১৬ এপ্রিল ২০২৪, ০৩ বৈশাখ ১৪৩১, ০৬ শাওয়াল ১৪৪৫
`

ববি ভিসির বক্তব্যের অডিও প্রকাশ, শিক্ষার্থীদের প্রতিবাদী আলপনা

ববি ভিসির বক্তব্যের অডিও প্রকাশ, শিক্ষার্থীদের প্রতিবাদী আলপনা
ভিসির পদত্যাগের দাবিতে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের হাতের ছাপসহ নানা আলপনা - নয়া দিগন্ত

ভিসির পদত্যাগ দাবিতে টানা আটদিন ধরে আন্দোলন ও অবস্থান কর্মসূচি পালন করছেন বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের (ববি) আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা। মঙ্গলবার বিকেলে ক্যাম্পাসে প্রতিবাদী আলপনা একে ভিসির পদত্যাগের দাবি জানিয়েছেন শিক্ষার্থীরা। আলপনায় তারা ভিসির বিগত ৪ বছরের ব্যর্থতার নানা চিত্র তুলে ধরেন।

সকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক ভবনের সামনে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন তারা। এসময় তারা ভিসি বিরোধী বিভিন্ন স্লোগান দিতে থাকেন।

এদিকে ২৬ মার্চ স্বাধীনতা দিবসে ববি ডিবেটিং সোসাইটির (বিইউডিএস) একটি অনুষ্ঠানে ‘রাজাকারের সন্তান’ বলে শিক্ষার্থীদের গালি দেয়ার একটি অডিও ক্লিপ প্রকাশ হয়েছে। যে অডিও ক্লিপ প্রকাশের পর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা ছড়িয়ে দিয়েছেন এবং সম্প্রতি ভিসির দেয়া লিখিত বক্তব্যকে মিথ্যাচার দাবি করে তার পদত্যাগ চেয়েছেন।

আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা জানান, আন্দোলনের মাথায় ভিসি দুঃখ প্রকাশের নামে যে লিখিত বক্তব্য পেশ করেছেন, সেখানে তিনি রাজাকার সদৃশ শব্দ ব্যবহার করেছেন, আর ঘটনার দিন অনুষ্ঠানে দেয়া তার বক্তব্যের যে অডিও প্রকাশ পেয়েছে সেখানে ভিসি সরাসরি শিক্ষার্থীদের ‘রাজাকারের সন্তান’ বলে গালি দিয়েছেন। ভিসি মিথ্যাচার চালিয়ে নিজের ইমেজ ঠিক রাখার চেষ্টা করছেন।

এর আগে গত সোমবার (১ এপ্রিল) শিক্ষার্থীরা ভিসিকে প্রত্যাহার করে নেয়ার দাবিতে জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে ৪৮ ঘণ্টার আল্টিমেটাম দিয়ে রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী বরাবর একটি স্মারকলিপি পেশ করেন। এ সময় ভিসি ড. এসএম ইমামুল হককে প্রত্যাহার করে নেয়া না হলে আন্দোলনকারীরা কঠোর কর্মসূচির ঘোষণা দেয়।

উল্লেখ্য, ২৬ মার্চ স্বাধীনতা দিবসের আয়োজন সম্পর্কে শিক্ষার্থীদের না জানানোর কারণে বিশ্ববিদ্যালয়ে আন্দোলন শুরু করেন শিক্ষার্থীরা। পরে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ‘রাজাকারের সন্তান’ বলে গালি দিলে আন্দোলন আরো বেগবান হয় এবং তারই পরিপ্রেক্ষিতে বিশ্ববিদ্যালয় অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করে কর্তৃপক্ষ।

এদিকে বিশ্ববিদ্যালয় অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করায় হলের ছাত্র-ছাত্রীদের ডাইনিং বন্ধ হওয়ার পাশাপাশি মেডিক্যাল সুবিধাও বন্ধ হয়ে গেছে। তবে এ বন্ধের পরও হল ত্যাগ না করে টানা আটদিন ধরে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন শিক্ষার্থীরা। বন্ধ রয়েছে সকল ক্লাশ ও পরীক্ষা। এতে করে পুরো বিশ্ববিদ্যালয়ে অচলাবস্থা বিরাজ করছে।

আরো পড়ুন : ভিসির পদত্যাগ দাবীতে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের স্মারকলিপি
বরিশাল ব্যুরো, (০১ এপ্রিল ২০১৯)

বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যকে প্রত্যাহারের দাবিতে সপ্তম দিনের মতো আন্দোলন করছেন শিক্ষার্থীরা। সোমবার দুপুরে জেলা প্রশাসক কার্যালয় ঘেরাও করে বিক্ষোভ শুরু করে শিক্ষার্থীরা। পরে জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে উপাচার্যকে প্রত্যাহারের দাবিতে রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী বরাবর স্মারকলিপি প্রদানকরাহয়।

এ সময় আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা জানান, আনুষ্ঠানিকভাবে ক্ষমা চাওয়ার পর পদত্যাগ বা ভিসিকে প্রত্যাহার না করা পর্যন্ত আন্দোলন চলবে। এ ছাড়া স্মারকলিপির মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে ৪৮ ঘণ্টার আলটিমেটাম দেয়া হয়েছে। এ সময়ে যদি ভিসিকে প্রত্যাহার করে না নেয়া হয় তাহলে আরও কঠোর কর্মসূচির ডাক দেয়া হবে।

জেলা প্রশাসন কার্যালয়ের সামনে বিক্ষোভকালে শিক্ষার্থীরা ভিসিএস এম ইমামুল হকের বিরুদ্ধে বিভিন্ন স্লোগান দিতে থাকে। স্মারকলিপিতে উপাচার্যের অপসারণ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের নানাবিধ সমস্যা সমাধানের কথা উল্লেখ করা হয়। এছাড়া স্মারকলিপিতে জাতীয় দিবসগুলোর (১৬ ডিসেম্বর, ২৬ মার্চ) অনুষ্ঠানে শিক্ষার্থীদের সংযুক্ত নাকরা এবং এর প্রতিবাদ করায় শিক্ষার্থীদের ‘রাজাকারের বাচ্চা’ বলে কটূক্তি করার বিষয়টিও উল্লেখ করা হয়েছে।

স্মারকলিপি গ্রহণ করে জেলা প্রশাসক এসএম অজিয়র রহমান শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে বলেন, বিষয়টি নিয়েএরই মধ্যে মৌখিতভাবে বিভাগীয় কমিশনার, সিটি করপোরেশনের মেয়রসহ ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সাথে আলোচনা হয়েছে। আশাকরি, সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ দ্রুত সময়ের মধ্যে সব সমস্যার সমাধান করবেন। এসময় তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের সুনাম বজায় রাখতে শান্তিপূর্ণভাবে শিক্ষার্থীদের ক্যাম্পাসে ফিরে যাওয়ার অনুরোধ জানান।

স্মারকলিপি দেয়ার পর শিক্ষার্থীরা সংক্ষিপ্ত এক সংবাদ সম্মেলন করে। সেখানে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন আন্দোলনে নেতৃত্ব দেয়া গণিত বিভাগের শেষ বর্ষের ছাত্র মহিউদ্দীন আহমেদ সিফাত।

লিখিত বক্তব্যে সিফাত জানান, উপাচার্য স্যার শিক্ষার্থীদের ‘রাজাকারের বাচ্চা’ বলে কটূক্তি করেননি বলে দাবি করে বলেছেন শিক্ষার্থীদের কর্মকাণ্ড রাজাকার সদৃশ। আমাদের প্রশ্ন রাজাকার সদৃশ, রাজাকারের পক্ষের শক্তি ও রাজাকারের মধ্যে পার্থক্য কী? আমরা উপাচার্যকে প্রত্যাখ্যান করে হলে অবস্থান করছি। এর আগে দুই বার বর্তমান উপাচার্যের বিরুদ্ধে আন্দোলন হয়েছে। তিনি শিক্ষার্থীদের সঙ্গে প্রতারণা করে যাচ্ছেন।

শিক্ষার্থীরা বলেন, মেডিকেল সেবা, ডাইনিং রুম বন্ধ রাখা হয়েছে। তারপরও আমরা ভিসির পদত্যাগ চাই। আগামী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে আমাদের দাবির বিষয়ে কোনো সুরাহা না হলে কঠোর কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে।


আরো সংবাদ



premium cement