২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৭ বৈশাখ ১৪৩১, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫
`

ঢাবিতে ক্যান্টিন ম্যানেজারকে জুতাপেটা ছাত্রলীগ নেতার

ঢাবিতে ক্যান্টিন ম্যানেজারকে জুতাপেটা ছাত্রলীগ নেতার - ছবি : নয়া দিগন্ত

দীর্ঘদিনের পাওনা টাকা ফেরত চাওয়া এবং রুমে খাবার পাঠাতে দেরি হওয়ার ঘটনাকে কেন্দ্র করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) বিজয় একাত্তর হলের ক্যান্টিন ম্যানেজারকে জুতাপেটা করার অভিযোগ এক ছাত্রলীগ নেতার বিরুদ্ধে। গতকাল মঙ্গলবার বিকেলে বিজয় একাত্তর হলের ক্যান্টিনে এ ঘটনা ঘটে। 

ভুক্তভোগী ক্যান্টিন ম্যানেজারের নাম জুয়েল মিয়া। অভিযুক্ত শফিক ইসলাম ফকির হলের আবাসিক শিার্থী ও পদ্মা ১০০০২ নম্বর রুমে থাকেন। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবসায় শিা অনুষদ শাখা ছাত্রলীগের সদ্য বিদায়ী কমিটির দফতর সম্পাদক।

এ বিষয়ে ক্যান্টিন ম্যানেজার জুয়েল মিয়া জানান, এখন শফিকের কাছে প্রায় দুই হাজার টাকা বাকি রয়েছে। রুমে খাবার পাঠাতে একটু দেরি হওয়ায় তিনি লোক পাঠান ক্যান্টিনে। ক্যান্টিনে এসে তারা আমাকে ফোন করলে তার কাছে পাওনা টাকা চেয়েছি। টাকা চাওয়ায় ফোনেই গালাগালি করে। পরে ক্যান্টিনে এসে জুতা দিয়ে মুখে ও মাথায় মারধর করে।
এ ঘটনায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি সঞ্জিত চন্দ্র দাস বলেন, এ বিষয়ে আমি এখনো অবহিত না। এ ঘটনায় অভিযুক্ত হলে আমরা তার বিরুদ্ধে অবশ্যই সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেয়া হবে।

এই বিষয়ে হলের প্রাধ্য অধ্যাপক এ জে এম শফিউল আলম ভূঁইয়া বলেন, আমরা বিষয়টি শুনেছি। কেন তার বিরুদ্ধে তিন দিনের মধ্যে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে না এই মর্মে তাকে জবাব দিতে বলা হয়েছে।

আরো পড়ুন :

বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের গ্রেফতার ২২ ছাত্র দুই দিনের রিমান্ডে
নয়া দিগন্ত ডেস্ক

পুলিশের ওপর হামলা ও ভাঙচুরের পৃথক দুই মামলায় বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ২২ ছাত্রের দুই দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। পুলিশের আবেদনের পরিপ্রেেিত ঢাকার মহানগর হাকিম আবদুল্লাহ আল মাসুদ গতকাল এ আদেশ দেন। রিমান্ড মঞ্জুর হওয়া আসামিরা বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় ইস্টওয়েস্ট, নর্থসাউথ, সাউথইস্ট ও ব্র্যাকের ছাত্র। এর মধ্যে বাড্ডা থানাÑ পুলিশ ১৪ জন ছাত্রকে এবং ভাটারা থানা পুলিশ আটজন ছাত্রকে আদালতে হাজির করে প্রত্যেকের সাত দিনের রিমান্ড আবেদন করে। আদালত তাদের দুই দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
গতকাল বেলা ৩টায় আদালতের এজলাসে যখন তাদের তোলা হয় সে সময় স্বজনদের দেখে কান্নায় ভেঙে পড়েন ছাত্ররা। তাদের আইনজীবীরা আদালতের কাছে দাবি করেন, পুলিশ ধরে নিয়ে থানায় ফেলে তাদের নির্যাতন করেছে। কাস শেষে বাসায় ফেরার পথে তাদের গ্রেফতার করা হয়।

তবে বাড্ডা থানার মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা জুলহাস মিয়া রিমান্ড আবেদনে বলেন, গত সোমবার দুপুর সাড়ে ১২টায় ইস্টওয়েস্ট বিশ্ববিদ্যালয় এবং অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীরা আফতাব নগর মেন গেটের রাস্তায় যান চলাচলে বাধা দেয়। লাঠিসোটা, ইটপাটকেল দিয়ে রাস্তার গাড়ি ভাঙচুর করে। পুলিশ বাধা দিলে পুলিশের ওপর আক্রমণ করে। এ ঘটনার ইন্ধনদাতা এবং অন্য আসামিদের গ্রেফতারের জন্য তাদের রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা জরুরি।
পুলিশ আদালতকে জানিয়েছে, ওই ছাত্ররা বাড্ডা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার (ওসি) গাড়ি ভাঙচুর করেছে। তারা বাড্ডা পুলিশ ফাঁড়িতে আগুন ধরাতে গেলে পুলিশ টিয়ার শেল ছুড়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
অন্য দিকে ভাটারা থানার মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এসআই হাসান মাসুদ রিমান্ড আবেদনে বলেন, আসামিরা বসুন্ধরা আবাসিক এলাকার এ্যাপোলো হাসপাতাল ও নর্থসাউথ বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় লোহার রড, লোহার পাইপ ও ইট দিয়ে পুলিশের ওপর হামলা চালায়।

আসামিপরে আইনজীবী এ কে এম মুহিউদ্দিন ফারুক আদালতকে বলেন, পুলিশ নিরপরাধ ছাত্রছাত্রীদের ধরে নিয়ে ভয়াবহ নির্যাতন চালিয়েছে। ইস্টওয়েস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের শিার্থী রিদওয়ান আহমেদের আইনজীবী কবির হোসেন আদালতকে বলেন, ‘পুলিশ ধরে নিয়ে থানায় ফেলে মেরে তার হাতের একটি আঙুল ভেঙে দিয়েছে। তৃতীয় পরে যারা ষড়যন্ত্র করেছে তাদের পুলিশ গ্রেফতার না করে নিরীহ ছাত্রদের ধরে এনেছে।’

এ ছাড়া ছাত্রদের পক্ষের আইনজীবীরা আদালতকে জানান, ইস্ট ওয়েস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের গ্রেফতার করা ছাত্রদের পরীা চলছে। ৯ আগস্ট তাদের পরীা আছে। জামিন না পেলে তাদের শিাজীবন মারাত্মকভাবে তিগ্রস্ত হবে।
গ্রেফতার হওয়া ছাত্র মাসাদ মরতুজা বিন আহাদ, ফয়েজ আহম্মেদ আদনান এবং আজিজুল হাকিমের আইনজীবীরা আদালতকে জানান, পুলিশ থানায় ফেলে এ ছাত্রদের বেধড়ক পিটিয়েছে। তবে এ তিনজনের ব্যাপারে পুলিশ আদালতকে জানিয়েছেন গ্রেফতার করার সময় ধস্তাধস্তির কারণে তারা সামান্য আহত হন। তাদের স্থানীয় হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়া হয়েছে।

বাড্ডার মামলায় গ্রেফতার ১৪ ছাত্র হলেনÑরিসালাতুল ফেরদৌস, রেদোয়ান আহমেদ, রাশেদুল ইসলাম, বায়েজিদ, মুশফিকুর রহমান, ইফতেখার আহম্মেদ, রেজা রিফাত আখলাক, এ এইচ এম খালিদ রেজা, তারিকুল ইসলাম, নূর মোহাম্মাদ, সীমান্ত সরকার, ইকতিদার হোসেন, জাহিদুল হক ও হাসান। আর ভাটারা থানার মামলায় গ্রেফতার ছাত্ররা হলেন, আজিজুল করিম, মাসাদ মরতুজা বিন আহাদ, ফয়েজ আহম্মেদ আদনান, সাবের আহম্মেদ, মেহেদী হাসান, শিহাব শাহরিয়ার, সাখাওয়াত হোসেন ও আমিনুল এহসান।


আরো সংবাদ



premium cement