সর্বাগ্রে একে ‘সুস্থ’ করে তুলুন
- ২১ ফেব্রুয়ারি ২০২০, ০০:০০
রাজধানী ঢাকার একটি গুরুত্বপূর্ণ চিকিৎসাপ্রতিষ্ঠান হচ্ছে ডেমরার মাতুয়াইল স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণকেন্দ্র; কিন্তু এখানে মারাত্মক ঝুঁকিপূর্ণ ভবনে চিকিৎসাসেবা দিতে হয়। নোংরা পরিবেশে এ সেবা নিতে বাধ্য হচ্ছেন ভুক্তভোগী এলাকাবাসী। স্থায়ী জলাবদ্ধতার কারণে বছরের ১০ মাসই কেন্দ্রটি থাকে পানিবন্দী। এ অবস্থায় ভবনের দেয়ালে পর্যন্ত লতাগুল্ম গজিয়েছে। অধিকাংশ চিকিৎসাসেবা দেয়া বন্ধ রয়েছে অস্বাস্থ্যকর পরিবেশের দরুন। কিছু চিকিৎসাসেবা প্রদান করা হচ্ছে তিন বছর বন্ধ থাকার পর। তবুও স্বাস্থ্যকেন্দ্রটির ব্যাপারে কর্তৃপক্ষের নজরদারি নেই বলে জানা গেছে। এর নতুন কোনো ভবন নির্মাণের উদ্যোগও পরিলক্ষিত হচ্ছে না।
একটি জাতীয় দৈনিকের প্রতিবেদন মোতাবেক, ৪২ বছর আগে মাতুয়াইল ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ কেন্দ্র স্থাপিত হয়েছিল। পর্যায়ক্রমে এখানে সব রকম চিকিৎসাসেবা শুরু করা হয়। অথচ জলাবদ্ধতার দরুন এবং নজরদারির অভাবে এখন আর সব ধরনের চিকিৎসাসেবা এখানে পাওয়া যায় না। এমনকি সাধারণ চিকিৎসাসেবাও হচ্ছে ব্যাহত। জানা যায়, স্বাস্থ্যকেন্দ্রটির রাস্তাগুলো সংশ্লিষ্ট ভবনের চেয়ে তিন ফুট উঁচু। তাই কয়েক বছর ধরে জলাবদ্ধতা রয়েছে অব্যাহত। আগে পানি জমে থাকত বছরে তিন মাস; তা বাড়তে বাড়তে বর্তমানে ১০ মাসই স্বাস্থ্যকেন্দ্রটি পানিবন্দী থাকে। তা ছাড়া যেখানে সেখানে ময়লা আবর্জনা থাকায় পরিবেশ নোংরা হয়ে পড়েছে। বিশেষত একটানা জলাবদ্ধতা আর ঝুঁকিপূর্ণ ভবনের কারণে কমপক্ষে দুই লাখ মানুষের স্বাস্থ্যসেবার মতো গুরুত্বপূর্ণ কার্যক্রম অনিশ্চিত হয়ে যাচ্ছে। এ দিকে কেন্দ্রে সব ধরনের অপারেশন বন্ধ। নেই পানি ও বিদ্যুৎ। প্রায় সব আসবাবপত্র অকেজো। টয়লেটের অবস্থা খুবই নাজুক। বৃষ্টি হলে অনেক সময়ে সরাসরি পানি ঢুকে পড়ে এই স্বাস্থ্যকেন্দ্রে। বর্ষাকালে হাঁটুপানি উঠে যায়। স্বাস্থ্যকেন্দ্রের পাশেই স্টাফদের থাকার ভবনটি এখন পরিত্যক্ত। এর দেয়ালে এবং রুমের মধ্যে বটগাছ গজিয়েছে। একজন রোগী জানালেন, তিনি একাধারে ১৫ বছর ধরে এখান থেকে বিনামূল্যে ওষুধ নিতে পেরেছিলেন। তবে গত তিন বছর এই স্বাস্থ্যকেন্দ্র ছিল বন্ধ। আগে হাজার হাজার রোগী এখান থেকে চিকিৎসাসেবা পেতেন। এখানকার একজন ডাক্তার বলেছেন, ‘স্বাস্থ্যকেন্দ্রটি উপযোগী থাকলে ব্যয়বহুল বর্তমান সময়ে এক বৃহৎ জনগোষ্ঠী অনেক গুরুত্বপূর্ণ সেবা পেত বিনামূল্যে’। কিছু দিন আগে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের পর্যবেক্ষকরা এখানকার অবস্থা দেখে আপসোস করেছেন। ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের স্থানীয় ওয়ার্ড কাউন্সিলর দাবি করেছেন, ‘ছয় মাস আগেই এই কেন্দ্রের ব্যাপারে লিখিতভাবে আবেদন জানানো হয়েছে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে। এতে ঢাকা-৫ আসনের এমপি এবং মেয়রের সুপারিশ রয়েছে।’ সরকারের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা উল্লেখ করেন, ‘স্বাস্থ্যকেন্দ্রের নতুন ও পরিকল্পিত ভবন নির্মাণকে গুরুত্ব দিয়ে রিপোর্ট জমা দেয়া হয়েছে। সংশ্লিষ্ট কাজ এখন প্রক্রিয়াধীন।’
মানুষের মৌলিক প্রয়োজনগুলোর মধ্যে স্বাস্থ্য বা চিকিৎসার বিষয় অত্যন্ত গুরুত্ববহ। মানসম্মত স্বাস্থ্যসেবা পাওয়া প্রতিটি নাগরিকের মৌলিক অধিকার এবং সরকারের একটি গুরুদায়িত্ব। বহু বছর ধরে ‘সবার জন্য স্বাস্থ্য’ কর্মসূচি বাস্তবায়নে সরকারের অঙ্গীকারের কথা আমরা বারবার শুনে আসছি। বাস্তবে এ ক্ষেত্রে খুব বেশি অগ্রগতি হয়নি।
এই প্রেক্ষাপটে আলোচ্য স্বাস্থ্য কেন্দ্রসমেত দেশের সব হাসপাতাল, কিনিক ও স্বাস্থ্যসম্পর্কিত প্রতিষ্ঠান যাতে জনগণ যথাযথভাবে সেবা দিতে পারে, সর্বাগ্রে তা নিশ্চিত করা প্রয়োজন।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা