১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৬ বৈশাখ ১৪৩১, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫
`

ইবিতে কলা অনুষদের বিভাগ ধর্মতত্ত্বে !

-

ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষায় কলা অনুষদের বিভাগ আরবী সাহিত্যকে ধর্মতত্ত্বের সাথে একই অনুষদে ভর্তি পরীক্ষা নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে কেন্দ্রীয় ভর্তি পরীক্ষা কমিটি। কমিটির এ সিদ্ধান্তকে অযৌক্তিক এবং বিতর্কিত দাবি করেন শিক্ষার্থীরা। বিতর্কিত সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ জানিয়ে শনিবার দুপুর ১টার দিকে বিভাগের সামনে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছে আরবী বিভাগের শিক্ষার্থীরা। তাদের দাবি, আরবী সাহিত্য কলা অনুষদের একটি বিভাগ, সুতরাং ভর্তি পরীক্ষা কলা অনুষদের সাথেই হতে হবে। দেশের অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়েও আরবী সাহিত্য কলা অনুষদের সাথেই পরীক্ষা হয়।

এদিকে আইন ও শরিয়াহ্ অনুষদভূক্ত আল-ফিকহ্ এন্ড লিগ্যাল স্টাডিজ বিভাগেরও ধর্মতত্ত্বে সাথে ভর্তি পরীক্ষা গ্রহণের সিদ্ধান্ত নিয়েছে ভর্তি কমিটি। তবে আরবী সাহিত্য ও আল-ফিকহ্ কোন বিভাগেরই ভর্তি পরীক্ষার পদ্ধতিতে ধর্মতত্ত্বের সাথে মিল নাই। জানা যায়, আরবী সাহিত্যের শিক্ষার্থীরা দেশের অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ের আরবী সাহিত্যের মতই বাংলা, ইংরেজি এবং সাধারণজ্ঞান বিষয়ে পরীক্ষা দিয়ে ভর্তি হয়। আল-ফিকহ্ও বাংলা, ইংরেজি এবং সাধারণজ্ঞান বিষয়ে ভর্তি পরীক্ষা দেয়। কিন্তু ধর্মতত্ত্বের ভর্তি পরীক্ষায় বাংলা, ইংরেজি ও সাধারণ জ্ঞান বিষয়ে কোন প্রশ্ন হয় না।

প্রত্যাক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, শিক্ষার্থীরা দাবি নিয়ে বিভাগের সামনে অবস্থান নেয়। সংবাদ পেয়ে বিভাগের সভাপতি প্রফেসর ড. মাহবুবুর রহমানসহ বিভাগের শিক্ষকরা সেখানে আসেন। শিক্ষকরা আসলে শিক্ষার্থীরা তাদের দাবি বিভাগের শিক্ষকদের কাছে উপস্থাপন করে। পরে শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে বিভাগীয় সভাপতি প্রফেসর ড. মাহবুবুর রহমান বলেন, ‘বিষয়টি নিয়ে আমরা (আরবী বিভাগের শিক্ষকেরা) প্রশাসনের কর্তা ব্যক্তি ভিসি, প্রোভিসি এবং ট্রেজারারের সাথে কথা বলেছি। আশা করি আগের মত এবারো আমরা কলা অনুষদে পরীক্ষা নিবো। আমাদের যৌক্তিক দাবি ভিসি মহোদয় অবশ্যই আমলে নিবেন।

অবস্থানরত শিক্ষার্থীরা আরো বলেন, আমাদের যৌক্তিক দাবি মেনে নিন। অন্যথায় আমাদের বিভাগ ক্ষতিগ্রস্থ হবে এমন সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আমরা তিব্র আন্দোলন করব। এদিকে আল-ফিকহ্ এন্ড লিগ্যাল স্টাডিজকেও ধর্মতত্ত্বের সাথে পরীক্ষা নেয়ার সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে আগামী সোমবার থেকে ক্লাস-পরীক্ষা বর্জনের ঘোষনা দিয়েছে বিভাগের শিক্ষার্থীরা।

জানা যায়, গত ১৪ আগস্ট ভর্তি পরীক্ষা কমিটির সভায় আরবী সাহিত্য এবং আল-ফিকহ্ এন্ড লিগ্যাল স্টাডিজ বিভাগের ভর্তি পরীক্ষা ধর্মতত্ত্বের সাথে নেওয়ার বিষয়ে প্রস্তাব আনা হয়। উক্ত সভায় আরবী বিভাগের সভাপতি এই প্রস্তাবের বিরোধীতা করেন। দ্বিমত পোষণ করে সভায় সভাপতি বলেন, বিষয়টি আরবী বিভাগের কোন শিক্ষকই জানে না। এমন একটি সিদ্ধান্ত গ্রহণের আগে প্রয়োজনে এ্যাকাডেমিক কমিটির মিটিংয়ে আলোচনা করা হোক। তবে তার কথা উপেক্ষা করে সিদ্ধান্ত নেন কর্তৃপক্ষ।

এদিকে ১৫ আগস্ট থেকে ২৭ তারিখ পর্যন্ত ক্যাম্পাস বন্ধ থাকায় তাৎক্ষণিক কোন প্রতিক্রিয়া দেখাতে পারেনি বিভাগটি। পরে বিষয়টি জানা জানি হলে বিভাগের শিক্ষার্থীরা বিভাগের সামনে অবস্থান নেয়।

এদিকে এবিষয়ে আলোচনার জন্য আরবী বিভাগ এক জরুরী মিটিং করেছে আজ (শনিবার)। সভা শেষে ভিসি, প্রভিসি এবং ট্রেজারারের সাথে সাক্ষাৎ করে এই সিদ্ধান্তের সাথে দ্বিমত পোষন করেছেন আরবী বিভাগের শিক্ষকেরা।

সাক্ষাৎ শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বিভাগের শিক্ষকেরা বলেন, ‘ভিসি স্যার বিষয়টি গুরুত্বের সাথে বিবেচনা করার কথা বলেছেন। আশা করি তিনি সঠিক সিদ্ধান্ত নেবেন।’

ভিসি প্রফেসর ড. রাশিদ আসকারী বলেন, ‘আরবী বিভাগের শিক্ষকবৃন্দ আমার কাছে এসেছিল। তাদের দাবি জানিয়েছে তারা। পরীক্ষার ইউনিট বরাদ্দের বিষয়ে ভর্তি পরীক্ষা কমিটির সিদ্ধান্ত ছিল। আলোচনা সাপেক্ষে আমরা বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে পুণঃবিবেচনা করব। ’


আরো সংবাদ



premium cement

সকল