২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫
`

শুল্ক ছাড়া আশুগঞ্জ দিয়ে এবার পাথর পরিবহন করছে ভারত

ভারত
১১শ’ ১৭ মেট্রিক টন পাথর নিয়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জ নৌবন্দরে নোঙ্গর করেছে ভারতীয় জাহাজ। - ছবি : নয়া দিগন্ত

এবার ১১শ’ ১৭ মেট্রিক টন পাথর নিয়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জ নৌবন্দরে নোঙ্গর করেছে ভারতীয় জাহাজ এমভি গড়াই ডব্লিউ ভি ১৩৬৭।

রোববার বিকালে জাহাজটি আশুগঞ্জ নৌবন্দরের জেটিতে নোঙ্গর করে। প্রয়োজনীয় কাগজপত্র দাখিল ও স্বাক্ষরসহ সকল আনুষ্ঠানিকতা শেষ করে মঙ্গলবার সকাল থেকে জাহাজটি থেকে পণ্য খালাসের কাজ শুরু হবে।

বরাবরের মতোই ১৯৭২ সালের নৌ প্রটোকল চুক্তির (ট্রান্সশিপমেন্ট) আওতায় এসব ভারতীয় পণ্য বাংলাদেশের পানিপথ ও স্থলপথ ব্যবহার করে আগরতলা নেয়া হচ্ছে। ফলে এ ক্ষেত্রে বাংলাদেশ সরকার কোনো প্রকার শুল্ক পাচ্ছে না।

তবে আগের মতো এবারও পরিবহনের ক্ষেত্রে প্রতি টনে ১৯২ টাকা মাসুল দেয়া হবে। এছাড়াও টনপ্রতি ভয়েজ পারমিশন ফি, পাইলট অবস্থান ফি, ল্যান্ডিং ফি, চ্যানেল চার্জ ও লেবার চার্জ দেয়া হবে।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, ১৯৭২ সালের নৌ প্রটোকোল চুক্তির (ট্রান্সশিপমেন্ট) আওতায় বাংলাদেশের অভ্যন্তরে ৪৫০ কিলোমিটার পানিপথ ও স্থলপথ ব্যবহার করে বিভিন্ন মালামাল নিচ্ছে ভারত। এই চুক্তির আওতায় এর আগে মানবিক কারণ দেখিয়ে ভারত প্রথমে পালাটানা বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ভারী যন্ত্রাংশ ও পরে কয়েক দফায় ফ্লায়েস, রড, স্টিল সীট, চাল ও ভোজ্য তেল পরিবহন করেছে।

এরই ধারাবাহিকতায় কলকাতার হলদিয়া বন্দরের পাশের জিআর-২ জেটি থেকে জাহাজটিতে ভারতীয় পাথর লোড করা হয়। পরে ২৮ জুলাই দুপুরে ১১শ’ ১৭ মেট্রিকটন পাথর নিয়ে রওয়ানা হয় জাহাজটি। প্রায় ১৫ দিন পর জাহাজটি রোববার বিকালে আশুগঞ্জ নৌবন্দর জেটিতে নোঙ্গর করে।

আশুগঞ্জ নৌবন্দর ও আখাউড়া স্থলবন্দর ব্যবহার করে ট্রাকে করে পাথরগুলো যাবে ত্রিপুরার আগরতলায়।

এমভি গড়াই ডব্লিউ ভি ১৩৬৭ নামে জাহাজটির মাস্টার মানষ গাইন জানান, ২৮ জুলাই ১১শ’ ১৭ মেট্রিকটন পাথর নিয়ে রওয়ানা হয় ভারতীয় জাহাজটি। ১৫ দিন পর আশুগঞ্জে রোববার বিকালে নোঙ্গর করা হয়। সবকিছু ঠিক থাকলে দু’একদিনের মধ্যে জাহাজ থেকে পাথর খালাসের কাজ শুরু হবে।

বাংলাদেশের লোডিং ঠিকাদার আদনান ট্রেড ইন্টারন্যাশনালের মালিক মো: আক্তার হোসেন জানান, আমাদের প্রতিষ্ঠান জাহাজ থেকে পণ্য খালাস করে ভারতের আগরতলায় পৌঁছে দেয়ার জন্য কাজ করছে। বাংলাদেশের ভিতর দিয়ে ভারতীয় পণ্য পরিবহনের ক্ষেত্রে প্রতি টনে ১৯২ টাকা মাসুল দেয়া হবে। এছাড়াও টনপ্রতি ভয়েজ পারমিশন ফি, পাইলট অবস্থান ফি, ল্যান্ডিং ফি, চ্যানেল চার্জ, ও লেবার চার্জ আগের মতই দেয়া হবে। সকল আনুষ্ঠানিকতা শেষ করে মঙ্গলবার অথবা বুধবার সকাল থেকেই পাথর আখাউড়া স্থলবন্দর হয়ে আগরতলা পৌঁছাবে।

বিআইডব্লিউটিএ’র আশুগঞ্জ বন্দরের পরিদর্শক মো: শাহআলম জানান, কাস্টমসসহ সকল আনুষ্ঠানিকতা শেষ করে মঙ্গলবার অথবা বুধবার সকাল থেকেই বাংলাদেশী ট্রাক ব্যবহার করে পাথরগুলো আখাউড়া স্থলবন্দর হয়ে আগরতলা যাবে।

আরো পড়ুন :
আখাউড়া দিয়ে আবারো ভারতীয় খাদ্যশস্য পরিবহন শুরু
আখাউড়া (ব্রাহ্মণবাড়িয়া) সংবাদদাতা, ২৬ আগস্ট ২০১৬
ট্রানজিটের মাধ্যমে আবারো বাংলাদেশকে ব্যবহার করে আখাউড়া স্থলবন্দর দিয়ে ভারতীয় (খাদ্যশস্য) চাল পরিবহন শুরু হয়েছে। গতকাল সকালে আখাউড়া স্থলবন্দর দিয়ে ২৭৩ টন চাল গেল ভারতের ত্রিপুরায়। এ নিয়ে তৃতীয় দফা বাংলাদেশের ওপর দিয়ে ভারতীয় পণ্য পরিবহন হচ্ছে।

আখাউড়া স্থলবন্দর কাস্টমস অফিস জানায়, মঙ্গলবার ভারত পশ্চিমবঙ্গের িিদরপুর নৌবন্দর থেকে প্রায় ২৩ শ’ টন (খাদ্যশস্য) চাল নিয়ে এমভি অভি নামে একটি জাহাজ আশুগঞ্জ নৌবন্দরে নোঙর করে। বুধবার মাল খালাস হয়। বৃহস্পতিবার ভোরে ২৭৩ টন চাল নিয়ে ১৫টি কাভার্ডভ্যান আশুগঞ্জ বন্দর থেকে ত্রিপুরার উদ্দেশে ছেড়ে আখাউড়া স্থলবন্দরে পৌঁছে। পরে কাস্টমসসহ নানা আনুষাঙ্গিক কাজ শেষে বেলা ১১টায় ১৫ কাভার্ডভ্যান ভর্তি ২৭৩ টন চাল চলে যায় ভারতের ত্রিপুরায়। এসব চাল ত্রিপুরা রাজ্যে নিয়ে যাওয়ার জন্য বাংলাদেশের ৪৫০ কিলোমিটার নৌপথ ও ৫০ কিলোমিটার স্থলপথ ব্যবহার করা হলেও মানবিক কারণে কোনো প্রকার শুল্ক নেয়া হচ্ছে না।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, মানবিক কারণে শুল্ক ছাড়াই বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে সম্পাদিত চুক্তির আওতায় ৩৫ হাজার টন ভারতীয় খাদ্যশস্য (চাল) বাংলাদেশের ওপর দিয়ে পরিবহনের অনুমোদন লাভ করে ভারত। ইতোমধ্যে চুক্তির আওতায় ২০১৪ সালে ১০ হাজার টন চাল ও ২০১৫ সালে ১০ হাজার টন চাল বাংলাদেশের ওপর দিয়ে ভারতের ত্রিপুরায় পৌঁছেছে। ওই চালের আরেকটি চালান নিয়ে এমভি অভি নামে জাহাজটি ১৪ আগস্ট কলকাতার খিদিরপুর বন্দর থেকে রওনা হয়ে গত ২৩ আগস্ট আশুগঞ্জ নৌবন্দরে পৌঁছে।

চাল পরিবহনে বাংলাদেশের দায়িত্বপ্রাপ্ত পরিবহন ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান আনবিস ডেভেলপমেন্ট লিমিটেডের স্থানীয় ঠিকাদার জিয়াউদ্দিন খন্দকার জানান, বুধবার সকাল ১০টা থেকে জাহাজ থেকে চাল আনলোড করে কাভার্ডভ্যানে লোড করা হয়েছে। ১৫টি কাভার্ডভ্যানে চাল লোড করা হয়েছে। প্রতিটি কাভার্ডভ্যানে ১৮.২৫ টন করে চাল লোড করা হয়েছে। গতকাল ভোর ৪টায় ১৫টি কাভার্ডভ্যান আখাউড়া স্থলবন্দরের উদ্দেশে আশুগঞ্জ ছেড়ে এসে আনুষাঙ্গিক কাজ শেষে বেলা ১১টায় আখাউড়া স্থলবন্দর দিয়ে সরাসরি ভারতের ত্রিপুরায় চলে যায়।

এ ব্যাপারে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সহকারী কমিশনার (রাজস্ব) মো: কামরুল ইসলাম জানান, কাস্টমস থেকে সব আনুষ্ঠানিকতা শেষ করে জাহাজ থেকে কাভার্ডভ্যানে চাল উঠানোর অনুমতি দেয়া হয়। শুল্ক ছাড়া সব প্রকার চার্জ পরিশোধ করে এসব চাল ত্রিপুরায় যায়।


আরো সংবাদ



premium cement