৩ ঘণ্টা পর কুয়েত মৈত্রী হলের ভোটগ্রহণ শুরু
- নয়া দিগন্ত অনলাইন
- ১১ মার্চ ২০১৯, ১০:২৬, আপডেট: ১১ মার্চ ২০১৯, ১২:০৯
বস্তা ভর্তি সিল মারা ব্যালট পেপার উদ্ধার ও এই ঘটনায় ভোটগ্রহণ স্থগিতের প্রেক্ষিতে নির্ধারিত সময়ের তিন ঘণ্টা পর বাংলাদেশ-কুয়েত মৈত্রী হলে ডাকুস নির্বাচনে ভোটগ্রহণ শুরু হয়েছে। সোমবার বেলা ১১ টা ১০ মিনিট থেকে ভোটগ্রহণ শুরু হয়। চলবে বিকেল ৫টা ১০ মিনিট পর্যন্ত। চিফ রিটার্নিং কর্মকর্তা এস এম মাহফুজুর রহমান এ কথা জানিয়েছেন।
কুয়েত মেত্রী হলের সামনে প্রো-ভিসি ড. মোহাম্মদ সামাদ সাংবাদিকদের বলেন,‘স্থগিত থাকা ভোট শুরু হয়েছে। ভোট চলবে বিকেল ৫টা ১০ মিনিট পর্যন্ত। এরপরও যদি ভোটার উপস্থিত থাকে তাহলে নির্ধারিত সময়ের পরও তাদের ভোট নেয়া হবে।’
তিনি আরো বলেন,‘অভিযুক্ত হল প্রভোস্টকে এরই মধ্যে অপসারণ করা হয়েছে। ব্যালটে সিল মারার ঘটনায় তদন্ত কমিটি গঠন করা হবে। দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।’
চিফ রিটার্নিং কর্মকর্তা এস এম মাহফুজ রহমান হলের শিক্ষার্থীদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে অভিযুক্ত প্রভোস্ট শবনম জাহানকে অব্যাহতি দেন। এসময় বিক্ষোভ করে শিক্ষার্থীরা হল প্রভোস্টকে অব্যাহতির পরিবর্তে বহিষ্কারের দাবি জানান।
তিনি বলেন, হল প্রভোস্ট শবনম জাহানের বিরুদ্ধে তদন্ত করে পরবর্তী ব্যবস্থা নেয়া হবে। তিনি সাধারণ ভোটারদেরকে ভোট দিতে অনুরোধ করেন। নির্বাচন ৩ ঘণ্টা দেরিতে শুরু হওয়ার কারণে তিনি বলেন, ভোট দেয়ার সময়সীমা ৩ ঘণ্টা বাড়িয়ে দিয়ে বিকেল ৫টা পর্যন্ত করা হয়েছে।
এর আগে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ- ডাকসু ও হল সংসদ নির্বাচনে ছাত্রীদের কুয়েত মৈত্রী হল থেকে বস্তাভর্তি সিল মারা ব্যালট পেপার উদ্ধারের পর ওই হলের ভোটগ্রহণ স্থগিত করা হয়।
এসময় হলের গেইটে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর গোলাম রব্বানী এবং প্রো-ভিসি মোহাম্মদ সামাদকে ঘিরে ভোট বাতিলের দাবিতে বিক্ষোভ করে শিক্ষার্থীরা। পুলিশ হলে ঢোকার চেষ্টা করলেও শিক্ষার্থীদের বাধায় তা পারেনি।
সে সময় ছাত্রীদের বিক্ষোভের মধ্যে প্রো-ভিসি মোহাম্মদ সামাদ বলেন,‘এই হলের নির্বাচন অবশ্যই স্থগিত থাকবে। যারা এই ঘটনা ঘটিয়েছে তাদের অবশ্যই শাস্তির আওতায় আনব।’
বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৮টি হলের মধ্যে ১৭টিতে সোমবার সকাল ৮টায় ডাকসু ও হল সংসদ নির্বাচনের ভোট শুরু হলেও কুয়েত মৈত্রী হলে ভোটগ্রহণ শুরুই করতে পারেনি কর্তৃপক্ষ।
বিপুল পরিমাণ ব্যালট দেখিয়ে শিক্ষার্থীরা হলের বাইরে সাংবাদিকদের বলেন, আগের রাতেই এসব ব্যালটে ‘ক্রস চিহ্ন’ সিল মেরে ভোটের চিহ্ন দিয়ে রাখা হয়েছে। ছাত্রলীগের প্যানেলের প্রার্থীদের নামে ভোটের সিল মারা হয়েছে।
কুয়েত মৈত্রী হলের কয়েকজন শিক্ষার্থীর ভাষ্য, সোমবার সকাল আটটায় ভোট গ্রহণ শুরুর কথা থাকলেও ঘণ্টাখানেক আগে থেকেই অন্যান্য হলের মতো এখানেও ছাত্রীদের দীর্ঘ সারি তৈরি হয়। সাড়ে সাতটার দিকে নির্বাচনে প্রার্থীরা হল প্রভোস্টের কাছে তাদের সামনে ব্যালট বক্স খোলার দাবি করে। তবে তাদের সামনে বাক্স খোলা হয়নি। সকাল ৭ টা ৫০ মিনিটের দিকে হলে প্রক্টর আসেন। এরপর প্রক্টর ও হল প্রভোস্ট মিলে ব্যালট বাক্স হলের রিডিং রুমে নিয়ে যান। এরপর ছাত্রীরা গিয়ে রিডিং রুম থেকে বস্তাভর্তি ব্যালট পান।
কুয়েত মৈত্রী হল সংসদের ভিপি পদের স্বতন্ত্র প্রার্থী শামসুন্নাহার পলি অভিযোগ করেন, হলের মিলনায়তনের পাশে রিডিং রুমে বসে ব্যালট পেপারে ভোটের চিহ্ন (সিল মারা) দেয়া হচ্ছিল।
তিনি অভিযোগ করেন,‘ভেতর থেকে দরজায় ছিটকিনি দিয়ে ভেতরে বসে এগুলো করছিল। ওই রুমে বসে সিল মারছিল। আমরা সাড়ে ৭টার দিকে ম্যামকে বলেছিলাম ‘ম্যাম আমরা দেখব ব্যালট বাক্স খালি কিনা। তিনি কিছুতেই দেখাবেন না। উনি বলেন, প্রক্টর স্যার এসে দেখাবেন।’
তিনি আরো বলেন,‘প্রক্টর স্যার এসে বললেন, নির্বাচন সুষ্ঠু হবে। সব দেখাব। এটা বলে তিনি ওই রুমে নিয়ে গিয়ে ভিতর থেকে ছিটকিনি দিয়ে দেন। আমরা দরজা ধাক্কা দিলেও কিছুতেই খুলতে চাননি। যখন দরজা খুললো, আমরা ভেতরে গিয়ে বস্তাভর্তি সিল মারা ব্যালট পেপার উদ্ধার করি।’
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৮টি হল মিলিয়ে ভোটার রয়েছেন মোট ৪৩ হাজার ২৫৫ জন। এর মধ্যে কুয়েত মৈত্রী হলে ভোটার ১৯৬৯ জন।
ডাকসুর জিএস পদে স্বতন্ত্র প্রার্থী আসিফুর রহমান অভিযোগ করেন, উদ্ধার হওয়া সবগুলো ব্যালটে ‘একই প্যানেলের’ প্রার্থীর নামে ভোটের চিহ্ন দেয়া। তিনি বলেন,‘সিলগুলো আগের রাতেই মেরে রাখা হয়েছে। আমরা ভোটগ্রহণ স্থগিতের দাবি জানাচ্ছি।’
শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভের মধ্যে প্রক্টর গোলাম রব্বানী সাংবাদিকদের বলেন,‘সিল মারা ব্যালটের সত্যতার প্রমাণ আমরা পেয়েছি। আমরা এখানে আছি। ভোটগ্রহণ বন্ধ আছে। দেখি কি করা যায়।’
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা