাখ্যান করে ভিসির পদত্যাগ বা ছুটিতে যাওয়ার বিষয়টি লিখিত আকারে না পাওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেন। ঘোষণানুযায়ী গত মঙ্গলবার (৯ এপ্রিল) অনির্দিষ্টকালের জন্য বরিশাল-পটুয়াখালী মহাসড়ক অবরোধ করেন শিক্ষার্থীরা।

কিন্তু যাত্রী ভোগান্তি ও এইচএসসি পরীক্ষার্থীদের কথা চিন্তা করে ৫ ঘণ্টা পর অবরোধ তুলে নেন তারা। পাশাপাশি আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা ভিসির পদত্যাগ বা ছুটিতে যাওয়ার বিষয়টি লিখিত আকারে না পাওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেন।


আরো সংবাদ



premium cement