২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১, ১৪ শাওয়াল ১৪৪৫
`

আমরণ অনশনে রোকেয়া হলের ৫ শিক্ষার্থী

নির্বাচন বাতিল করে পুনঃনির্বাচনের দাবিতে রোকেয়া হলের সামনে অনশনে বসেছেন ৫ শিক্ষার্থী - সংগৃহীত

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রোকেয়া হল সংসদ নির্বাচন বাতিল করে আবার নির্বাচন ও হল প্রভোস্টের পদত্যাগসহ চার দফা দাবিতে আমরণ অনশনে বসেছেন হলের পাঁচ শিক্ষার্থী। বুধবার রাত ৯টা থেকে তারা রোকেয়া হলের ফটকে অনশন শুরু করেন।

অনশনকারীদের মধ্যে চারজন বিভিন্ন প্যানেল থেকে হল সংসদে প্রার্থী ছিলেন। অনশনে বসা শিক্ষার্থীরা হলেন- ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের রাফিয়া সুলতানা, উইমেন অ্যান্ড জেন্ডার স্টাডিজ বিভাগের সায়েদা আফরিন, একই বিভাগের জয়ন্তী রেজা, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা বিভাগের শ্রবণা শফিক দীপ্তি ও ম্যানেজমেন্ট ইনফরমেশন সিস্টেমস বিভাগের প্রমি খিশা।

ডাকসু ও হল সংসদ নির্বাচনে রাফিয়া সুলতানা বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের প্যানেল থেকে রোকেয়া হল সংসদে সহসভাপতি (ভিপি); সায়েদা আফরিন বাংলাদেশ ছাত্র ফেডারেশন থেকে হল সংসদে সহ-সাধারণ সম্পাদক (এজিএস); শ্রবণা শফিক দীপ্তি স্বতন্ত্র জোট থেকে ডাকসুর কেন্দ্রীয় সংসদে স্বাধীনতা সংগ্রাম ও মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক সম্পাদক পদে আর প্রমি খিশা হল সংসদে সদস্যপদে ছাত্র ফেডারেশনের প্রার্থী ছিলেন। তবে জয়ন্তী রেজা প্রার্থী ছিলেন না।

তাদের অন্য দাবিগুলো হলো— ডাকসু ও হল সংসদ নির্বাচনের প্রার্থীসহ সাতজন ও অজ্ঞাতনামা ৪০ জনের বিরুদ্ধে হওয়া মামলা প্রত্যাহার এবং আন্দোলনে অংশ নেয়া হলের শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা।

এর আগে একই দাবিতে মঙ্গলবার রাত থেকে বুধবার সকাল পর্যন্ত হলের ফটকের ভেতরে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করে রোকেয়া হলের শিক্ষার্থীদের এই অংশটি।

বুধবার বিকেলে সংবাদ সম্মেলন করে আন্দোলনরত এই ছাত্রীদের দাবির সঙ্গে একাত্মতা জানিয়েছেন তিনটি ছাত্রী হল সংসদের নির্বাচনে জয়ী হওয়া ২১ জন স্বতন্ত্র প্রার্থী।

এ ব্যাপারে রোকেয়া হলের প্রভোস্ট অধ্যাপক জিনাত হুদা বলেন, বিক্ষোভকারী ছাত্রীরা যেসব দাবি জানাচ্ছে, তা পূরণের এখতিয়ার আমার নেই। আমি কারও বিরুদ্ধে মামলা করিনি। অহেতুক মিথ্যা গুজব রটিয়ে মঙ্গলবার রাতে উত্তেজনাকর পরিস্থিতি তৈরি করা হয়েছে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক এ কে এম গোলাম রব্বানী বলেন, বিক্ষোভকারী ছাত্রীদের বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরিয়াল বডির পক্ষ থেকে ডাকা হয়েছিল। কিন্তু তারা সহযোগিতা না করায় তাদের সঙ্গে বসতে পারেনি প্রক্টরিয়াল বডি।

এদিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যের সামনে ডাকসুর পুনঃতফসিল ও নতুন করে নির্বাচনের দাবিতে দ্বিতীয় দিনেও অনশন করছেন শিক্ষার্থীরা। ইতোমধ্যে অসুস্থ হয়ে একজন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। নতুন করে যোগ দিয়েছেন আরও তিনজন।

আরো পড়ুন : ৩০ ডিসেম্বরের ছায়া পড়েছে ডাকসু নির্বাচনে : নুরুল হক নুরু
নয়া দিগন্ত অনলাইন, (১১ মার্চ ২০১৯)

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ নির্বাচনেও (ডাকসু) ৩০ ডিসেম্বরের জাতীয় নির্বাচনের ভোটের ছায়া পড়েছে বলে অভিযোগ করেছেন ডাকসুর ভিপি প্রার্থী ও বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের যুগ্ম-আহ্বায়ক নুরুল হক নুরু। তিনি বলেন, জাতীয় নির্বাচনের মতো আগের রাতেই ব্যালটে সিল মেরে রাখা হয়েছে।

সোমবার সকালে কুয়েত মৈত্রী হলে গিয়ে সিল মারা ব্যালট দেখিয়ে সাংবাদিকদের নিকট তিনি এ মন্তব্য করেন। বিশ্ববিদ্যায়ের বর্তমান প্রশাসনকে দলকানা বলে মন্তব্য করে কোটা সংস্কার আন্দোলনের এ নেতা বলেন, এই প্রশাসনের অধীনে সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয়।


হাতে থাকা কয়েকটি জালভোটের ব্যালট পেপার দেখিয়ে তিনি বলেন, এই যে দেখুন কুয়েত মৈত্রী হলে জাতীয় নির্বাচনের মতো আগের রাতে ব্যালটে সিল মেরে রাখা হয়েছে।

তিনি অভিযোগ করেন, ছেলেদের হলগুলোতে এমন বিশৃঙ্খল অবস্থা সৃষ্টি করে রাখা হয়েছে যে, কে ভোট দিয়েছে আর কে দেয়নি তা শনাক্ত করা সম্ভব হচ্ছে না।

তিনি আরো অভিযোগ করেন, সকালে রোকেয়া হলে প্রার্থী ও সাংবাদিকদের ঢুকতে দেয়া হয়নি। এরপর শহিদুল্লাহ হল, এসএম হলে গিয়েছিলাম। সেখানে আমরা দেখেছি ছাত্রলীগের নিয়ন্ত্রণে যেসব গেস্টরুম, হলরুম রয়েছে, সেখানে তাদের অপরিচিত মুখকে ঢুকতে দেয়া হচ্ছে না। এসব গণরুম, গেস্টরুমে যারা থাকেন, তাদের লাইনে দাঁড় করিয়ে দেয়া হচ্ছে।


যারা ভোট দিয়ে এসেছেন, তাদেরই আবার ভোটারদের লাইনে দাঁড় করিয়ে দেয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ করেন তিনি।

ভিপি প্রার্থী নুরুল হক বলেন, এসব কর্মীকে নির্দেশ দেয়া হচ্ছে যে, প্রতিটি ভোটের জন্য তারা যেন ১০-১৫ মিনিট সময় নষ্ট করে আসেন। সাধারণ শিক্ষার্থীরা যেন ভোট দিতে না পারে বা বিরক্ত হয়ে চলে যায় এমন পরিকল্পনাতেই এসব করা হচ্ছে বলে মনে করেন তিনি।

প্রশাসনের কাছে এসব অভিযোগের বিষয়ে কথা বলেছেন কিনা- এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, প্রশাসন একটি মেরুদন্ডহীন দলকানা, যাদের কাছে ছাত্র ও বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বার্থের চেয়ে দলীয় লেজুড়বৃত্তির রাজনীতিটাই বড়।

এ সময় তিনি বলেন, আমাদের ও সাংবাদিকদের চলাচল নিয়ন্ত্রণ করে তারা বহিরাগতদের জন্য চলাচল উন্মুক্ত করে দিয়েছে। ঢাকা কলেজের ছাত্রদেরও আজ বিভিন্ন ভোটকেন্দ্রে দেখা গেছে বলে অভিযোগ করেন তিনি।

প্রশাসনের কাছে এসব অভিযোগ করেও কোনোরকম ব্যবস্থা পাননি বলে জানান নুরু।


আরো সংবাদ



premium cement