২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫
`

৩ ছাত্রলীগ কর্মীকে বহিষ্কার করলো জবি, নেপথ্যে গ্রুপিং

৩ ছাত্রলীগ কর্মীকে বহিষ্কার করলো জবি, নেপথ্যে গ্রুপিং - সংগৃহীত

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে (জবি) শৃঙ্খলা ভঙ্গের দায়ে তিন ছাত্রলীগ কর্মীকে সাময়িক বহিস্কার করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। বৃহস্পতিবার বিকাল ৪টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ, তথ্য ও গবেষণা দপ্তর থেকে এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য নিশ্চিত করা হয়। তবে বহিষ্কৃতরা দাবি করছেন ঘটনার সাথে জড়িত না হলেও শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক শেখ জয়নুল আবেদিন রাসেলের বিরাগভাজন হওয়ায় ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে চাপ দিয়ে তাদের বহিষ্কার করেছেন।

বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, গত ২২ অক্টোবর বিশ্ববিদ্যালয় দিবস ২০১৮ উদ্যাপন উপলক্ষে আয়োজিত কনসার্ট চলাকালে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি তরিকুল ইসলাম ও সাধারণ সম্পাদক শেখ জয়নুল আবেদিন রাসেলের অনুসারীদের মধ্যে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে দুগ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষ ঘটনা ঘটে। এছাড়া গত ৫ নভেম্বর বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল ফটকের সামনে শাখা ছাত্রলীগের কর্মীরা রাব্বি মিয়া নামক একজন গাড়ি চালককে ছাত্রলীগের কর্মীরা মারধর করে। হামলায় গুরুতরভাবে জখম ও আহত হয় রাব্বি মিয়া। উক্ত দুই ঘটনার সাথে জড়িত থাকার অভিযোগে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন বিশ্ববিদ্যালয়ের (২০১৫-১৬) শিক্ষাবর্ষের সমাজবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী আল-সাদিক এবং একই শিক্ষাবর্ষের উদ্ভিদবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী তৌহিদুল ইসলাম শান্ত এবং (২০১৬-১৭) শিক্ষাবর্ষের নৃবিজ্ঞান বিভাগের বিভাগের শিক্ষার্থী মো. আশিকুর রহমান আশিককে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সাময়িক বহিস্কার করে।

ছাত্রলীগ সূত্রে জানা যায়, বহিষ্কৃত তিন ছাত্রলীগ কর্মী আল-সাদিক, তৌহিদুল ইসলাম শান্ত, মো. আশিকুর রহমান আশিক বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির পর থেকে জগন্নাথ ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক শেখ জয়নুল আবেদিন রাসেলের রাজনীতি করতেন। কিন্তু কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের নতুন কমিটি দেয়ার পরে আশিকুর রহমান আশিকসহ শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক শেখ জয়নুল আবেদিন রাসেলের কর্মীদের একটি বড় অংশ কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সভাপতি রেজোয়ানুল হক চৌধুরী শোভনের অনুসারী হয়।

এ ঘটনায় শেখ জয়নুল আবেদিন রাসেলের সাথে তাদের কয়েক বার কথাকাটাকাটি হয়। এর জেরে গত ২২ অক্টোবর বিশ্ববিদ্যালয় দিবসে ও ৫ নভেম্বর বিশ্ববিদ্যালয়ের পাশে ঘোড়ার গাড়ির চালককে মারধরের ঘটনায় বহিষ্কৃতদের নাম উল্লেখ করে শেখ জয়নুল আবেদনি রাসেল তার কর্মী সুফিয়ানের দ্বারা গত ১৩ নভেম্বর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনের কাছে একটি অভিযোগ পত্র জমা দেন। পরে শেখ জয়নুল আবেদিন রাসেল বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে চাপ দিয়ে তাদের বহিষ্কার করান।

বহিষ্কৃত ছাত্রলীগ কর্মী আশিকুর রহমান আশিক বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় দিবসের দিন সে বিশ্ববিদ্যালয়ে আসেনি আর ঘোড়ার গাড়ি চালককে পেটানোর ঘটনায় কোতয়ালি থানায় একটি মামলা হয়েছে এ মামলার ইজাহারেও তার নাম নেই। কিন্তু রাজনৈতিক প্রতিহিংসার কারণে তাকে বহিষ্কার করা হয়েছে।

ঘটনার সাথে জড়িত না হয়েও বহিষ্কার হওয়া প্রসঙ্গে জবি প্রক্টর ড. নূর মোহাম্মদ বলেন বলেন, কোনো কারণে হয়তো ঘোড়ার গাড়ির চালকের মামলায় তাদের নাম বাদ গেছে কিন্তু ঘটনার সাথে তারা জড়িত। এখন বহিষ্কৃতরা যদি পিটিশন আবেদন করেন তবে তাদের বিষয়টি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন আবার খতিয়ে দেখবে।

এঘটনায় জবি ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক শেখ জয়নুল আবেদিন রাসেলের মুঠোফোনে কয়েকবার ফোন ও ক্ষুদেবার্তা পাঠিয়েও কোন জবাব পাওয়া যায়নি।

এ বিষয়ে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সভাপতি রেজোয়ানুল হক চৌধুরী শোভন বলেন, অর্ন্তকোন্দলের কারণে যদি কাউকে বহিষ্কার করা হয় তবে বিষয়টি দু:খজনক। এ বিষয়ে আমি জবি ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদেকর সাথে কথা বলব।


আরো সংবাদ



premium cement