১৯ মার্চ ২০২৪, ০৫ চৈত্র ১৪২৯, ০৮ রমজান ১৪৪৫
`

প্রাথমিকের শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষায় যে পরিবর্তন আসছে

সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। - ছবি: সংগৃহীত

সরকারি নিয়োগের ক্ষেত্রে পাবলিক সার্ভিস কমিশনের (পিএসসি) অধীনে প্রশাসন ক্যাডারের কর্মকর্তা নিয়োগের জন্য পরিচালিত বিসিএস পরীক্ষাকে এখন পর্যন্ত মানসম্পন্ন বলে অভিহিত করা হয়। সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষা নিয়ে সে রকম একটি পরিবেশ সৃষ্টির উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে।

মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বশীল সূত্রগুলো বলেছে, নিয়োগ পরীক্ষার স্বচ্ছতা এবং যোগ্যপ্রার্থী বাছাই করা না গেলে, প্রাথমিকে মানসম্পন্ন শিক্ষা নিশ্চিত করা দুরূহ হবে। এ বিষয়গুলোকে বিবেচনায় রেখেই প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষা পদ্ধতিতে ব্যাপক পরিবর্তন আনা হচ্ছে। আজ মন্ত্রণালয়ে এ সংক্রান্ত উচ্চপর্যায়ের এক বৈঠকে বিষয়টি চূড়ান্ত হবে।

জানা গেছে, শিক্ষক নিয়োগে নতুন পদ্ধতি হিসেবে আবেদনকারীদের মধ্য থেকে যোগ্যদের বাছাই করতে প্রিলিমিনারি পরীক্ষা হবে। প্রিলিমিনারিতে যারা নির্বাচিত হবেন তাদের ফের লিখিত পরীক্ষা হবে। সেখানে যারা নির্বাচিত হবেন, তাদের চূড়ান্তভাবে মৌখিক পরীক্ষার জন্য ডাকা হবে। প্রিলিমিনারি পরীক্ষায় কতজন বাছাই করা হবে, এ বিষয়ে গতকাল নিশ্চিত করে সংশ্লিষ্ট সূত্র কিছু বলেনি।

তবে ধারণা দিয়েছে, ২৪ লক্ষাধিক আবেদনের মধ্য থেকে ৫০ হাজার বা তার চেয়ে কিছু বেশি প্রিলিমিনারিতে বাছাই করা হবে। এদের পরবর্তীতে আরেকটি পরীক্ষা নেয়া হবে। সে পরীক্ষায় কী কী বিষয় থাকবে বা তাদের বাছাই করতে বিশেষ পরীক্ষার ধরন কী হবে তাও আজকের বৈঠকে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে। ফলাফলের ভিত্তিতে এ পরীক্ষার মাধ্যমে আসনপ্রতি ৩ জনকে নির্বাচন করা হবে। তিনজনকেই মৌখিক পরীক্ষায় ডাকা হবে। সেখান থেকে একজনকে নেয়া হবে।

মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিকসঙ্কট নিরসনে প্রাথমিক শিক্ষা উন্নয়ন প্রকল্প-৪ (পিইডিপি-৪) আওতাভুক্ত ১২ হাজার ‘সহকারী শিক্ষক’ নিয়োগের জন্য গত আগস্টে অনলাইনে আবেদন আহবান করে। এতে সারাদেশে রেকর্ডসংখ্যক ২৪ লাখ ১ হাজার ৫৯৭ প্রার্থী আবেদন করেছেন। আগামী ২৬ অক্টোবরে লিখিত পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হতে পারে।

মন্ত্রণালয়ের প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতরের (ডিপিই) কর্মকর্তারা জানান, এবার ১২ হাজার সহকারী শিক্ষক পদের বিপরীতে ২৪ লাখ ১ হাজার ৫৯৭টি আবেদন করায় নিয়োগ পরীক্ষা সুষ্ঠুভাবে আয়োজন ও প্রশ্নফাঁস রোধ করাটা কঠিন হয়ে পড়েছে। এ কারণে পরীক্ষা পদ্ধতিতে পরিবর্তন আনার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।

মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, পরীক্ষায় প্রশ্নপত্র ফাঁস রোধে প্রশ্নের সেটও বাড়ানো হয়েছে। পরীক্ষার্থী দ্বিগুণ হওয়ায় পরীক্ষা কেন্দ্রের সংখ্যাও বাড়বে। আজকের বৈঠকে নিয়োগ পরীক্ষার ডিজিটাল পদ্ধতিতে প্রশ্নপত্র প্রণয়ন, ওএমআর ফরম ডিজাইন ও মূল্যায়ন, পরীক্ষার সময়সূচি, ফলাফল প্রক্রিয়াকরণ ও প্রকাশ এবং পরীক্ষা কেন্দ্রের আসনবিন্যাসের পদ্ধতি উন্নয়ন বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।

পরীক্ষাপদ্ধতি পরিবর্তনের উদ্যোগ সম্পর্কে জানতে চাইলে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (উন্নয়ন) গিয়াসউদ্দিন আহমেদ গতকাল নয়া দিগন্তকে বলেন, মানসম্মত ও যোগ্য শিক্ষক নিয়োগের জন্য সর্বোচ্চ প্রচেষ্টাসহ পরীক্ষাপদ্ধতির পরিবর্তন আনার কথা বিবেচনা করা হচ্ছে। এ ছাড়া আগে নিয়োগ পরীক্ষার আয়োজনে ডিপিই নিজস্ব জনবল নিয়ে কাজ করত। এবার প্রার্থী বেশি হওয়ায় এবং মানসম্পন্ন পরীক্ষা নিশ্চিত করতে বুয়েট এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইনস্টিটিউট বিজনেস অব অ্যাডমিনিস্ট্রেশনকে (আইবিএ) দায়িত্ব দেয়া হতে পারে।

ডিপিই সূত্রে জানা গেছে, বর্তমানে সারাদেশে ৬৪ হাজার ৮২০টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে। তার মধ্যে প্রায় ১২ হাজার সহকারী শিকের পদ শূন্য রয়েছে। এ কারণে নতুন করে ১২ হাজার সহকারী শিক নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়। পুরনো নিয়োগ বিধিমালা অনুসরণ করে এ নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি দেয়া হয়। ফলে নারী আবেদনকারীদের ৬০ শতাংশ কোটায় এইচএসসি বা সমমান পাস এবং পুরুষের জন্য ৪০ শতাংশ কোটায় স্নাতক বা সমমান পাস রাখা হয়েছে। লিখিত পরীক্ষায় আসনপ্রতি তিনজনকে (একজন পুরুষ ও দুইজন নারী) নির্বাচন করা হবে।

খুব দ্রুত লিখিত পরীক্ষার সময়সূচি ঘোষণা করা হবে বলে জানা গেছে। ডিপিই ওয়েবসাইটে dpe.teletalk.com.bd প্রবেশপত্র ও যাবতীয় নির্দেশনা দেয়া হবে।

 

আরো পড়ুন:  সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষক নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ
নয়া দিগন্ত অনলাইন , ৩০ জুলাই ২০১৮


প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের অধীন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে রাজস্বখাতভুক্ত ‘সহকারী শিক্ষক’ পদের নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হয়েছে।

সহকারী শিক্ষক পদে আবেদনের জন্য পুরুষ প্রার্থীদের কমপক্ষে স্নাতক বা সমমানের ডিগ্রিধারী হতে হবে। নারী প্রার্থীরা উচ্চ মাধ্যমিক সার্টিফিকেট বা সমমানের পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হলেই আবেদন করতে পারবেন। প্রার্থীদের শিক্ষাজীবনে সব পরীক্ষায় কমপক্ষে দ্বিতীয় শ্রেণি বা বিভাগ বা সমমানের জিপিএ থাকতে হবে। ৩০ আগস্ট ২০১৮ তারিখে সাধারণ প্রার্থীদের বয়স হতে হবে ১৮ থেকে ৩০ বছরের মধ্যে।


মুক্তিযোদ্ধার সন্তান ও প্রতিবন্ধী প্রার্থীদের ক্ষেত্রে বয়সসীমা সর্বোচ্চ ৩২ বছর। পার্বত্য তিন জেলা রাঙ্গামাটি, খাগড়াছড়ি ও বান্দরবান ব্যতীত বাংলাদেশী নাগরিকরা পদগুলোতে আবেদন করতে পারবেন।

প্রার্থীরা অনলাইনে dpe.teletalk.com.bd ওয়েবসাইটের মাধ্যমে আবেদন করতে পারবেন। আগামী ১ আগস্ট সকাল ১০ টা ৩০ মিনিট থেকে অনলাইনে আবেদন প্রক্রিয়া শুরু হবে। আবেদন করা যাবে ৩০ আগস্ট পর্যন্ত।

প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত প্রার্থীদের জাতীয় বেতনস্কেল ২০১৫ অনুযায়ী ১০,২০০/- ২৪,৬৮০/ টাকা, প্রশিক্ষণবিহীন প্রার্থীদের ৯,৭০০/- ২৩,৪৯০/ টাকা স্কেলে বেতন দেয়া হবে।

 


আরো সংবাদ



premium cement