২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১, ১৪ শাওয়াল ১৪৪৫
`
ফায়ার সার্ভিস স্টেশন নির্মাণ প্রকল্প

অপচয় ও দীর্ঘসূত্রতা বন্ধ করতে হবে

-

প্রাকৃতিক দুর্যোগ ও অগ্নিকাণ্ডের মতো দুর্ঘটনায় দুর্গতদের সহায়তা করে ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স স্টেশন। দেশের দুর্যোগ মোকাবেলায় সংশ্লিষ্ট সংস্থার কর্মীরা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকেন। সাম্প্রতিক সময়ে দেশের বিভিন্ন স্থানে, বিশেষ করে ২০১৯ সালে পুরান ঢাকার চুড়িহাট্টা এবং বনানীর এফআর টাওয়ারে আগুন নেভানোর সময় দমকল বাহিনীর সদস্যদের সাহসিকতাপূর্ণ অবদান সর্বমহলে প্রশংসা কুড়িয়েছে। দেখা যায়, আগুন নেভানোর কর্তব্য পালন করতে গিয়ে এই বাহিনীর অনেকের হতাহত হওয়ার ঘটনাও ঘটে।
নিরাপদ দেশ গঠনে ১৫৬টি গুরুত্বপূর্ণ উপজেলায় একটি করে ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স স্টেশন স্থাপনের প্রকল্প ২০১২ সালের সেপ্টেম্বরে অনুমোদন পায় একনেকের। এর অনুমোদিত ব্যয় ছিল ৮৮৮ কোটি ৭৮ লাখ টাকা। ২০১৬ সালের জুনে শেষ হওয়ার কথা ছিল প্রকল্পটি; কিন্তু পরিকল্পনা কমিশনে প্রকল্পের ব্যয় ৬১ দশমিক ৪৭ শতাংশ বৃদ্ধি এবং মেয়াদ চার বছর বাড়ানোর প্রস্তাব পাঠানো হয়। পরে ৩৬৯ কোটি ৯২ লাখ টাকা বাড়িয়ে এক হাজার ২৫৮ কোটি টাকায় অনুমোদন দেয়া হয়। বাস্তবতা হচ্ছেÑ নির্ধারিত চার বছরে তো নয়ই, বর্ধিত আরো তিন বছরেও শেষ হয়নি উপজেলাপর্যায়ে ১৫৬টি ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স স্টেশন স্থাপন। এখন আবার এক বছর মেয়াদ বাড়ানোর প্রস্তাব দিতে যাচ্ছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। জুনে প্রকল্পটির মেয়াদ শেষ হবে, কিন্তু এখন পর্যন্ত ২০টি স্টেশন নির্মাণকাজ শুরুই করা যায়নি। বর্ধিত ২০২০ সালের জুনেও প্রকল্পটি পুরোপুরি শেষ হবে বলে মনে হয় না।
নয়া দিগন্তের এ সংশ্লিষ্ট প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, প্রকল্পের মোট ১৫৬টি স্টেশনের মধ্যে ৪৮টির পূর্ত কাজ শেষ হয়েছে, যার মধ্যে ৪৭টি চালু করা সম্ভব হয়েছে। ২৩টির কাজ বিভিন্ন পর্যায়ে রয়েছে। এর মধ্যে তিনটির টেন্ডার কাজ শেষ হলেও পূর্ত কাজ এখনো শুরু করা হয়নি। ছয়টি টেন্ডারযোগ্য। তিনটি বর্তমানে জমি হস্তান্তর প্রক্রিয়ায় রয়েছে। জমি অধিগ্রহণ মামলার জালে দু’টি আটকে রয়েছে। জমি অধিগ্রহণ প্রক্রিয়ায় আছে পাঁচটি। ৬৫টির কাজ চলমান। এর মধ্যে ৩৪টির একটির অগ্রগতি সর্বোচ্চ ১০ শতাংশ, ১১ থেকে ৪০ শতাংশ অগ্রগতিতে আছে ২১টি এবং ১২টির অগ্রগতি ৪১-৬০ শতাংশের মধ্যে। এগুলোর বেশির ভাগের নির্মাণকাজ জুনে শেষ হবে না। প্রকল্প পর্যালোচনায় দেখা গেছে, ২০১৬ সালের জুন পর্যন্ত নির্ধারিত চার বছরে প্রকল্পের অগ্রগতি ২০ শতাংশ। অর্থ ব্যয় হয়েছে ১১ শতাংশ বা ৯৯ কোটি ৭৫ লাখ টাকা। প্রথম দফায় মেয়াদ ও ব্যয় বাড়ানোর সময় প্রজেক্ট ইভ্যালুশন কমিটি (পিইসি) থেকে প্রশ্ন তোলা হয়েছিল, গত চার বছরে প্রকল্পের যে অবস্থা তাতে আগামী চার বছরেও প্রকল্পটির আদৌ কোনো অগ্রগতি দেখা যাবে কি না। শেষ পর্যন্ত পিইসির আশঙ্কাই সত্য হয়েছে।
উন্নয়ন প্রকল্পের সাধারণ একটি প্রবণতা হলো একটি প্রকল্প সব প্রক্রিয়া অনুসরণ করে বাস্তবায়নের জন্য নেয়া হবে। নানা কারণে সেটি বিলম্ব হবে আর বিলম্বের অজুহাতে বরাদ্দ দুই তিন গুণ পর্যন্ত বাড়ানো হবে। আর শেষ পর্যন্ত এতকিছুর পরও তার একটি অংশ অবাস্তবায়িত থেকে যাবে। এভাবেই জাতীয় সম্পদের এক দিকে অপচয় হচ্ছে অন্য দিকে উন্নয়ন প্রকল্প থেকে যে সুবিধা সাধারণ মানুষের পাওয়ার কথা তা পাওয়া যাচ্ছে না। বিবেচ্য প্রকল্পের ক্ষেত্রেও সেটিই হতে যাচ্ছে বলে মনে হয়। দেশের আবহাওয়া দিন দিন যেভাবে শুষ্ক ও চরম ভাবাপন্ন হচ্ছে, তাতে সারা দেশে প্রাকৃতিক দুর্যোগ ও অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা বাড়ছে। এসব ঘটনায় মানুষের জানমালের ক্ষয়ক্ষতিও বাড়ছে। সেই বিবেচনায় ফায়ার সার্ভিস স্টেশন নির্মাণ প্রকল্পটি নির্দিষ্ট সময়ে বাস্তবায়ন করা খুবই জরুরি ছিল; কিন্তু বর্ধিত সময়েও প্রকল্পটি শেষ না হওয়া হতাশাজনক। এমন একটি জনবান্ধব প্রকল্প কেন বর্ধিত সময়েও শেষ হলো না তা খতিয়ে দেখা উচিত। এতে কাদের গাফিলতি ছিল তা চিহ্নিত করে তাদের জবাবদিহির আওতায় আনতে হবে। যেভাবেই হোক জনকল্যাণের প্রকল্পগুলো শতভাগ বাস্তবায়ন করতে হবে। তা না হলে দেশের সাধারণ মানুষ এর সুফল থেকে বঞ্চিত হওয়ার আশঙ্কা থেকে যাবে।


আরো সংবাদ



premium cement
টাঙ্গাইলে বৃষ্টির জন্য ইসতেসকার নামাজ ফুলগাজীতে ছাদ থেকে পড়ে স্কুলছাত্রের মৃত্যু দোয়ারাবাজারে শিশু হত্যা মামলার আসামিসহ গ্রেফতার ২ কাউখালীতে পানিতে ডুবে শিশুর মৃত্যু চুয়েট শিক্ষার্থীদের সড়কে অবস্থান অব্যাহত, ঘাতক বাসচালক গ্রেফতার তামাক পণ্যে সুনির্দিষ্ট করারোপের দাবিতে এনবিআর চেয়ারম্যানের কাছে ২৫ সংসদ সদস্যের চিঠি প্রাণিসম্পদ প্রদর্শনীতে মহিষের আক্রমণে বাবা-ছেলেসহ আহত ৪ গফরগাঁওয়ে গৃহবধূর ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার তীব্র মাত্রায় হিংস্র হয়ে উঠেছে সরকার : মির্জা ফখরুল মিরসরাইয়ে মৃত্যুর ১৫ দিন পর ব্যাংক কর্মকর্তার কবর থেকে লাশ উত্তোলন দেশে দেড় হাজার মেগাওয়াট লোডশেডিং, দুর্ভোগে মানুষ

সকল