২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১, ১৪ শাওয়াল ১৪৪৫
`

নীলক্ষেতে ছাত্রদের মারধর করে আটক, মুক্ত করতে সংঘর্ষ

নীলক্ষেতে ছাত্রদের মারধর করে আটক, মুক্ত করতে সংঘর্ষ - ছবি : সংগৃহীত

ঢাকা বিশ্ববিদ্যাল‌য়ের (ঢা‌বি) শিক্ষার্থী‌ ও নীলক্ষে‌তের বই দোকানদার‌দের সা‌থে সংঘ‌র্ষের ঘটনা ঘ‌টে‌ছে। বই‌য়ের দাম নি‌য়ে কথাকাটাকা‌টির একপর্যা‌য়ে দোকানের লোক‌দের সংঘবদ্ধ হামলায় ঢা‌বির ৫ শিক্ষার্থী ও ছাত্রদের পিটু‌নি‌তে এক দোকানদারসহ ৬ জন আহত হ‌য়ে‌ছে ব‌লে প্রাথ‌মিকভা‌বে জানা গে‌ছে।

বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে নয়টার দিকে রাজধানীর নীলক্ষেতে বই মার্কেটে এই ঘটনা ঘটে।

মারধরের শিকার ৫ শিক্ষার্থী হলেন দ্বিতীয় বর্ষের শান্তি ও সংঘর্ষ বিভাগের বাধন, দর্শন বিভাগের মাহিন, উমেন এন্ড জেন্ডার স্টাডিজ বিভাগের নিপুন, প্রথম বর্ষের স্বাস্থ্য অর্থনীতি বিভাগের রুবেল এবং ব্যাংকিং এন্ড ইন্সুরেন্স বিভাগের তালেখ। আহত একজন কর্মচারীর নাম জানা যায়নি।

প্রত্যক্ষদর্শীদের সূত্রে জানা যায়, রাত ৮টার দিকে মুক্তিযোদ্ধা জিয়াউর রহমান হলের প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থীরা বই কিনতে গিয়ে বাকবিতন্ডায় জড়ায়। কথা কাটাকাটির একপর্যায় একই হলের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থীরা ঘটনাস্থলে আসে। একপর্যায় দোকানদাররা জড়ো হয়ে এদের ৫ জনকে মারধর করে মার্কেটের ভিতর নিয়ে আটক করে রাখে। মার্কেটের গেটও তারা আটকিয়ে দেয়। রাত ৯টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন হলের শিক্ষার্থীরা তাদের উদ্ধার করতে গেলে ওই এলাকায় উত্তেজনাকর প‌রি‌স্থি‌তি তৈরি হয়। সাড়ে নয়টার দিকে পুলিশ আটকে রাখা ৫ জনকে উদ্ধার করে। এই সময় ওই দোকানের একজন কর্মচারী বের হলে তাকে মারধর করে উপস্থিত শিক্ষার্থীরা। পরে পুলিশ এসে এই কর্মচারীকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যায়।

ঘটনার বিষয়ে জানতে চাইলে আহত শান্তি ও সংঘর্ষ বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী বাধন বলেন, আমাদের জুনিয়র প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থীদের সাথে দোকানদাররা খারাপ ব্যাবহার করে। আমরা বিষয়টি জানতে ঘটনাস্থলে গেলে আমাদের উপর অতর্কিত হামলা করা হয়। আমার মাথায় ব্যান্ডেজ, পিঠ ও হাত জখম হয়।
ত‌বে ঘটনায় সং‌শ্লিষ্ট দোকানের লোক‌দের সা‌থে কথা বল‌া যায়‌নি।

এ বিষ‌য়ে মন্তব্য জান‌তে জিয়া হ‌লের প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক জিয়াউর রহমান‌কে ফোন কর‌লে তি‌নি রি‌সিভ ক‌রেন‌নি।

জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের জিয়াউর রহমান হলের ছাত্রলীগের সাধার সম্পাদক আব্দুল্লাহ আল মাসুদ লিমন বলেন, আমার হলের ৫ জন শিক্ষার্থীকে দোকানদাররা তুচ্ছ কারণে মারধর করে আটক করে রাখে। পুলিশের সহযোগিতায় তাদের উদ্ধার করা হয়। আমরা প্রশাসনের কা‌ছে দোষীদের বিচারের দা‌বি জা‌নি‌য়ে‌ছি।

এ বিষ‌য়ে জান‌তে চাই‌লে বিশ্ববিদাযাল‌য়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. এ‌ কে এম গেলাম রব্বানী নয়া দিগন্তকে ব‌লেন, আমরা বিষয়‌টি অব‌হিত হ‌য়ে‌ছি। ত‌বে সং‌শ্লিষ্ট সক‌লে মি‌লে এর একটা সুরাহা করা হ‌বে।

আরো পড়ুন :

বিশ্ববিদ্যালয়কে কারাগার বানিয়ে ফেলা হচ্ছে

কোটা সংস্কার আন্দোলনকে কেন্দ্র করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ দেশের বিভিন্ন শিা প্রতিষ্ঠানে শিক-শিার্থীদের ওপর হামলার প্রতিবাদে সংহতি সমাবেশ করেছেন বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিকেরা। সমাবেশে শিক-শিার্থীদের ওপর হামলাকারীদের বিচারসহ কোটা নিয়ে জাতীয় সংসদে দেয়া প্রধানমন্ত্রীর প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নের মাধ্যমে শিাপ্রতিষ্ঠানে স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনার দাবি জানানো হয়। শিক্ষকেরা বলেন, যেখানে বিশ্ববিদ্যালয়কে মুক্তির আস্বাদ দেয়ার কথা, সেই বিশ্ববিদ্যালয়কে কারাগার বানিয়ে ফেলা হচ্ছে। গতকাল বেলা ১১টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অপরাজেয় বাংলার পাদদেশে ‘নিপীড়নবিরোধী শিকবৃন্দ’র ব্যানারে আয়োজিত সংহতি সমাবেশে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিকেরা অংশ নেন। পাশাপাশি বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগের শিার্থীরাও এতে যোগদান করেন। সমাবেশে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়, বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট) সহ বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্তত ৭৫ জন শিক সংহতি জানিয়ে স্বার করেন।

সমাবেশে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন ঢাবির ইংরেজি বিভাগের অধ্যাপক তাসনীম সিরাজ মাহবুব, জাহাঙ্গীরনগর বিশ^বিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের শিক্ষক এবং তেল-গ্যাস খনিজ সম্পদ ও বিদ্যুৎ-বন্দর রা জাতীয় কমিটির সদস্য সচিব অধ্যাপক ড. আনু মুহাম্মদ, বাংলাদেশ প্রকৌশলী বিশ^বিদ্যালয়ের (বুয়েট) অধ্যাপক ড. হাসিবুর রশিদ, সমাজবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক নেহাল করিম, সহযোগী অধ্যাপক সামিনা লুৎফা, গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের অধ্যাপক ড. ফাহমিদুল হক, আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের সাবেক অধ্যাপক আকমল হোসেন, সহযোগী অধ্যাপক তানজীমউদ্দিন খান প্রমুখ।
সংহতি সমাবেশ থেকে সরকার এবং বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে ছাত্র-শিকদের ওপর হামলার বিচার, সংসদে কোটা বিষয়ে দেয়া প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নের মাধ্যমে স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে দেয়াসহ বেশ কয়েকটি দাবি জানান সমাবেশের সভাপতি গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের শিক অধ্যাপক গীতি আরা নাসরীন। তিনি বলেন, যেখানে বিশ্ববিদ্যালয়কে মুক্তির আস্বাদ দেয়ার কথা, সেই বিশ্ববিদ্যালয়কে কারাগার বানিয়ে ফেলা হচ্ছে। বিশ্ববিদ্যালয়ে পরিসর যেখানে ইতিহাস রচিত হয়েছে, বিভিন্ন আন্দোলনের সাী, সেই ইতিহাসকে অস্বীকার করে যারা কারাগার বানিয়ে তুলছে তাদের বিপে আমাদের বলতেই হবে। এ সময় তিনি শিক-শিার্থীদের হামলার বিচার করা, সরকারের কোটা সংস্কারের ঘোষণার প্রজ্ঞাপন জারি করা, ক্যাম্পাসে শিক-শিার্থীর নিরাপদ পরিবেশ নিশ্চিত করাসহ সরকার ও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে বেশ কয়েকটি দাবি তুলে ধরেন।

সমাবেশে আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত শিক ড. আকমল হোসেন বলেন, আইয়ুব খানের আমলে ছাত্রদের ওপর নির্যাতন করা হতো। সে সময় আইয়ুব খানের ছাত্রসংগঠন এনএসএফ ছাত্রদের নির্যাতন করত, কিন্তু বর্তমান ছাত্রলীগের মতো পেটাত না। সেই এনএসএফ যুগের চেয়ে বর্তমান যুগ ভয়াবহ।

অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ বলেন, প্রধানমন্ত্রী বলেছিলেন ঢাবি ভিসির বাসায় যারা হামলা করেছে, তাদের ধরা হচ্ছে। এর আগে এ ঘটনায় চারজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে, যাদের মধ্যে কেউ ছাত্র নয়। সরকারের পক্ষ থেকেও এ বিষয়ের সত্যতা দেখিয়ে বলা হয়েছে, তারা ছাত্র নয়। তাহলে হঠাৎ করে কোটা সংস্কার আন্দোলনের নেতারা ভিসির বাসায় হামলা করেছে, এ তথ্য সরকার কিভাবে পেলো? 
তিনি বলেন, ভিসির বাসায় যারা আক্রমণ করেছে তাদের ধরতে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। কিন্তু সে তদন্ত কমিটির রিপোর্ট এখনো বের হয়নি। তদন্ত কমিটির রিপোর্ট দিতে তো অসুবিধা থাকার কথা নয়। তাহলে তারা রিপোর্ট দিচ্ছে না কেন? ঘটনাক্রম দেখে বোঝা যায়, এ আক্রমণটাই ছিল পরিকল্পিত অন্তর্ঘাত। কোটা সংস্কার আন্দোলনকারী-শিক্ষার্থীদের বিপদে ফেলতেই এ হামলা করা হয়েছে। সেই একই কারণে তদন্ত কমিটির রিপোর্টও প্রকাশ করা হচ্ছে না। ভিসির বাড়িতে হামলার ঘটনা তদন্তে আক্রমণকারীদের চিনতে পেরে বিশ^বিদ্যালয় প্রশাসন ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় তাদের ধরা থেকে পিছিয়ে এসেছেন। ঠিক একই কারণে পয়লা বৈশাখে মেয়েদের ওপর যে আক্রমণ হয়েছে সেটার বিচার করতে গিয়ে যারা আক্রমণকারী তাদের দেখে ঢাকা বিশ^বিদ্যালয় প্রশাসন পিছিয়েছে। তারা সে বিচার নিয়ে আর অগ্রসর হয়নি। ৬-৮টা সিসিটিভি ক্যামেরা ছিল সেখানে। ভিসির বাড়ির আক্রমণের পরেও তাদেরকে চিনতে পেরে বিশ^বিদ্যালয় প্রশাসন, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় পিছিয়ে এসেছেন। এদের ধরা যাবে না। পরিষ্কার বোঝাই যাচ্ছে ঘটনাটা কী হচ্ছে। সুতরাং, এগুলো তদন্তের নামে প্রতারণা।

আক্রমণকারীদের না ধরে বরং আক্রান্তদের রিমান্ডে নেয়া হচ্ছে মন্তব্য করে এ অধ্যাপক বলেন, যারা সাধারণ একটি দাবি নিয়ে আন্দোলন করছে তাদের ধরা হচ্ছে। ছাত্রলীগ আক্রমণ যখন করে তখন পুলিশ সেখান থেকে চলে যায়। পুলিশ আবার আক্রান্ত-ক্ষতবিক্ষত শিক্ষার্থীদের থানায় নেয়, আটক করে। তারপর এমন আদালতও আমরা পেলাম, সেই আদালত আক্রমণকারীদের নয়; বরং যারা আক্রান্ত হচ্ছে তাদের রিমান্ডে পাঠায়! বিশ^বিদ্যালয় প্রশাসন তাদের রক্ষা করার চেষ্টা করে যারা আক্রমণ-নির্যাতন করেছে।
তিনি বলেন, এটা হচ্ছে একটা জোট, একটা অ্যালায়েন্স। একটা দুষ্ট জোট তৈরি হয়েছে, যে দুষ্টজোট জনগণের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেছে। সেই জনগণের একজন শিক্ষকও যদি আন্দোলন করে তবে সেটাকে ছোট করে দেখাচ্ছেন কেন? সেটা যাতে হাজার হাজার লাখে লাখে পরিণত না হয় সে জন্যই আপনাদের এত আতঙ্ক। আতঙ্কিত, ত্রস্ত না থাকলে কোনো সরকার, সরকারি সংগঠনের এত উন্মাদের ভূমিকা থাকতে পারে না। 
সরকারের নির্যাতনের মধ্য দিয়ে কোটা সংস্কার আন্দোলন ভয়াবহ রূপ ধারণ করেছে উল্লেখ করে আনু মুহাম্মদ বলেন, ছাত্রলীগ এমন একটি অবস্থা তৈরি করেছে যে ২০১৮ তে দাঁড়িয়ে আইয়ুব খানের দশকের কথা আমাদের সবার মনে পড়ছে। আইয়ুব দশককে অতিক্রম করে গণঅভ্যুত্থান-মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে আমরা একটি নতুন সমাজ-দেশ গড়তে চেয়েছিলাম। এনএসএফের ভূমিকায় যদি ছাত্রলীগ অবতীর্ণ হয় তাহলে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা কোথায় থাকল? সেটা যদি মুক্তিযুদ্ধের চেতনার নাম করে হয় তাহলে মুক্তিযুদ্ধের চেতনার জন্য বড় অপমান আর কি হতে পারে? প্রতিটি আন্দোলনে সরকার জামায়াত-শিবির পায় উল্লেখ করে তিনি বলেন, জামায়াত-শিবিরের প্রতি সরকারের এতটা সার্ভিস জামায়াত-শিবির আর কোথাও পায়নি। সমস্ত ন্যায্য আন্দোলনের সাথে জামায়াত-শিবির আছে এত বড় স্বীকৃতি জামায়াত-শিবির আর কোথা থেকে পাবে? 

তিনি আরো বলেন, আজকে দেশে যে পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে। এটি হলো শিাথীদের দীর্ঘদিনের গভীর ােভের বহিঃপ্রকাশ। প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, এ আন্দোলনে শিকেরাও কেন যুক্ত হয়েছে? আপনাকে বলতে চাই আপনি যদি এক ঘণ্টার জন্য শিক-শিার্থীদের সাথে কথা বলতেন, তাহলে দেখতেন, আন্দোলনকারীদের ােভের মাত্রা কতটুকু এবং এ আন্দোলন কিভাবে গভীর ােভ থেকে তৈরি হয়েছে।
আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক সি আর আবরার বলেন, কোটা সংস্কার আন্দোলন যুক্তিসংগত। কিন্তু এটাকে যুক্তি দিয়ে না পেরে অবশেষে রাজনীতি ও পেশিশক্তি দিয়ে খণ্ডানোর চেষ্টা হচ্ছে। তিনি বলেন, শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের ওপর হামলাকারী ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা চিহ্নিত। তাদের গ্রেফতার করে বিচারের আওতায় আনতে হবে। একই সাথে ছাত্রলীগের এসব কর্মকাণ্ডের দায়িত্ব সরকারকেই নিতে হবে। 
অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক ড. এম এম আকাশ বলেন, আমরা বিশ^বিদ্যালয়ে বর্তমানে দ্বৈত প্রশাসন দেখতে পাচ্ছি। প্রথমটি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন এবং অন্যটি হলে যারা আধিপত্য বিস্তার করে গেস্টরুমে শিার্থীদের নানা রকমের নির্যাতন করছে, তাদের প্রশাসন। বিশ^বিদ্যালয়ের ভিসি যদি হলের কর্তৃত্ব হল প্রশাসনকে দিতে ব্যর্থ হয়, যদি তিনি মতাসীনদের চাপে সঠিকভাবে দায়িত্ব পালন করতে ব্যর্থ হন, তাহলে আপনাকে বলব, আপনি নিজ ইচ্ছায় পদত্যাগ করুন।
বুয়েটের অধ্যাপক ড. হাসিবুর রশিদ বলেন, আসলে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন অন্ধকারে আছে। তারা আলোকে ভয় পায়। শিার্থীদের বলব তোমরা প্রশাসনের মতো ভয় পেয়ে না। আন্দোলনকারীদের যারা দমিয়ে রাখতে আসবে, তাদেরও আমরা প্রতিহত করতে তোমাদের পাশে দাঁড়াতে প্রস্তুত আছি। 

ড. আহমেদ কামাল বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের উদ্দেশে বলেন, আপনারা এখনো ছাত্রদের সাথে কথা বলেন, ছাত্রদের হয়ে সরকারের সাথে কথা বলেন। ছাত্ররা কাস করতে চায়। প্রক্টরের উদ্দেশে তিনি বলেন, আপনাকে ভুলে যেতে হবে আপনি ছাত্রলীগের কর্মী ছিলেন। একটু ভুলে যান। অনেক কিন্তু হলো। আপনার ওই পরিচয়টা আপনি ভুলতে পারছেন না। শিক্ষকতা করতে গেলে এটা ভুলতে হবে। 
মনোবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক নাসরীন ওয়াদুদ বলেন, মুক্তিযুদ্ধের সময় আমাকে ছাত্রলীগের একটা তকমা দেয়া হয়েছিল যেটা নিয়ে আমি গর্ববোধ করতাম। এখন মনে হয় ছাত্রলীগ একটা গালি; সত্যিকারে। আমি মনে করেছিলাম শহীদ মিনারে আমিও যাবো। কিন্তু আমার হাত-পা ভাঙা। তখন মনে হয়েছে যদি ওরা মারতে শুরু করে তাহলে আমি কি আমাকে সামলাতে পারব? কী রকম বিশ^বিদ্যালয়ে আমরা আছি আমরা চিন্তা করতে পারছি না।

গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের অধ্যাপক ড. ফাহমিদুল হক বলেন, আমরা নাকি শিক্ষার্থীদের উসকানি দিয়ে কাস থেকে বিরত রাখার জন্য কাজ করছি। এটা মিথ্যা কথা। যতক্ষণ সাধারণ শিক্ষার্থীদের ওপর নিপীড়ন চলবে, ততক্ষণ আমরা তাদের পাশে সাধ্যমতো দাঁড়ানোর চেষ্টা করব।
সংহতি সমাবেশ শেষে একটি মৌন মিছিল বের করা হয়। মিছিলটি কলাভবন-ডাকসু ভবন ঘুরে আবার অপরাজেয় বাংলার পাদদেশে এসে শেষ হয়।


আরো সংবাদ



premium cement