২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫
`

বয়স ৩৫ এর দাবিতে আজো শাহবাগ অবরোধ

দাবি আদায়ে আজো শাহবাগে সড়ক অবরোধ করে আন্দোলন করছে শিক্ষার্থীরা। - ছবি: সংগৃহীত

সরকারি চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা ৩০ থেকে বাড়িয়ে ৩৫ বছর করার দাবিতে দ্বিতীয় দিনের মতো আজ রোববারও শাহবাগ মোড় অবরোধ করে আন্দোলন করছে বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র পরিষদ।

আজ রোববার সকালে শিক্ষার্থীরা শাহবাগ মোড়ে জড়ো হয়ে বসে সরকারি চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা বাড়ানোর দাবিতে বিভিন্ন শ্লোগান দিতে থাকে। এ সময় তারা বলতে থাকেন ‘মরতে হলে মরবো, দাবি নিয়ে ফিরবো,’ ‘দাবি পূরণ না হলে রাজপথ ছাড়বো না’ ইত্যাদি।

জানা গেছে, একজন পুলিশ কর্মকর্তা আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের কয়েকজনকে ডেকে শাহবাগ চার রাস্তার মোড় ছেড়ে জাতীয় যাদুঘরের সামনে অবস্থান গ্রহণের অনুরোধ জানালেও তারা সরকারের শীর্ষ পর্যায় থেকে দাবি পূরণের ঘোষণা না আসা পর্যন্ত সেখানেই অবস্থান করবেন বলে সাফ জানিয়ে দেন।

এর আগে গতকাল শনিবার সন্ধ্যায় এ ব্যাপারে বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র পরিষদের সভাপতি ইমতিয়াজ হোসেন গণমাধ্যমকে বলেন, ‘ছয় বছর ধরে চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা বাড়িয়ে ৩৫ বছর করার দাবিতে অহিংস আন্দোলন করে আসছি। অথচ আমাদের যৌক্তিক দাবি এখনও বাস্তবায়ন হয়নি।’

 

আরো পড়ুন : বিত‌র্কিত ফল বা‌তি‌লের দা‌বিতে সমা‌বেশ‘প্রশ্নফাঁস মেনে নেয়া মানে দুর্নীতিবাজদের আধিপত্য স্বীকার করা’

বিশ্ববিদ্যালয় প্র‌তি‌বেদক, ২১ অক্টোবর ২০১৮, ২১:০৩


ফাঁস হওয়া প্র‌শ্নে অনু‌ষ্ঠিত হওয়া ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ঘ-ইউনিটের পরীক্ষার বিত‌র্কিত ফল বাতিলের দাবিতে সমাবেশ করেছে শিক্ষার্থীরা। রোববার বিকেলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সন্ত্রাসবিরোধী রাজু ভাস্কর্যের সামনে ওই সমাবেশ অনু‌ষ্ঠিত হয়। সমা‌বেশ থেকে পুনরায় পরীক্ষা নেয়ার পাশাপা‌শি ঘ-ইউ‌নি‌ট ভ‌র্তি পরীক্ষার সমন্বয়ক সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. সাদেকা হালিমের পদত্যাগ দাবি করা। প্রশ্নফাঁস মেনে নেয়া মানে দুর্নীতিবাজদের আধিপত্যকে স্বীকার করা ব‌লে মন্তব্য ক‌রে‌ছেন বক্তরা।

সমাবেশে বক্তব্য দেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের অধ্যাপক আসিফ নজরুল, ছাত্র ইউনিয়নের সভাপতি জিএম জিলানী শুভ, ছাত্র ফেডারেশনের সভাপতি গোলাম মোস্তফা প্রমুখ।

অধ্যাপক আসিফ নজরুল বলেন, প্রশ্নপত্র ফাঁস হয়েছে সেটা স্বীকার করার পরে পরীক্ষা বাতিল না করার কি কারণ থাকতে পারে? প্রশ্ন ফাঁস মেনে নেওয়ার মানে মেধাবী ছাত্রদের পরিবর্তে দুর্নীতিবাজদের আধিপত্য মেনে নেওয়া। ঢা‌বির এই শিক্ষক ব‌লেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কারও ব্যক্তিগত সম্পতি না, এটা জনগণের অর্থে পরিচালিত একটি প্রতিষ্ঠান। ঢাবির সম্মান-ঐতিহ্যের প্রতি বিন্দুমাত্র দায় যদি আমাদের থাকে তাহলে কোনো মেধাবী ছাত্রকে বঞ্চিত করার অধিকার আমাদের নেই। ঘ ইউনিটের পুনরায় পরীক্ষা নেওয়ার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, সেই পরীক্ষা থেকে সাদেকা হালিমকে অব্যাহতি দিয়ে ইতোপূর্বে বিশ^স্তভাবে যারা বিভিন্ন ইউনিটের পরীক্ষার দায়িত্ব পরিচালনা করেছে তাদের যেন দায়িত্ব দেয়া হয়। ঢাবি প্রশাসনের প্রতি পরীক্ষা জালিয়াতিচক্রকে সমূলে উৎপাটনের আহ্বান জানান তিনি।

ছাত্র ইউনিয়নের সভাপতি জিলানী শুভ বলেন, নৈতিকতা না থাকলে বিশ্ববিদ্যালয় কৃতদাস তৈরির কারখানায় পরিণত হয়। সমগ্র শিক্ষাব্যবস্থা যখন রাহুগ্রস্ত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় তা থেকে মুক্ত হতে পারল না। তিনি অবিলম্বে নতুন করে পরীক্ষা গ্রহণের সিদ্ধান্তে আসার জন্য বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের প্রতি আহ্বান জানান। অন্যথায় ছাত্রসমাজকে নিয়ে কঠোর আন্দোলনেরও হুঁশিয়ারি দেন তিনি।

প্রসঙ্গত, গত ১২ অক্টোবর ঘ-ইউনিটের পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবার পূর্বেই প্রশ্নফাঁসের অভিযোগ ওঠে। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন এটা নিয়ে তদন্ত কমিটি গঠন করে। কমিটি একজন ভর্তিচ্ছুর মোবাইলে সকাল ৯টা ১৭ মিনিটে প্রশ্ন পাওয়ার প্রমাণ পায়। প্রশ্নফাঁসের প্রমাণ পাওয়া সত্ত্বেও পরীক্ষা বাতিল না করে গত মঙ্গলবার ফল প্রকাশ করায় শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ শুরু করেন। সেই বিক্ষোভ এখনও অব্যাহত রয়েছে।

 

আরো পড়ুন : অসুস্থ হয়ে পড়লেন ঢাবির অনশনরত সেই ছাত্রটি

নয়া দিগন্ত অনলাইন , ১৮ অক্টোবর ২০১৮

অনশনরত অবস্থায় অসুস্থ হয়ে পড়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের তৃতীয় বর্ষের ছাত্র আখতার হোসেন। তিনি দেশের সর্বেোচ্চ বিদ্যাপিঠের ‘ঘ’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা বাতিলের দাবিতে অনশন করছিলেন। তাকে চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে। বৃহস্পতিবার বেলা ২টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের সামনেই অসুস্থ হয়ে পড়েন আখতার।

গত মঙ্গলবার দুপুর সাড়ে ১২টা থেকে রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে অনশন শুরু করেন আখতার হোসেন।

১২ অক্টোবর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের অধীন ঘ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। এই পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁসের অভিযোগ ওঠে। প্রশ্নপত্র ফাঁসের অভিযোগে ছয়জনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। তবে এই অভিযোগের মধ্যেই গত মঙ্গলবার বিকেল তিনটার দিকে ফল প্রকাশ করা হয়। এর পর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক এ কে এম গোলাম রব্বানী বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্রিয়ার মাধ্যমে ফলাফল প্রস্তুত হয়েছে। এটিকে আমরা অস্বাভাবিক মনে করছি না। প্রশ্নপত্র ফাঁসের নিশ্চিত কোনো প্রমাণ আমরা পাইনি।’

ফল প্রকাশের দিন থেকে  বৃহস্পতিবার পর্যন্ত অনশন চালিয়ে যাচ্ছিলেন আখতার। বৃহস্পতিবার বেলা ১১টার দিকে ভিসি কার্যালয়ে ছাত্রলীগের সাথে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের একটি সভা হয়। সভা চলাকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের প্রায় ৩০ জন শিক্ষার্থী ভিসি কার্যালয়ের বাইরে অবস্থান নেন। তারা বেলা ১১টা ৫৫ মিনিটে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে আলটিমেটাম দেয় যে বেলা ১টার মধ্যে আখতারের দাবিগুলো পূরণ করতে হবে।

বেলা ১টা ২০ মিনিটের দিকে প্রশাসনের পক্ষ থেকে আইন অনুষদের ডিন মোহাম্মদ রহমতুল্লাহ, আইন বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক নাইমা হক এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক গোলাম রব্বানী উপাচার্য কার্যালয় থেকে বের হন। তাদের সাথে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক যোগ দেন। তিনি সেখানে ছাত্রলীগের পক্ষ থেকে প্রশাসনের কাছে কিছু দাবি তুলে ধরেন। এই দাবিগুলোর মধ্যে ছিল, যাচাইবাছাই করে ঘ ইউনিটের পরীক্ষা পুনরায় নেওয়া, পরীক্ষা পদ্ধতির সংস্কার পলিসি ডিবেটের মাধ্যমে করা।

এরপর সবাই মিলে রাজু ভাস্কর্যের সামনে আখতারের কাছে যান। আখতারকে তারা অনশন ভাঙানোর চেষ্টা করেন। আখতার প্রক্টরকে বলেন, ‘প্রশ্ন ফাঁস হয়েছে কি না, আমাকে স্পষ্ট করে বলেন।’ সে সময় প্রশাসনের পক্ষ থেকে সরাসরি কিছু না বলে বিষয়টি দেখা হচ্ছে বলে জানানো হয়। এমন সময় আখতার অসুস্থ হয়ে পড়েন। সাথে সাথে তাকে রিকশায় করে ঢাকা মেডিকেলে কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে তিনি এখন চিকিৎসাধীন আছেন।

ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের কর্তব্যরত চিকিৎসক বলেন, ‘আখতারের গ্লুকোজ লেভেল মোটামুটি স্বাভাবিক হয়েছে। এরপরও তাকে গ্লুকোজ দিয়ে রাখা হয়েছে। তিনি মুখে খেলে সুস্থ হবেন।’

আখতারের এক আত্মীয় জানান, আখতার যে অনশনে বসেছেন, তা বাসার সবাই জানে। তবে বর্তমান অবস্থা জানানো হয়নি।

২০১৫-১৬ সেশনে ‘খ’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষায় ১৪ তম হওয়া আখতার হোসেন ভর্তি-ইচ্ছুক ১৩ জন ছাত্রকে পড়াতেন। এবার প্রশ্নপত্র ফাঁসের পর ছাত্রদের একজনের প্রশ্ন ছিল, ‘স্যার, আমরা এত পড়াশোনা করলাম, কিন্তু প্রশ্ন ফাঁস হওয়ায় আমরা কি চান্স পাব? তাহলে কি আমরা দুর্নীতির কাছে হেরে গেলাম?’ ছাত্রের কাছে এই প্রশ্নের সদুত্তর দিতে না পারাই ছিল আখতার হোসেনের আমরণ অনশনে বসার প্রধান কারণ।

 


আরো সংবাদ



premium cement